বই : প্রাসাদপুত্র
লেখক : মাহিন মাহমুদ
বাঁধাই ধরন : হার্ডব্যাক
পৃষ্ঠা সংখ্যা : ২৪৮
জাকির খন্দকার দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল, ‘কিন্তু এখন আর পর্দায় রেখেই কী করব! সে তো এখন আমার নাই। সে হয়ে গেছে নাজিরের।’
আমি বললাম, ‘জাকির ভাই, একটা কথা বলি?’
‘বলেন।’
‘আমার কেন যেন মনে হচ্ছে, আপনার স্ত্রী নির্দোষ। আপনি তাকে অযথাই সন্দেহ করছেন। আমার ধারণা, আপনাকে খুশি রাখতেই তিনি আপনার বন্ধুদের সঙ্গে হেসে হেসে কথা বলতেন। সেই রাতে তিনি আপনার জন্যই সেজেগুজে অপেক্ষা করছিলেন। যত্ন করে আপনার জন্য ভালোমন্দ রান্না করেছিলেন। আপনিও মজা পেয়ে সেই রান্না পেটপুরে খেয়েছেন। খাবার বেশি খেলে ঘুম বেড়ে যায়। আপনারও ঘুম বেড়ে গেল। যার কারণে ঘুম থেকে উঠতে দেরি হয়েছিল। আমার ব্যাক্তিগত বিশ্লেষণ এমনটাই বলছে। অবশ্য, আমার বিশ্লেষণ ভুলও হতে পারে!’
‘চুরিটা সে না করাইলে আর কে করাবে?’
‘আপনার কোনো কর্মচারীও তো করতে পারে। হয়তো আগে থেকেই সে তালাগুলোর ডুপ্লিকেট চাবি বানিয়ে নিয়েছে!’
‘কর্মচারীর দোষ নাই। সে একটা বাচ্চা ছেলে। সে জীবনেও এই কাজ করার সাহস পাইব না।’
‘কর্মচারীর নাম কী?’
‘রাজু।’
‘চুরি হওয়ার পর রাজুর সাথে যোগাযোগ করেছিলেন?’
‘না।’
‘করা দরকার ছিল। আজকাল অল্প বয়সেই ছেলেপিলেরা চুরিবিদ্যায় পাকাপোক্ত হয়ে যাচ্ছে।’
জাকির খন্দকার কিছুতেই এই কথা মেনে নিতে পারছে না। সে কর্মচারীকে কেন যেন দোষ দিতে চাচ্ছে না। তার দৃষ্টি স্ত্রী বকুলমালার দিকেই। আমি বললাম, ‘স্ত্রীকে সন্দেহ করে নিজের সংসারে অশান্তি ডেকে আনবেন না। নিজের মধ্যেও যে কিছু না কিছু সমস্যা থাকতে পারে এই কথাও ভাবা দরকার। আপনি তাকে সন্দেহ করেন দেখেই হয়তো তিনি সেই রাতে সন্দেহ দূর করতে চেয়েছিলেন। সেজেগুজে আপনাকে আকৃষ্ট করে আপনাকেই তার ভালোবাসার বন্ধনে আবদ্ধ রাখতে চেয়েছিলেন।’
পুরুষরা অনেক সময় নিজের দোষগুলো দেখে না। দিনের পর দিন একচেটিয়া স্ত্রীকেই দোষ দিতে থাকে। স্ত্রীকে অবিশ্বাস করার ঘটনা সামনে আসতেই আমার ডিবি অফিসার রিয়াজ রহমানের কথা মনে পড়ে গেল। তার সমস্যাটাও ছিল অনেকটা জাকির হোসেনের সমস্যার মতোই।
0 মন্তব্যসমূহ
ℹ️ Your Opinion is very important to us, Please Writer your comment below about this Post.....