বইঃ যদ্যপি আমার গুরু। লেখকঃ-আহমেদ ছফা pdf

বইয়ের নামঃ- যদ্যপি আমার গুরু।
লেখকঃ-আহমেদ ছফা।
বই প্রকাশঃ- ফ্রেরুয়ারী ১৯৯৮।
প্রকাশনাঃ- মাওলা ব্রাদার্স । 
পৃষ্ঠা সংখ্যাঃ- ১১০।
ব্যাক্তিগত রেটিংঃ-৫/৫।
বইয়ের মূল্যঃ- ৮০৳(আমি পিডিএফ পড়েছি,দয়াকরে কেউ পিডিএফ চাইবেন না  )
ক্যাটাগরিঃ- সৃতিচারণ ।
পড়ার কাজটা অইলো অন্য রকম।আপনে যখন মনে করলেন,কোন বই পইড়্যা ফেলাইলেন,নিজেরে জিগাইবেন যে বইডা পড়ছেন,নিজের ভাষায় বইটা আবার লিখতে পারবেন কিনা। আপনার ভাষার জোর লেখকের মতো শক্তিশালী নাও অইতে পারে,আপনের শব্দ ভান্ডার সামান্য অইতে পারে,তথাপি যদি মনে মনে আসল জিনিসটারে রিপ্রডিউস না করবার পারেন,ধইরা নিবেন,আপনের পড়া অয় নাই

বিঃদ্রঃ-আমি ফ্রি পিডিএফ পড়া কখনোই সমথর্ন করিনা, যতটা সম্ভব বই কিনে পড়ি। কোভিন-১৯ এর কারনে গ্রামের বাড়িতে চলে আসায়, মাত্র ৫টা বই নিয়ে আসি যা ইতিমধ্যেই পড়া শেষ। তাই বাধ্য হয়ে ফ্রি পিডিএফ পড়েছি। আপনাদের প্রতি অনুরোধ করছি যতটা সম্ভব বই কিনে পড়ুন। হার্ড কভারে আলাদা মজা পাবেন। 

লেখক পরিচিতঃ- আহমেদ ছফার জম্ন চট্টগ্রামে ১৯৪৩ সালে।সাহিত্যের প্রতিটি শাখায় প্রতিভার সাক্ষর রেখেছেন। 

Don't judge a book by It's  cover আপনি কখনো এই বাক্যটি ফেজ করেছেন। আমি করেছি,এই বইটি পড়ার সময়। আহমেদ ছফার নাম শুনেছি অনেক কিন্তু তার কোন বই পড়া হয়নি এর আগে,এইটাই প্রথম। বইটির প্রতি আমার কোন আগ্রহ ছিল না,কোথায় যেন একটা রিভিউ দেখেছিলাম মনে হয়।বাংলা বইয়ের পিডিএফের ওয়েব ঘাঁটতে ঘাঁটতে হঠাৎ করেই চলে এল সামনে ভাবলাম দেখি পড়ে কেমন। 

ওমা বইটির প্রতি এত আকর্ষন হয়ে যাবে আগে ভাবিনি। রাত ৭ টার দিকে শুরু করেছিলাম। সকাল হতে না হতেই বইটি পড়া শেষ। এমন আকর্ষন আমি অন্য কোন বইয়ে পাইনি। 

বইটি মূলত একটা সৃতিকথা,যাতে ফুটে উঠেছে বাংলাদেশ জাতীয় অধ্যাপক আবদুর রাজ্জাক স্যারের সাথে আহমেদ ছফার সাক্ষাৎতে কথোপকথন। উঠে এসেছে সেই মহান মানুষের দৈনন্দিন জীবন যাপনের চিত্র। 

