মাওয়ায়েজে সাহাবা (সাহাবিদের অনুপম কথামালা)
লেখক : সালেহ আহমদ শামী
প্রকাশনী : চেতনা প্রকাশন
বিষয় : সাহাবীদের জীবনী, বক্তৃতা, বয়ান সংকলন
পৃষ্ঠা : 392, কভার : হার্ড কভার
সাপ্লায়ার জানিয়েছেন এই পণ্যটি 15 January প্রকাশিত হতে পারে। প্রকাশিত হওয়ার সাথে সাথে পণ্যটি পেতে আগেই অর্ডার করে রাখুন ।
ওয়াজ-নসিহত তো অনেক হয় কিন্তু কখনও কি ভেবে দেখেছেন উম্মাহর শ্রেষ্ঠপ্রজন্ম সাহাবায়ে কেরামের ওয়াজ-নসিহত কেমন ছিল? তাদের ওয়াজের বিষয়বস্তু কী হত? কোন বিষয়গুলো প্রাধান্য পেত তাদের আলোচনায়? যারা মানবিক গুণাবলী ও বৈশিষ্ট্যের শীর্ষচূড়ায় উপনীত ছিলেন, যাদের হেদায়াত-মশালে পৃথিবীর ঘোরআধার কেটে গিয়ে তা হয়ে উঠে নির্মল, সুন্দর ও সজীব—আমরা কি কখনও জানার চেষ্টা করেছি কেমন ছিল তাদের সেই অনুপম কথামালা, যার পরশে লক্ষ-কোটি জীবন বদলে গেল? বইল তাতে ঈমানী সু-বাতাস?
হ্যাঁ, প্রিয় পাঠক! আরবের প্রখ্যাত শাইখ সালেহ আহমদ শামী এই বিষয়টাই আমাদের জানান দিচ্ছেন আলোচ্যগ্রন্থে। নবী সা. এর স্নেহধন্য প্রায় পঁয়ত্রিশজন সাহাবীর জীবনঘনিষ্ঠ কথামালা হাজির করেছেন তিনি এতে। পাঠক! গ্রন্থটি পাঠে আপনি হারিয়ে যাওয়ার সুযোগ পাবেন সাহাবায়ে কেরামের মুবারক মজলিসে। আহরণ করতে পারবেন মূল্যবান সব মনিমুক্তা আর হীরা-জহরত! তাহলে আর দেরি কেন? স্বাগতম আপনাকে সোনালী মানবদের স্বর্ণালি ভুবনে!
বই থেকে আরো দেখুন__________________
সকল প্রশংসা বিশ্বজগতের রব আল্লাহ তাআলার জন্য । সর্বোত্তম দরুদ ও পূর্ণাঙ্গ শান্তি বর্ষিত হোক আমাদের সাইয়িদ মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ওপর , যাকে বিশ্বজগতের জন্য রহমত হিসাবে পাঠানো হয়েছে । শান্তি বর্ষিত হোক নবিজির পরিবার - পরিজন এবং সকল সাহাবায়ে কেরামের ওপর । প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাহাবিরা ছিলেন মানবিক গুণাবলি ও বৈশিষ্ট্যের শীর্ষচূড়ায় উপনীত এক প্রজন্ম , এই মহান প্রজন্মকে আল্লাহ তাআলা নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সঙ্গী হিসাবে নির্বাচিত করেছেন ।
হেদায়েতের বাণী সংরক্ষণ করা ও তা পৃথিবীব্যাপী ছড়িয়ে দেওয়ার এই পবিত্র যাত্রায় তারা ছিলেন রাসুলের সঙ্গী , এ পবিত্র যাত্রার ঐতিহাসিক সূচনা হয়েছে উম্মুল কুরা তথা মক্কা থেকে । যে যাত্রার উদ্দেশ্য হচ্ছে , পৃথিবীর সকল প্রান্তেই কল্যাণ ও হেদায়েতের বাণী বহন করে নিয়ে যাওয়া । মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্যের এমন শীর্ষচূড়ায় সাহাবিরা পৌঁছেছেন , পূর্ববর্তী কোনো প্রজন্ম সে পর্যন্ত কখনোই পৌঁছতে পারেনি এবং পরবর্তী কোনো প্রজন্মও পৌঁছতে পারবে না ।
পরম সত্যবাদী রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ ব্যাপারে বলেন , Predalised a hue and cons সর্বোত্তম যুগ হলো আমার যুগ , এরপর সে যুগ যারা তাদের পর আসবে , এরপর সে যুগ যারা তাদেরও পর আসবে । এ ব্যাপারে সুরা আনআমের একটি আয়াতে সুস্পষ্টভাবে বলা হয়েছে , severages আল্লাহ আপন রিসালাতের দায়িত্ব কার ওপর অর্পণ করবেন , তা তিনি ভালোই জানেন । ( সুরা আনআম , ১২৪ ) তারা ছিলেন সেই প্রজন্ম , যখন আকাশ থেকে একটি একটি করে আয়াত অবতীর্ণ হয়েছে , তারা তা স্বচক্ষে দেখার সৌভাগ্য লাভ করেছেন । অবতীর্ণ প্রতিটি শব্দ ও অক্ষর নিজেদের মধ্যে ধারণ করে তারা বেড়ে উঠেছেন ।
