boi:- Love Letter By Arif Mahmud (বইঃ লাভ লেটারলেখকঃ আরিফ মাহমুদ)
ভালোলাগাটা আপেক্ষিক! কাকে কখন ভালো লেগে যায় তা বলা মুশকিল। আমরা অল্পতেই কারো প্রতি দুর্বল হয়ে পড়ি। ভালোবেসে ফেলি।
কারো হাসি ভালো লাগে, কারো কথা ভালো লাগে, কারো চুলের স্টাইল, কারো ব্যক্তিত্ব কিংবা হারাম নাচ গানের জন্যেও আমরা ভালোবাসি।
আফসোসের বিষয় হচ্ছে, আমরা যারা নিজেদের মুমিন দাবি করি তাদের মধ্যে কয়জনেই আল্লাহর জন্য লোকদের ভালোবাসি!
আল্লাহর জন্য লোকদের ঘৃণা করি। কয়জনকেই সুন্নাতের জন্য ভালোবাসি। কিংবা আল আসমাউল হুসনার মালিক যেই রব সেই রব আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলাকে কয়জনেই বা সত্যিকার অর্থেই ভালোবাসি।
হিসেব নিকেশ যদি করি তবে দেখব আমাদের সময়ের ভাগ, ভালোবাসার ভাগ; নায়ক-নায়িকা, গায়ক-গায়িকা, প্রেমিক-প্রেমিকা থেকে শুরু করে সবাই পায়, শুধু পায় না রব্বুল ইজ্জাত আল্লাহ রাব্বুল আলামিন!
অথচ কী হওয়ার ছিল আর কী করছি!
আমাদের ভালোবাসার অনুভূতিগুলো আজ ভুল জায়গায় ব্যবহার হচ্ছে। মিথ্যে মরীচিকায় আজ ‘ভালোবাসি’ ‘ভালোবাসি’র জিগির সব বিষাক্ত করে তুলছে।
তাই ঘৃণা, লাঞ্ছণা আর অপমান উচ্চ দামে সওদা হচ্ছে।
রাতে ঘুমোতে গিয়ে স্বামী স্ত্রীকে বলল—
: শুনছো! হযরত আলি রাদিয়াল্লাহু আনহু কয়টা বিয়ে করেছেন আর তাঁর কতজন স্ত্রী ছিল জানো?
স্ত্রী : হুমমম... তিনি জীবনে কতোগুলো যুদ্ধ করেছেন তাও কি তুমি জানো? তুমি এর অর্ধেকটি করে আসো আগে, তাহলে দেখো আমি নিজে তোমার জন্য বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে যাব মাসনার কাছে।
এই বলে পিঠ ফিরিয়ে দিয়ে দু-মিনিট শুইয়ে থেকে আবার মুখ ঘুরিয়ে বলল—
যাও! বাইতুল মাকদাস মুক্ত করো।
ফিলিস্তিন স্বাধীন করে ইহুদিদেরকে এই পবিত্র ভূমি থেকে বের করে দাও দেখি! আমার শুয়োচান নরপতি!!
স্ত্রীর এহেন তোপদাগানি দেখে স্বামীর ত্রাহি মধুসূধন অবস্থা!
ভড়কে গিয়ে আমতা আমতা করে ওঠে গেল। মনে মনে বলল—
কিত্তে যে ঢিল মারতে গেলাম!
নাছোড়বান্দা স্ত্রী আবার এপাশ হয়ে খেঁকিয়ে বলল—
হযরত আলি রাদিয়াল্লাহু আনহু খাইবারের যুদ্ধে দুর্গের বিশাল লোহার দরজা খুলে ছুড়ে ফেলে দিয়েছিলেন আর তোমরা বাপ-বেটা মিলে আটকে গেলে বাথরুমের দরজাটাও খুলতে পারো না!
স্বামী প্রমাদ গুণে কম্বল মুড়ি মেরে ওপাশ হয়ে পড়ে রইল। অস্ফুট বাক্যে বলছিল, ঠোঁট কাটা দস্যি!
স্ত্রী আবার ফিরে চোখ খুলে বলল—
হযরত আলি রাদিয়াল্লাহু আনহু কোনো কোনো রাত্রিতে মরু-বিয়াবায় সালাত আদায় করতেন। আল্লাহর ভয়ে তাঁর চোখ বন্ধ হয়ে আসত, আর তুমি রান্নাঘরে ইঁদুরের ভয়ে ঠাটিয়ে পড়ে চিল্লাও।
স্বামী বেচারা দ্বিতীয়বার মাসনার কথা ভাববে বলে মনে হচ্ছে না…
ভালোবাসা’ সেটাই, যখন খাদিজা রাদি. তার একান্ত ভালোবাসার মানুষটির জন্য নিজের সমস্ত সম্পত্তি ইসলামের পথে খরচ করেন।
‘ভালোবাসা’ সেটাই, যখন রাসুলুল্লাহ (ﷺ), আয়িশা রাদি.-এর সাথে দৌড়-প্রতিযোগিতায় অংশ নেন এবং জিতে গিয়ে তার সাথে মিষ্টিভরা খুনশুটি করেন।
সেটাই ‘ভালোবাসা’, নবীজি (ﷺ)-এর সেই হাড্ডিটি তুলে নেয়া, যেখান থেকে আয়িশা রাদি. খানিকটা মাংস খেয়েছেন; এবং ঠিক সেখানে নিজ ঠোঁটকে স্পর্শ করানো, যেখান থেকে আয়িশা রাদি. মাংস চিবিয়ে নিয়েছিলেন।
‘ভালোবাসা’ হচ্ছে ফাতিমা রাদি.-এর তাৎক্ষণিক মুচকি হাসি এবং দ্বিধাহীন সম্মতি―যখন নবীজি (ﷺ) ফাতিমা রাদি.-কে জানান যে, আলি রাদি.-এর সাথে তার বিবাহ ঠিক হয়েছে।
হ্যাঁ, ভালোবাসা হচ্ছে সেটা, যখন জাইনাব রাদি. তার অধিকৃত পরম মূল্যবান সম্পদসহ সবকিছুই ভালোবাসার স্বামীর তরে বিলিয়ে দিলেন।
প্রকৃত ভালোবাসা (মাত্রাতিরিক্ত) রোমান্টিকতা, মোমবাতির আলো-আঁধারিতে ভোজন কিংবা সমুদ্রসৈকতে একাকি হাঁটা―এগুলো কিছুই নয়।
বরঞ্চ পারস্পরিক শ্রদ্ধা, ত্যাগ-তিতিক্ষা, খেয়াল রাখা এবং অটুট বিশ্বাসের সম্মিলনই হচ্ছে ভালোবাসার আসল রূপ। আল্লাহ তাআলা আমাদের বুঝার তাওফিক দিন।’
লাভ লেটার বইটির ফ্রি পিডিএফ অফিসিয়ালি অনুমোদিত নয়।
লাভ লেটার বইটি পড়ে রিভিউ সেকশনে রিভিউ দিয়ে অপরকে উৎসাহিত করুন।
0 মন্তব্যসমূহ
ℹ️ Your Opinion is very important to us, Please Writer your comment below about this Post.....