চাকরি না উদ্যোক্তা - লেখক : জোনাইদ আল হাবীব | Chakri Na Uddokta By Jonaid Al Habib

চাকরি না উদ্যোক্তা (pdf download not here)
লেখক : জোনাইদ আল হাবীব 
প্রকাশনী : দাঁড়িকমা
বিষয় : প্রফেশনাল ও ক্যারিয়ার উন্নয়ন, জেনারেল বুকস
পৃষ্ঠা : 144, কভার : হার্ড কভার, সংস্করণ : 2nd Printed, 2020
আইএসবিএন : 9789849311379,
 ভাষা : বাংলা।

Image

প্রিয় তরুণ-তরুণী,

প্রথমে আপনার কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। পৃথিবীতে হাজার বইয়ের মাঝে, আমার এই একটি বই আপনি পড়ছেন। এই বইটি পড়তে আপনার অর্থ, সময় ও পরিশ্রম তিনটি ব্যয় করা লাগবে। আমি আমার ক্ষুদ্র জ্ঞান আপনাদের সাথে ভাগাভাগি করার যে চেষ্টা করছি তার ফলাফল এই বইটি। এই বইটি পড়ার শুরুতে তাই আপনাকে জানাই, উষ্ণ ভালোবাসা। আপনার সফলতার বন্ধুর পথে কিংবা বিজয় মঞ্চের চূড়ায় পৌঁছাতে এই বইটি আমার পক্ষ থেকে একটি লাল গোলাপ হিসেবে উপহার দিলাম। আপনার স্বপ্ন সত্যি হোক, আপনার প্যাশন পেশায় বাস্তবায়িত হোক। এই আশা ব্যক্ত করে শুরু করছি...
Image


আমরা ছোটবেলা থেকেই তো শুনে আসছি তরুণরা মানে আমরা দেশের ভবিষ্যত, জাতির কর্ণধার। সেটা দেখছি উল্টো হয়ে যাচ্ছে। জাতির কর্ণধার না হয়ে দিনদিন আমরা জাতির বোঝা হয়ে যাচ্ছি।

যেখানে সুকান্ত ১৮ বছর বয়সেই কাঁপিয়ে নাড়িয়ে দিয়েছিলো আমাদের চেতনাকে। যেখানে সাকিব আল হাসান পুরো পৃথিবী জয় করে ফেলেছে; সেখানে আটাশ লাখ তরুণের চাকরি খুঁজতে খুঁজতে জুতার তলা ক্ষয় করে হতাশ হয়ে পড়ে বড্ড বেমানান। কী আর হবে ভেবে? যখন আমরা নিজেদেরকেই চিনতে পারি না।

সক্রেটিসের সেই Know thyself কে সত্যিই প্রয়োজনীয় মনে হয়; যখন ২৮ লাখ তরুণ নিজেকে না চিনে বা নিজের সম্ভাবনাটুকু না জেনে অন্ধ স্রোতে গা ভাসিয়ে দেয়। সবাই বিসিএস দিচ্ছে তাই আমাকেও দিতে হবে; সবাই চাকরি খুঁজছে তাই আমাকেও খুঁজতে হবে।

অনেক দিন আগে একটি গল্প শুনেছিলাম। এক রাজা বনে পাখি শিকার করতে গিয়ে পথ হারিয়ে ফেলে অনেক চেষ্টা করেও সে কোন পথ খুঁজে পায় না। ক্লান্ত, ক্ষুধার্ত রাজা উদ্ভ্রান্তের মতো একটি কুটিরের সামনে হাজির হয়। সে কুটিরে এক বুড়িকে দেখতে পায়। বুড়িকে সে সবকিছু খুলে বলে। বুড়ি ক্ষুধার্ত রাজাকে আহার ও বিশ্রামের ব্যবস্থা করে দেয়। এ কারণে খুশি হয়ে রাজা বুড়িকে একটি চন্দন কাঠের বাগান উপহার দেয়। যাতে বুড়ি স্বাচ্ছন্দ্যে স্বচ্ছল জীবন-যাপন করতে পারে।

