বইঃ কারণজল
লেখকঃ মঈনুল আহসান সাবের
প্রকাশনীঃ দিব্য প্রকাশ
মূল্যঃ ১৩৫ টাকা
পৃষ্ঠা সংখ্যাঃ ৭৮ টি
প্রচ্ছদঃ মঈনুল আহসান সাবের
প্রতিযোগির নামঃ জিহাদ মুনতাছির
লেখক পরিচিতিঃ
বাংলা সাহিত্যের এক হীরকখণ্ড মঈনুল আহসান সাবেরের (জন্ম ২৬ মে ১৯৫৮) একজন বাংলাদেশি সাহিত্যিক। বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাঁকে ২০১৯ সালে দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা একুশে পদকে ভূষিত করে। এছাড়াও তিনি বাংলা একাডেমি পদক লাভ করেছেন। উল্লেখ্য, তাঁর পিতা ছিলেন কবি আহসান হাবীব
পুরস্কারঃ
বাপী শাহরিয়ার শিশুসাহিত্য পুরস্কার (১৯৯১)
ফিলিপস পুরস্কার
হুমায়ুন কাদির সাহিত্য পুরস্কার
বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার (১৯৯৬)
ভাষা ও সাহিত্যে একুশে পদক (২০১৯)
প্রকাশিত গ্রন্থঃ
অপেক্ষা (১৯৯২), কবেজ লেঠেল (১৯৯২), হারানো স্বপ্ন (১৯৯২), দুই বোন (১৯৯২), নীল খাম (১৯৯২), না (১৯৯২), সে তোমাকে পাবে না (১৯৯২), মুন্নী (১৯৯২), লজ্জা (১৯৯২), ভূতের থাকা না থাকা (১৯৯২), সুদূর (১৯৯৩), প্রেম ও প্রতিশোধ (১৯৯৩), স্বজন (১৯৯৩), তুমি আমাকে নিয়ে যাবে (১৯৯৩), মঈনুল আহসান সাবেরের প্রেমের গল্প (১৯৯৩), এক ঝলক আলো (১৯৯৪), দুপুর বেলা (১৯৯৫), মৌমাছি ও কাঠুরিয়া (১৯৯৬), তিন সাংবাদিক ভূত (১৯৯৭), মুক্তিযোগ্দধা আব্দুল মালেকের হাসি (১৯৯৭), সংসার যাপন (১৯৯৭), মৃদু নীল আলো (১৯৯৭), রেলস্টেশনে অজানা গল্প (১৯৯৮), জ্যোতির্ময়ী, তোমাকে বলি (১৯৯৮), যোগাযোগ (১৯৯৮),অপরাজিতা ইত্যাদি।
পাঠ প্রতিক্রিয়াঃ
প্রথমই বলে রাখি এই ধরনের উপন্যাস আমি আগে কখনো পড়িনি।পুরোপুরি ভিন্ন রীতিতে লেখা উপন্যাসটি।
এই উপন্যাসের নায়ক, নায়িকা বা কথক যেটাই বলি সেটা হচ্ছে একটা ভ্রুণ। এছাড়াও যেসব চরিত্রগুলো রয়েছে সেগুলো হলোঃ শাহনাজ, মাহমুদ, আলী জামান খান, খুসরু, শামীমুল...। এই উপন্যাসের পুরোটা কাহিনীর কথক ঐ ভ্রুণটা।উপন্যাসের শুরুটা হয়েছিলো এইভাবেঃ "আমার জন্মের মাস দু-আড়াই মাস আগে আমার মনে হলো, জন্মের পর আমি যাকে বাবা বলে ডাকবো,সে আমার জন্মদাতা বাবা নয়।"
এই উপন্যাসের লেখকের কাহিনী বিন্যাস,শব্দ চয়ন,ভাষা শৈলী, ঘটনার ঘনঘটা, চরিত্রের খামখেয়ালিপনা, ঘটনার আকস্মিকতায় লেখক যে মুন্সিয়ানা দেখিয়েছে,তাতে যে কোনো পাঠকের চিত্তাকর্ষণ করতে বাধ্য
উপন্যাসের প্রারম্ভিকাঃ
এই উপন্যাসের গঠনরীতি,বর্ণনা, ঐক্যবোধ,জীবন-দর্শন,চরিত্র সৃষ্টি, লঘুরস ইত্যাদি যথাযর্থ শ্রেষ্ঠত্বের দাবিদার।
উপন্যাসের সময়কালঃ
এই উপন্যাসের নির্দিষ্ট করে কোনো সময়ের উল্লেখ নেই।
তাই বুঝা বড় দায়, লেখক এই উপন্যাসে কোন সময়কে ধরতে চয়েছেন....।
ফ্ল্যাপের লেখাঃ
এই কাহিনী সেই মেয়ে কিংবা ছেলেটির, জন্মের দু'আড়াই মাস আগে যার মনে হলো,জন্মের পর যাকে সে বাবা ডাকবে, সেই মাহমুদ তার জন্মদাতা বাবা নয়।
এটা তার কেন মনে হলো?
