গ্রন্থটি সংক্ষেপে ‘তাহক্বীকে হিন্দ’ নামে পরিচিত। বাংলায় গ্রন্থটির বিভিন্ন অনুবাদ প্রকাশিত হয়েছে ‘ভারততত্ত্ব’ নামে।
হিন্দুদের নির্বুদ্ধিতা, নোংরামি ও মুসলিমবিদ্বেষী মনোভাব নিয়ে আল বিরুনী উনার রচিত উক্ত গ্রন্থে বিশদ আলোচনা করেছেন। যেমন তিনি গ্রন্থটির প্রথম অধ্যায়ে উল্লেখ করেছেন যে, “মুসলমানদের নাম শুনিয়ে, মুসলমানদের পোশাক পরিয়ে, মুসলমানদের চেহারার নকল করে হিন্দুরা শিশুদের ভয় দেখায়। মুসলমানদেরকে হিন্দুরা দৈত্যের সৃষ্টি বলে প্রচার চালায়, যার সবকিছু মানবীয় রুচি স্বভাবের বিপরীত।”
হিন্দুরা আলাদা আলাদা বসে পানাহার করে। তাদের খাবার জায়গা গোবরলিপ্ত হয়। তারা উচ্ছিষ্ট ফেলার জন্যে আলাদা পাত্র ব্যবহার করে না এবং যে পাত্রে তারা খায় তা মাটির তৈরি হলে খাওয়ার পরে ফেলে দেয়। তারা খালি পেটে মদ্যপান করে এবং তারপরে ভোজন করে। তারা গরুর মূত্রপান করে কিন্তু তার গোশত খায় না। তারা ঝাঁঝ, করতাল ইত্যাদি কাঠের ছড়ি দিয়ে বাজায়।
তারা পায়জামার (স্থলে) জন্য ধুতি ব্যবহার করে। যারা স্বল্প পোশাক পরতে চায়, তারা দু’আঙুল চওড়া কাপর তলপেটের নিচ দিয়ে গুপ্তাঙ্গকে আড়াল করে কাছা দিয়ে কোমরের সাথে বেঁধে নেয় (অর্থাৎ নেংটি পরে)। কিন্তু তাদের মধ্যে যারা বেশি কাপড় পরতে চায় তারা ধুতি পরে। যাতে একটা কাপড় লাগে যা দিয়ে, একটি চাদর ও কম্বল বানিয়ে নেয়া যায়। এ ধুতি এতটা লম্বা এবং চওড়া যে, তা পা পর্যন্ত পরে এবং পুরো শরীরকে ঢেকে দেয়া যায়। তা কোমরে পেঁচিয়ে পিছনে কাছা দিয়ে পরা হয়।
জুতো তারা ততক্ষণ পর্যন্ত পরতে শুরু করে না যতক্ষণ পর্যন্ত না তা শক্ত হয়। তারা বাছুরের চামড়া থেকে জুতো তৈরি করে। হাত-মুখ ধোয়ার সময় প্রথমে তারা পা ধোয়, তারপরে মুখ। তারা তাদের স্ত্রীদের সাথে একান্তবাসের পূর্বে গোসল করে।
ব্রত পালনের দিন তারা শরীরের সুগন্ধাদি মাখার পরিবর্তে তারা সারা শরীরে গোবর লেপন করে। পুরুষরা স্ত্রীদের অলঙ্কার পরিধান করে। তারা ভূষণাদি পরিধান করে, কানে দুল, বাহুতে কড়া, অনামিকা এবং পায়ের আঙ্গুলে স্বর্ণালঙ্কার পরিধান করে। তারা জিন ছাড়াই অশ্বারোহণ করে। আর যদি জিন তারা লাগায়ও তবুও তারা ঘোড়ার ডানদিক থেকে গিয়ে উঠে। আর ঘোড়ার পিঠে উঠে কোথাও গেলে তারা পিছনে একজনকে বসিয়ে নেয়।
নপুংসকদের সাথে সঙ্গমে অপারগ লোকদের তারা করুণা করে।
নপুংসকদের পুষ-িল বলা হয়। এরা পুরুষাঙ্গকে মুখে নিয়ে তার বীর্য গলঃধকরণ করে। মলত্যাগের সময় তারা প্রাচীরের দিকে মুখ করে পশ্চাৎদেশ পথচারীর দিকে উন্মুক্ত করে রাখে। তারা শিবের লিঙ্গ বা পুরুষাঙ্গের পূজা করে।
