তুলনামূলক ধর্ম pdf for pre order লেখক : ড. মোহাম্মদ বেলাল হোসেন | Tulonamulok Dhormo by Dr. Muhammad Belal Hossen

তুলনামূলক ধর্ম
লেখক : ড. মোহাম্মদ বেলাল হোসেন
প্রকাশনী : বাংলাদেশ ইসলামিক ল রিসার্চ এন্ড লিগ্যাল এইড সেন্টার
বিষয় : ইসলামী জ্ঞান চর্চা, ধর্মতত্ত্ব, সংশয়বাদ
পৃষ্ঠা : 712, কভার : হার্ড কভার, সংস্করণ : 1st Published, 2022
আইএসবিএন : 9789849371076, ভাষা : বাংলা


আধুনিক বিশ্বে তুলনামূলক ধর্ম একটি জনপ্রিয় বিষয়। কখন কীভাবে এ অভিজ্ঞানের উৎপত্তি হয় তার ইতিহাস বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে, ইসলামের অভ্যুদয়ের সূচনালগ্ন থেকেই এ অভিজ্ঞানের সূত্রপাত ঘটে। সে সময় এটি ইলমুল কালাম ও ইলমুল মুনাযারা হিসেবে আলোচিত হতে থাকে।

পরবর্তীকালে এটি ইলমুল আদইয়ান নামে এক স্বতন্ত্র অভিজ্ঞান হিসেবে আখ্যায়িত হয়। হিজরী তৃতীয় শতক থেকে শুরু করে দ্বাদশ শতাব্দী পর্যন্ত মুসলিম পণ্ডিতগণ এ শাস্ত্রের বিকাশ সধানে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। এরপর বিদ্যাচর্চায় মুসলিম শাসকদের উদাসীনতা, মাযহাবি গোড়াঁমি ও ক্রুসেড যুদ্ধের কারণে এ অভিজ্ঞানের চর্চা ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়ে এবং প্রাচ্যবিদদের নিয়ন্ত্রণে চলে যায়। তাঁরা এ বিদ্যাকে তাদের মিশনারি তৎপরতার অংশ হিসেবে গ্রহণ করে নানাভাবে এর উৎকর্ষ সাধনে ব্রতী হন। তাঁরা এ শাস্ত্রের প্রকৃতি, স্বরূপ ও ধরনকে নিজেদের সুবিধা অনুযায়ী পরিবর্তন করে স্বতন্ত্র পরিভাষায় অন্তর্ভুক্ত করেন। এরপর হিজরী চতুর্দশ শতাব্দীতে এটি পুনরায় মুসলিম অঙ্গনে ফিরে আসে।

মুসলিম পণ্ডিতগণ পূর্বের ন্যায় এ বিদ্যাচর্চায় আত্মনিয়োগ করেন। তাঁরা অতীতের অভিজ্ঞাতাকে কাজে লাগিয়ে ভবিষ্যতের কর্মপন্থা হিসেবে এ বিদ্যার বিকাশ সাধনকে অপিরিহার্য মনে করেন। সত্যধর্ম হিসেবে ইসলামকে বিশ্ববাসীর সামনে উপস্থাপনের জন্য অন্যান্য ধর্মের সঙ্গে ইসলামের তুলনা প্রসঙ্গে তাঁরা নতুন আঙ্গিকে এ বিদ্যার বিজ্ঞানম্মত নীতিমালা উদ্ভাবন করেন। এ বিষয়ে তাঁদের নিরন্তর গবেষণা ও পরিশ্রমে বিশ্বে এ শাস্ত্রের প্রকৃত স্বরূপ সুস্পষ্টভাবে প্রকাশিত হয় এবং ইসলামের সর্বজনীন সত্যরূপ বিকশিত হয় ।

সুতরাং মুসলিম পণ্ডিতগণের নিরলস প্রচেষ্টার মাধ্যমে আধুনিক বিশ্বে তুলনামূলক ধর্ম একটি জনপ্রিয় বিষয় হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে। বক্ষ্যমাণ গ্রন্থে ধর্মের পরিচয়, প্রকৃতি, প্রয়োজনীয়তা, এর উৎপত্তি বিষয়ক মতবাদ পর্যালোচনা এবং তুলনামূলক ধর্মের পরিচয়, উৎপত্তি ও বিকাশ সম্পর্কে আলোচিত হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে আসমানি ধর্ম, প্রাচীন ধর্ম ও আঞ্চলিক ধর্মসমূহের পরিচিতি এবং তুলনামূলক পর্যালোচনা উপস্থাপিত হয়েছে। এছাড়া আসমানি ধর্মের বিশ্বাসসমূহের তুলনামূলক পর্যালোচনা এবং এ ধর্মসমূহের সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্য তুলে ধারা হয়েছে। অপরদিকে তুলনামূলক ধর্মচর্চায় প্রাচীন ও আধুনিক মুসলিম পণ্ডিতগণের সংক্ষিপ্ত জীবনেতিহাসসহ এ শাস্ত্রে তাঁদের অবদান তুলে ধরা হয়েছে। সুতরাং বাংলা ভাষায় বিভিন্ন ধর্মের তুলনামূলক বিশ্লেষণে গ্রন্থটি অসাধারণ ও অনবদ্য।

