সৃজিত মুখার্জী-র নাম কী?' লেখকঃ Abdullah AL Mamun

বইয়ের নামঃ 'সৃজিত মুখার্জী-র নাম কী?' 
লেখকঃ Abdullah AL Mamun 
বইয়ের ধরণঃ সাইকো থ্রিলার উপন্যাস।
বইয়ের পৃষ্ঠা সংখ্যাঃ ১৬০
মুদ্রিত মুল্যঃ ২৯৫ টাকা।
প্রকাশনীঃ শিখা প্রকাশনী। 
Ru Hy(review all credit)


বইটির নাম কেন 'সৃজিত মুখার্জী-র নাম কী?' তা বইটি না পড়লে বোঝা মুশকিল। তবুও আমার এই রিভিউ এর মাধ্যমে কিছুটা বোঝানোর চেষ্টা করছি। 

কাহিনি সংক্ষেপ : 
 ঘটনার শুরুটা হয় এলাকার স্বনামধন্য মেয়র শারাফ আহমেদ এর খুন থেকে। মেয়র সাহেবকে কিছুদিন থেকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিলো না। নিখোঁজ হওয়ার কিছুদিন পর গাজীপুরের এক কাশবনে মেয়রের লাশ খুজে পায় সূর্যনীল ঘোষ এবং তার প্রেমিকা নোলক। তারা এই কাশবনে আজ ঘুরতে এসেছিলেন৷ মেয়র সাহেবের ডান হাত কাটা ছিলো এবং কপালের মাঝে পেরেক দিয়ে একটা কাগজ গাথা ছিলো । কাগজে লেখা 'সৃজিত মুখার্জি।' 

এই খুনের তদন্ত করতে শুরু করে পুলিশ ডিপার্টমেন্ট এর এস.আই. রাকিব এবং ডিটেকটিভ সুকুমার। তদন্ত চলতে থাকে। 
এর মধ্যেই খুন হয় সূর্যনীল ঘোষের ছোট ভাই অমিত ঘোষ। খুনের স্টাইল সেই একই রকম যেমনটা মেয়র সাহেবের ছিলো। আর কপালে পেরেক দিয়ে গাথা সেই কাগজে লেখা 'সৃজিত মুখার্জি'। হাতের লেখার স্টাইল টাও এক। সবকিছুই এক। আসলে খুনটা করছে কে? তা নিয়ে জল্পনাকল্পনা শুরু। খুনের সাথে রাজনৈতিক কোন বেপার জড়িত নাকি কোন সিরিয়াল কিলারের কাজ তা নিয়ে বিপাকে পড়তে হয় ডিটেকটিভ সুকুমার সাহেবের। 

ডিটেকটিভ সুকুমার অনেক তদন্ত করে খুজে বের করলেন আসলে অমিত ঘোষের ভাই সূূযনীল ঘোষ-ই আসলে খুন করেছে। আদালত থেকে ঘোষ (সূর্যনীল) কে ফাঁসির সাজা দেওয়া হয়। কিন্তু ঘোষ বার বার একটা কথাই বলছিলেন যে, সে তার ভাই অমিতকে খুন করেন নি। সে শুধু মেয়র সাহেবকে মেরেছেন৷ তাহলে তার ছোট ভাইকে কে খুন করেছে? 

ফাঁসি দেওয়ার কিছুক্ষণ আগে হঠাৎ-ই কারাগারে ঘোষের মৃত্যু হয়। তাকে হাসপাতালে নেওয়ার সময়  সেই লাশ নাকি জীবত হয়ে নিজেই পালিয়ে যায়। এর কয়েকদিন পর ঘোষের লাশও খুজে পায় পুলিশ। সেই এক স্টাইলে। একই লেখা, এবং হাতের লেখাও এক। 
-সৃজিত মুখার্জি।'

এই খুনের পর সবকিছু কেমন এলোমেলো লাগছে ডিটেকটিভ সুকুমারের কাছে। আগে কখনো এমন হয় নি তার।  সৃজিত মুখার্জি কি খুনির ছদ্মনাম? আসলে 'সৃজিত মুখার্জি-র নাম কী?'। লোকটা আসলে কে?

তারপর সন্দেহ গিয়ে পড়ে প্রয়াত মেয়র শারাফ আহমেদের স্ত্রী তাহমিনা সরকার, সেই বাড়ীর দারোয়ান, মেয়রের ছোট ভাই আরাফ আহমেদ,  পুলিশ হাবিলদার তানভির, এস আই রাকিব, নোলকসহ প্রায় সবাইকে। ডিটেকটিভ এলোমেলো হয়ে যায়। তারচেয়ে বড় কথা লাশের সাথে চলমান রাজনৈতিক নেতার মামলা। সবকিছু উল্টাপাল্টা হতে শুরু করে। আসলে এই 'সৃজিত মুখার্জী-র নাম কী'। 

পাঠক হিসেবে আমার মন্তব্যঃ 
বইটি সত্যি অসাধারণ ছিলো। গল্পের প্লট, কাহিনি, চরিত্র সবকিছু ভালো ছিলো, অসম্ভব ভালো ছিলো। যদিও বইয়ে নামসহ, কয়েকটা বানান ভুল ছিলো। এবং কয়েকটা জায়গায় একই বাক্য বার বার ব্যবহার করা হয়েছে। তবুও প্রেম-ভালোবাসা, একটা নামকে কেন্দ্র করে একটার পর একটা খুন। সবকিছু মিলিয়ে টান টান থ্রিলার।  সবথেকে বেশি ভালো লেগেছে ডিটেকটিভ সুকুমার এর চরিত্রটি। 

লেখকের একটা জিনিস খুব খারাপ লাগছে আমার কাছে, সেটা হলো লেখক চাইলে গল্পটা একটা পার্টেই শেষ করে দিতে পারতো। কি দরকার ছিলো অযথা ২য় পার্টের জন্য অপেক্ষা করানোর। এখন কি আর করার ২য় পার্টের জন্য অপেক্ষা......।

পার্ট ১ পরে জানা আর হলো না যে, 'সৃজিত মুখার্জি-র নাম কী?'
আবার অনেক জনকেই 'সৃজিত মুখার্জী ' মনে হচ্ছে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