লেখক : শায়খ আবু মালেক মুহাম্মদ বিন হামেদ
প্রকাশনী : হুদহুদ প্রকাশন
বিষয় : আল হাদিস, হাদিস বিষয়ক আলোচনা
অনুবাদ: মাওলানা মাকসুদ আহমাদ
[শিক্ষক, জামিয়া মাদানিয়া রাজফুলবাড়িয়া]
পৃষ্ঠা: ১৭৬ ............
এই দ্বীনের দাওয়াত শুরু হয়েছিল দুটো জিনিস দিয়ে। আল্লাহর কালাম এবং তার ব্যাখ্যাস্বরূপ নবীজি ﷺ-এর হাদীস। ইসলামের প্রথম তিন প্রজন্ম এগুলো শুনেই বড় হয়েছেন। তাদের মসজিদে, খুতবায়, আলোচনা সভায়, সবকিছুতে ‘আল্লাহ্ বলেছেন’, ‘আল্লাহর রাসূল বলেছেন।’
নবীজি ﷺ-কে ‘জাওয়ামিউল-কালিম’ বলা হয়, অর্থাৎ অল্প কথায় ব্যাপক অর্থবহ কথা বলতে যিনি দক্ষ। এটা আল্লাহ্ প্রদত্ত গিফট। এ জন্য ১৪ শত বছর পেরিয়ে গেছে, এখনও নবীজির হাদীসের ব্যাখ্যা চলমান। আলিমগণ গবেষণার দ্বারা নিত্য নতুন অর্থ, শিক্ষা বের করে আনছেন। এভাবে নব উদ্ভাবিত বিভিন্ন মাসআলার উত্তর বের হয়ে আসছে।
‘এসো হাদিসের গল্প শুনি’ নবীজির নির্বাচিত হাদীসের সংকলন। লেখক প্রতিটি হাদীসের পর পর ক্রমান্বয়ে শিক্ষা আলোচনা করেছেন। যাতে সাধারণ পাঠক নবীজির বরকতময় হাদীস পাঠের পাশাপাশি এর মাঝে নিহিত শিক্ষাও রপ্ত করতে পারে, সেই সাথে চিন্তার গভীরতা বাড়ে, নবীজিকে আরও কাছ থেকে বোঝা এবং জানা সহজ হয়।
এই দ্বীনের দাওয়াত শুরু হয়েছিল দুটো জিনিস দিয়ে। আল্লাহর কালাম এবং তার ব্যাখ্যাস্বরূপ নবীজি ﷺ-এর হাদীস। ইসলামের প্রথম তিন প্রজন্ম এগুলো শুনেই বড় হয়েছেন। তাদের মসজিদে, খুতবায়, আলোচনা সভায়, সবকিছুতে ‘আল্লাহ্ বলেছেন’, ‘আল্লাহর রাসূল বলেছেন।’
নবীজি ﷺ-কে ‘জাওয়ামিউল-কালিম’ বলা হয়, অর্থাৎ অল্প কথায় ব্যাপক অর্থবহ কথা বলতে যিনি দক্ষ। এটা আল্লাহ্ প্রদত্ত গিফট। এ জন্য ১৪ শত বছর পেরিয়ে গেছে, এখনও নবীজির হাদীসের ব্যাখ্যা চলমান। আলিমগণ গবেষণার দ্বারা নিত্য নতুন অর্থ, শিক্ষা বের করে আনছেন। এভাবে নব উদ্ভাবিত বিভিন্ন মাসআলার উত্তর বের হয়ে আসছে।
‘এসো হাদিসের গল্প শুনি’ নবীজির নির্বাচিত হাদীসের সংকলন। লেখক প্রতিটি হাদীসের পর পর ক্রমান্বয়ে শিক্ষা আলোচনা করেছেন। যাতে সাধারণ পাঠক নবীজির বরকতময় হাদীস পাঠের পাশাপাশি এর মাঝে নিহিত শিক্ষাও রপ্ত করতে পারে, সেই সাথে চিন্তার গভীরতা বাড়ে, নবীজিকে আরও কাছ থেকে বোঝা এবং জানা সহজ হয়।
সত্যিকারের তাওবা......
