- বইয়ের নামঃ আমি এবং কয়েকটি প্রজাপতি।
- লেখকঃ হুমায়ূন আহমেদ।
- প্রকাশিতঃ জুলাই ২০০৩
- প্রকাশকঃ অন্যপ্রকাশ
- জনরাঃ সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার
- সাইজঃ ০৪ এমবি
- ভাষাঃ বাংলা (Bangla/Bengali)
- পাতা সংখ্যাঃ ৮০ টি
- বইয়ের ধরণঃ উপন্যাস
- ফরম্যাটঃ পিডিএফ (PDF)
উপন্যাসের প্রধান চরিত্র ফখরুদ্দিন। একজন মানসিকভাবে অসুস্থ ব্যাক্তি। নির্দিষ্ট করে বললে তিনি স্রিজোফিনিয়ায় আক্রান্ত। তবে তার ধারণা সে সুস্থ। তার ভেতর অস্বাভাবিক কিছু নেই। পুরো উপন্যাসটি তার ভাষ্যমতে লিখা। অর্থাৎ পড়ার সময় আপনার মনে হবে,
ফখরুদ্দিন সাহেব আপনাকে সামনে বসিয়ে তার জীবনে ঘটে যাওয়া কিছু গল্প শোনাচ্ছে।
যে গল্প অদ্ভুত, অস্বাভাবিক। একই সাথে ইন্টারেস্টিং ও বটে।
সাধারণত স্রিজোফিনিয়ায় আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে অডিটরি হ্যালুসিনেশন, ভিজুয়াল হ্যালুসিনেশন ঘটে থাকে। আরও একটি ভয়ংকর বিষয় হচ্ছে ডিলিউশন। অর্থাৎ একটি ভ্রান্ত ধারণা মনের ভেতর পোষণ করা। ডিলিউশনকে ভয়ংকর বললাম কারণ মাঝে মাঝে এই ভ্রান্ত ধারণা অনেক ভয়ংকর হয়ে থাকে। যেমন একজন রোগী ধরে নিয়েছে তাকে খুন করার জন্য তার খাবারে কেউ বিষ মিশিয়ে দিয়েছে। তাই সে খাওয়া দাওয়াই ছেড়ে দিল।
এই উপন্যাসটি পড়লে স্রিজোফিনিয়া সংক্রান্ত এই সবগুলো বিষয় বেশ স্পষ্ট হয়ে যাবে আপনার কাছে।
একজন স্রিজোফিনিয়ায় আক্রান্ত রোগী কিভাবে চিন্তা করে, কিভাবে তার জগৎ টা সাজায় আপনি তা বুঝতে পারবেন এই উপন্যাসটি পড়ার পর৷
উপন্যাসের শুরুতে দেখা যায় ফখরুদ্দিন সাহেবকে তার স্ত্রী ইনিয়েবিনিয়ে সাইকিয়াট্রিস্টের কাছে পাঠায়। আর উপন্যাসের শেষে কি ঘটে??????
তা আর নাই বললাম!
আমি এই বইটি প্রথম পড়ি ২০১৮ সালে৷ বইটি পড়ার পর আমার শুধু মনে হয়েছিল এই বইটি হুমায়ূন আহমেদ স্যারের মাস্টার পিস গুলোর মধ্যে একটি। আপনি যদি সাইকোলজিক্যাল থ্রিলারের ভক্ত হয়ে থাকেন, তাহলে আমার ধারণা আপনিও আমার কথা অস্বীকার করতে পারবেন না।
সবশেষে এই উপন্যাসে উল্লেখিত আমার পছন্দের একটি কবিতা দিয়ে শেষ করছি-
If we shall live, we live
If we shall die, we die
If we live we shall meet again
But to night, goodbye.
লিখেছেন: আবিদ হোসেন জয়।
রিভিউ নং ২
নাম শুনে বোঝা যাচ্ছে এটি একটি রোমান্টিক উপন্যাস। যদি তেমনটি ভেবে থাকেন তবে মশাই একটু নড়েচড়ে বসুন।
“আমি এবং কয়েকটি প্রজাপতি” কেন্দ্রীভূত হয়েছে ফখরুদ্দিন চৌধুরী নামকএক ব্যক্তির উপরে। এটি একটি সাইকো থ্রিলার। গল্পের প্রধান চরিত্র ফখরুদ্দিন চৌধুরী। বইটি উত্তমপুরুষে লেখা। ফখরুদ্দিনের নিজের জবানিতে কাহিনী বর্ণনা করা।পড়ার সময় মনে হয় সে আপনাকেই গল্পটা বলছে।
ফখরুদ্দিন সাহেব তার দূরসম্পর্কের মামার সাথে কনে দেখতে যায়। কনে পছন্দ হওয়াতে সেরাতেই বিয়ে সম্পন্ন হয়। ফখরুদ্দিনের মামা ইফতেখার সাহেব একজন সরকারী কাজি । বিয়ের পরদিন তার স্ত্রী তার সাথে থাকতে রাজি হন না। অতপর ফখরুদ্দিন বিয়ে ভেঙ্গে দেয়। এর বেশ কিছুদিন পর তার সাবেক স্ত্রীর ছোট বোনের সাথে আনুষ্ঠানিক ভাবে তার বিয়ে হয়।তার স্ত্রী রুপা বিয়ের কদিনের মাথায় মনে করে তার স্বামী মানসিক রুগী। সে ভুলিয়ে ভালিয়ে তাকে একজন সাইক্রিয়াটিস্ট এর কাছেও নিয়ে যায়। অবশ্য রুপার ওকে মানসিকভাবে অসুস্থ ভাবার অনেক কারন আছে। তার পাগলামোর কিছু নমুনা শুরুতেই উল্লেখ করা হয়েছে।
