বইঃ মনের ওপর লাগাম PDF download with review

  • বইঃ মনের ওপর লাগাম
  • বিষয়ঃ ইবাদত, আত্মশুদ্ধি,অনুপ্রেরণা
  • লেখকঃ আল্লামা ইবনুল জাওযী (রহ.)
  • অনুবাদঃ মাসুদ শরীফ
  • সম্পাদনাঃ আবদুল্লাহ আল মাসউদ
  • প্রকাশনীঃ ওয়াফি পাবলিকেশন
  • পৃষ্ঠাঃ ১০৩
  • মুদ্রিত মূল্যঃ ১৫৬/= টাকা
  • কভারঃ হার্ড কভার।
  • রিভিউ ক্রেডিট 💕Md  Shebub uddin


      

  " আচ্ছা,খায়েশটা পূরন করলে কী পাবেন?

না হয় কিছু একটা পেলেন;তারপর? ক্ষণিক তৃপ্তিবোধটা চলে

        চলে যাওয়ার পর কী অবস্থা হবে তখন?

এই অপরাধবোধের জ্বালা নিয়ে ভাবলে পরে বুঝবেন,

       যা পেয়েছেন তার দ্বিগুন খুইয়েছেন।


কঠিন জিনিস হাসিল করতে মন নানা পরিকল্পনা করে।এই যেমন মন তার কৌশল খাটিয়ে অবাধ্য পশুকে বশ মানিয়েছে।সাগরের বিশাল জলরাশি পেরিয়ে যেখানে পা ফেলা মানুষের জন্য এককালে অসাধ্য ছিল,জাহাজ বানিয়ে তাকে সেখানে যাওয়ার উপায় শিখিয়েছে। শিখিয়েছে কীভাবে উড়ন্ত পাখিকে শিকার করতে হয়। এর সবই মানুষ করেছে তার প্রয়োজনে।নিরাপদে থাকার খাতিরে।


বিবেক মানুষকে শিখিয়েছে কেন পরকালের জন্য দুনিয়ার মোহ ছাড়তে হবে।এটা আছে বলেই পশুপাখির ওপর মানুষের শ্রেষ্ঠত্ব। মানুষ তাই আল্লাহর কথা ও অনুশাসন শোনার যোগ্যতা অর্জন করেছে। জ্ঞানে ও কাজে অর্জন করতে পেরেছে দুনিয়া-আখিরাতের সর্বাধিক কল্যাণ।তার শ্রেষ্ঠত্বের জন্য এগুলোই যথেষ্ট। 


বইটি জগদ্বিখ্যাত মুসলিম মনীষী ইবনুল জাওযী (রহ.) রচিত "আত-তিব্বুর-রুহানী" থেকে অনুবাদকৃত। বইটি মূলত অন্তরের রোগ এবং এর চিকিৎসা নিয়ে লিখা।খায়েশ মানুষের চিরচেনা এক রুপ।মানুষের মন যখন যা পেতে চায় তাকেই খায়েশ বলে।এই খায়েশ যেমন আপনার মনের চাওয়া পূরন করে আপনাকে আনন্দিত করতে পারে ঠিক তেমনি এই খায়েশ পূরনের জন্য মন আপনাকে পশুতে রুপান্তর করতে পারে।তাই আপনাকে জানতে হবে কখন খায়েশের মুখে লাগাম পরাতে হবে।


বইটি খুবই ছোট কিন্তু এর প্রতিটি অধ্যায় আপনাকে শিখাবে কিভাবে কখন নিজের চাওয়াকে পূরন করতে হবে এবং কখন নিজেকে বাধা দিতে হবে।বইটি পড়লে আপনি নিজে ই আপনার অন্তরের রোগ নির্ণয় করতে পারবেন এবং সাথে তার চিকিৎসা ও পেয়ে যাবেন।


আমি মনেকরি বর্তমান সময়ে প্রায় প্রতিটি যুবক-যুবতীর বইটি পড়া দরকার।জানা দরকার আমাদের অন্তরকে কিভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।

লেখকের কথাঃ

পাঠক, মানুষের জন্য আল্লাহ যা কিছু বরাদ্দ রেখেছেন তার সবই অথবা তাদের মঙ্গলের জন্য। হয় কোনো উপকারের জন্য- যেমন ক্ষুধা-অথবা কোন ক্ষতিরোধের জন্য- যেমন রাগ। কিন্তু ক্ষুধা যদি বেশি বেড়ে যায় তা হলে সেটা অতিভোজনে রূপ নেয়। তখন কিন্তু সেটা ক্ষতিকর। আবার রাগ যদি বেসামাল হয়, মানুষ তখন অশান্তি সৃষ্টি করে। বেশ কয়েকটি উদ্দেশ্য মাথায় রেখে আমি এই বইটি লিখেছি:

