বই: আত্মার ঔষধ

Post ID 111457


পাপ অন্তরকে অসুস্থ করে তোলে
.
পাপ অন্তরের সুস্থতাকে অসুস্থতায় পাল্টে দেয়। অবিচলতার গৌরব কেড়ে নেয় এবং পদস্খলনের পোশাক পরায়। দৃশ্যমান জগতে আমরা দেখি, জীবন ধারণের জন্য খাদ্য অপরিহার্য হলেও অসুস্থ ব্যক্তি এর দ্বারা খুব একটা উপকার পায় না। অন্তরের ওপর পাপের কুপ্রভাব এমন অসুস্থ শরীরের মতোই । বরং পাপ নিজেই অন্তরের অসুস্থতা, অন্তরের রোগ-বালাই। আর এর চিকিৎসা একটাই, পাপ ছেড়ে দেয়া। অন্যায়ের অন্ধকার থেকে বেরিয়ে আসা।
.
আল্লাহওয়ালারা এই বিষয়ে একমত যে, মাওলার কাছে ফিরে যাওয়া পর্যন্ত অন্তরের আশা অপূর্ণ থাকবে। কিন্তু নিষ্কলুষ ও সুস্থ অন্তর ছাড়া মাওলার নিকট পৌঁছানো মানেই ঘোর বিপদ। এজন্য প্রয়োজন রোগ-বালাই হতে অন্তরকে নিরাপদ রাখা, প্রবৃত্তির হারাম খায়েশ পরিত্যাগ করা। এই প্রবৃত্তিই হলো তার অসুস্থতা, আর এর চিকিৎসা হলো তার অবাধ্য হওয়া। মন যা চায় তাতে সাড়া না দেওয়া। কেননা অন্তরে এই রোগ জেঁকে বসলে ধ্বংস অনিবার্য। আর যদি ধ্বংস করতে ব্যর্থ হয়, তবুও নিশ্চিতভাবে তা ধ্বংসের শেষ সীমায় পৌঁছে দেয়। 
.
যে প্রবৃত্তির চাহিদা দমন করে, জান্নাত তারই আবাস। বেঁচে থাকতেই দুনিয়ায় সে জান্নাত পেয়ে ধন্য হয়। তবে সত্যিকারের জান্নাতের সাথে এই জগতের সুখকে গুলিয়ে ফেললে হবে না। উভয় জগতের নিয়ামাতের মাঝে যেমন বিস্তর পার্থক্য, দুনিয়া ও আখিরাতের সুখের মাঝেও রয়েছে অনুরূপ পার্থক্য। বিষয়টি পুরোপুরি বুঝতে হলে অন্তর দিয়ে গভীরভাবে উপলব্ধি করা অপরিহার্য।
.
إِنَّ الْأَبْرَارَ لَفِيْ نَعِيْمٍ ﴿١٣﴾ وَإِنَّ الْفُجَّارَ لَفِيْ جَحِيْمٍ ﴿١٤﴾ 
“নিশ্চয়ই পুণ্যবানগণ থাকবে পরম স্বাচ্ছন্দ্যে; আর পাপীরা থাকবে জাহান্নামে।” (সূরা ইনফিতার, ৮২ : ১৩-১৪)
.
তবে এই স্বাচ্ছন্দ্য এবং জাহান্নামকে স্রেফ পরকালের মাঝে সীমাবদ্ধ মনে করবেন না। মানুষ তার তিন জীবনেই এর দেখা পায়; দুনিয়ার জীবনে, বারযাখি জীবনে এবং আখিরাতের চিরস্থায়ী জীবনে। পুণ্যবানরা এই তিন জীবনেই স্বাচ্ছন্দ্যে থাকে। অন্যদিকে পাপীদের সব জীবনই জাহান্নাম। 
.
অন্তর যদি হয় সুখশূন্য, তাহলে কীসে সুখ মিলবে? 
অন্তরই যদি হয় আযাবের আগুনে সদা দগ্ধ, 
তাহলে এর চেয়ে বড় আযাব আর কী হতে পারে? 
আর কোন আযাব আছে, যা ভয়, দুশ্চিন্তা আর হতাশার মতো কঠিন? 
.
.
'আত্মার ওষুধ' বই থেকে...

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