তার স্ত্রী রূপাকে সে ডাকে দস্তা কন্যা নামে। আবার ফখরুদ্দিন তার মন গড়া আরেক নারীর উপস্থিতি অনুভব করেন যাকে সে ডাকে কাঁসা কন্যা নামে। শেষ অবধি সে কার সাথে থাকে। এর মাঝে ফখরুদ্দি ঠান্ডা মাথায় দুটো খুন করে। কাদের সে খুন করলো? কিভাবে করলো? এই প্রশ্নের উত্তর না হয় আপনারা বইটি পড়ে নিজেরাই খুঁজে নেবেন।
জাদুকর হুমায়ুনের জাদুকরি লেখার আরেকটি বলিষ্ঠ নমুনা আমি এবং কয়েকটি প্রজাপতি। নেই কোন বীভৎস সব খুনের বর্ণনা নেই বরং আছে একজন মানুষের মনের জটিল দিকগুলো। ‘ আমি এবং কয়েকটি প্রজাপতি” পাঠককে ভাবাবে “আচ্ছা চরিত্রটা ঠিক কী করতে চলেছে “। বইটা চৌম্বকের মতো এর আকর্ষনে পাঠক মনকে সহজেই জড়িয়ে ফেলার ক্ষমতা রাখে। এটা পড়ার পর সত্যিই মনে হবে, লেখক হুমায়ুন কি করে শুধু কিছু শব্দের মাধ্যমে তিনি পাঠক মনকে কত সুন্দরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন। সক্ষম ছিলেন, যেটা অনেকেই পারেন না।
বইটি পিডিএফ আকারে ডাউনলোড করুন
অথবা পুরো বইটি অডিও আকারে শুনুন।
⬇️ লেখক সম্পর্কে,
হুমায়ূন আহমেদ (১৩ নভেম্বর ১৯৪৮–১৯ জুলাই ২০১২)ছিলেন একজন বাংলাদেশি ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার, নাট্যকার এবং গীতিকার, চিত্রনাট্যকার ও চলচ্চিত্র নির্মাতা।
তিনি বিংশ শতাব্দীর জনপ্রিয় বাঙালি কথাসাহিত্যিকদের মধ্যে অন্যতম। তাকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী অন্যতম শ্রেষ্ঠ লেখক বলে গণ্য করা হয়। বাংলা কথাসাহিত্যে তিনি সংলাপপ্রধান নতুন শৈলীর জনক। অন্য দিকে তিনি আধুনিক বাংলা বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীর পথিকৃৎ।
নাটক ও চলচ্চিত্র পরিচালক হিসাবেও তিনি সমাদৃত। তার প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা তিন শতাধিক। তার বেশ কিছু গ্রন্থ পৃথিবীর নানা ভাষায় অনূদিত হয়েছে, বেশ কিছু গ্রন্থ স্কুল-কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যসূচীর অন্তর্ভুক্ত।
স্থানীয় নামঃ কাজল শামসুর রহমান
জন্মঃ ১৩ নভেম্বর ১৯৪৮
কুতুবপুর গ্রাম, কেন্দুয়া, নেত্রকোণা, পূর্ব পাকিস্তান (বর্তমান বাংলাদেশ)
মৃত্যুঃ ১৯ জুলাই ২০১২ (বয়স ৬৩)
নিউ ইয়র্ক, যুক্তরাষ্ট্র
সমাধিস্থলঃ নুহাশ পল্লী, গাজীপুর
পেশাঃ লেখক চলচ্চিত্র পরিচালক গীতিকার নাট্যকার অধ্যাপক (রসায়ন)
জাতীয়তাঃ পাকিস্তানি (১৯৪৮-১৯৭১)
বাংলাদেশী (১৯৭১-২০১২)
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানঃ বগুড়া জিলা স্কুল,বগুড়া
ঢাকা কলেজ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
নর্থ ডাকোটা স্টেট ইউনিভার্সিটি (পিএইচডি)
সময়কাল
১৯৭২–২০১২
ধরন
উপন্যাস ছোটগল্প প্রবন্ধ নাটক বিজ্ঞান কল্পকাহিনী অধিবাস্তব কাহিনী গান
বিষয়
রসায়ন, সমসাময়িক জীবন
উল্লেখযোগ্য রচনাবলি
দেখুন সৃষ্টিকর্ম
উল্লেখযোগ্য পুরস্কার
বাংলা একাডেমি পুরস্কার
একুশে পদক
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার
দাম্পত্যসঙ্গী
গুলতেকিন খান (বি. ১৯৭৩; বিচ্ছেদ. ২০০৩)
মেহের আফরোজ শাওন (বি. ২০০৫; মৃ. ২০১২)
সন্তান
৬; শীলা আহমেদ-সহ
আত্মীয়
মুহম্মদ জাফর ইকবাল (ভাই)
আহসান হাবীব (ভাই)
0 মন্তব্যসমূহ
ℹ️ Your Opinion is very important to us, Please Writer your comment below about this Post.....