প্রথম অধ্যায় ধর্ম ও ধর্মত্ব (Religion and Theology)

ভূমিকা ধর্মের সঙ্গে হৃদয় ও বিশ্বাসের যােগসূত্র বড়ই নিবিড়। মানবজীবনে রয়েছে অনেক হতাশা- নিরাশা ও দুঃখ-বেদনা। আছে জন্ম-মৃত্যুর সমস্যাকে ঘিরে রহস্যময় জগৎ। জীবনের উদ্দেশ্য কী, কোথায় এর পরিসমাপ্তি, মৃত্যু কী, এর পরে কী হবে এসব নানাবিধ প্রশ্ন মানুষকে ভাবিয়ে তােলে। ধর্ম এসব জীবন-জিজ্ঞাসার জবাব দেয়। বিজ্ঞানের প্রভূত উন্নতি হওয়া সত্ত্বেও মানুষ এসব প্রশ্নের উত্তর আজও বিজ্ঞানে খুঁজে পায়নি।

বিজ্ঞান যেখানে শেষ হয়েছে, ধর্মের সেখানে যাত্রা শুরু হয়। ফলে মানুষ তার জীবনের সবকিছুর জন্য আশ্রয় নিয়েছে ধর্মের ছায়াতলে। এখানে নেই কোন হিংসা-বিদ্বেষ, নৈরাজ্য, রক্তপাত ও হানাহানি। ধর্মের আশ্রয়ে মানবাত্মা খুঁজে পেয়েছে জীবনের স্থিতিশীলতা ও অন্তরের প্রশান্তি। তাই নিশ্চিতভাবে বলা যায় যে, ধর্ম স্রষ্টার সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনের এক অদ্বিতীয় মাধ্যম। পৃথিবীতে মানুষ যাতে সুশৃঙ্খল জীবনযাপন করতে পারে সে জন্যই আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে ধর্ম প্রবর্তিত হয়েছে। মানবতার উতকর্ষ সাধনে ধর্মের ভূমিকা অপরিসীম।

পৃথিবীতে অসংখ্য ধর্মমত রয়েছে। এসব ধর্মমতের মধ্যে যেগুলাের মূলভিত্তি অহী সেগুলাে আল্লাহপ্রদত্ত ধর্ম। আল্লাহপ্রদত্ত ধর্মের অনুসরণে মানবজীবন হয় ধন্য, পরিপূর্ণ ও আশঙ্কামুক্ত।
(The definition and Nature of Religion) ধর্ম স্রষ্টার সঙ্গে সৃষ্টির বন্ধনের এক অদৃশ্য বোধশক্তির নাম, যে শক্তি মানবীয় অন্তরে জাগ্রত হয়ে মানবাত্মাকে এক মহান শ্রষ্টার সন্ধানে তাড়িত করে। সঙ্গে সঙ্গে এ শক্তি মানব অন্তরে এমন এক বিশ্বাসের জন্ম দেয় যা ব্যক্তিকে স্রষ্টার সঙ্গে প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ করে। এরই ধারাবাহিকতায় যে শক্তি ও সুশৃঙ্খল পদ্ধতি, নৈতিক উন্নতি সাধন এবং পারস্পরিক সম্প্রীতি ও সংহতি স্থাপন করে ব্যক্তির জীবনে নিরাপত্তা নিশ্চিত করে তা-ই ধর্ম। সংস্কৃত ভাষায় ধূ সঙ্গে মন প্রত্যয় যােগে ধর্ম শব্দের উৎপত্তি হয়েছে। এর ধাতুগত অর্থ হলাে, যা ধারণ করে তাই ধর্ম। অন্তর ও বাহির মিলে মানুষের জীবনের পূর্ণ সামঞ্জস্যের মধ্যে যা মানুষের জীবনকে ধরে রাখে এবং সামাজিক জীবনের বৃহত্তর ঐক্যের মধ্যে যা মানুষের জীবনকে নিয়ন্ত্রণ করে তাকে ধর্ম বলা হয়।

১. ড. মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ দারায, আদ-দীন (কায়রাে: দারুল কলম, ২০০৭ খ্রি.), পূ. ৯৩ ২. এ প্রসঙ্গে ড. আহমাদ মাহমুদ আল-বারবারী বলেন,l
৩! محاولة معرفة خالقها.. وبالتالى أن تكون لها عقيدة تربطها بهذا الخالق وتحد د علاقتها ، ثم تنعكس على واجباتها نحو نفسها R R .تا :13 .ونحو غيرها من الناس وتلك الفطرية في النفس الإنسانينة طبيعة جدا ومنطيقية جدأ আল-বারবারী, আদ-দীন বাইনাল ফারদ ওয়াল মুজতামা&(কায়রাে: মাকতাবা মিসর, তা.বি.), পৃ. ৪৩ ৩. প্রমােদ বন্ধু সেন গুপ্ত, ধর্মদর্শন (কলিকাতা: ব্যানার্জী পাবলিশার্স, ১৯৮৯ খ্রি.), পৃ. ৮০

তুলনামূলক ধর্ম pdf for pre order লেখক : ড. মোহাম্মদ বেলাল হোসেন  | Tulonamulok Dhormo by Dr. Muhammad Belal Hossen

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