বইঃ আল্লাহকে পেতে মাধ্যম গ্রহণ রিভিউ এবং পিডিএফ ডাউনলোড।
⦁ লেখকঃ শাইখুল ইসলাম আহমাদ ইবনে আব্দুল হালীম ইবনে তাইমিয়্যাহ রাহিমাহুল্লাহ
⦁ অনুবাদঃ ড. আবু বকর মুহাম্মদ যাকারিয়া
⦁ প্রকাশনায়ঃ সবুজপত্র
⦁ পৃষ্ঠাঃ ৭৯
⦁ মুদ্রিত মূল্যঃ ৬০
✍️ Review All Credit:- জুহাঈর আবছার
❏ ভূমিকাঃ
“আল্লাহকে পেতে মাধ্যম গ্রহন” মূলত একটি পুস্তিকা যার রচিয়তা হলেন “শাইখুল ইসলাম আহমাদ ইবনে আব্দুল হালীম ইবনে তাইমিয়্যাহ রাহিমাহুল্লাহ।” বস্তুত এই পুস্তিকাটি শাইখুল ইসলাম ইবনে ত্যাইমিয়াহ মাজমূ ফাতাওয়া ১/১২১-এ রয়েছে। এই প্রবন্ধটি মূলত শাইখুল ইসলাম ইবনে ত্যাইমিয়াহ রাহিমাহুল্লাহ খন্ডন করেছেন তাদের যারা বিশ্বাস করে আল্লাহ পেতে গেলে মাধ্যম লাগে, মাধ্যমে ব্যাতিত কোনো ইবাদত কবুল হয় না আরো নানান ধরনের শিরকি কুফুরী কথা-বার্তা খন্ডন মূলত।
যা এক কথা অতুলনীয়। মোট কথা এই পুস্তিকাটি কলরবে ছোট হলেও এর অবদান বিশাল যা আকাশচুম্বী। যা মাধ্যমে, আকিদাহ, তাওহীদ, শিরক,আসীলা ও অন্যান্য মাসালা মাসলাক বুঝার ক্ষেত্রে অদ্বিতীয় ও অতীব উপকারী গ্রন্থ। আমি মনে এই ছোট পুস্তিকাটি প্রত্যেক মুসলিমদের ঘরে থাকা উচিত।
❏ বইটি কেনো পড়বেনঃ
অনুবাদকের মতে -- “গ্রন্থখানি আকারে ছোট হলেও শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়্যাহ তাতে এমন অনেক কিছু তত্ত্ব ও তথ্য তুলে ধরেছেন আকীদা বিশুদ্ধ হওয়ার জন্য যা অতীব প্রয়োজনীয়। তিনি তুলে ধরেছেন যে, মাধ্যম ধরার বিষয়টির তিনটি দিক রয়েছে। তন্মধ্যে কোনো কোনোটি শির্তের পর্যায়ে রয়েছে।
তবে নবী-রাসূল ও তাদের উত্তরসূরী আলেমগণকে দীন জানার মাধ্যম ধরা যে অত্যাবশক সেটা তুলে ধরেছেন। তাছাড়া কোন সুপারিশ নিষিদ্ধ আর আর কোন সুপারিশ অনুমোদিত তাও দলীল প্রমাণাদির মাধ্যমে উপস্থাপন করেছেন। গ্রন্থখানী পাঠের মাধ্যমে মাধ্যমা ধরা বিষয়ক মানুষের মধ্যে যে বিভ্রান্তি ও ভ্রষ্টতা রয়েছে তা অপনোদন হবে আমার বিশ্বাস রয়েছে।”
.
❏ বইটির সূচিপত্র কিছু-অংশঃ
⦁ রাসূলগণের দীন প্রচার ও দাওয়াতের মাধ্যম
⦁ রাসূলগণ কোনো প্রকার লাভ ও কল্যাণ বয়ে আনতে পারেন না
⦁ আলেমগণ নবীগণের ওয়ারিস
⦁ শরী'আত গর্হিত (নিষিদ্ধ) মাধ্যমসমূহ
⦁ শরী'আত সমর্থিত শাফা'আত আর শরী'আত নিষিদ্ধ শাফা'আত
⦁ উপায়-উপকরণ গ্রহণের মাপকাঠি
⦁ বৈধ দো'আ ও শাফা'আত
⦁ কাউকে দো'আ করার জন্য আহ্বান জানালে কি নিয়্যত থাকতে হবে?
