বইয়ের নামঃ- আমি কারো মেয়ে নই
লেখকঃ- এনায়েতুল্লাহ আলতামাশ
প্রকাশনীঃ- হুদহুদ প্রকাশনী
পৃষ্ঠাঃ- ২৪০
মূল্যঃ- ২৪০৳
রিভিউ লেখকঃ- Adnan AL Farabi
বিবরণঃ
একজন সমাজচ্যুত নারীর আত্নকাহিনী। যাদেরকে সমাজের দূষণ গণ্য করা হয়, অথচ তারা এই সমাজেরই সৃষ্টি। বাংলা শব্দে যাদের ডাকা হয় “পতিতা”। বইটিতে এমনি এক সম্ভ্রান্ত ঘরের নারীর আত্নকাহিনী ফুটে উঠেছে, যাকে সমাজ বাধ্য করে এই পথে নামতে।
লেখকঃ
লেখক এনায়তুল্লাহ আল তামাশ সম্পর্কে নতুন করে বলার কিছু নেই, “ঈমানদীপ্ত দাস্তান” যারা পড়েছেন সবার নিকট একবাক্যে পরিচিত। ব্যক্তি জীবনে শেষের দিকে সাংবাদিকতা তার পেশা ছিল। বইটি মূলত তার সাংবাদিকতার পেশা থেকেই নেয়া সাক্ষাৎকার এর সংকলন। ব্যাহত দৃষ্টিতে বইয়ে কিছু অশ্লীল বর্ণনা দেখে খারাপ মনে হতে পারে, তবে বইটি যেহেতু একজন পতিতার সাক্ষাৎকার, তাই আমাদের উচিত হবে বর্ণনাগুলোকে তার পার্সপেক্টিভ থেকেই দেখা। বইটি লেখার পিছনে মূল উদ্দেশ্য, জাতিকে সমাজের প্রকৃতরূপ চেনানো, নারীরা এই সমাজের প্রতিটি স্তরে কীভাবে ভোগ্যপণ্য গণ্য হয়, সেই প্রমাণিকতা একটি বাস্তব জীবনের আলোকে উপস্থাপন। হ্যাঁ বইটি কেবল প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য উপযোগী। মাওলানা আব্দুল আলিমের অনুদিত।
অন্যান্য তথ্যঃ
এটি এক সমাজচ্যুত নারীর আত্মকথা। এই আত্মকথা আমাকে কাঁদিয়েছে। সমাজচ্যুত এই নারীর আত্মকথায় উঠে এসেছে এক করুণ ইতিহাস। ক্রমাগত এমন ইতিহাস দুনিয়াকে গ্রাস করছে। আমাদের দেশেও নিয়মিত রচিত হচ্ছে এমন হাজার কাহিনী।তরুণ সমাজের জন্য এই বইয়ে রয়েছে শেখার মত অনেক বড় সবক। অভািবকদের জন্যও রয়েছে অনেক দিকনির্দেশনা। উচ্চ-মধ্যবিত্ত,আর উচ্চবিত্ত পরিবারের বাবা-মায়েদের জন্য অত্যন্ত জরুরী। দয়া করে একবার হলেও পড়ে দেখবেন।
বই রিভিউঃ
"আমি কারো মেয়ে নই" পাকিস্তানী উপন্যাসিক এনায়েত উল্লাহ আলতামাশের একটি অসাধারণ জীবন ভিত্তিক উপাখ্যান। এই বইয়ে লেখক একটি মেয়ের জীবনে ঘটে যাওয়া নানান দিক তুলে ধরেছেন। উক্ত "আমি কারো মেয়ে নই" বইটি আপনাকে অনেক কিছু শিখাবে, অনেক কিছু ভাবাবে, হয়তো আপনার চোখের কোনে জলও আসতে পারে। কেননা খুবই হৃদয় বিধারক এই বইটি। বইটি যখন আমি প্রথম পরেছিলাম তখন খুব কেঁদেছিলাম। একটি বই এতটা ইমোশনাল হতে পারে কোন দিন ভাবিনি।
বইটি প্রত্যেকটা ছেলে-মেয়ের একবার হলেও পড়া
উচিত। বিশেষ করে সচেতন বােনদের জন্য বইটি
পাথেয় হিসেবে কাজ করবে যদি তারা এই বইটি থেকে শিক্ষাগ্রহণ করতে পারে,বােনেরা বইটি থেকে অন্তত এইটুকু উপলব্ধি করতে পারবে যে অবৈধ অনৈতিক সম্পর্কের দ্বারা কিভাবে নিজের জীবনটা ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে দেওয়া হয়।
পাশাপাশি প্রতিটি বাবা-মায়ের জন্যও বইটি অনেক
উপকারী এবং সচেতনতা বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
ব্যক্তিগত মতামতঃ
এই বইয়ের এর ব্যাপারে বলতে গেলে অনেক কিছুই।
বলা হয়ে যাবে। বাস্তবধর্মী এবং আমাদের সমাজের