বুড়ি চন্দন কাঠের গুরুত্ব সম্পর্কে জানতো না। তাই সে চন্দন কাঠকে পুড়িয়ে কয়লা হিসেবে বাজারে বিক্রি করে ভালোই জীবন-যাপন করছিলো। বাগানের কাঠ প্রায় শেষ হয়ে আসছিলো। যে দিন শেষ গাছটা কাটতে যায় সে, খুব বৃষ্টি হচ্ছিলো, বৃষ্টির কারণে বুড়ি কাঠ পুড়িয়ে কয়লা করতে পারেনি। তাই সে বাজারে কাঁচা কাঠ বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নেয়। বাজারে যাওয়া মাত্রই চারপাশের মানুষ চন্দন কাঠের গন্ধে তাকে ঘিরে ধরে এবং অনেক দামে সব কাঠ নিমিষেই কিনে নেয়। বুড়ি তো পুরোপুরি আবাক হয়ে যায়। তারপর একজন ক্রেতা তাকে জিজ্ঞেস করে তার কাছে এ কাঠ আরও আছে কিনা; সে আরও বেশি দাম দিয়ে কিনতে চায়। তখন বুড়ি কাঁদতে শুরু করে। বুড়ির কান্না দেখে ঐ লোক তাকে জিজ্ঞেস করে বুড়ি তুমি কাঁদছো কেনো ? তখন বুড়ি বলে চন্দন কাঠ সম্পর্কে না জানার কারণে পুরো একটি বাগানকে আমি কাঠ কয়লা করে বিক্রি করেছি।

হে তরুণ তুমি কি নিজের অপার সম্ভাবনা সম্পর্কে জানো? নাকি না জেনে বুড়ির মতো তোমর মূল্যবান জীবন, ব্রেইন, যৌবন অকাজে নষ্ট করছো। যেখানে মানুষ আজকে মহাকাশ জয় করে ফেলছে; সেখানে আজকে আমরা নাকি একটা চাকরি পাওয়ার জন্য জীবন ক্ষয় করে ফেলছি। আর সে চাকরি দিয়েই জীবন পার করে দিচ্ছি।

হে তরুণ আমরা বোধ হয় একটু বেশিই স্বার্থপর আর আত্মকেন্দ্রিক হয়ে পড়েছি। আমরা শুধু নিজের আরাম, সুখ, স্বাচ্ছন্দ, আর অর্থ-বিত্ত নিয়েই মগ্ন। দেশ জাতি কোথায় যাচ্ছে, তা নিয়ে আমাদের কোন মাথা ব্যথা নেই। আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস করি কিন্তু কাজ করি না। আমরা খুঁজি সহজ ও নিরাপদ চাকরি। মুক্তিযোদ্ধাদের যে তারুণ্য ছিলো, আমাদের তারুণ্য কি তাদের চাইতে নিম্ন মানের? তারা তো দেশের জন্য জীবন দিয়ে দেশকে স্বাধীন করেছিলো এবং আমরা একটি স্বাধীন স্বার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছিলাম। অর্জন করেছিলাম স্বাধীনতা। এখন আমদের প্রয়োজন অর্থনৈতিক স্বাধীনতা। আমরা তরুণরা কি অর্থনৈতিক স্বাধীনতা এনে দিতে পারি না? এ স্বাধীনতার জন্য আমাদেরকে জীবন দিতে হবে না, বুকের রক্ত ঢেলে দিতে হবে না। শুধু একটু কষ্ট করে নিজের মস্তিষ্ককে কাজে লাগাতে হবে। সেটা না করে আমরা কেনো চাকরি নামক দাসত্বের পথ বেছে নিচ্ছি। আর সেই দাসত্ব অর্জনের জন্য জীবনের অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ বছর নষ্ট করে দিচ্ছি।

যে আপনি আজকে একটি চাকরির জন্য নিজের স্বাধীনতা, সৃজনশীলতা, পুরো পৃথিবী জয় করার সম্ভাবনা ত্যাগ করে দিচ্ছেন, সে আপনিও তো হতে পারেন হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থানকারী। সেটা না করে আমরা কেনো বোঝা হয়ে দাঁড়াচ্ছি ?

আমরা তো দেশকে খুব গালি দিয়ে দেশের চৌদ্দগোষ্ঠী উদ্ধার করে ফেলি। দেশের সিস্টেম ভালো না; দুনীতিবাজ চাঁদাবাজ দিয়ে দেশ ভর্তি; পরিবেশ খারাপ; এই দেশে মানুষ থাকে এ রকম কত কিছুই না আমরা বলি। এখন আপনাকে প্রশ্ন করছি এই জীবনে আপনি দেশের জন্য কী করেছেন বা কী করবেন?

আমাদের দেশের তরুণদের মধ্যে ২০০০ পদের চাকরির জন্য ৪ লাখ মানুষের আবেদন করার রেকর্ড আছে। কোটা সংস্কারের জন্য দেশব্যপী দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলার রেকর্ড আছে। কিন্তু সেগুলো কি জাতিকে অর্থনৈতিকভাবে মুক্তি দিবে? বেকারত্ব ঘুচাবে? তাহলে কেনো এগুলোতে আমরা পড়ে আছি?