মা শাহনাজের গর্ভে থাকতে- থাকতেই মার সঙ্গে তার এক সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। মাকে সে অনেকটাই পড়তে পারে। অনেকটাই পারে, তবে পুরোটা পারে না।
শাহনাজ আর মাহমুদের আনন্দের সংসার। তাদের ঘিরে কিছু চরিত্র আছে।
আছে খুসরু। মাহমুদের দূর সম্পর্কের ভাই। ওদের বাসায়ই থাকে। জন্ম বোহেমিয়ান। তার কিছুই ঠিক নেই।
আছে আলী জামান খান।রহস্যময় এক পুরুষ। যার হাত ধরে মাহমুদ ব্যবসায়ে নেমেছে। জামানে বাজারে নানা দূর্নাম। নারী লিপ্সা তার একটির।
আছে শামীমুল। শাহনাজের দেশের বাড়ির একজন। গায়ে গতরে বিশাল। শাহনাজ তাকে দামড়া বলে ডাকে।
আর আছে টুকুন!
শাহনাজ আর মাহমুদের সুখের সংসার। আনন্দের। তৃপ্তিরও।তবে আনন্দের জীবনেও কি অন্য কোনো থাকে না? কোনো অতৃপ্তি?
নাকি এরা কেউ না? জন্মের আগে সেটা জেনেই কি ছেলে কিংবা মেয়েটি পৃথিবীতে আসআে?
জানতে হলে পড়তে হবে 'কারণজল' উপন্যাসটি....।
উপন্যাসের উৎর্গপত্রঃ
কি গল্পে কি উপন্যাসে কি অনুবাদ - কাজে ভালো ও আরো ভালোর পাশাপাশি খুঁতহীন হতে উদগ্রীব।
আফসানা বেগম
সুজনেসু।
রেটিংঃ
এই ধরনের উপন্যাস যেহেতু আমি এর আগে কখনো পড়িনি তাই এখনি এর রেটিয়ে গিয়ে আমাকে ১০/১০ ই দিতে হবে।
উপন্যাসের নামঃ
উপন্যাসের নামে আমার যথেষ্টই কৌতুহল থেকে গেলো। কারণ এই উপন্যাসের নাম কারণজল হলো কেন তা আমি এখনো ভালো ভাবে বুঝতে পারি নাই।( কেউ যদি পড়ে বুঝতে পারেন তবে জানাতে ভুলবেন না।)
উপন্যাসের দূর্বল দিকগুলোঃ
যদিও উপন্যাসটি সব দিক থেকে শ্রেষ্ঠত্বের দাবিদার, কিন্তু এই উপন্যাসের যে দিকটি আমায় পীড়িত করেছে -- সেটি হলো 'কাহিনী বর্ণনার মন্থরতা'। লেখক এই উপন্যাসটিতে কাহিনী খুবই ধীরে ধীরে বর্ণনা করেছেন। এই দিকটি ছাড়া এই উপন্যাস সব দিক থেকে শ্রেষ্ঠত্বের দাবিদার।
উপসংহারঃ
ভিন্ন ধর্মী এই উপন্যাসটি পড়ে খুবই চমৎকৃত হয়েছি। অসাধারণ এই উপন্যাসখানা সকল বই পিপাসুর পড়া উচিত বলে আমার পাঠক সত্তা বলছে।
0 মন্তব্যসমূহ
ℹ️ Your Opinion is very important to us, Please Writer your comment below about this Post.....