বইয়ের নাম:আগামী দিনের পৃথিবী। লেখক:শহীদ ড.আব্দুল্লাহ আযযাম রহ.

Post ID 111492
বইয়ের নাম:আগামী দিনের পৃথিবী।
লেখক:শহীদ ড.আব্দুল্লাহ আযযাম রহ.
অনুবাদ:শায়খ আব্দুস সাত্তার আইনী
প্রকাশনী:মাকতাবাতুল ইসলাম
সংস্করন:১ম
প্রথম প্রকাশ:ফেব্রুয়ারি,২০১৬ খ্রি.
পৃষ্ঠা:৯৬
মুদ্রিত মূল‍্য:১৪০ টাকা
আইএসবিএন নম্বর:978-984-91049-7-1


"তারা ষড়যন্ত্র করে এবং আল্লাহও কৌশল করেন,আল্লাহই শ্রেষ্ঠ কৌশল অবলম্বনকারী।"
-সূরা আনফাল,আয়াত-৩০

বইয়ে যা আছে:
কিছু কারন এবং যৌক্তিকতা রয়েছে,যেগুলো আল্লাহর অনুগ্রহে আমাদেরকে বিশ্বাস করতে বাধ‍্য করেছে যে,ভবিষ্যৎ হবে এই দ্বীনের,ইসলামের।
গুরুত্বপূর্ণ যুক্তিসঙ্গত কারণগুলো হলো:

১.কেবল এই দিনই মানুষের জন‍্য উপযোগী এবং মানুষের স্বভাবের সাথে সামঞ্জস্যশীল।
২.পাশ্চাত্য সভ‍্যতার ধ্বংস এবং বিলুপ্তি।
৩.কুরআন ও সুন্নাহর স্পষ্ট সুসংবাদ
৪.পৃথিবীর বুকে বাস্তব সুসংবাদ।

এসব যৌক্তিক কারণ আল্লাহর অনুগ্রহে আমাদেরকে বিশ্বাস করতে বাধ‍্য করেছে যে ,এই দ্বীনের উদ‍্যানের ছায়াতেই মানবতা  মুক্তি ও স্বস্তি পাবে।

আগামী দিনের পৃথিবী বইটি শহীদ ড. আব্দুল্লাহ আযযাম রহ . এর একটি গবেষণামূলক গ্রন্থ ।বইটিতে তিনি উপরোক্ত চারটি বিষয়ের বিস্তারিত আলোচনা করেছেন।এবং দেখিয়েছেন যে,ভবিষ্যতে একমাত্র ইসলামই সারা পৃথিবীতে একমাত্র জীবনব‍্যবস্থা হিসেবে টিকে থাকবে,এবং মুসলমানরা সাড়া পৃথিবীর শাসন করবে।

বইটির প্রথমে "ইসলাম ও মানবতার ভবিষ্যৎ"শীর্ষক শিরোনামের অধীনে লেখক রহ . উক্ত চারটি বিষয় তুলে ধরেছেন।তারপর উপরোক্ত চারটি বিষয়কে চারটি অধ‍্যায়ে বিন‍্যস্ত করে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন।

প্রথম যুক্তিসম্মত কারণ:
এ অধ‍্যায়ের আলোচ‍্য বিষয় হলো ইসলাম মানুষের ধর্ম এবং মানুষের স্বভাবধর্ম।লেখক রহ. এ মতের পক্ষে কোরআন এবং হাদিস থেকে একাধিক যুক্তিসম্মত কারণ দেখিয়েছেন।

দ্বিতীয় যুক্তিসম্মত কারণ:
এ অধ‍্যায়ের আলোচ‍্য বিষয় হলো পাশ্চাত্য সভ‍্যতার ধ্বংস ও বিলুপ্তি।
এর অধিনে লেখক রহ. আরো চারটি অনুচ্ছেদের মাধ‍্যমে পাশ্চাত্য সভ‍্যতার ধ্বংসের কারন বর্ণনা করেছেন‌।
১.পশ্চিমা চিন্তার ট্রাজেডি
২.সমাজের জন‍্য আল্লাহর বিধান।
৩.আত্মিক শূন‍্যতা-সৃষ্ট বিপর্যয়।
৪.সমাজতান্ত্রিক প্রাচ‍্যের পতন।
বইটির মূল বিষয়বস্তু জানতে এই অধ‍্যায়টা পাঠ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

তৃতীয় যুক্তিসম্মত কারণ:
এ অধ‍্যায়ের আলোচ‍্য বিষয় হলো কোরআন ও সুন্নাহর সু-স্পষ্ট সংবাদ।
এ অধ‍্যায়টি লেখক রহ. দুইটি অনুচ্ছেদে আলোচনা করেছেন।
১.শামের (সিরিয়ার) শ্রেষ্ঠত্ব
২.হিরাক্লিয়াস-সম্বন্ধীয় হাদিস।

