শয়তানের বিরুদ্ধে লড়াই
লেখক : মাহমুদ বিন নূর
প্রকাশনী : রাইয়ান প্রকাশন
বিষয় : আত্মশুদ্ধি ও অনুপ্রেরণা
পৃষ্ঠা : 144, কভার : পেপার ব্যাক
ভাষা : বাংলা।
সাপ্লায়ার জানিয়েছেন এই পণ্যটি 11 January প্রকাশিত হতে পারে। প্রকাশিত হওয়ার সাথে সাথে পণ্যটি পেতে আগেই অর্ডার করে রাখুন ।
ক্ষেত্রবিশেষ যখন ঐ শয়তানের ব্যাপারে আলোচনা করা হয়, তখন ছোট বড় সবার মনে একটা প্রশ্ন জাগে শয়তান কি রকম? তার আকৃতি কেমন
আসলে ,শয়তানের নির্দিষ্ট কোন আকার আকৃতি নেই। তবে সেই বিভিন্ন সময়, ভিন্ন ভিন্ন রূপ ধারণ করতে পারে, এটা নিচের হাদিস থেকে বুঝা যাচ্ছে। বর্ণিত আছেঃ _____________________________
আবু হুরায়রা রাযি. বললেন, রাসুল সাঃ বলেছেন, যে আমাকে স্বপ্নে দেখে, সে ঠিক আমাকে দেখে, কেননা শয়তান আমার আকৃতি ধারণ করতে পারে না।
এ হাদীস দ্বারা বুঝা যাচ্ছে, শয়তান রাসুল সাঃ এর আকৃতি ধারণ করতে পারে না। এখানে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আকৃতি ধারণ করাকে তিনি নাচক করেছেন। তারমানে রাসূল সাঃ এর আকৃতি ধারণ করতে পারে না ঠিকই, তবে অন্য কিছুর আকৃতি ধারণ করতে সক্ষম। যখন কোন কিছু হয়, তখনই তার ব্যাপারে আলোচনা হয়। সুতরাং নিশ্চয়ই শয়তান ভিন্ন ভিন্ন আকৃতি ধারণ করে আমাদের ধোকায় ফেলে। এজন্যই রাসুল সাঃ বলেই দিয়েছেন ,শয়তান আমার আকৃতি ধারণ করতে পারে না।
আমরা অনেকেই মনের গহীনে শয়তানের বিভিন্ন আকৃতি অঙ্কন করে ফেলি। কেউ কেউ শয়তানের জন্য বিরাট মস্তক নির্ধারণ করি। কেউ কেউ লম্বা লম্বা সিং, কেউ কেউ লেজ, আবার কেউ কেউ ভয়ঙ্কর প্রাণীর অবয়ব হৃদয় অঙ্কন করি। যে যেটাই নির্ধারণ করুক, শয়তানের কোন নির্দিষ্ট আকার আকৃতি নেই। তবে ,অধিকাংশ রেওয়ায়েত থেকে তার কিছু আকার-আকৃতি আমাদের কাছে পরিস্কার হয়েছে।
শয়তানের শিং_____________________________
ছোটবেলা থেকেই আমরা শুনে আসছি যে, শয়তানের দুটো শিং আছে। এটা কি আসলেই , শয়তানের কি সত্যি সত্যি সিং রয়েছে? থাকলে সেই দুটো কোথায়? আর দেখতে কেমন আকার কেমন এরকম অনেক চিন্তায় আসে মনে। সেটা যাই হোক আসুন হাদীসের আলোকে জেনীনি শয়তানের শিং আছে কিনা___
বর্ণিত আছে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিষেধ করে বলেছেন তোমরা সুন্দর্য ও সূর্যাস্তের সময় সালাত আদায়ের ইচ্ছে করবে না। কেননা সূর্য শয়তানের দুই এর মাঝখান দিয়ে উদিত হয়।
উপরোল্লিখিত হাদিস দ্বারা এটাই প্রতীয়মান হয়, শয়তানের শিং রয়েছে। তবে শিং দেখতে কেমন, তার আকার কেমন ,মোটা না চিকন, খাটো না লম্বা এগুলো অস্পষ্ট, অজানা। তবে সিং রয়েছে এটা সত্য।
বকরীর আকৃতি
ছোটবেলায় যখন মুরুব্বিদের কাছে শয়তান এবং জিনের গল্প শুনতাম, তখন তারা বলছেন, জিন এবং শয়তান ভেড়া ও ছাগল এর রূপ ধারণ করে চলাফেরা করে। তখনকার সময়ে তাদের এই কথাগুলো নিছক গল্প এবং কল্পিত কাহিনী মনে হতো। আসলে তা কল্পিত কোন কাহিনী নয়, শয়তান সত্যিই ছাগলের রোগ ধারণ করে। আসুন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর একটি হাদিস থেকে তা জেনে নিই।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন আনাস ইবনে মালিক রাযি. থেকে বর্ণিতঃ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন তোমরা সালাতের কাতার সমূহে মিলেমিশে দাঁড়াবে। এক কাতারকে অপর কাতারের নিকট রাখবে। পরস্পর কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দাঁড়াবে ।ঐ সত্তার শপথ, যার হাতে আমার জীবন! আমি চাক্ষুষ দেখতে পাচ্ছি, কালারের খালি ফাকা জায়গাতে শয়তান যেন একটি বকরীর বাচ্চার ন্যায় প্রবেশ করছে।
এ হাদীস এটাই প্রমাণ করে__শয়তান বকরীর আকৃতি ধারণ করে। আর এটা বাস্তবে অনেকের কাছে প্রমাণিত বটে। অনেক সময় শয়তান বকরের আধার ধারণ করে মানুষের নিকট আগমন করে। দুষ্ট জিন শয়তান, রাতের আধারে অনেক মানুষের সামনে আত্মপ্রকাশ করে। যারা রাতের বেলা এখানে সেখানে যায়, তাদের জিজ্ঞেস করুন, এরকম অস্বাভাবিক বকরি তাদের চোখে পড়ছে কিনা!
