boi:- Hujur Hoye Hasho Keno? PDF download (হুজুর হয়ে হাসো কেন)

বই : হুজুর হয়ে হাসো কেন
লেখক : হুজুর হয়ে টিম
প্রকাশনী : সত্যায়ন প্রকাশন
বিষয় : ইসলামিক রম্য গল্প
পৃষ্ঠা সংখ্যা ১২০
মূল্য : ১৭৫ ৳ 
রিভিউ কার্টেসি:- Mohammad Ullah


একটা সময় ছিল যখন অনলাইন জগত ছিল সেকুলাঙ্গারদের কবলে, ইন্টারনেটে কেউ
ইসলাম নিয়ে কথা বললে সবাই ছেঁকে ধরত। এরপর আসলো একটা সময় যখন আল্লাহ
সুবহানাহু ওয়া তা’আলা চাইলেন তাঁর দ্বীনের কথা অনলাইনে ছড়াক, তাই তিনি তাঁর কিছু
বান্দাকে এই কাজে নিয়োজিত করলেন। 

কিন্তু দেখা গেল যখন মুসলিম ভাইয়েরা
বুদ্ধিমত্তার সাথে যুক্তিতর্কের মাধ্যমে সেকুলাঙ্গারদের ধরাশায়ী করতে লাগলেন
তখন সেই সেকুলাঙ্গাররা কুযুক্তি আর হাসি-ঠাট্টার মাধ্যমে আলোচ্য বিষয়গুলো থেকে
মানুষদের দূরে সরিয়ে নিতে লাগলো। তখনই আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলার ইচ্ছায়
তাঁর এমন কিছু বান্দার আবির্ভাব ঘটলো যারা সেকুলাঙ্গারদের হাসি-ঠাট্টার জবাব
হাসি-ঠাট্টার মাধ্যমেই দিবে, কিন্তু দু’পক্ষের মাঝে মৌলিক কিছু পার্থক্য থাকবে।

অনলাইন জগতে ‘হুজুর হয়ে’ এমনই একটি দল যারা এই কাজটি সুনিপুণভাবে করে
যাওয়ার চেষ্টা করছে। সময়টা এমন এসেছে যে মিডিয়ার কল্যাণে (নাকি অকল্যাণে?)
মানুষ এত নেতিবাচক বিষয় চারিদিকে দেখে যে তারা হাসি-ঠাট্টার মাধ্যমে বাস্তবতা
থেকে দূরে থাকতে চায়। তাই ‘হুজুর হয়ে’ চেষ্টা করলো হাসি-ঠাট্টার মাধ্যমেই
জনসাধারণকে বাস্তবতায় ফিরিয়ে আনার জন্য। তারা হাসির ছলে আমাদের সমাজের
অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আর অসংগতিগুলো তুলে ধরছে যেগুলো আমরা অনেকেই
উপলব্ধি করি না বা করলেও মুখ ফুটে কিছু বলতে পারি না। তাদের প্রচেষ্টা এমনই হয়
যেন প্রত্যেক কাজেই কিছু না কিছু শিক্ষামূলক থাকে এবং সঠিক পথনির্দেশ পাওয়া
যায়।

তাদের এই উদ্যোগ যেন অনলাইনেই সীমাবদ্ধ না থাকে এবং অফলাইনের মানুষও যেন
এ থেকে উপকৃত হতে পারে সেজন্য ‘সমর্পণ প্রকাশন’-এর উদ্যোগে প্রকাশিত হচ্ছে ‘হুজুর হয়ে’ টিমের রম্য রচনা সমগ্র
‘হুজুর হয়ে হাসো কেন?’। আমরা দু’আ করি যেন আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা এর
মাধ্যমে রসবোধসম্পন্ন চিন্তাশীল মানুষদের মাঝে ইসলাম সম্পর্কে আগ্রহী করে
তোলেন এবং একে তাদের হিদায়াতের মাধ্যম বানিয়ে দেন।


💕রিভিউ ২____________________________
- আসছে হুজুর! এইরকম কতো দেখছি।
- - হুজুর হয়ে এটা করো কেন, ওটা করো কেন?
- হুজুর হইছো নাকি?
দাড়ি রাখলে, টাখনুর ওপর কাপড় পড়লে, পর্দা করলে আপনাকেও শুনতে হয় নাকি এমন কথা? কথা শুনতে শুনতে ত্যক্ত-বিরক্ত-হতাশ? তাহলে আর নয় হতাশা, আপনার জন্য থাকছে সমর্পণ প্রকাশনের "হুজুর হয়ে হাসো কেন?"। এক ফাইলই যথেষ্ট। মাত্র ১৭৫ ৳। আর নিশ্চিত ৩০-৩৫% ডিসকাউন্ট তো থাকছেই।

রম্য রচনার রিভিউতে যদি একটু রম্য না থাকে তাহলে চলে না। অন্তত এই ১১৮ পৃষ্ঠার বইটা পড়ার পরও যদি লেখায় একটু রসবোধ না আসে তাহলে ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করার দরকার। 

