Post I'd 111273
বই: সাতকাহন।
লেখক: সমরেশ মজুমদার।
প্রখ্যাত কথা সাহিত্যিক সমরেশ মজুমদার এর জনপ্রিয় উপন্যাস "সাতকাহন " যা পাঠকদের হৃদয়ে আলোরণ সৃষ্টি করেছে।
উপন্যাসের মূল এবং প্রধান চরিত্র দীপাবলী। যার নামের মধ্যেই নিহিত আছে অন্ধকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করার আভাস।জন্মের পরপরই সে মাকে হারিয়েছে এবং যার বাবা নিখোঁজ তখন থেকেই।মাসি আর মেসমশাই এর কাছেই সে লালিত-পালিত হয়।তাদেরকেই একসময় মা বাবা বলে জানত।দশ বছর বয়সে মাত্র বাহাত্তর ঘণ্টার জন্য যার বিয়ে হয়।বিয়ের ঘটনার মধ্য দিয়েই তার জীবনের এই চরম সত্যটা প্রকাশ পায়।বিয়ের পরের দিন রাতেই একটি বিভৎস ঘটনার মধ্য দিয়ে ফুলশয্যার রাতে তার স্বামী অসুস্থ অবস্থায় মারা যায়।এবং সেই শশুড়বাড়ির একটি কাজের মহিলার সাহায্যে পালিয়ে যায় রাতের অন্ধকারে। এরপরই শুরু হয় তার জীবনের আরেকটি অধ্যায়। সে এক এক করে সব পরীক্ষায় সফলতার সাথে পাশ করে গ্র্যাজুয়েশন শেষ করে একটি সরকারি চাকরিতে নিয়োগ দেয়।সেখানেও তাকে তার সততা ও নিষ্ঠার চরমভাবে মূল্য দিতে হয়।এবং সে বাধ্য হয়ে সেই চাকরি থেকে রিজাইন নিয়ে চলে যায় তার পুরোনো বন্ধুর বাড়িতে।সেখান থেকেই সে আই এস এ পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়ে দিল্লি গিয়ে ভাগ্যের পরীক্ষায় জয় করতে পারে।ইন্ডিয়ান রেভিনিউ সার্ভিসের চাকরিতে যোগ দিয়ে নতুন জীবন সঙ্গী নির্বাচন করে সে।অতীতের সমস্ত খারাপ স্মৃতি মুছে দিয়ে সে নতুন জীবনের আলো দেখতে শুরু করে।যার নাম আলোক মুখার্জি । যে তার জীবনে আরেকটি আলোর বার্তা হয়ে এসেছিলো।কিন্তু সেই আলোক কি সত্যিই তার জীবনে পরিপূর্ণতা আনতে পারে?নানা ঘাত-প্রতিঘাত সামলিয়ে নিজের ভাগ্যের সাথে বিদ্রোহ করে যে একটি সুন্দর সুস্থ জীবনের স্বপ্ন দেখে সে কি শেষ পর্যন্ত সুখী হতে পারে?
সুখী হওয়ার জন্য যে জীবনের চূড়ান্ত সফলতার শেকড়ে পৌঁছাতে চায় সে হয়তো একসময় তা পেরেও যায়।কিন্তু দীপাবলীরা হয়তো তার ব্যক্তিত্ব,সততা,আত্মনিষ্ঠার বলি দিয়ে সেই চূড়ান্ত সুখী হতে পারেনা।
দীপাবলীরা সারাজীবন জীবনের প্রতিটি মূহুর্তে সংগ্রাম করে যায় একটা সুস্থ জীবনের প্রত্যশায়।
দিনশেষে এই দীপাবলীরাই সমাজকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে সমাজের অসুস্থ অসাধু মানুষগুলোকে হারিয়ে দিয়ে জিতে যায়।
পাঠ প্রতিক্রিয়া: বইটা ভালো বললেও মনে হয় কম বলা হবে।আমি মনে করি এটা সমরেশ মজুমদার স্যারের বেস্ট বই(ব্যাক্তিগত মতামত)।
কেননা বইটাতে একটা মেয়েকে মেলে ধরার জন্য যা কিছু দরকার সবই আছে।একটা মেয়েকে কিভাবে আত্মসম্মান নিয়ে বেঁচে থাকতে হয়,কিভাবে সমাজের সাথে নিজেকে মানিয়ে নিতে হয় এসব কিছুর দর্শন মিলবে বইটাতে।এটা হাজার হাজার মেয়ের জন্য নিঃসন্দেহে একটা অনুপ্রেরণা মূলক বই।তাই আমি মনে করি বইটা প্রত্যকটা মেয়েরই অবশ্যই পাঠ্য।বইটা পড়ে ভালো তো লাগবেই এবং অনেক কিছু জানতেও পারবে।
বি:দ্র: বইটা আমার অনেক আগের পড়া।এবছরের প্রথম পড়া বই ছিলো।অন্যগ্রুপে রিভিউ দিয়েছিলাম বটে।কিন্তু এইগ্রুপে আজকে আবার দিলাম।এটা নেহাতই ভালোলাগা থেকে দিলাম।
ভুলক্রুটি হলে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন আশা করি।
ধন্যবাদ।
0 মন্তব্যসমূহ
ℹ️ Your Opinion is very important to us, Please Writer your comment below about this Post.....