চতুর্থ যুক্তিসম্মত কারণ:
এ অধ‍্যায়টিতে লেখক রহ. বাস্তব জীবনের বাস্তব সুসংবাদ (অর্থাৎ মানুষের আল্লাহর দিকে ফিরে আসা) এবং ইসলামি সমাজ প্রতিষ্ঠার পথ নিয়ে আলোচনা করেছেন।
এ অধ‍্যায়টি হচ্ছে বইটির সারমর্ম।

বইটির শেষদিকে বইয়ে উল্লিখিত বিভিন্ন প্রাচ‍্যবিদদের পরিচয় দেয়া আছে।যা দ্বারা আপনি তার কথা বইয়ে আনার কারন জানতে পারবেন।

নিজের মন্তব‍্য:
আমি এই পর্যন্ত ইসলামিক অনৈসলামিক দার্শনিকদের  লেখা গুটিকয়েক গবেষণামূলক বই পড়েছি।এর মধ‍্যে "আগামী দিনের পৃথিবী" বইটি সবচেয়ে ভালো লাগা গবেষণামূলক বই।
বইটি এজন‍্য আমার সবচেয়ে ভালো লেগেছে যে ,বইটিতে লেখক রহ . সময়ের ঘটে যাওয়া বিভিন্ন ঘটনা,কোরআন এবং হাদিসের স্পষ্ট বাণীসমূহের  দ্বারা প্রমান করে দেখিয়েছেন যে ,ভবিষ্যতে একমাত্র ইসলাম-ই  জীবনব‍্যবস্থা হিসেবে টিকে থাকবে।যখন অন‍্যান‍্য সকল জীবনব‍্যবস্থা এবং তন্ত্র-মন্ত্র লেজ গুটিয়ে পলায়ন করবে।

বইটির সবকিছুই আলহামদুলিল্লাহ আমার কাছে ভালো লেগেছে।

বইটি কেন পড়া উচিত:
বইটি আমার পড়া গবেষণামূলক গ্রন্থগুলোর মধ‍্যে সর্বাধিক বাস্তবসম্মত এবং গ্রহনযোগ্য।
বইটি পড়ে বিভিন্ন মানবসৃষ্ট জীবনব‍্যবস্থা এবং তন্ত্র-মন্ত্রের পতন হবার কারন এবং ইসলামের সু-স্পষ্ট বিজয় হবার কারণ সম্বন্ধে একজন পাঠক সহজেই জানতে পারবে।
এবং ইসলামের এই বিজয় বসন্তের একজন গর্বিত অংশীদার হওয়ার চেষ্টাও করবে।
আল্লাহ আমাকে এবং সবাইকে এর জন‍্য কবুল করুন,আমিন।

লেখকের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি:
শহীদ ড.আব্দুল্লাহ আযযাম রহ. ১৯৪১ সালে ফিলিস্তিনের জেনিন প্রদেশের আসবাহ আল হারতিয়া নামক গ্রামে জন্মগ্রহন করেন।

তিনি নিজের এলাকায় প্রাথমিক এবং মাধ‍্যমিক শিক্ষা লাভের পর দামেশক বিশ্ববিদ্যালয় এবং আল-আযহার বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষা লাভ করেন।
তিনি কিং ফাহাদ বিশ্ববিদ্যালয়,জেদ্দা এবং আন্তর্জাতিক ইসলামি  বিশ্ববিদ্যালয়,ইসলামাবাদ এ শিক্ষকতা করেন।
লেখক রহ. ছিলেন একজন আল্লাহর রাস্তার মুজাহিদ।তিনি ফিলিস্তিন এবং আফগানিস্তান এর জিহাদে সরাসরি অংশগ্রহণ করেন।

লেখক রহ. একজন বড় মাপের লেখকও ছিলেন।
ওনার রচিত তাফসীরে সূরা তওবা বিশ্বব‍্যাপি সমাদৃত একটি কিতাব।
এছাড়াও কারা জান্নাতী কুমারীদের ভালোবাসে,ফিলিস্তিনের স্মৃতি,লাল কর্কট,মুসলিম ভুমির প্রতিরক্ষা,সিরাত থেকে শিক্ষা,হারানো মিনার,যুবকদের প্রতি আহ্বান ইত‍্যাদি তার শ্রেষ্ঠ রচনা।

১৯৮৯ সালের ২৪শে নভেম্বর পেশোয়ারে জুমার নামায পড়তে যাওয়ার পথে শত্রুদের পুতে রাখা মাইন বিস্ফোরণে লেখক রহ. শহীদ হন।
আল্লাহ উনাকে জান্নাতুল ফিরদাঊস নসীব করুন।আমিন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