তারা তাদের কোমরের ডানদিকে কুঠার বেঁধে নেয়। তারা একটি মেখলা পরে, যাকে যজ্ঞোপবিত বলে। সেটি বাম কাঁধ থেকে ডানদিকের কোমর পর্যন্ত ঝোলানো থাকে। সমস্ত প্রকার কাজের পূর্বে এবং আপৎকালে তারা স্ত্রীর পরামর্শ গ্রহণ করে। সন্তান জন্মালে কন্যা সন্তানের চেয়ে পুত্র সন্তানের দিকে তারা বেশি মনোযোগী হয়। তাদের যমজ সন্তান জন্মালে ছোট সন্তানটির প্রতি তাদের মনোযোগ বেশি থাকে। বিশেষ করে দেশের পূর্বঞ্চলে এটা বেশি লক্ষ্য করা যায়।
বসার সময়ে তারা হাত বা অন্য কিছু দিয়ে এলোমেলো করে ঝাড় দিয়ে বসে। থুথু ফেলার বা নাক ঝাড়ার সময় আশেপাশে বসে থাকা লোকদের প্রতি তারা কোনো পরোয়া করে না। তারা প্রকাশ্যে মথা থেকে উকুন বেছে তাকে মারতে দ্বিধা করে না। তারা হাঁচিকে অশুভ মনে করলেও পশ্চাদদেশ হতে বায়ু নিঃসরণ ও তার গন্ধ নাকে আসাটাকে শুভ লক্ষণ বলে বিবেচনা করে। তারা জোলাদের নোংরা এবং নাপিত ও মুচিকে স্বচ্ছ বা পবিত্র জ্ঞান করে। যারা মরণাপন্ন পশুকে পানিতে ডুবিয়ে ও আগুনে পুড়িয়ে মারে তাদেরকে পবিত্র জ্ঞান করে।
তারা রজঃস্বলা ও গর্ভিনী স্ত্রীগমন করতো, হায়েজের গোসলের পর একাধিক পুরুষগমন করতো, নিজ স্ত্রী বা কন্যার গর্ভে অন্য ব্যক্তির বা অতিথির সন্তানকে নিজ সন্তান হিসেবে গ্রহণ করতো। তাদের পূজাপদ্ধতিতে, হাত ও মুখ দিয়ে শিস দেয়া এবং নোংরা ও মৃত পশুর গোশত খাওয়ার কথা না হয় বাদই দিলাম। মহান আল্লাহ পাক উনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ, সম্মানিত দ্বীন ইসলাম এসব কদর্যতার মূলোচ্ছেদ করেছে এবং ভারতবর্ষের যেসব জায়গার লোকেরা দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করেছে সেখানেও এসব জঘন্য ও গর্হিত কর্ম রহিত আছে।”
আল বিরুনীর উপরোক্ত বর্ণনায় একটি জিনিস স্পষ্ট হয় যে, সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার আগমনেই ভারতবর্ষ থেকে অসভ্যতা দূরীভূত হয়েছে, যেভাবে আইয়ামে জাহেলিয়াতের পর আরবে হয়েছিল। হিন্দুদের মধ্যে আজ যতোটুকু সভ্যতার লেশ রয়েছে, তার উসীলা হচ্ছে ভারতবর্ষের মুসলিম শাসনামল। মুসলিম শাসনামল না পেলে, মুসলমানদের গোলামির সৌভাগ্য না হলে হিন্দুরা আফ্রিকার জংলীদের চেয়েও অসভ্য-অভদ্র হতো। বর্তমানে যে ভারত সম্ভ্রমহানির দেশ হয়েছে, ভারত নামক দেশটা যে পাবলিক টয়লেটে পরিণত হয়েছে, তার পেছনে দায়ী ভারতে হিন্দুত্বের উত্থান।
0 মন্তব্যসমূহ
ℹ️ Your Opinion is very important to us, Please Writer your comment below about this Post.....