মনকে সঠিক সন্দুরভাবে নিয়ন্ত্রণ

খায়েশের মুখে লাগাম পরানো

অসুস্থ ইচ্ছার চিকিৎসা

পরবর্তী ৩০টি অধ্যায়ে এ বিষয়গুলো আমি ধারাবাহিক ভাবে আলোচনা করেছি।


গ্রন্থ পর্যালোচনা

———————

আলোচ্য গ্রন্থে লেখক বিবেকের গুণ নামক অধ্যয়ে বিবেক সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করেছেন। লেখক ইবনুল-জাওযী রহ. বলেন-


“বিবেক মানুষকে শিখিয়েছে কেন পরকালের জন্য দুনিয়ার মোহ ছাড়তে হবে। এটা আছে বলেই পশুপাখির উপর মানুষের শ্রেষ্ঠত্ব। মানুষ তাই আল্লাহর কথা ও অনুশসন শোনার যোগ্যতা অর্জন করেছে। জ্ঞানে ও কাজে অর্জন করতে পেরেছে দুনিয়া-আখিরাতের সর্বাধিক কল্যাণ। তার শ্রেষ্ঠত্বের জন্যে এগুলোই যথেষ্ট।”


বর্তমান সমাজের মানুষের অন্যতম একটি সমস্যা হলো দুনিয়াবি পদের লোভ। এই সম্পর্কে তিনি বলেন-


“নেতৃত্ব কর্তৃত্বের মোহ যদি থাকে তা হলে কিছু বাস্তব কথা শুনুন। না পাওয়া পর্যন্ত এই ক্ষমতাকে খুব বিশাল কিছু মনে হয়। কিন্তু একবার হতে পেলে তার আবেদন ম্লান হয়ে যা। আরও বড় কিছুর জন্য মন তখন উসখুস করে”।


লেখক এই অধ্যয়ে দুনিয়াবি পদের লোভ-এর ক্ষতিকর দিক ও সুন্দর নববী সমাধান দিয়েছেন।

পারিবারিক জীবন সম্পর্কে লেখক সুন্দর ব্যাখ্যা প্রদান করেছেন। স্ত্রী সম্পর্কে তিনি বলেন


“স্ত্রীর সামনে নিজেকে সুন্দর করেতুলে ধরতে হবে। ঠিক যেমন আপনি চান আপনার স্ত্রী আপনার সামনে সৌন্দর্যের পসরা মেলে ধরুক। শরীরের যা দেখতে স্ত্রী পছন্দ করে তা তার সামনে সে অংশ অনাবৃত রাখবেন না। স্ত্রীরও সেরকম করা উচিত”।


সামাজিক জীবনে মানুষের সাথে মেলামেলা কিভাবে করা উচিৎ সে সম্পর্কে ইবনুল-জাওযী রহ.- তার সুন্দর দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেছেন।


“সমাজিক যোগাযোগের খাতিরে কথাবার্তা বলতে গেলে খুব বেশি কথা বলবেন না। এমনভাবে কথা বলতে যবে না, যাতে তারা মওকা নিতে পারে। বা তাদেরসাথে যেসব বিষয়ে কথা বলা আপনার জন্য শোভন না সেসব বিষয়ে কথা বলবে না। এভাবে চললে তাদের থেকে নিরাপদে থাকতে পারবেন”।


ইবনুল-জাওযী রহ. মনের উপর লাগাম পরানোর বিভিন্ন দিক নির্দেশনা দিয়েছেন। লাগামকে শক্ত রাখতে তিনি নিচের পদ্ধতির কথা বলেছেন-


* ভালো বন্ধুবান্ধব, সঙ্গীরা সাথে থাকে

* খারাপ মানুষদের সঙ্গ ছেড়ে দেন

* কুর’আন বুঝে পড়েন

* উপকারী গল্প কাহিনী পড়েন

* জান্নাত-জাহান্নামের কথা ভাবেন এবং

* জ্ঞানীগুণী দুনিয়াবিমুখ মানুষদের জীবনী পড়েন।


কাদের জন্য এ বইঃ

* যারা নিখাদ চরিত্র অর্জন করতে চায়।

* যারা পরিবারের সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি হতে চায়।

* নিজেকে সফল হিসাবে গড়ে তুলতে চায়।

* যারা প্রকৃত মুসলিম হিসাবে জীবন পরিচালনা করতে চায়।

একবার পড়ে রেখে দেবার বই নয়। বারবার পড়া, নিজেকে শুদ্ধ করার জন্য এই বই। আর পড়ে শুধুমাত্র বিস্ময় প্রকাশ করার জন্যেও নয়। এসব শুধু বিখ্যাত সকল মনীষী দের দ্বারাই সম্ভব এমন না ভেবে, তাদের সকল গুণাগুণ নিজের মধ্যে আনার চেষ্টা করাই কর্তব্য।


বিঃদ্রঃ এটা আমার লেখা প্রথম বুক-রিভিউ। তেমন ভালো লিখতে পারি না তাই হয়তো মূলভাবটা ফুটিয়ে তুলতে পারিনি তাই সবারকাছে ক্ষমাপ্রার্থী। সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