হ্যালো ফ্রেন্ডস..! কেমন আছেন সবাই?
আজকে আমরা যে বইটি নিয়ে আলোচনা করব সেটি হচ্ছে "পিরামিড"পিরামিড নাম কি শোনেননি এমন বৃদ্ধ থেকে ইয়াং জেনারেশন মানুষ খুব কমই আছে বলে আমি মনে করি। বিশেষ করে যারা সৌদি আরব বা আরব আমিরাতের খোঁজ-খবর রাখেন তারা তো অবশ্যই জানেন।
কিন্তু এর ইতিহাস ঐতিহ্য সম্পর্কে জানেন খুব কম মানুষই অবগত আছেন। এ পিরামিড কিভাবে আসলো? কারা তৈরি করল এবং কেন করল এর পিছনে রয়েছে বিশাল ইতিহাস।
যাই হোক এক নজরে দ্য পিরামিড (ম্যান বুকার পুরস্কার) বইটির সংক্ষিপ্ত প্রোফাইল দেখে নেয়া যাক...
বই:- দ্য পিরামিড (ম্যান বুকার পুরস্কার)
লেখক:- ইসমাইল কাদারে,
অনুবাদ করেছেন:- রাফিক হারিরি।
প্রকাশনা:- রোদেলা প্রকাশনী।
পৃষ্ঠাসংখ্যা:- ১২৭
প্রথম প্রকাশিত:- ২০০৯.
বইয়ের ক্যাটাগরি:- উপন্যাস।
ইসমাইল কাদেরে, তার অনবদ্য এই উপন্যাসটি আলবেনিয়ান ভাষায় রচনা করেছেন। এবং সেখানে তিনি আলবেনিয়ান ভাষা ব্যতীত একটি বিদেশি শব্দও ব্যবহার করেননি। তার মাধ্যমে আলবেনিয়ান ভাষাকে তিনি সমৃদ্ধ করেছেন।
যার কারণে "নিউইয়র্ক টাইমস" তাদের পত্রিকায় উল্লেখ করেন, সমসাময়িক সন্দেহাতীতভাবে একটি স্বৈরশাসনকে প্রতিকি ধরে নিজস্ব অভিজ্ঞতার আলোকে যে কাজ ইসমাইল হারিরি করেছেন তা পাথরে খোদাই করে রাখার মত।
"দ্যা পিরামিড" বইটি পৃথিবীর অন্যতম একটি আলোচিত ঐতিহাসিক উপন্যাস। পিরামিড হচ্ছে মিশরের প্রাচীন রাজাদের সমাধিস্থল। যেখানে কিনা রাজারা জীবিত থাকতে তাদের পিরামিড তৈরি করেছিলেন।এবং বিশাল বিশাল পাথর একটার উপর আরেকটা দিয়ে তৈরি করা হতো এই ঐতিহাসিক পিরামিড। এবং এই পিরামিড এর মধ্যেই সমাধিত করা হত মমি দিয়ে রাজাদের লাশ।
মিশরের একসময়ের ফারাও এর রাজা চিত্রপিস তিনি তার সভাসদে বলেন যে, আমি চাচ্ছি আমি মারা যাওয়ার পর আমার কোন পিরামিড হবে না।
একথা শুনে রাজার সবাসদে মন্ত্রী ও অন্য অন্য লোকেরা হতবাক হয়ে পরলো কেননা ফারাওয়ের অধিবাসীরা বিশ্বাস করতো যে এই পিরামিড তাদের দেশকে বিভিন্ন বিপদ আপদ ও অশুভ ছায়া থেকে রক্ষা করে। তাই একথা শুনে রাজার সভাসদরা হতভাগ্য হতভম্ব হয়ে পড়ে যে পিরামিড তৈরি না হলে তাদের দেশ কিভাবে অশুভ ছায়া থেকে রক্ষা পাবে?
এবং একসময় এই পিরামিড তৈরি নিয়ে শুরু হয় নিজেদের মধ্যে হানাহানি এবং রাজার আদেশে যারা দ্রুত পিরামিড তৈরি করে তাদেরকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।এমনকি যারা ধীরে ধীরে পিরামিড তৈরির কাজ করে তাদেরকেও পর্যন্ত মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হল।এবং এটি শুধুমাত্র রাজার খেয়ালবশে করা হয়েছে।আর এভাবেই তারা তৈরি করল এই অশুভ পিরামিড।
যদিও আমরা মুসলমানরা এই শুভ-অশুভ বিশ্বাস করিনা।
তাই পাঠকরা যদি এই টানটান উত্তেজনাময় পিরামিড উপন্যাসটি পড়তে চান তাহলে দেরি না করে এখনি রকমারি থেকে বইটির হার্ডকপি ক্রয় করে নিতে পারেন।
বইটি সম্পর্কে কিছু পাঠকের মন্তব্য:__
১)আবিদুর রহমান নামে একজন লিখেছেন,
বইটিতে অতিরিক্ত রকমের বাজে অনুবাদ করা হয়েছে,তাই লেখার অন্তর্নিহিত অর্থ সঠিকভাবে বোঝা যাচ্ছে না।
২)খাদিজা ভূঁইয়া নামে একজন লিখেছেন,
আমরা কম-বেশি মিশরের পিরামিড সম্পর্কে সকলেই জানি কিন্তু এর তৈরির পিছনে কত শ্রম ও রক্ত দিতে হয়েছে বেশ কিছু মানুষকে তার ইতিহাস সম্পর্কে আমরা কিছুই জানিনা। তাই এই পিরামিডের ইতিহাস সম্পর্কে জানতে হলে আমাদের অবশ্যই যা পিরামিড বইটি পড়া উচিত।
৩) সুলতান নামে একজন লিখেছেন.
