⦁ বইয়ের নাম: 'কিতাবুল ইলম'
⦁ লেখক: ইমাম মুহাম্মদ বিন সালিহ আল-উসাইমীন।
⦁ অনুবাদক: মোজাফ্ফার বিন মুকছেদ ও আব্দুর রাযযাক বিন আব্দুর রশীদ।
⦁ প্রকাশনায়: মাকতাবাতুস সুন্নাহ।
⦁ পৃষ্ঠা সংখ্যা : ২৫৬।
⦁ নির্ধারিত মুল্য : ২০০ টাকা মাত্র।
Akhtar Bin Amir(36)(review credit)
❒ ভূমিকা:
'ইলম' মহান আল্লাহ্ প্রদত্ত এক অফুরন্ত নেয়ামাত, যা জ্ঞানী ও মূর্খদের মধ্যে পার্থক্য সৃষ্টি করে। এই নেয়ামাত থেকে আস্তে আস্তে যুবসমাজ মাহরুম হয়ে যাচ্ছে। কারণ আমাদের মধ্যে ইলম অর্জন, ইলমের চর্চা ও এর প্রচার-প্রসারের আকাঙ্ক্ষা দিনকে দিন বিলুপ্ত হচ্ছে।
এবং আমরা ক্বুরআন ও হাদীসের ইলমকে শুধু উলামাদের জন্য খাস মনে করছি। অথচ উলামারা হলেন ইলম এর পথচারী । যাদের কাজ হলো উম্মাহর কাছে এই ইলমকে পৌঁছে দেয়া এবং ইলমের আলো দিয়ে সমাজকে অজ্ঞতা ও মূর্খতার হাত থেকে রক্ষা করা। কিন্তু একজন মুসলিম হিসেবে আমার-আপনার যতটুকু ইলম থাকা প্রয়োজন, ততটুকু কি রয়েছে? জানার দিগন্ত উন্মুক্ত থাকলেও আমাদের আগ্রহ তেমন নেই বললেই চলে! অথচ রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন,
"যে ব্যক্তি ইলম অর্জনে কোনো রাস্তা অবলম্বন করে, আল্লাহ্ তা'আলা তার জান্নাতের রাস্তা সহজ করে দেন।’
[বাইহাকী, শু‘আবুল ঈমান: ৫৩৬৭]।
.
❒ বইটি কেন পড়বেন:
আল্লাহ্ তাআ'লা বান্দাদেরকে তাঁর ইবাদাতের জন্য সৃষ্টি করেছেন। আর তাই ইবাদাত পালনের পূর্বে এ বিষয়ে ইলম হাসিল করা জরুরী। তা নাহলে বিশুদ্ধভাবে ইবাদাত পালন করা যাবে না। এ প্রসঙ্গে
ইমাম বুখারী (রাহিমাহুল্লাহ্) তাঁর স্বহীহ বুখারীতে একটি অধ্যায়ের নামকরণ করেছেন এইভাবে, ‘আল ইলমু ক্বাবলাল ক্বাওলি ওয়াল আমাল’ অর্থাৎ কথা ও কাজের পূর্বে ইলম অর্জন করা জরুরী। ইলম অর্জন জান্নাতে যাওয়ার পথে সহায়ক। একজন মুসলিমের জীবনের সবচেয়ে বড় সফলতা হলো জান্নাত পাওয়া। আর ইলম হাসিলের মাধ্যমে জান্নাতে যাওয়ার পথ সহজ হয়ে যায়। প্রখ্যাত সাহাবী মু‘আয বিন জাবাল (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু) বলেছেন, "তোমরা জ্ঞানার্জন কর। কেননা আল্লাহর উদ্দেশ্যে জ্ঞানার্জনের অর্থ তাঁকে ভয় করা। জ্ঞানের আকাঙ্ক্ষা করা ইবাদত। জ্ঞান চর্চা করা হলো তাসবীহ। জ্ঞানের অনুসন্ধান করা জিহাদ। অজ্ঞ ব্যক্তিকে জ্ঞান দেওয়া ছাদাকা। উপযুক্ত ক্ষেত্রে তা ব্যয় করা আল্লাহর নৈকট্য হাছিলের কারণ। আর তা হালাল-হারাম জানার মানদন্ড, একাকিত্বের বন্ধু, নিঃসঙ্গতার সঙ্গী, সুখ-দুঃখের ধ্রুবক, চরিত্রের সৌন্দর্য, অপরিচিতের সাথে পরিচিত হওয়ার মাধ্যম। আল্লাহ্ জ্ঞানের দ্বারা মানুষকে এমন মর্যাদাবান করেন যা স্থায়ীভাবে তাকে অনুসরণীয় করে রাখে। --- [আল আজুরী, আখলাকুল উলামা, পৃঃ ৩৪-৩৫ ]।
.
এ প্রসঙ্গে গ্রন্থাকার আল-ইমাম মুহাম্মদ বিন সালিহ আল-উসাইমীন (রাহিমাহুল্লাহ্) বলেন,
فإذا تعلمت من أجل أن ترفع الجهل عن هذه الأمة كنت من المجاهدين في سبيل الله الذين ينشرون دين الله.
"যখন তুমি এই উম্মাহ (জাতি) থেকে অজ্ঞতা দূর করার জন্য (ইলম) শিক্ষা করবে, তখন তুমি আল্লাহর রাস্তায় (জিহাদকারী) এমন মুজাহিদগণের অন্তর্ভুক্ত হবে, যারা আল্লাহর দ্বীনকে উজ্জীবিত করেন এবং প্রতিষ্টিত করেন"। --- [কিতাবুল ইলম, পৃঃ ২২]।
.
আলোচ্য গ্রন্থে লেখক (রাহিমাহুল্লাহ্) ক্বুর'আন ও সুন্নাহর আলোকে 'ইলম' (জ্ঞান))-এর পরিচয়, তার ফযীলত (মর্যাদা) ও তা অর্জনের বিধান, ইলমের
শ্রেণীবিন্যাস, ইলম অন্বেষণকারীর আদব-কাইদাহ্,
ইলম অর্জনের পদ্ধতিসমূহ ও সতর্কতা, অর্জনের কারণসমূহ ও আলিম (জ্ঞানী)-দের ইখতেলাফ এবং ইলম অর্জন না করার বিবিধ অপকারিতা নিয়ে আলোকপাত করেছেন। এতে অন্তর্ভুক্ত বিষয়গুলি সাবলীল ও প্রাঞ্জল ভাষায় ব্যক্ত করা হয়েছে। শাইখের উপস্থাপনা ও ভাষাশৈলী এতটাই চমৎকার যে, বইটি পড়তে যেয়ে বারবার মনে হয়েছে আমি শাইখের দারসে বসে আছি। সার্বিক দিক বিবেচনায় আমার কাছে এই মাস্টারপিস গ্রন্থটি সময়োপযোগী, যৌক্তিক ও ইলম পিপাসুদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়েছে।
.
পরিশেষে দু'আ করছি, মহান আল্লাহ্ লেখক, অনুবাদক প্রকাশকসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে উত্তম প্রতিদান দিন, আর আমাদেরকে ই’লমান নাফিআ’ন (উপকারী জ্ঞান) দান করুন এবং সেই ইলম (জ্ঞান) দ্বারা প্রথমে নিজেকে অত:পর অন্যকে আলোকিত করার তাওফীক্ব দিন। আ-মীন ইয়া রাব্বাল আলামীন।
রিভিউ লেখক: আখতার বিন আমীর।
▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬
0 মন্তব্যসমূহ
ℹ️ Your Opinion is very important to us, Please Writer your comment below about this Post.....