আমার তো মনে হয় আমরা বড় স্বপ্ন দেখতে ভুলে গেছি। আমরা মনে হয় বীরের মতো মাথা উঁচু করে বাঁচতেও ভুলে গেছি। ঘুষ দুনীর্তি আর অনিয়মের মধ্যে যা আছে তা নিয়েই ভালো থাকার চেষ্টা সত্যিই অমঙ্গলজনক। আমরা কেনো পারছি না, দেশের গন্ডি পেরিয়ে বৈশ্বিক প্রেক্ষিতে চিন্তা করতে কাজ করতে?

ছোটবেলা থেকেই অনেক বড় সরকারি চাকরি বা চাকরি করবো এরকম একটি বদ্ধমূল ধারণা আমাদের মধ্যে সেট করে দেওয়া হয়। আমরা সেটা থেকে কখনোই বের হয়ে আসতে পারি না। যখন অন্য দেশের তরুণরা নতুন নতুন আবিষ্কার করে পৃথিবী জয় করে ফেলছে তখন আমরা বিসিএস বা অন্য কোন চাকরির পিছনে ছুটে তারুণ্য ধ্বংস করে দিচ্ছি। 


মনে রাখবেন, চাকরি করে আপনার জীবনও বদলাবে না, দেশের অর্থনীতিও বদলাবে না। পরিবর্তন আনতে হলে আমাদের উদ্যোক্তা হতে হবে। উৎপাদন করতে হবে, উৎপাদন বাড়াতে হবে। আমি, আপনি উদ্যোক্তা হলেই দেশটা বদলে যাবে। আসুন না দেশটাকে বদলে দেই। ঐ মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান করে যারা দেশের জন্য জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করেছে, বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়েছে এবং দেশটাকে স্বাধীন করেছে।

আপনি নিরাপত্তার চিন্তা করছেন। কিসের নিরাপত্তা? সড়ক দুর্ঘটনাতে তো আপনার মর্মান্তিক মৃত্যু হতে পারে। চকবাজার ট্রাজেডি নিশ্চয়ই আপনার অজানা নয়। যেখানে জীবনের কোন ভরসা নেই, সেখানে নিরাপত্তা দিয়ে কি হবে? বরং দেশের জন্য অন্তত কিছু করে যান, যাতে দেশের মানুষের মধ্যে আপনি সারাজীবন বেঁচে থাকতে পারেন।

আর ছোটকে ছোট ভাবা বন্ধ করুন। বরং শু শোরু ভাবতে শিখুন। ছোট দিয়ে শুরু করলেন তা একদিন বড় হবে। স্কয়ারের স্যামসন এইচ চৌধুরীর নাম নিশ্চয়ই শুনেছেন। যিনি কিনা ১৯৫২ খ্রিষ্টাব্দে একটা ফার্মেসী দিয়ে শুরু করেছিলেন। আজকে তার প্রতিষ্ঠানে ৩০,০০০ এরও বেশি কর্মী কাজ করে এবং তারা ব্যবসায় সম্প্রসারণ করেছেন বিভিন্ন দিকে।

আকিজ গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা শেখ আকিজ উদ্দিন শুরু করেছিলেন বিড়ির ব্যবসা দিয়ে। বর্তমানে আজিক গ্রুপে ৩২,০০০ এরও বেশি কর্মী কাজ করে। তরুণ উদ্যোক্তাদের সফলতার গল্প তো আমরা সবাই জানি। ফেসবুক, ইউটিউব, অ্যাপল, মাইক্রোসফট, গুগুল এদের প্রতিষ্ঠা সবাই তরুণ উদ্যোক্তা এবং তাঁরা শুধু তাদের দেশ নয়, পুরো পৃথিবীটাই বদলে দিয়েছে।

আমি আপনি নিশ্চয়ই তাঁদের মতোই মানুষ। তবে তাঁদের সাথে আমাদের প্রার্থক্য হচ্ছে আমরা চ্যালেঞ্জ নিতে পছন্দ করি না, নতুন কিছুতে ভয় পাই আর আরাম আয়েশের সরকারি চাকরির জন্য জীবন উৎসর্গ করে দেই। মনে রাখবেন মানুষ যা চায়, সেটাই সে করতে পারে, যদি তার সাধনায় ঘাটতি না থাকে।

