সুইসাইড নোট By মোহাঃ সহিদুল ইসলাম রাজন
বই : সুইসাইড নোট
লেখক : মোহাঃ সহিদুল ইসলাম রাজন
প্রচ্ছদঃ আদনান আহমেদ রিজন
প্রকাশকঃ বিসর্গ
মুদ্রিত মূল্য : ৩০০
ছাড় মূল্য : ২১০
ধরন : রোমান্টিক থ্রিলার।
একদিন সময় করে শ্রাবণ গিয়েছিল মাকে দেখতে। নীলার ব্যাপারে জানতে চাইলেন মা। শ্রাবণ মাকে সব বিস্তারিত বলল। তিনি সব শুনে শ্রাবনের বাবার প্রসঙ্গ টেনে আনলেন এ কথা বোঝাতে যে নীলাকে আটকে রাখার চেষ্টা আর না করাই ভালো। তিনি আরো বললেন, 'নীলা যেহেতু কোনো ভাবেই থাকতে চাচ্ছে না তাই তাকে আটকে রাখার চেষ্টা করাটা একটু বেশি বাড়াবাড়ি, আর সে যদি চলে গিয়ে খুশি হয় তবে তাকে তাই করতে দাও।তোমার কারনে যদি সে কষ্টে থাকে তাহলে তোমার ভালোবাসার তো কোনো মূল্য থাকবে না আর।
ভালোবাসার মানুষকে নিজের কাছে আটকে রাখার নাম ভালোবাসা না, তাকে তার মত করে থাকতে দেওয়ার নাম ভালোবাসা, তাকে সুখে রাখার নাম ভালবাসা। সে যেখানে সুখ পায় সেখানে যাক, সে ভালো থাকলেই হবে। তাকে আর আটকে রেখো না, সে যদি তোমার কাছে থাকা সুখী মনে করে তাহলে সে আবার আসবে। প্রতিটি মানুষকে যে সুখী হতে হবে এমন তো কোনো কথা নেই, কিছু কিছু মানুষের জন্মই হয় নিজের সুখ ত্যাগ করে কাছের মানুষদের সুখী রাখার জন্য। কষ্ট পেয়ো না, একটাই তো জীবন, এমনিই কেটে যাবে।'
এসব কথা শুনে আরো বেশি খারাপ লাগলো শ্রাবনের। নিজের খারাপ লাগাকে ভুলতে অন্য প্রসঙ্গ টেনে আনলো সে। মাকে হঠাৎ জিজ্ঞাসা করল, বাবার চিঠিটা পড়েছেন কিনা, মাথা নেড়ে সম্মতি দিলেন মা এবং শ্রাবণকে বললেন, 'তোমাকে আজ কিছু কথা বলবো শ্রাবণ, আশা করি তুমি আমার কথাগুলো মন দিয়ে শুনবে, কথাগুলো তোমার জানা উচিত। তোমার বাবা এবং আমার সম্পর্ক শুরু থেকে এমন ছিলো না, আমাদের সম্পর্ক অনেক ভালো ছিল, এবং তুমি পৃথিবীতে আসার পর তোমার বাবা অনেক বেশি খুশি হয়েছিলেন, তার কাছে পৃথিবীতে সবচেয়ে বড় একটি পাওয়ার মধ্যে তুমি ছিলে অন্যতম।
তিনি তখন তোমাকে অনেক ভালোবাসতেন, তোমাকে অনেক আদর করতেন। তুমিও বাবার জন্য অনেক পাগল ছিলে, বাবা একটু বকা দিলে কান্না করতে, বাবা একটু হাসলে হাসতে, বাবাকে ঘোড়া বানিয়ে পিঠে চড়তে; বাবার সাথে তোমার কত খুনসুটি ছিল তখন। বাবা তোমার জন্য ব্যবসায় বসতে চাইতেন না ঠিকমতো।
বিশ্বাস করো তোমার বাবা আগে কখনো এমন ছিলেন না, তিনি তার চিঠির মত ছিলেন। তাই তোমাকে বলবো অতীতের সুন্দর দিনগুলোর জন্য হলেও পারলে তোমার বাবাকে মাফ করে দিও।
আরেকটা কথা আমিতো তোমাকে অনুরোধ করিনি কোনোদিন, তবে আজ করব এবং তার জন্য আগেই আমি ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। আমি জানি আমার এই অনুরোধটি শোনার পর তুমি অনেক কষ্ট পাবে, কিন্তু আমার কিছু করার নেই, প্রকৃতির কাছে আমি যে সব সময় নিরুপায় হয়েছিলাম। তোমার অনুভূতি, তোমার কষ্ট, তোমার আক্ষেপ সব জেনেশুনেই তোমাকে অনুরোধটি করছি- তুমি আমাকে এ বাড়িতে দেখতে এসো না আর।’
মায়ের কথা শুনে হতভম্ব হয়ে গেল শ্রাবণ। শ্রাবনকে কোনো কথা বলার সুযোগ না দিয়ে মা আবার বললেন, 'এ নিয়ে কোনো কারণ বর্ণনা করবো না আমি, তবে আশা করি তুমি অনুরোধ রাখবে।’ ”। - শ্রাবণ এবং তার মায়ের কথোপকথন।
-সুইসাইড নোট
মোঃ সহিদুল ইসলাম রাজন
🔍নামঃ সুইসাইড নোট বই রিভিউ______________
'ভালোবাসার মানুষ মরে গেলে বাঁচা যায়,
দু'চারদিন কেঁদে পানশালা
কিংবা ব্রোথেলে যাওয়া যায়,
কিন্তু অন্য কারো সাথে কখনো ভাগ করা যায় না। '
ভালোবাসার মানুষের কাছ থেকে পাওয়া অবহেলা মানুষকে অমানুষ করে তুলতে পারে। এমন কিছু ঘটনা নিয়ে মোঃ সহিদুল ইসলাম রাজন লিখেছেন রোমান্টিক থ্রিলার " সুইসাইড নোট "
বইয়ের শুরু থেকেই লেখক ঘটনাগুলোকে বড্ড আকর্ষণীয় করে তুলতে পেরেছেন। এই আকর্ষণের কারণেই বইটা শেষ করা না পর্যন্ত যেনো চুম্বকের মতো গেথে রাখছিলো।
সুইসাইড নোট উপন্যাসের প্রধান মেসেজ হলো সন্তানের মানসিক বিকাশে মা-বাবার মধ্যকার সম্পর্কের গুরুত্ব এবং প্রভাব। আমাদের অনেক মা-বাবাই সন্তানের এসব বিষয় ভাবেন না,বুঝতে চেষ্টা করেন না যে তাদের খারাপ সম্পর্ক, ঝগড়া, বিচ্ছেদ এমনকি সামান্য চিৎকারও সন্তানের মানসিক বিকাশে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সুইসাইড নোটে এমন দুটি পরিবার এবং তাদের সন্তানদের উপর উক্ত সম্পর্কের প্রভাব দেখানো হয়।
"একদিনের আত্মহত্যা মহাপাপ বলে আমরা অনেকেই তা ধীরে ধীরে করি। " লাইনটি অনেক ভালো লেগেছে।
একনজরেঃ
লেখকঃ মোঃ সহিদুল ইসলাম রাজন
প্রচ্ছদঃ আদনান আহমেদ রিজন
0 মন্তব্যসমূহ
ℹ️ Your Opinion is very important to us, Please Writer your comment below about this Post.....