বই-মধ্যমপন্থা (কি, কেন, কীভাবে) লেখক- ইউসুফ আল কারজাবি

Post ID 111412
বই-মধ্যমপন্থা (কি, কেন, কীভাবে)
লেখক- ইউসুফ আল কারজাবি
অনুবাদক-শাইখুল আজম আবরার
প্রকাশনী- গার্ডিয়ান পাবলিকেশন্স
মূল্য-১০০ টাকা (Fixed Price)
পৃষ্ঠা_সংখ্যা- ৮৭
আমার সবসময়ের অভ্যাস, যে কোন বইয়ের লেখক পরিচিতি থেকে লেখকের, প্রকাশকের, অনুবাদকের কথা (অনুবাদ বই হলে) কিছুই বাদ দি না!

পড়া চলছে এখন 'মধ্যমপন্থা' বইটি। যতটুকু পড়া হয়েছে তা থেকে লিখলাম কিছুটা......


"বড্ড কঠিন সময় পাড়ি দিচ্ছে মুসলিমরা। প্রান্তিকতার এই অস্থির সময়ে তাই মধ্যমপন্থার আলোর মশাল জ্বালিয়ে দিতে হবে প্রতিটি অন্তরে। 
চরম কিংবা নরম দুটো পন্থাই বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে। তাই, প্রান্তিকতার দেয়াল ভেঙে মুক্তির নতুন সূর্য আনতে 'মধ্যমপন্থা' হতে পারে সফল মাধ্যম।"

শাইখ ইউসুফ আল কারজাভির মধ্যমপন্থার ব্যাখ্যা, ক্ষেত্র, পরিসীমা ও প্রয়োগবিধি নিয়ে চমৎকার উপস্থাপনা 'ওয়াসাকিয়্যাহ' (মধ্যমপন্থা) বইটিতে এ সম্পর্কে অনেক কিছু জানা যায় এবং ভাবনার খোরাক পাওয়া যাবে।

#প্রকাশকের_কথা

দুই ধরনের প্রান্তিকতার সাথে আমাদের বসবাস। একদিকে চরম বাড়াবাড়ি, অন্যদিকে চরম ছাড়াছাড়ি। এ'দুটোই ক্ষতিকর। বাড়াবাড়ি এবং শিথিলতার মাঝামাঝি পন্থার নাম হচ্ছে 'মধ্যমপন্থা'।

আজকের এ কঠিন সময়ে মধ্যমপন্থার বোঝাপড়াটা খুবই জরুরী। প্রান্তিকতার নামে কোনো বাড়াবাড়ি যেমন অপ্রত্যাশিত,  ঠিক তেমন শিথিলতার নামে বুনিয়াদি ভিত্তিকে ধ্বংস করাটা বোকামি ও অনভিপ্রিত! মধ্যমপন্থি জাতি হিসেবে এই দুনিয়াকে গড়তে মুসলমানদের দায় ও দায়িত্ব অনেক বেশি।

#লেখকের_কথা

পূর্বের যতগুলো জাতি-গোষ্ঠী ধ্বংসের মুখোমুখি হয়েছে, তাদের প্রত্যেকেই দুটো পথের যেকোন একটিকে অনুসরণ করেছে। একটি হলো-'গুলু' এর পথ, অন্যটি হলো 'ইনহিলাল' এর পথ।

'গুলু' শব্দের মানে হলো-ওয়াজিব বা কর্তব্য এবং নিষেধাজ্ঞার ব্যাপ্তিকে অপ্রয়োজনীয় ও অনাকাঙ্ক্ষিত বৃদ্ধি করা। আল্লাহ তায়ালা যে রুখসাত বা অবকাশগুলো দিয়েছেন, সেগুলোকে পাত্তা না দিয়ে আল্লাহর বান্দাদের ওপর কঠোরতা, বাড়াবাড়ি ও কাঠিন্য আরোপ করা এবং এর মাধ্যমে মানুষকে ঝামেলা আর সমস্যায় ফেলে দেওয়া।

আর 'ইনহিলাল' শব্দের মানে হলো আল্লাহ প্রদত্ত আদেশ ও নিষেধাজ্ঞাগুলো অমান্য করে হারামগুলোকে হালাল সাব্যস্ত করা। ওয়াজিব বা আবশ্যকীয় কর্তব্যের বিষয়গুলোতে শিথিলতা প্রদর্শন করে আল্লাহ প্রদত্ত সীমাগুলোকে লঙ্ঘন করার মধ্য দিয়ে বিশৃঙ্খলা, ছাড়াছাড়ি ও শৈথিল্য প্রদর্শন করা।