অবশ্যই পড়েছে অনেকের চোখে পড়েছে। অনেকে গভীর রাতে অস্বাভাবিক বকরি দেখতে পায়। এমন এমন স্থানে দেখেছেন যেখানে এত রাত গৃহপালিত বকরি থাকার কথাও না। এতদসত্ত্বেও সে বকরি দেখেছে, তাও অস্বাভাবিক বকরি।
যাহোক, শয়তানের একটি আকৃতি বকরি। সে অধিকাংশ সময় বকরি আকৃতি ধারণ করে।
কাল কুকুরের আকৃতি_______________________
কুকুরের নানান রং। রংবেরং সেজে আছে কুকুরের দল। লাল কালো সাদা, ধূসর সহ বাহারি রঙের রঙিন তাদের অবয়ব। সে যাই হোক, লাল ,কালো সাদা ও ধূসর এর মধ্য থেকে কালো ,কুকুর টি দেখতে খুবই ভয়ঙ্কর। তার পাশে ঘেঁষতে ভয় হয়। ভয় তো লাগবেই, লাগাটাই স্বাভাবিক। কারণ শয়তান অনেক সময় কাল কুকুরের আকৃতি ধারণ করে।
চারপাশের শত্রুরা শারীরিক ও আর্থিক ক্ষতিসাধনের উদ্দেশ্যে জাল বিছিয়ে রাখলেও, শয়তান কিন্তু আমাদের ঈমান হরণের উদ্দেশ্যে জাল বিছিয়ে রাখে। এদিকে আমরা, সেই জালে আটকে পড়ে খুইয়ে ফেলি ঈমানের মতো উৎকৃষ্ট বস্তু। অতঃপর, গুনাহের চাদর গায়ে দিয়ে, ধাবিত হই শয়তানের বাগানে।
বনি আদমের প্রকাশ্য শত্রু — ‘শয়তান’ । এই শত্রুর দ্বারাই আমরা সবচে’ বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। গুনাহের যতগুলো দরজা, তা শয়তানের দ্বারাই উন্মোচিত হয়। আর তাছাড়া, শয়তান যে আমাদের প্রকাশ্য শত্রু, তা আল্লাহ তাআলা নিজেই বলে দিয়েছেন । আল্লাহ তাআলা বলেন,
إِنَّ الشَّيْطَانَ لَكُمْ عَدُوٌّ فَاتَّخِذُوهُ عَدُوًّا ۚ
“শয়তান তোমাদের শত্রু; অতএব তাকে শত্রু রূপেই গ্রহণ কর”। সূরা ফাতির- ৬শয়তান আমাদের পথভ্রষ্ট করার নিমিত্তে উৎপেতে বসে থাকে। সবসময় তার চক্রান্তের জাল বিছিয়ে রাখে। আমরাও তার ধোঁকায় পড়ে, ডুবে যাই পাপের সমুদ্রে। জড়িয়ে পড়ি, অশ্লীল ও অসামাজিক কর্মকাণ্ডে।
পাপকাজ থেকে বিরত থাকতে, গুনাহ থেকে ফিরে আসতে, নেককাজে সর্বদা নিয়োজিত থাকতে—শয়তানের কবল থেকে নিরাপদ থাকা জরুরী। এদিকে শয়তানের কবল থেকে তখনই নিরাপদ থাকা সম্ভব—যখন শয়তানের বিরুদ্ধে পরিপূর্ণভাবে দক্ষ হাতে লড়াই চালিয়ে যাবেন। আর উক্ত লড়াইয়ে তখনই টিকে থাকতে পারবেন, যখন শয়তান সম্পর্কে পূর্ণ জ্ঞান লাভ হবে। যেমন: তার উদ্দেশ্য, তার কর্মকাণ্ড, তার চক্রান্ত, তার পরিকল্পনা, তার পাতা ফাঁদ, তার ধোঁকা— এ-সব কিছু সম্বন্ধের পূর্ণ জ্ঞান লাভ করা ।
এগুলো জানা ব্যতীত, শয়তানের বিরুদ্ধে লড়াই সম্ভব নয়।আলহামদুলিল্লাহ, ‘শয়তানের বিরুদ্ধে লড়াই’ বইটি -তে ধারাবাহিকভাবে শয়তানের ইতিবৃত্ত, শয়তানের কুটকৌশল, শয়তানের ধোঁকা, শয়তানের কর্মপদ্ধতি, শয়তানের চক্রান্ত, শয়তানের পাতা ফাঁদ ও সর্বশেষ শয়তান থেকে বেঁচে থাকার বেশ কিছু দিক নির্দেশনা সুবিন্যাস্তভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। আশা করি পাঠক, তা অধ্যায়ণ করে শয়তানের ইতিবৃত্ত, তার পাতা ফাঁদ, তার কুটকৌশল, তার চক্রান্ত সম্বন্ধে জানতে পারবেন এবং তা থেকে ফায়দা হাসিল করতে পারবেন, ইন শা আল্লাহ।
0 মন্তব্যসমূহ
ℹ️ Your Opinion is very important to us, Please Writer your comment below about this Post.....