⦁ মাধ্যম ও শির্ক
⦁ কার্যকারণ নির্ধারণের ব্যাপারে তিনটি বিষয়।
পরিশেষে দুয়া করি মহান আল্লাহ গ্রন্থটির লেখক, অনুবাদক এবং সংশ্লিষ্ট সকল'কে আল্লাহ উত্তম প্রতিদান দিক। আল্লাহ আমাদের ও তাদের কবুল করুক জাযাকাল্লাহ খাইরান ওয়াবারেকফী ইলমিকুম ওয়া হাইয়াতিকুম, ওয়া যাদাকুমুল্লাহ ওকিয়া ফী ফী'দ্বীন, আমীন ইয়া রব্বাল আলামীন।
[বিঃদ্রঃ আমরা সবুজপত্র সকল বই প্রচার প্রসার করিনা, কেবলমাত্র দুই একটা গ্রন্থ ব্যাতিত।]
রিভিউ বাই জুহাঈর আবছার।
আল্লাহকে পেতে মাধ্যম গ্রহণ
সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য। আমরা তাঁরই প্রশংসা করছি, তাঁর কাছেই সাহায্য চাচ্ছি। আর তার কাছেই ক্ষমা প্রার্থনা করছি। আমাদের মন্দ কৃতকর্ম, এবং আত্মার ক্ষতিকর প্রভাব থেকে আল্লাহর দরবারে আশ্রয় নিচ্ছি, আল্লাহ তা'আলা যাকে হিদায়াত করেন তাকে গোমরাহ করার কেউ নেই। আর যাকে গোমরাহ করেন তাকে হেদায়াত করার কেউ নেই, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, এক আল্লাহ ব্যতীত প্রকৃত কোন মাবুদ নেই, তার কোন শরীক নেই, আর ও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহর বান্দা ও রাসূল।
স্রষ্টা ও সৃষ্টির মাঝে মাধ্যম মানার ব্যাপারটা অত্যন্ত বিপজ্জনক বিষয়। পরিতাপের বিষয় যে, অনেক মুসলমানই এ সম্পর্কে পরিষ্কার কোন ধারণা রাখেনা। ফলে আমরা আল্লাহর সাহায্য সহযোগিতা থেকে বঞ্চিত হতে চলেছি, যে সাহায্য করার কথা তিনি কুরআনে তাঁর কাছে আশ্রয় কামনা এবং তাঁর শরীয়তের অনুসরণ করার শর্তে ঘোষণা করেছেন।
আল্লাহ বলেন : (আর মু'মিনদের সাহায্য করা আমার দায়িত্ব)। {সূরা আর-রূম: ৪৭} (যদি তোমরা আল্লাহকে সাহায্য কর তবে তিনিও তোমাদের সাহায্য করবেন, এবং তোমাদের পদযুগলে স্থিতি দিবেন)। {সূরা মুহাম্মাদ: ৭}
(আল্লাহর জন্যই যাবতীয় সম্মান, আর তাঁর রাসূলের জন্য, এবং মু'মিনদের জন্য)। {সূরা আল-মুনাফিকূন: ৮}
(তোমরা দুর্বল হয়োনা, এবং তোমরা চিন্তা করোনা, তোমরাই বিজয়ী হবে যদি তোমরা ঈমানদার হও)। {সূরা আলে-ইমরান: ১৩৯}
সৃষ্টি ও স্রষ্টার মাঝে মাধ্যম বলতে কি বুঝায়, এ ব্যাপারে মানুষ তিনটি দলে বিভক্তঃ
একঃ একদল হচ্ছে তারা যারা শরীয়ত প্রণেতা হিসাবে প্রেরিত একমাত্র মাধ্যম রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)কেও মানতে নারাজ, বরং তারা দাবী করছে, - আর কত জঘন্যই না তাদের এ দাবী - যে, শরীয়ত শুধুমাত্র সাধারণ মানুষের জন্য, উপরন্ত তারা এ শরীয়ত কে "ইলমে জাহীর" বা প্রকাশ্য বিদ্যা হিসাবে নামকরণ করেছে, তারা তাদের ইবাদতের ক্ষেত্রে কতেক বাজে চিন্তা-ধারণা ও কুসংস্কারকে গ্রহণ করে "ইলমে বাতেন" বা গোপন বিদ্যা নামে চালু করেছে, আর এর দ্বারা যা অর্জিত হয় তার নাম দিয়েছে (কাশ্ফ)।
মূলত তাদের এই কাশ্ফ ইবলীশি কুমন্ত্রণা আর শয়তানী মাধ্যম ছাড়া কিছুই নয়, কারণ এটা ইসলামের সাধারণ মুলনীতির পরিপন্থী, এ ব্যাপারে তাদের দলগত শ্লোগান হলোঃ এ কথা (আমার মন আমার রব থেকে সরাসরি বর্ণনা করেছে)।
এতে করে তারা শরীয়তের আলেমদের সাথে ঠাট্টা করছে, এবং এ বলে দোষ দিচ্ছে যে, তোমরা তোমাদের বিদ্যা অর্জন করছ ধারাবাহিক ভাবে মৃতদের থেকে আর তারা তাদের বিদ্যা সরাসরি চিরঞ্জীব, চিরস্থায়ী রব এর কাছ থেকে অর্জন করছে।
এ সমস্ত কথা দ্বারা তারা অনেক সাধারন মানুষকে আকৃষ্ট করে তাদের পথভ্রষ্ট করছে। আর শরীয়ত নিষিদ্ধ অনেক কাজ তারা এভাবে জায়েয করেছে যার বিবরণ তাদের কুসংস্কারপূর্ণ বই গুলিতে বিশদভাবে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। ফলে এ ব্যবস্থার অবসান কল্পে আলেমগণ তাদেরকে কাফের এবং ধর্ম বিচু্যতির কারণে তাদের হত্যা করার নির্দেশ দিতে বাধ্য হয়েছিলেন।
কারণ তারা জানতনা বা জেনেও না জানার ভান করত যে, ইসলামের প্রথম মূলনীতি হলোঃ মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর অবতীর্ণ পদ্ধতির বাইরে কেউ আল্লাহর ইবাদাত করলে সে কাফের হিসাবে গণ্য হবে; কেননা আল্লাহ বলেন: (সুতরাং তারা যা বলছে তা নয় বরং আপনার রবের শপথ, তারা যতক্ষণ পর্যন্ত আপনাকে তাদের মধ্যকার ঝগড়ার মাঝে বিচারক মানবেনা অতঃপর তাদের অন্তরে আপনার ফয়সালার ব্যাপারে কোন প্রকার দ্বিধা দ্বন্দ্বের অস্তিত্ব থাকবেনা, এবং পরিপুর্ণভাবে তা মেনে নিবেনা ততক্ষণ পর্যন্ত তারা ঈমানদার হতে পারবেনা)। {সূরা আন্-নিসা: ৬৫}
0 মন্তব্যসমূহ
ℹ️ Your Opinion is very important to us, Please Writer your comment below about this Post.....