মহীয়সী নারীদের জীবনের গল্প :- পুণ্যবতী review with upcoming pdf
নারী সাহাবীদের মধ্যে সবাই লেখাপড়া জানতেন না। ইসলাম-পূর্ব তৎকালীন সমাজে তাঁদের পড়ালেখার প্রয়োজনও তেমন ছিলো না। ইসলামের আগমনের পর নারীদের জ্ঞানার্জনের গুরুত্ব দেয়া হয়। ফলে, যে অল্প কয়জন নারী সাহাবী পড়ালেখা জানতেন, তারা বাকিদেরকেও পড়ালেখা শেখান। আশ-শিফা বিনতে আব্দুল্লাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহা) সমাজে সেই ভূমিকা পালন করেন। তিনি নবিজীর (সাল্ললাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) স্ত্রী হাফসা বিনতে উমর (রাদিয়াল্লাহু আনহা) সহ অন্যান্য নারীদেরকে লেখালেখি শেখান।
আয়িশা রাদিয়াল্লাহু আনহার জ্ঞানের অন্যতম ধারক ও বাহক ছিলেন তাঁর বোনপো উরওয়া ইবনে যুবাইর (রাহিমাহুল্লাহ)। তিনি তাঁর খালা সম্পর্কে মন্তব্য করেন:
“আমি কুরআন, ফারায়েজ, হালাল, ফিক্বহ, কবিতা, চিকিৎসা, বংশনামায় আয়িশার (রাদিয়াল্লাহু আনহা) চেয়ে জ্ঞানী কাউকে দেখিনি।”
আয়িশা (রাদিয়াল্লাহু আনহা) ছিলেন আবু বকরের (রাদিয়াল্লাহু আনহু) মেয়ে। সেই হিশেবে কবিতা ও বংশবিদ্যা সম্পর্কে না হয় বাবার থেকে জেনে নিলেন। কুরআন-হাদীস-ফিক্বহ সম্পর্কে না হয় স্বামী নবিজীর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কাছ থেকে জানলেন। কিন্তু, তিনি চিকিৎসা বিদ্যা কোথায় থেকে রপ্ত করলেন? এমন প্রশ্ন ছিলো তাঁর বোনপো উরওয়া ইবনে যুবাইরের (রাহিমাহুল্লাহ)।
সেই প্রশ্নের উত্তরে আয়িশা (রাদিয়াল্লাহু আনহা) জানান:
নবিজীর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইন্তেকালের আগে প্রায়ই অসুস্থ থাকতেন। তাঁর চিকিৎসা করার জন্য আরবের চিকিৎসকরা যেতেন। সেইসময়ের ডাক্তাররা চিকিৎসা সংক্রান্ত যা বলতেন, আয়িশা (রাদিয়াল্লাহু আনহা) সেগুলো মুখস্ত করে নিতেন। [ইমাম আয-যাহাবী, সিয়ারু আ’লাম আন-নুবালা: ২/১৮২-১৮৩]
আয়িশা (রাদিয়াল্লাহু আনহা) ছিলেন নবিজীর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) স্ত্রী, শ্রেষ্ঠ সাহাবীর কন্যা, জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্তা। এমন সুপরিচয় সত্ত্বেও তিনি এটা ভাবেননি যে, ‘আমার আর জ্ঞানার্জন করে কী হবে, মারা গেলেই তো জান্নাতে যাবো’। বরং তিনি জ্ঞানার্জন করেছেন। স্বামীর কাছ থেকে জ্ঞানার্জন করেছেন, বাবার কাছ থেকে জ্ঞানার্জন করেছেন, স্বামীকে দেখতে আসা চিকিৎসকদের ব্যবস্থাপত্র দেখে চিকিতসাবিদ্যা রপ্ত করেছেন।
অর্জিত জ্ঞান নিজের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখেননি। তাঁর বোনপো এবং নারী তাবেয়ীদের মাধ্যমে তাঁর জ্ঞানের বিস্তার ঘটে। পর্দার মধ্যে থেকেও যে বড়ো স্কলার হওয়া যায়, আয়িশা (রাদিয়াল্লাহু আনহা) –এর জীবনী পড়ে সেটা জানা যায়।
[মুসলিম ইতিহাসের ৪০ জন মহীয়সীর জীবনের গল্প নিয়ে লেখা পুণ্যবতী বই]
Comments
Post a Comment
ℹ️ Your Opinion is very important to us, Please Writer your comment below about this Post.....