ঐশী ওহি - তরঙ্গের মধ্য দিয়ে তারা জীবনযাপন করেছেন । তারা ছিলেন সেই অবস্থার প্রত্যক্ষ সাক্ষী , যখন নবি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ওপর ওহি অবতীর্ণ হচ্ছিল আর তার চেহারা বেয়ে টপটপ করে ঘাম ঝরছিল । এমন এক বৈরী পরিবেশ মোকাবিলা করে তারা বেড়ে উঠেছেন , যখন কাফেররা দ্বীনকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করছিল । কেবল ইসলাম গ্রহণের কারণে কাফেরদের কঠোর নির্যাতন - নিপীড়ন ও অবরোধ আরোপের মতো নিষ্ঠুর জুলুমের মুখোমুখি হয়েছেন এ শ্রেষ্ঠ প্রজন্ম ।
ইসলামের আকিদা - বিশ্বাস লালনের ফলে তারা নিজেদের ঘরবাড়ি থেকে বিতাড়িত হয়েছেন ; পরিবার - পরিজন , অর্থসম্পদ এবং স্বদেশ ত্যাগ করে এক অচেনা ভূমিতে হিজরত করেছেন । যে হিজরতের উদ্দেশ্য ছিল দীর্ঘদিন যাবৎ চলতে থাকা সমস্ত সীমালঙ্ঘন ও জুলুমের মোকাবিলার জন্য জিহাদের এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করা এবং বিশ্বচরাচরের সকলের কাছে ঐশী আলোকবর্তিকা পৌঁছে দেওয়া । সাহাবিরা রাসুলে কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পদাঙ্ক অনুসরণ করে প্রতিটি পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন । নবিজির কাছ থেকে দিকনির্দেশনা গ্রহণ করেছেন এবং তাঁর নির্দেশনাবলি মনোযোগ দিয়ে শ্রবণ করেছেন ।
তিনি যা নিষেধ করেছেন তারা সেগুলো থেকে বিরত থেকেছেন । তাঁর আহ্বানে সাড়া দিয়েছেন । তাঁর আনন্দে আনন্দিত হয়েছেন । তাঁর ব্যথায় ব্যথিত হয়েছেন । তার জন্য নিজেদের জানমাল , পরিবার - পরিজন সবকিছু উৎসর্গ করেছেন । তারাই হলেন সেই অনন্য প্রজন্ম , প্রতিটি সত্যবাদী মুমিনই যাদের মর্যাদা প্রদান করে থাকে , কেবল মুনাফিকরাই যাদের মর্যাদা ক্ষুণ্ণ করার অপচেষ্টা করে থাকে । সাহাবিদের এ শ্রেষ্ঠ প্রজন্মকে এমন মর্যাদা প্রদান করা হয়েছে , যা অন্য কোনো প্রজন্মকে প্রদান করা হয়নি ।
তাদের অভিজ্ঞতা এবং বিভিন্ন বিষয়ের বোঝাপড়াকে সেই উৎসের মান দেওয়া হয় , যে উৎস আল্লাহ তাআলার কিতাব এবং রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সুন্নাহ যথাযথভাবে বোঝার জন্য সহায়ক হয়ে থাকে ৷ এইজন্য প্রতিটি মুসলমানের নিকট তাদের বক্তব্যসমূহ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উৎসের মর্যাদা রাখে । তাদের বক্তব্যসমূহ একজন মুসলমানকে নববি যুগে পৌঁছে দিতে পারে । তখন সে নববি সুবাস গ্রহণ করতে পারে , সুগন্ধি বিচ্ছুরক মহান বিষয়াদি পর্যন্ত পৌঁছে যেতে পারে । আপন অন্তর্চক্ষু দিয়ে সেসব নামের ব্যক্তিদের দেখতে পারে , যুগ যুগ ধরে যারা মানবজাতির শ্রদ্ধা ও ভক্তি পেয়ে আসছেন ।
উপরিউক্ত কারণে এবং আরও বেশ কিছু কারণে আমি সাহাবায়ে কেরামের উক্তি এবং তাদের উপদেশমালা সংকলনের প্রতি উদ্বুদ্ধ হয়েছি । আশা করি এটা হবে এই ধর্ম এবং ধর্মীয় শিক্ষা আঁকড়ে ধরার পথে অন্যতম পদক্ষেপ । আমি আল্লাহর কাছে আশাবাদী , মুসলমানদেরকে তিনি উত্তমভাবে ইসলামের পথে ফিরিয়ে আনবেন । তিনি আমাদের এই প্রয়াস এবং অন্য সকল প্রয়াসকে তার জন্য একনিষ্ঠ করে কবুল করে নেবেন । নিশ্চয়ই তিনি সর্বোত্তম আশ্রয়স্থল । রহমত ও শান্তি বর্ষিত হোক মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং তার পরিবার - পরিজন ও সাহাবায়ে কেরামের ওপর । সকল প্রশংসা বিশ্বজগতের প্রতিপালক আল্লাহ তাআলারই জন্য ।
__________________________
সালেহ আহমদ শামী
১ রবিউল আউয়াল ১৪১৯
0 মন্তব্যসমূহ
ℹ️ Your Opinion is very important to us, Please Writer your comment below about this Post.....