⦁ বইয়ের নাম: যঈফ হাদীস কেন বর্জনীয়।
⦁ লেখক : একঝাঁক মুহাক্বীক্ব উলামায়ে কেরাম।
⦁ অনুবাদক: কামাল আহমাদ।
⦁ প্রকাশনায় : ওয়াহীদিয়া ইসলামিয়া লাইব্রেরী।
⦁ পৃষ্ঠা সংখ্যা : ২৯৫।
⦁ নির্ধারিত মুল্য : ১৫০ টাকা মাত্র।
❒ ভুমিকা,
.
নিশ্চয়ই ক্বুর'আন ও স্বহীহ হাদীস দ্বারাই শরীআত পরিপূর্ণ। সংশয়যুক্ত বিষয় তথা যঈফ হাদীস পরিপূর্ণতায় ক্ষেত্রে নিশ্চিত বাধা। আর একারণেই তা শরীআতের মর্যাদা পায়না। তবুও কিছু লোক (যাদের অন্তর যঈফ হাদীসের প্রতি আসক্ত) স্বহীহ বা মাক্ববুল হাদীসকে বর্জন করে যঈফ হাদীসকে গ্রহণযোগ্য করার অপচেষ্টা করে থাকে। এমনকি ক্ষেত্রবিশেষে নিজেদের সিদ্ধান্ত - যা ক্বুর'আন বা স্বহীহ হাদীস বিরোধী, সেটাকেই শরীআতি বিধান হিসেবে উপস্থাপন ও আমল করে থাকে। এর দ্বারা তাদের সবচেয়ে বড়ো সফলতা হল, উম্মতের মধ্যে ইখতিলাফ (মতপার্থক্য), ইফ্বতিরাক (বিভেদ) প্রভৃতি ফিতনা স্থায়ী রাখা। এছাড়াও তারা নিজস্ব ইমাম ও হুযুরের কথাকে আল্লাহ্ ও তাঁর রসূলের সুন্নতের সমমান তথা শরীআত হিসেবে গ্রহণ করে। যদিও এগুলো সুস্পষ্ট গোমরাহী বৈ আর কিছুই নয়।
.
❒ বইটি কেন পড়বেন :
.
আমাদের সমাজে কতিপয় দাঈ যঈফ হাদীসকে হুজ্জাত বা দলীল-প্রমান হিসেবে গ্রহণ করার অপচেষ্টা করে থাকে। স্বহীহ হাদীসকে বর্জনের ক্ষেত্রে টাল-বাহানা করে নিজস্ব মত প্রতিষ্ঠার জন্য স্ববিরোধী উসূল প্রয়োগ করে থাকে। আমরা আরো দেখছি যে, নিজেদের ভুল বা বিদ'আতি আমলকে জায়েজকরণে নিজস্ব মতামত, মাযহাব, ফিরক্বা ও তরিকার পক্ষে মনগড়া উসূল ও ত্রুটিযুক্ত গবেষণার দ্বারা জাতিকে ফিতনা ও বিদ'আতের গোলকধাঁধায় নিমজ্জিত করে।
আলোচ্য বইয়ে এর আনুসাঙ্গিক বিষয়াদি মুলৎপাটন এবং গবেষক উলামাদের জ্ঞানগর্ভ আলোচনা স্থান পেয়েছে। মুলত এটি একঝাঁক উলামায়ে কেরামের ইলমী নির্যাসের সংমিশ্রণে উলূমুল হাদীস বা উসূলুল হাদীস বিষয়ক মাস্টারপিস গ্রন্থগুলোর একটি। এতে যাদের লিখনী রয়েছে - তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন :
--- ইমাম ইবনু তাইমিয়্যাহ
--- ইমাম ইবনে হাজার আসকালানী
--- ইমাম ইবনে কাসীর
--- ইমাম নববী
--- আল্লামাহ যুবায়ের আলী যাঈ
--- হাফিয গোন্ধলভী
--- হাফিয আব্দুল মান্নান নূরপুরী
--- হাফিয গাযী উযাইর
--- হাফিয ইয়াহিয়া নূরপুরী
--- হাফিয সালাউদ্দীন ইউসুফ - সহ আরো অনেকে।
.
.
❒ এক নজরে সূচিপত্র :
.
এই গ্রন্থটি ছয়টি অধ্যায় ও চুয়াত্তর-টি অনুচ্ছেদে সাজানো হয়েছে। বইটি পড়তে যেয়ে বেশকিছু ভালো আলোচনা আমার দৃষ্টিগোচর হয়েছে। যাইহোক, কথা আর লম্বা না করে অধ্যায়গুলির বিষয়বস্তু তুলে দেই, যাতে আপনারা প্রাথমিক ধারণা পেতে পারেন ---
লেখক প্রথম অধ্যায়েই মৌলিক আলোচনা করেছেন। এতে মাক্ববুল ও মারদূর হাদীসের প্রকারভেদ, সনদের গুরুত্ব, যঈফ হাদীস বর্ণনার ক্ষেত্রে শর্তারোপ ইত্যাদি বিষয়াদি স্থান পেয়েছে। দ্বিতীয় অধ্যায়ে হাসান লি-গয়রিহি হাদীস, তৃতীয় অধ্যায়ে মুরসাল হাদিস বির্তক, চতুর্থ অধ্যায়ে তাদলীস ও মুদাল্লিস বির্তক,
পঞ্চম অধ্যায়ে স্বহীহ বুখারী ও মুসলিমের প্রতি আপত্তি এবং ষষ্ঠ অধ্যায়ে বিবিধ: কিছু ভ্রান্তির উন্মোচন করে ইতি টেনেছেন। প্রত্যেক অধ্যায়ে অনুচ্ছেদাকারে বিস্তারিত আলোচনা গ্রন্থটিকে আলাদা বৈশিষ্ট্যমন্ডিত করেছে। সংকলক আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন যাতে - এতে অন্তর্ভুক্ত বিষয়গুলি সর্বশ্রেণীর মানুষ তথা ইসলামী শিক্ষিত, সাধারণ শিক্ষিত এবং স্বল্পশিক্ষিত লোকজনও সহজে বুঝতে পারেন। তবুও বইটি যেহেতু উলূলুম হাদীস বিষয়ক এবং এতে অন্তর্ভুক্ত বিভিন্ন পরিভাষার সাথে আমরা পরিচিত নই, তাই গ্রন্থটি আলিমদের
সহযোগিতায় পড়াই উত্তম। কেননা, এতে এমন কিছু বিষয় রয়েছে - যা আপনার মাথার উপর দিয়ে উড়ে যাবে, আপনি টের-ই পাবেন না।
.
❏ সমালোচনা :
.
আলোচ্য বইটির প্রচ্ছদ মোটেও ভাল লাগেনি। আশা করছি ,পরবর্তী সংস্করণে পরিবর্তন আসবে।
.
মহান আল্লাহ্ গ্রন্থটির অনুবাদক, প্রকাশকসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে উত্তম প্রতিদান দিন এবং আমাদেরকে সংশয়হীন স্বহীহ দলীল প্রমাণের অনুসরণ করার তাউফ্বীক দান করুন - আমীন ইয়া রাব্বাল আলামীন।
.
.
.
রিভিউ লেখক : আখতার বিন আমীর।
▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬
0 মন্তব্যসমূহ
ℹ️ Your Opinion is very important to us, Please Writer your comment below about this Post.....