উঠে এসেছে এই মহান মানুষটার আচার ব্যবহার,বিশ্বাস, দৃষ্টি এবং অতিথি আপ্যায়নে চিত্র। 
কোথাও কোথাও উল্লেখ করা আছে বাংলার মহান ব্যাক্তিদের কাজ-কর্ম এবং ব্যাক্তি জীবন। লেখক লিপিবদ্ধ করছেন ড.কামাল হোসেন ও মিসেস হোসেনের বিবাহের ব্যাপারটা। কথায় কথায় উঠেছে কাজী মোতাহার হোসেন, মুনীর চৌধুরী, কাজী নজরুল ইসলাম, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ সহ আমাদের পরিচিত অপরিচিত বিখ্যাত ব্যাক্তিদের সাথে এই গুনী মানুষটার চলাফেরা ও তাদের সর্ম্পকে তার মতামত। তার কয়েকটি উক্তি উল্লেখ করেছেন লেখক-


মৌলবি আহমেদ ছফা(আহমেদ ছফাকে মৌলবি আহমেদ ছফানামে ডাকতেন) যখন কোন নতুন জায়গায় যাইবেন দুটি বিষয় পয়েলা জানার চেষ্টা করবেন। ওই জায়গার মানুষ কি খায়। আর পড়ালেখা কী করে।কাঁচা বাজারে যাইবেন, কি খায় এইডা দেহনের লাইগ্যা। আর বইয়ের দোকানে যাইবেন পড়াশোনা কী করে হেইডা জাননের লইগা।

যে জাতি যত সিভিলাইজড তাদের রান্না-বান্নাও তত বেশি সফিস্টিকেটেড।

বাংলাভাষাডারে বাঁচাইয়া রাখছে চাষাভূষা-মুটেমজুর। এরা কয় দেইখ্যাইতো কবি কবিতা লিখতে পারে।সংস্কৃত কিংবা ল্যাটিন ভাষায় কেউ কথা কয় না,হের লাইগ্যা অহন সংস্কৃত কিংবা ল্যাটিন ভাষায় সাহিত্য লেখা হয় না। 
❤পুস্টিকর খাবারের দুস্প্রাপ্যতাই মানুষের স্বাস্থহানির প্রধান কারন।
❤তাড়াহুড়া কইরেন না,কি পড়ছেন হেইডা আগে বুঝার চেষ্টা করেন।
❤পড়ার সময় নোট রাখছেন নি,ক্ষেত চষবার সময় জমির আইল ব্যাইন্দা রাখতে অয়।

পড়ার কাজটা অইলো অন্য রকম।আপনে যখন মনে করলেন,কোন বই পইড়্যা ফেলাইলেন,নিজেরে জিগাইবেন যে বইডা পড়ছেন,নিজের ভাষায় বইটা আবার লিখতে পারবেন কিনা।আপনার ভাষার জোর লেখকের মতো শক্তিশালীনাও অইতে পারে,আপনের শব্দ ভান্ডার সামান্য অইতে পারে,তথাপি যদি মনে মনে আসল জিনিসটারে রিপ্রডিউস না করবার পারেন,ধইরা নিবেন,আপনের পড়া অয় নাই।

এখানে আমি একটা কিছু সংযোজন করতে চাই,যা বইটি পড়ার আগে একটু দেখে নিলে ভাল হয়-
আব্দুর রাজ্জাক (১৯১৪ - ২৮ নভেম্বর, ১৯৯৯) বাংলাদেশের একজন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ এবং বুদ্ধিজীবী। 


১৯৭৩ সালের প্রথমদিকে ভারতের দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় তাকে পিএইচডি প্রদান করে। ১৯৭৫ সালে বাংলাদেশ সরকার তাকে জাতীয় অধ্যাপকহিসেবে মনোনীত করে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানঃ-ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। উল্লেখযোগ্য রচনাবলিঃ-State of the Nation: জাতির অবস্থা। দাম্পত্যসঙ্গীঃ-অবিবাহিত(বাংলা উইকিপিডিয়া)।
পরিশেষে এটুকুই বলবো, অনবদ্য ছিল বইটি। এক কথায় অসাধারণ। আশাকরি ভাল লাগবে বইটি।


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