আমার দেখা আমেরিকা - লেখক : সাইয়েদ কুতুব (রহঃ) | Amar Dekha America By Sayed Qutub (R)

আমার দেখা আমেরিকা pdf download no available)
লেখক : সাইয়েদ কুতুব (রহঃ)
প্রকাশনী : সন্দীপন প্রকাশন
বিষয় : ইসলামি বিবিধ বই, নানাদেশ ও ভ্রমণ
অনুবাদক : জাবির মুহাম্মদ
পৃষ্ঠা : 56, কভার : পেপার ব্যাক
ভাষা : বাংলা

সাপ্লায়ার জানিয়েছেন এই বইটি 5 March 2022 এ প্রকাশিত হতে পারে। প্রকাশিত হওয়ার সাথে সাথে বইটি পেতে আগেই অর্ডার করে রাখুন। আপনার প্রিয় অনলাইন সপ থেকে।

একটা সময়ে আমাদের দেশে ডিভি লটারির বেশ চল ছিল। মানুষ হন্যে হয়ে এই লটারির পেছনে ছুটত। উদ্দেশ্য আর কিছুই না। স্রেফ ‘আমেরিকা’ নামের একটা দেশে যাওয়া!
আমেরিকা যেন কেবল একটা দেশের নাম নয়। যেন একটা স্বপ্ন! আর তাই সে স্বপ্নকে একটু ছুঁয়ে দেখার এমন প্রাণান্ত প্রচেষ্টা।
কিন্তু স্বপ্ন তো স্বপ্নই। আমেরিকাকে যারা কাছ থেকে দেখেছেন, বুঝেছেন তারাই ভালোভাবে অনুধাবন করতে পারেন—আমেরিকা কতটুকু ‘স্বপ্ন’, আর কতটুকুই বা ‘মোহ’।
Image

আমেরিকার ভেতর-বাহির, এর নাড়ি-নক্ষত্র এসবের খবর সাইয়িদ কুতুব রাহিমাহুল্লাহ তাঁর ‘আমার দেখা আমেরিকা’ বইতে তুলে এনেছেন। এক বসায় পড়ার উপযোগী এ বইটিতে আমেরিকার স্বরূপ, চেতনা সবকিছুকেই নির্মোহভাবে বিশ্লেষণ করা হয়েছে। সে হিসেবে বইটি শুধু একটা ভ্রমণকাহিনি মাত্র নয়, বরং একটি জাতির আত্মিক উপাখ্যান।

বিশ্বসভ্যতার দ্বারে দ্বারে মানবতা, শান্তি-প্রগতি, উদারতা-নৈতিকতা ফেরি করে বেড়ানো এই দেশটির খোলনলচের অবস্থা জানতে আজই পড়ে ফেলুন ‘আমার দেখা আমেরিকা’।
প্রথমদিকে যারা আমেরিকাতে এসেছে তাদের কাহিনী পড়লে আশ্চর্য হয়ে যেতে হয়। এ যেন এক মহাকাব্যিক কাহিনী। বৈরী প্রকৃতির বিরুদ্ধে লড়াই করে টিকে থাকার আশ্চর্য কাহিনী। কিভাবে তারা দূরবর্তী দুর্গম আমেরিকান ভূমির বিভিন্ন এলাকায় গেল, কিভাবে সেগুলোকে ব্যবহার উপযোগী করল, এর চেয়েও বেশি আশ্চর্যজনক কাহিনী হচ্ছে কিভাবে তারা ছোট-ছোট নৌযানে করে দুর্গম সাগর ও উত্তাল তরঙ্গ পাড়ি দিয়ে আমেরিকাতে আসার সাহস করলো!

তবুও এইসব অভিযাত্রীরা তাদের নৌযানকে আমেরিকার মাটিতে নোঙ্গর করালো। হোক সেটা স্বে কিংবা অনিচ্ছায়। চাই তাদের নৌযান টিকে থাকুক কিংবা ধ্বংস হয়ে যাক। উত্তাল সমুদ্র পাড়ি দেয়ার থেকেও বড় বিপদ ছিল কিভাবে এই অচেনা-অজানা ভূমিকে ব্যবহার করবে। তাদের চোখের সামনে ছিল শুধু অচেনা অরণ্য যার কোন সীমা পরিসীমা নেই। তাদের সামনে ছিল দুর্গম অরণ্য, পাহাড় পর্বতের গোলকধাঁধা, বিস্তীর্ণ বরফের ভূমি, বজ্রবিদ্যুৎ, হারিকেন আর ঘূর্ণিঝড়। আর এর সাথে ছিল বনের হিংস্র জীবজন্তু, সরীসৃপ আর বিষাক্ত কীট পতঙ্গ।