ফারাও খুফু হলো পৃথিবীর সবচেয়ে বড় পিরামিড।এবং এ পিরামিডটি তৈরি হয়েছিল পিরামিড তৈরির অনীহা থেকে।কেননা ফারাও খুফুর চেয়েছিল পিরামিড তৈরির ধারা বন্ধ করতে। যাতে ভবিষ্যতে কেউ মারা যাওয়ার পর তাদের পিরামিড তৈরি না হয়। নেপোলিয়ন মিশর জয় করার পর তার সাথে আসা তার নির্মাতারা বলেন, শুধুমাত্র ফুফুর পিরামিডে যে পরিমাণ পাথর ব্যবহার করা হয়েছে তা দিয়ে ৬ ফুট উঁচু করে ফ্রান্সের সীমানা দেয়াল তৈরি করা যেত।যাতে কিনা পাশাপাশি করে তিনটি ঘোড়া দৌড়ে যেতে পারত।
সবচেয়ে অবাক করা তথ্য হলো এ পিরামিদ এসেছিল সভ্যতা ধ্বংস করার জন্য।
পিরামিড প্রসঙ্গে লেখক ইসমাইল কাদেরী বলেন,
পিরামিড হলো মিশরের প্রাচীন রাজা ফারাওদের সমাধিস্থল। কিন্তু এই সমাধিস্থলটি মাটি খুঁড়ে তৈরি করা বা সাধারণ কোনো সমাধিস্থল ছিল না এটি ছিল ঐতিহাসিক একটি সমাধিস্থল যার নাম পিরামিড। এবং এগুলো তৈরি করা হয়েছিল বিশাল আকৃতির পাথর যা কিনা একটির ওপর আরেকটি রাখা হয়েছিল আর এভাবেই সেগুলো পরিণত হয় পিরামিড আকারে। এবং এ পিরামিডগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় যে পিরামিডটি তা হল ফারাও খুফুর অথবা ফারাও চিত্রপিস নামেও তাকে চেনে সবাই।
রাজা চিত্রপিস তার শাসনামলে বেশ কিছুদিন কেটে যাওয়ার পর একদিন সকাল বেলায় চিত্রপিস বলেন তিনি অন্যান্য রাজার মতন তার জীবদ্দশায় পিরামিড তৈরি করতে চাচ্ছেন না।
কিন্তু এ নিয়ে রাজ্যের মন্ত্রিপরিষদ ও প্রজারা খুব চিন্তিত হয়ে পড়ে, তারা ভাবে রাজার এমন ভুল সিদ্ধান্ত হয়তো বা রাজ্যের ক্ষতি হতে পারে কারণ তারা ভাবতো পিরামিড তাদের দেশকে বিভিন্ন রকমের বিপদ-আপদ থেকে রক্ষা করে। এটাই ছিল তাদের বিশ্বাস।
তাই রাজা চিত্রপিস এর একথা শুনে সবাই ভাবলো হয়তো বা রাজা মন থেকে এ কথা বলেননি। হয়তোবা মিশরীয় ভোজের সময় যখন রাজারা বিভিন্ন কথায় হাস্যরস করে তেমনিই করে হয়তোবা বা রাজা এমন কথা বলেছেন। তাই মন্ত্রীদের জানা ছিল না যে রাজার সত্যি সত্যি পিরামিড এর কাজ এখানেই সমাপ্ত করতে চেয়ে ছিলেন।
কিন্তু রাজ্যের বেশিরভাগ মানুষেরই অনীহা ছিল তাই রাজা তড়িঘড়ি করে পিরামিড এর কাজ আবার শুরু করলেন। এবং দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রান্ত থেকে পাথর সংগ্রহ করার আদেশ দিলেন। যারা কিনা পিরামিড তৈরি প্রায় খুব দ্রুত শেষ করতে চাইল রাজা চিত্রপিস তাদের ফাঁসির আদেশ দিলেন। এবং যারা আস্তে আস্তে পিরামিডের কাজ শেষ করতে চাইল তাদেরকেও ফাঁসির আদেশ দিলেন। এবং তাদের ফাঁসি হয়েছে।
পিরামিড উপন্যাসটিতে রহস্যে ভরাপুর তাই আমার সাজেস্ট থাকবে আপনারা বইটি সংগ্রহ করে পড়তে থাকুন।
কিন্তু বইটির প্রথম প্রকাশ 2019 সালে হয়েছিল তাই কিছু কিছু পাঠক বইয়ের অনুবাদ সম্পর্কে প্রশ্ন তুলেছে।
তাদের মত অনুবাদক বইটির অনুবাদ সম্পূর্ণভাবে করতে পারেনি। চাই বইটি পরতে অনেক পাঠকের ই সমস্যা হয়েছে।
0 মন্তব্যসমূহ
ℹ️ Your Opinion is very important to us, Please Writer your comment below about this Post.....