বইয়ের নামঃ জীবনে যা দেখলাম (১ম থেকে চতুর্থ খন্ড)
লেখকঃ অধ্যাপক গোলাম আযম।
বইটি মূলত অধ্যাপক গোলাম আযমের জীবনী। প্রথম খন্ডে ১৯২২ সাল থেকে ১৯৫২ সাল পর্যন্ত ঘটনাবলী আলোচিত হয়েছে। এই খন্ডে রাজনৈতিক ঘটনাবলী খুব কমই এসেছে। গত দু রাতে শুয়ে ঘুমানোর পূর্বে মূলত বইটি পড়েছি। খুবই সহজ সরল ভাষায় বইটি লেখা। আমার কাছে মনে হয়েছে যেন দাদার কাছে শুয়ে তার শৈশব, কৈশোর আর যৌবনের গল্প শুনছি। হুমায়ূন আহমেদের পর অন্য কারও লেখায় এই প্রথম এ ধরনের সেন্স হিউমার পেলাম, যেগুলো পড়ে হাসি আটকিয়ে রাখা কষ্টসাধ্য। লেখক যদিও দাবী করেছেন তার লেখা সাহিত্যিক মানউত্তীর্ণ না, কিন্তু কবি আল মাহমুদ তার এই কথার বিরোধিতা করে বইয়ের সাহিত্যিক মানের প্রসংশা করেছেন। আপনি যে মতাদর্শেরই হন বইটি আপনার জন্য সুখপাঠ্য হবে বলে আমার ধারণা।
প্রথমেই লেখক তার বাল্যকাল, গ্রামীন জীবন, বংশপরিচিতি উল্লেখ করেছেন। লেখকের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিবর্তনের সাথে শিক্ষা ব্যবস্থার বর্ননাও উঠে এসেছে। লেখক ইংরেজ আমলে শিক্ষায় মুসলিমদের পিছিয়ে যাওয়ার কারণও সংক্ষেপে তুলে এনেছেন।
লেখকের পরিবারের প্রচন্ড ধার্মিকতা ফুটে উঠেছে। উনার বাবা ধর্মীয় কোন ক্ষেত্রে ছাড় দিতে রাজি ছিলেন না। এক্ষেত্রে লেখকের ছোট ভাই ডাঃ গোলাম মোয়াযযমের ঘটনাটি উল্লেখযোগ্য।
প্রসঙ্গক্রমে মাওলানা শামসুল হক ফরিদপুরী এবং মাওলানা নূর মুহাম্মদ আযমী সাহেবের কথাও এসেছে। লেখক তাদের সাথে গভীর সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে উচ্ছ্বসিত প্রসংশা করেছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন পরিস্থিতি, হিন্দু মুসলিম দাঙ্গা, ভাষা আন্দোলনের সময়কার ঘটনাগুলোও লেখায় উঠে এসেছে।
মুসলিম লীগের তৎকালীন পরিস্থিতিও সংক্ষিপ্তভাবে তুলে ধরেছেন। তাছাড়া ভারত ভাগের পূর্ব পরিস্থিতি এবং ভাগ না হলে মুসলিমদের পরিণাম কি হত তাও ফুটে উঠেছে।
লেখক তাবলীগ জামাতে তার দীর্ঘ অভিজ্ঞতার বর্ননা করেছেন। তাবলীগ জামাতের ভাল দিকগুলো উল্লেখ করে খুব প্রসংশা করেছেন এবং সীমাবদ্ধতা গুলোও তুলে ধরেছেন। এখানে প্রসঙ্গক্রমে নামাজের ফরজ, ওয়াজিব এবং সুন্নত মনে রাখার সুন্দর সিস্টেম উল্লেখ করেছেন। সেই সাথে নামাজে মনযোগ রাখার জন্য গুরুত্বপূর্ণ কিছু পয়েন্ট তুলে ধরেছেন।
ক্রিকেট খেলা নিয়ে তার পরিবারের সাথে অনেক মজার কথা উঠে এসেছে। তাছাড়া খেলাধুলায় রাজনৈতিক প্রভাবের দিকটিও উঠে এসেছে।
শেষের দিকে তার বিয়ের ঘটনা প্রসঙ্গে ইসলামের আলোকে বিয়ের অনেক পর্যালোচনা উঠে এসেছে। এছাড়া তিনি পারিবারিক ক্ষেত্রে খুবই মূল্যবান কিছু উপদেশও উল্লেখ করেছেন।
সবশেষে যারা ব্রিটিশ আমলের শেষের দিকে এবং পাকিস্তান আমলের প্রথম দিকের সময়ে ঘুরে আসতে চান, তাদের জন্য বইটি সুখপাঠ্য বলে বিবেচিত হবে।
৪র্থ খন্ড → ডাউনলোড
৫ম খন্ড → ডাউনলোড
৬ষ্ট খন্ড → ডাউনলোড
৭ম খন্ড → ডাউনলোড
৮ম খন্ড → ডাউনলোড
৯ম খন্ড → ডাউনলোড
0 মন্তব্যসমূহ
ℹ️ Your Opinion is very important to us, Please Writer your comment below about this Post.....