আপনি হয়তো বলবেন, বাংলাদেশে অনেক সমস্যা আছে। উদ্যোক্তাবান্ধব পরিবেশ নেই, নীতি নেই, সহযোগিতা নেই। এগুলো সবই সম্ভব যদি কোটা আন্দোলনের মতো দেশে উদ্যোক্তা আন্দোলন শুরু হয়ে যায়। কোটা আন্দোলন করে যেমন কোটা সংস্কার সম্ভব হয়েছে; তেমনি দেশে উদ্যোক্তা আন্দোলন শুরু হলে উদ্যোক্তা বান্ধব পরিবেশ তৈরি সম্ভব হবে।

শুধু আপনাকে মন থেকে চাইতে হবে। বদ্ধমূল ধারণা থেকে বেরিয়ে এসে জেগে উঠতে হবে। কবি ফররুখ আহমেদ এর মতো বলতে ইচ্ছে করছে রাত পোহাবার কত দেরি পাঞ্জেরি? এখনো তোমার আসমান ভরা মেঘে? সেতারা, হেলাল এখনো ওঠেনি জেগে? তুমি মাস্তুলে, আমি দাঁড় টানি ভুলে; অসীম কুয়াশা জাগে শূন্যতা ঘেরি। পাঞ্জেরি! জাগো বন্দরে কৈফিয়তের তীব্র ভ্রুকুটি হেরি, জাগো আগমন ক্ষুধিত মুখের নীরব ভ্রুকুটি হেরি! দেখ চেয়ে দেখ সূর্য ওঠার কত দেরি, কত দেরি!

আমরা সবাই পাঞ্জেরী। আমরা প্রত্যেকেই যদি জেগে উঠি তাহলে একদিন সব বদলে যাবে। এজন্য শুরু করতে হবে। সকল কাজের কঠিন কাজ হলো শুরু করা আমাদের দেশের লাখ শিক্ষিত তরুণ বেকার যদি তার নিজের জায়গা থেকে জেগে ওঠে; দেশে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা ও দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখার জন্য উদ্যোক্তা হয়, তাহলেই দেখবেন বাংলাদেশ রাতারাতি বদলে যাবে। আজকে হয়তো আমরা গরিব, তবে একদিন হয়তো ব্যবসায় বাণিজ্যের কারণে চায়নার মতো ধনী রাষ্ট্রে পরিণত হবো। আমরা কি পারি না দেশটাকে বদলে দিতে ?

হে তরুণ আসুন না দেশটাকে বদলে দিই।
ইতি
লেখক : জোনাইদ আল হাবীব।


Image

উদ্যোক্তা খায় নাকি মাথায় দেয়?

কোন মানুষ যখন গতানুগতিকতার বাইরে গিয়ে নতুন চিন্তা-ভাবনা কিংবা আবিষ্কার নিয়ে কোন কিছু করে; তখন সে মানুষকে উদ্যোক্তা বলে। বোরিং লাগছে। রাইট?

সহজ কথায়, সবাই যা করছে তার বাইরে গিয়ে নতুন কিছু যে করবে সেই উদ্যোক্তা। একটি উদাহরণ দিচ্ছি রঙিন টিভি চালু হয়েছে বেশিদিন হয়নি। এর আগে পঞ্চাশের দশক থেকে অর্থাৎ দীর্ঘদিন ধরে সাদা-কালো টিভি মানুষ দেখেছে। তারপর কেউ মনে করলো টিভি কেনো সাদা কালো হবে? টিভি হবে রঙিন। সেই চিন্তা থেকেই টিভিটা সাদা কালো থেকে রঙিন হলো আর আমরা এখন তাঁদের কল্যাণে রঙিন টিভি দেখছি।

যারা রঙিন টিভি আবিষ্কার ও বাজারজাত শুরু করেছে তাঁদের কাজটা একটা উদ্যোগ ছিলো। যারা উদ্যোগ নিলো তাঁরাই হচ্ছে উদ্যোক্তা। যে মানুষগুলো এই রঙিন টিভি আবিষ্কার করলো ও বাজারজাত করলো তাঁরা যদি এটা না করে সাদা কালো টিভিই বাজারজাত করতো তখন কি তারা উদ্যোক্তা হতো? বা আমরাই কি রঙিন টিভি পেতাম?

না। তাঁরাও উদ্যোক্তা হতো না বা আমরাও রঙিন টিভি পেতাম না। কারণ নতুন কিছু ছাড়া উদ্যোক্তা হয় না। এখন আরেকটি ব্যাপার হচ্ছে- নতুন কিছু মানে যে, একেবারে সম্পূর্ণ নতুন হতে হবে এমন কিন্তু নয়। বরং পুরনো কিছুর সঙ্গে নতুন কোনো ফিচার যুক্ত করলেই সেটা নতুন উদ্যোগ হবে। যেমন সাদা কালো টিভির কালার পরিবর্তন করায় সেটা একটি উদ্যোগ।


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