প্রকৃত রুপ লেখক এই বইয়ের মধ্যে খুব সুন্দরভাবে
উপস্থাপন করেছেন। সমাজে একটা সময় নারীদের
কতটা ভােগ্যপণ্য হিসাবে দেখা হত তারই আসল রুপ লেখক এই বইতে প্রকাশ করেছেন। প্রত্যেক বাবা-মায়ের উচিত এই বইটি পড়া। সমাজের কাল রুপ সম্পর্কে সকলের জানা উচিত। শেষটা পড়ে অনেকটাই ভেতর থেকে ভেঙ্গে পরেছিলাম।
পরিশেষে বলবোঃ
আমি জানিনা এই বইয়ের রিভিউ আদৌ সঠিকভাবে আমি দিতে পারব কিনা।তবে এটা যে পড়েন না কেন আপনাকে কাঁদতে বাধ্য করবে আর নিজেকে চিনতে সাহায্য করবে।এই বইয়ের ঘটনা কমবেশি আমাদের সকলের সাথেই মিলে যাবে আর মনে পড়বে।
16/17 বছরে আমরাও যে তা করিনি তার ও কোন গ্যারান্টি আপনি দিতে পারবেন না।কেউ শারীরিক ভাবে আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি আর কেউ মানসিকভাবে।
আমরা কম বেশি সবাই যেনায় লিপ্ত এটা অনেকের শারীরিক ধাপে চলে যায়।তবে এই বয়সটাতে পরিবারের উচিত মেয়ে বা ছেলেদের একটু দেখিয়ে রাখা।কিভাবে উঠতি বয়সের একটি মেয়ে আধুনিকতার ছোয়া গায়ে লাগিয়ে এভাবে আজ লাঞ্চিত হলো তারই একটি ঘটনা এখানে ফুটে উঠেছে তবে এটা কাল্পনিক কোন গল্প নয়।
আমাদের পুরুষ সমাজের মুখোশ ও এখানে উন্মোচন করেছেন তিনি।আমরা পরিবাররা ছেলে মেয়ের সম্পর্ক সহজভাবে নিতে নিতে আজ কি হচ্ছে তা বুঝার উপায় নেই।
একজন রূপবতী হওয়ার কারণে তার জীবন জাহান্নামে পরিনত হয়েছে যার জন্য দায়ী ছিল তার পরিবারও।পতিতা কিন্তু অধিকাংশ ঘরেই রয়েছে তাদের একটা আশ্রয় আছে বলেই তারা সমাজে সে ট্যাগ টা পাইনা কারন তাদের স্বামী আছে।
কিন্ত একজন আশ্রয়হীন নারি যখন একটি পবিত্র জীবন যাপনের জন্য মনস্থির করে তখন তার ঘর না থাকার কারণে তাদের ট্যাগ হয় তারা পতিতা।এই রকম লোক আমাদের ইন্টারনেট জগতে ও অনেক আছে যারা বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে মানসিকভাবে যেনা করে এদিকে আর একটা মেয়ে শুধু একটি নিরাপদ আশ্রয়ের আশায় সেও করে এই মনে হয় কোন একটা আশ্রয় পাব কিন্তু দিনশেষে দেখা যায় সেও বৃদ্ধা আঙুল দেখিয়ে চলে যায় এরপর সে আরেকটি আশ্রয় খুঁজে এভাবে চলতে থাকে।
কারো কারো সেটা শারীরিক পর্যায়ে চলে যায়।নিজের আবেগকে জায়গা দিতে গিয়ে নিজের দামি জিনিসটাই যে হারিয়ে ফেলে তা ভাবার সময় তার হয় না।এভাবে একটা মেয়ের লজ্জা ভেংগে যাই এরপর সে যেকোন লোকের সাথে থাকতে দ্বিধাবোধ করেনা।
কারণ তার যে লজ্জা উঠে গেছে।সেও কিন্ত চাই পবিত্র জীবন গড়তে কিন্তু ঐ যে কেউ থাকে আশ্রয় দিতে চাইনা।যার কারণে সে পতিতা না হয়েও পতিতার সম্মান পাই আর সবাই তাকে এই সুযোগ টা কাজে লাগিয়ে ব্যবহার করতে পারে এমনকি সে চাকরিতে ও নিরাপদ না। সবখানে শকুনের দল।
আমি জানিনা এই বই টা আমাকে হাজার বার ভাবাচ্ছে।সকল অভিভাবকদের এটি পড়া উচিত একজন বোন যেমন জানতে পারবে তার ভাই কি তেমনি ভাই ও জানতে পারবে তার বোন কি কোন পথে আছে সে।
0 মন্তব্যসমূহ
ℹ️ Your Opinion is very important to us, Please Writer your comment below about this Post.....