কিন্তু প্রকৃতপক্ষে সমূহ কল্যাণ নিহিত থাকে মধ্যমপন্থার মধ্যেই। কারণ মধ্যমপন্থা হলো এমন একটি পদ্ধতি,  যেটি বাড়াবাড়ি ও ছাড়াছাড়ি এবং কঠোরতা ও শিথিলতা মুক্ত। 

এ ছাড়া পবিত্র কুরআন ও রাসূর (সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম)- এর সুন্নাহ এ পথের দিকেই আহ্বান করেছে। বস্তুত মুসলিম উম্মাহর সমূহ সমস্যা থেকে উত্তরণের অন্যতম পথই হলো 'ওয়াসাতিয়্যাহ বা মধ্যমপন্থা'

#অনুবাদকের_কথা

মুসলিম চিন্তা ও কাজে আমরা সাধারণত দ্বিমাত্রিক প্রান্তিকতা খুঁজে পাই। একটি হলো বাড়াবাড়িমূলক প্রান্তিকতা; অন্যটি হলো শিথিলতামূলক প্রান্তিকতা। এই দ্বিমাত্রিক ডামাডোলে আমরা ইসলামের অনন্য স্পিরিটকে নিত্য খুঁইয়ে বসছি একটু একটু করে।

এর পেছনে অনেকগুলো মৌলিক কারণ আছে। এসব কারণগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি প্রধান কারণ হলো- 'ওয়াসাতিয়্যাহ'-কে বুঝতে ব্যর্থ হওয়া। বাংলা ভাষাভাষি সাধারণ পাঠককে বোঝানোর সুবিধার্থে আমরা এই অসাধারণ টার্ম বা পরিভাষাটির অনুবাদ করেছি 'মধ্যমপন্থা' হিসেবে।

#আপনি কেন বইটি পড়বেন? 

প্রথমতঃ এই বইটি পড়লে মুসলিম চিন্তা ও কাজের দ্বিমাত্রিক প্রান্তিকতার অন্যতম একটি সমাধান 'ওয়াসাতিয়্যাহ' সম্পর্কে মৌলিক ধারণা পাবেন, ইনশাআল্লাহ।

দ্বিতীয়তঃ ইসলাম যে আসলেই একটি মধ্যমপন্থি দ্বীন এবং এই মধ্যমপন্থার প্রয়োগের ক্ষেত্র ও স্বরূপগুলো কী কী সে সম্পর্কে একটি প্রাথমিক ধারণা হবে, ইনশাআল্লাহ।

তৃতীয়তঃ RAND Corporation কর্তৃক বিন্যাসিত শ্রেণী হিসেবে 'মডারেট' ও 'ওয়াসাতিয়্যাহ'- এর মাঝে যে মৌলিক ও মোটাদাগের পার্থক্য আছে, বইটি পড়লে আশা করি সেই সম্পর্কে বিজ্ঞ পাঠকদের ধারণা হবে, ইনশাআল্লাহ।

#মধ্যমপন্থার_পরিচয়

কুরআনে আছে, 
"আর আসমান, তাকে তিনি করেছেন সমুন্নত এবং ভারসাম্যের জন্য স্থাপন করেছেন একটি মিজান বা ভারসাম্যদন্ড, যেন তোমরা মিজান বা ভারসাম্যের মধ্যে বাড়াবাড়ি না করো। অতএব,  তোমরা নায্যতার মাধ্যমে ভারসাম্য রক্ষা করো, আর ভারসাম্যের মধ্যে কমতি করো না।" (আর রাহমান : ৭-৯)

অর্থাৎ কোনো ধরনের কমানো বাড়ানো ছাড়াই নায্যতার ভিত্তিতে ভারসাম্য রক্ষা করার নামই হলো 'মধ্যমপন্থা' বা 'ওয়াসাতিয়্যাহ'।

#মধ্যমপন্থার_বৈশিষ্ট্য_ও_উপকারিতা

এটি মহান আল্লাহর একটি প্রজ্ঞাপূর্ন সিদ্ধান্ত যে, তিনি সর্বশেষ উম্মাহর জন্য মধ্যমপন্থাকে একটি অনন্য বৈশিষ্ট্য ও নিদর্শন হিসেবে বাছাই করেছেন। পাশাপাশি মধ্যমপন্থাকে এমন একটি রিসালাহর জন্য বাছাই করেছেন, যেটি মূলত সর্বশেষ রিসালাহ। আর এর মাধ্যমে আল্লাহ তাঁর বার্তা প্রেরণের পরিসমাপ্তি টেনেছেন এবং সর্বশেষ রিসালাহ দিয়েই সর্বশেষ নবিকে প্রেরণ করেছেন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