আশ্চর্য হয়ে যেতে হয়, প্রকৃতির এত কিছু দেখেও আমেরিকান চিন্তা চেতনায় এসবের কোনো প্রভাব পড়েনি! প্রকৃতির শক্তির ব্যাপারে যেন তাদের কোন ভ্রুক্ষেপ নেই! অথচ চাইলে তারা এগুলো নিয়ে চিন্তা করতে পারত। প্রকৃতির পেছনেও যে আরেক জগত আছে, সেই গায়েবের জগতের জানালা খুলে সমৃদ্ধ করতে পারত তাদের আমেরিকান স্পিরিটকে! 

যাইহোক! নবাগত আমেরিকান অভিযাত্রী ও অভিবাসীদের চারপাশের পরিবেশ নিয়ে ভাবলে এই আফসোস ও বিস্ময়ের ঘোর কাটতে সময় লাগে না। তারা বন্য আমেরিকান প্রকৃতিকে বশ মানিয়েছে পেশিশক্তি ও বিজ্ঞানের অস্ত্রের মাধ্যমে। তাই তাদের মনে রুক্ষতা ছাড়া আর কিছুই ছিল না। আর ছিল জৈবিক কামনা-বাসনার অপ্রতিরোধ্য লালসা। রুহানি জগতের কোনো স্পর্শ তারা পায়নি। কোনো কোমলতা ও মানবিক আবেগ-অনুভূতির সাথে তাদের পরিচয় হয়নি। এই ছিল নবাগত আমেরিকানদের অবস্থা। অথচ বিজ্ঞানের অগ্রগতির যুগেও মানুষ তার আদি আধ্যাত্মিক অবস্থা, হৃদয় ও অন্তরের কোমল আবেগ-অনুভূতিকে সুরক্ষিত রাখতে ভুলে যায়নি। বরং যুগে যুগে নিজেদের মানবিকতাকে সমৃদ্ধ করে সামনের দিকে এগিয়ে চলেছে।

আর যখন মানুষ ধর্ম, শিল্প ও আধ্যাত্মিক জগতের জানালা বন্ধ করে দিল, তখন মানুষের ভেতরের শক্তিকে প্রবাহিত করার জন্য কেবল একটি পথই খোলা ছিল। সেটা হল অ্যাপ্লাইড সাইন্স ও শ্রমের মাধ্যমে নিজেদের জৈবিক লালসা পূরণ করা। আর এটাই হলো গত চারশ বছরের আমেরিকান ইতিহাস।

নবাগত আমেরিকানদের মনস্তত্ব

সমুদ্রের ঢেউয়ের মতো একের পর এক বহিরাগত প্রজন্ম এসে ঘাঁটি গেঁড়েছে আমেরিকাতে। ওদের নিয়ে আসা চিন্তা-চেতনার মাধ্যমেই গঠিত হয়েছে আধুনিক আমেরিকানদের মনস্তত্ব। এই সত্যটি ভুলে যাওয়া উচিত নয়। আমেরিকার ছিল ওই বহিরাগত অভিবাসীদের কাছে একটি নতুন পৃথিবী। একটি নতুন দুনিয়া! নিউ ওয়ার্ল্ড! পুরনো পৃথিবীর নানা অতৃপ্তি আর অপ্রাপ্তিকে পেছনে ফেলে ওরা আমেরিকাতে এসেছিল মুক্তির স্বাদ পেতে। পুরনো দুনিয়ার নানা কঠোর নিয়ম-নীতি আর ঐতিহ্যের বেড়াজাল থেকে মুক্ত হতে চাইলো ওরা। সেই ঐতিহ্য ত্রুটিপূর্ণ কিংবা সঠিক—যাই হোক না কেন! এই মানসিক অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে সম্পদের প্রতি মানুষের চিরন্তন আকর্ষণ থেকে। যেকোনো উপায়ে মানুষ সম্পদের মালিক হতে চায়। যেকোনো উপায়ে মানুষ ধনী হতে চায়। সম্পদ অর্জনের জন্য যে কষ্ট করা প্রয়োজন, তার বিনিময়ে পেতে চায় সবার চেয়ে বেশি ভোগবিলাস।

আমেরিকার মানুষগুলো এলো কোত্থেকে?

