বই: নক্সী কাঁথার মাঠ
লেখক: জসীমউদদীন
ধরণ: কাব্যগ্রন্থ
প্রকাশকাল: প্রথম প্রকাশ ১৯২৯
প্রকাশনায়: পলাশ প্রকাশনী
মুদ্রিত মূল্য: ১৫০
পৃষ্ঠা সংখ্যা: ৯৩
পল্লীকবি জসীমউদদীন তাঁর কালজয়ী সৃষ্টি নক্সী কাঁথার মাঠ কাব্যগ্রন্থে পল্লীর দুই কিশোর-কিশোরী রূপাই ও সাজুর প্রেমের সূূচনা ও করুণ পরিণতির মর্মস্পর্শী এক কাহিনী তুলে ধরেছেন। রাখাল ছেলে রূপাই সাজুকে দেখে স্বপ্ন বুনতে শুরু করে। বদনা বিয়ের গান পরিবেশনের সময় দেখা হয় দুজনের, সেই থেকে একে-অপরের মন অদলবদলের শুরু। রূপাই হাট থেকে এটা ওটা কিনে নানান বাহানায় সাজুর বাড়িতে গিয়ে দিয়ে আসে। এ নিয়ে গ্রামে কানাকানি শুরু হলে রূপাইয়ের মায়ের কথায় দুখাই ঘটক দুজনের বিয়ে পাকাপাকি করে। নানান ঘটনার পর দুজনের বিয়ে হয়। শুরু হয় জীবনের আনন্দময় এক অধ্যায়। কিন্তু সেই আনন্দ দীর্ঘস্থায়ী না হতেই ওদের দাম্পত্য জীবনে নেমে আসে শোকের ছায়া। রূপাইয়ের মা মারা যায়, কিন্তু কোন শোকই দীর্ঘস্থায়ী নয়। একসময় তারা শোক ভুলে আবার সুখে সংসার করতে শুরু করে।
তাদের সুখের জীবনে বিচ্ছেদ আসে হঠাৎই। গাজনা চরের ধানকাটাকে কেন্দ্র করে বনগাঁয়ের লোকদের সাথে রূপাইয়ের দ্বন্দ্ব শুরু হয়, তাতে রূপাইয়ের লাঠির আঘাতে অপরপক্ষের লোক খুন হওয়ায় রূপাই পলাতক জীবন বেছে নেয়। রূপাইয়ের অনুপস্থিতিতে সাজু নিঃসঙ্গ হয়ে পড়ে। ধীরে ধীরে ওর জীবনে বিষণ্ণতার ছায়া নেমে আসে। নিস্প্রভ হয়ে আসে ওর জীবন প্রদীপ।
মৃত্যুর আগে সাজু তার সুখ-দুঃখের ইতিহাস সুঁই সুতোর ফোঁড়নে ফোঁড়নে নক্সী কাঁথায় অঙ্কন করে যায়।
সাজুর মৃত্যুর পর সাজুর মা নক্সী কাঁথাটি ওর কবরে বিছিয়ে দেয়।
অনেক অনেক দিন পর এক গভীর রাতে সাজুর কবরের কাছে বাঁশির সুর শোনা যায়। সকালবেলা গ্রামের সবাই দেখতে পায় এক আগন্তুক সাজুর কবরের পাশে মরে পড়ে আছে।
সবাই বুঝতে পারে যে মানুষটি আর কেউ না হতভাগ্য রূপাই!
এভাবেই ইতি হয় এক পবিত্র প্রেমের!
0 মন্তব্যসমূহ
ℹ️ Your Opinion is very important to us, Please Writer your comment below about this Post.....