হুজুর কথাটির কীভাবে সমাজে প্রচলন তা আমার জানা নেই। একসময় তালিবুল ইলম/ আলেমদের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হলেও, এখন দাড়িয়ালা দেখলেই হুজুর আর পর্দা করা মেয়ে দেখলেই হুজুরনী বলে ডাক দেয়। প্রশংসার উদ্দেশ্যে যে বলা হয় না তা তো স্পষ্ট। তবে, আমাদের হুজুরদের বয়েই গেছে ওনাদের কথায় মাইণ্ড খাইতে। 

বইটিকে তিনভাগে বিভক্ত করা হয়েছে। বিটিভি সমগ্র, নাটিকা এবং ফুলান সিরিজ। বিটিভি সমগ্র মূলত হলে বিটিভিতে প্রকাশিত তথাকথিত দর্শক নন্দিত কিছু অনুষ্ঠানের ইসলামিক ভার্সন। যেমনঃ মীনা, নানা-নাতি ইত্যাদি। তবে, এখানে হিমুর নামেও একটা লেখা আছে " হিমুর মুখে ১০৮ টি আজওয়া খেজুর"। এর সাথে বিটিভির কি সম্পর্ক বোধগম্য হয়নি। তবে, প্রত্যেকটি লেখাই খুব উপভোগ করেছি।

দ্বিতীয় অংশ ছিল নাটিকা। হুজুর এবং গায়ক সম্ভবত এক মেসে থাকে। হুজুরের জ্বালায় গায়কের জীবন পুরাই ত্যানা-ত্যানা অবস্থা। গায়ক যখনই কোনো গান ধরে, তখন হুজুর কীভাবে যেন সেখানে ইসলাম ঢুকিয়ে দেয়। একটা উদাহরণ দিই। 

বাগানে একটা ভ্রমর খুঁজছিল গায়ক। না পেয়ে শেষে একটা মৌমাছিকে একটা কৌটায় আটকাল। তারপর সেটাকে নাকের কাছে ধরে গান গাইতে লাগল, "ভ্রমর কইয়ো গিয়াআআআআ…"
পেছন থেকে হুজুর গেয়ে উঠল, "জাহান্নামের গরম অনলেএএএ…"
গায়কের অসাবধানতায় কৌটা থেকে মৌমাছি বেরিয়ে গায়কের গায়ে হুল ফুটিয়ে চলে গেল। "অঙ্গ যায় জ্বলিয়া রে" বলে চিৎকার করতে করতে সারা বাগানে দৌড়াতে লাগল গায়ক।

না, না এখনই হাসবেন না। মূল আকর্ষণ এখনো বাকি। জি, হ্যাঁ ফুলান সিরিজ। রিপোর্টার আবু ফুলান এবং ইবনে ফুলান। একের পর এক ধরাশায়ী করে ভ্যালেন্টাইনস ডে, পয়লা বৈশাখ, নিউ ইয়ারসহ আরও বিভিন্ন সামাজিক ব্যাধিকে। বইয়ের সব থেকে ভালো অংশ হলো এটি। কারণ, এখানে সৃজনশীল কাজ করা হয়েছে। ১ম অংশে প্যারোডির মতো কাজ ছিল, ২য় অংশেও গানের ব্যবহার হয়েছে। কিন্তু ৩য় তথা ফুলান সিরিজের অংশটি সম্পূর্ণ মৌলিক। অনুরোধ থাকবে "হুজুর হয়ে টিম" যেন এই ফুলান সিরিজটি চলমান রাখে।

বইয়ে বানান ভুল সংক্রান্ত তেমন কোনো ভুল ছিল না। তবে, ৫৯ পৃষ্ঠায় বড়দিন পর্ব শুরু করা হয়েছে। আবার ৬০ পৃষ্ঠায়ও আবারও বড়দিন পর্ব শুরু করা হয়েছে। "সমর্পণ প্রকাশন" এর কাছে অনুরোধ থাকবে পরবর্তী সংস্করণে যেন এ বিষয়টি সংশোধন করা হয়।

যারা এতোক্ষণ কষ্ট করে পড়লেন আপনাদেরকে অবশ্যই বলবো বইটা পড়তে। শুধু সময় কাটানোর জন্যই না বরং কিছু বিষয় জানার এবং এখনই সচেতন হওয়ার জন্য। কারণ, আমাদের সমাজে এমন অনেক অপসংস্কৃতি সংস্কৃতির নাম নিয়ে ঢুকে গেছে যে কোনটা কুফফারদের অনুষ্ঠান আর কোনটা আমাদের ঐতিহ্য বুঝে ওঠা দায়। এ সম্বন্ধে চমৎকার কিছু তথ্য জানার জন্য হলেও বইটা পড়া দরকার। পরিচিত হওয়া দরকার হুজুর আবু ফুলান আর ইবনে ফুলানের সাথে। জাযাকুমুল্লাহ খাইর।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