যেসব ইউরোপীয় অভিবাসী বা ইমিগ্রান্টদের মাধ্যমে এই নতুন জাতির গোড়াপত্তন ঘটেছে, তাদের অধিকাংশের যে সামাজিক ও মানসিক ব্যাকগ্রাউন্ড ছিল, সেটা ভুলে যাওয়া উচিত নয়। প্রথমদিকে যেসব অভিবাসীরা আমেরিকাতে এসেছিলেন, তাদের একদল ছিলেন অভিযাত্রী আর আরেক দল ছিলেন অপরাধী। অভিযাত্রীরা এসেছিলেন নিছক অভিযাত্রার স্বার্থে। তাদের উদ্দেশ্য ছিল সম্পদ ও আনন্দ আহরণ করা। আর অপরাধীরা? ওরা স্বেচ্ছায় আসেনি আমেরিকাতে। ওদেরকে এই ভূমিতে নিয়ে আসা হয়েছিল ব্রিটিশ রাজত্ব থেকে। এরপর তাদেরকে লাগিয়ে দেয়া হয় নির্মাণ ও উৎপাদনের কাজে।

অ্যাপ্লাইড সাই ও মানবিক মূল্যবোধ

বহিরাগত অভিবাসীরা আমেরিকাতে এসে বৈরি পরিবেশের সম্মুখীন হলো। লিপ্ত হলো টিকে থাকার সংগ্রামে। যেকোন মূল্যে এখানে টিকে থাকা চাই। ফলে সহজাতভাবেই তাদের মধ্যে আদিম মানবিক বৈশিষ্ট্যগুলো জেগে উঠলো। ব্যক্তি-দল নির্বিশেষে নিজেদের উন্নত মানবিক চরিত্র ও বৈশিষ্ট্যগুলো চাপা পড়ে গেল। অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়, যেন আমেরিকার মানুষ তার আদিম যুগে ফিরে গেল। তবে একটা পার্থক্য আদিম মানুষের সাথে আমেরিকান মানুষদের ছিল। সেটা হলো আদিম মানুষদের কাছে বিজ্ঞানের নতুন প্রযুক্তি ছিলনা। কিন্তু আমেরিকানদের কাছে বিজ্ঞান ও নতুন প্রযুক্তি ছিল। 

আমেরিকান জাতির জন্মই হয়েছে এসব প্রযুক্তির হাত ধরে। প্রযুক্তি তাকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে গেছে। তবে জেনে রাখা ভালো, মানবিক মূল্যবোধ বিকাশে বিজ্ঞানের কোন ভূমিকা নেই। আরো স্পষ্ট করে বললে প্রায়োগিক বিজ্ঞান বা এপ্লাইড সাইন্সের কোন ভূমিকা নেই। এর মাধ্যমে মানুষের আত্মা ও আবেগ-অনুভূতির কোনকিছুর হ্রাস বৃদ্ধি হয় না। ফলে এটি আমেরিকার মানুষের দিগন্তকে সংকীর্ণ করে দিল! আত্মাকে সংকুচিত করে দিল! আবেগ অনুভূতিকে সীমাবদ্ধ করে দিল! আর বিশ্ব ময়দানে তার অবস্থানকে নিচে নামিয়ে আনলো। অথচ এই বিশ্বে আছে কত রঙ ও বৈচিত্র।

আরো পড়তে অথবা দেখতে :- অনুগ্রহ করে Hardcopy ক্রয় করুন। We Respect Every Author Hardwork-boipaw

Comments

Popular posts from this blog

সিক্রেটস অব জায়োনিজম Full PDF : লেখক হেনরি ফোর্ড | Secrets of Jainism Bangla Anubad PDF

[PDF] সীরাহ মুহাম্মদ প্রথম খন্ড এবং দ্বিতীয় খণ্ড রেইনড্রপস পিডিএফ - Sirah Muhammad (sa:) First & Last Raindrops

গাযওয়াতুল হিন্দ বই pdf - প্রফেসর ড. ইসমাতুল্লাহ | Gazwatul Hind by Professor Dr. Ismatullah