ব্দুল্লাহ বিন উমর বলেন, আমি রাসুল -কে বলতে শুনেছি
আগেকার উম্মতের তিন ব্যক্তি ছিল। তারা একবার কোথাও যাচ্ছিল। ভ্রমণকালে রাত্রি যাপনের জন্য একটি গুহায় তাদের থাকার দরকার হল। তারা তিনজনই একটি গুহায় প্রবেশ করল। কিছুক্ষণ পরই পাহাড় হতে একটি পাথর গড়াতে গড়াতে তাদের গুহার মুখে এসে পড়ল। এতে তাদের গুহার মুখ বন্ধ হয়ে গেল। তারা সবাই বলতে থাকল, এই পাথর হতে নিষ্কৃতি পাওয়ার এবং বিপদ হতে মুক্তি পাওয়ার পথ একটাই— প্রত্যেকেই নিজ নিজ নেক আমলের উসিলা দিয়ে আল্লাহ -র দরবারে দোয়া করবে। এতে তাদের একজন দোয়া করতে লাগল
হে আল্লাহ! আমার পিতামাতা বৃদ্ধ ছিলেন। তাদের দুধ পান করানোর পূর্বে আমি আমার সন্তানদের দুধ পান করাতাম না। একদিন আমি গাছের তালাশে অনেক দূর চলে গিয়েছিলাম। সন্ধ্যায় যখন ফিরে এলাম, ততক্ষণে তারা দুজন ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। তাদের জন্য আমি দুধ দোহালাম। দুধ নিয়ে যখন তাদের নিকট গেলাম, তখন তারা ঘুমিয়ে ছিলেন। ঘুমের ব্যাঘাত ঘটিয়ে তাদের জাগানো আমার পছন্দ হল না। আবার তাদের আগে আমার সন্তানদের পান করানোও আমার ভাল লাগছিল না। দুধের পাত্র হাতে নিয়ে আমি তাদের সজাগ হওয়ার অপেক্ষায় রইলাম। এভাবে পুরো রাত কেটে গেল। ভোর হল। আমার সন্তানরা আমার পায়ের ওপর পড়ে কান্নাকাটি করছিল। তারা জাগ্রত হলে তাদের দুধ পান করালাম।
হে আল্লাহ! আমার এই কাজটা যদি তোমারই সন্তুষ্টির জন্য হয়ে থাকে, তা হলে পাথরের যে পেরেশানিতে আমরা পড়ে আছি, তা দূর করে দাও।
এতে পাথর কিছুটা সরে গেল এবং ছোট একটি ফাঁক সৃষ্টি হল। তবে তা বেরোনোর জন্য যথেষ্ট ছিল না।
এরপর দ্বিতীয় ব্যক্তি দোয়া করল
হে আল্লাহ! আমার এক চাচাত বোন ছিল। আমি তাকে অনেক ভালবাসতাম। এক বর্ণনায় আছে, আমি তাকে এতটা ভালবাসতাম, যতটা একজন পুরুষ একজন নারীকে ভালবাসতে পারে; বরং তার চেয়েও বেশি ভালবাসতাম। একদিন আমি তার সাথে অপকর্ম করার ইচ্ছা করলাম। কিন্তু সে তাতে রাজি হল না। একবার সে অভাবে পতিত হলে আমার নিকট এল। আমি তাকে একশ' বিশ দিনার এ শর্তে দিলাম যে, সে আমাকে অপকর্ম করার সুযোগ দেবে। সে তা মেনে নিল। আমি যখন তার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিলাম; আরেক বর্ণনায় আছে, আমি যখন তার দু' পায়ের মাঝে [ব্যভিচারের জন্য] বসলাম, তখন সে বলল, আল্লাহকে ভয় করো। বৈধভাবেই সতীচ্ছেদ করো। এ কথা শুনে আমি সেখান থেকে সরে গেলাম। অথচ তাকে আমি অনেক ভালবাসতাম। আর যে মুদ্রা তাকে দিয়েছি, তা ফিরিয়ে নেইনি।
হে আল্লাহ! এ কাজটা যদি আমি তোমার সন্তুষ্টির জন্য করে থাকি, তা হলে আমরা যে মসিবতে আছি, তা থেকে মুক্ত করে দাও।
এতে পাথর আরেকটু সরে গেল। তবে তখনও বের হওয়ার মত যথেষ্ট ফাঁক হয়নি।
এরপর তৃতীয় ব্যক্তি দোয়া করল
হে আল্লাহ! আমি পারিশ্রমিকের বিনিময়ে কয়েকজন মজদুর রেখেছিলাম। একজন ব্যতীত অন্য সবার পারিশ্রমিক দিয়ে দিয়েছিলাম। যার পারিশ্রমিক দেইনি, সে তার পারিশ্রমিক রেখে চলে গেল। আমি তার পারিশ্রমিকের অর্থ কাজে লাগিয়ে বৃদ্ধি করতে থাকলাম। এতে ফায়দা
১. ফিতনা-পরীক্ষার যুগ এলে সে-সময় ধৈর্য এবং দৃঢ়তা দেখানো চাই।
২. কাজ যে-রকম হবে, তার বদলাও সে-রকম হবে।
৩. যে-ব্যক্তি তার দীনের ওপর অটল থাকে, আল্লাহ -র হুকুম পালন করতে গিয়ে কারও তিরস্কারের ভয় করে না, আল্লাহ তাকে বিরাট পুরস্কার দান করেন। যেমন ইরশাদ হচ্ছে
وإنما يوفى الصبرون أجرهم بغير حساب ধৈর্যশীলদেরকে হিসাবের বাইরে তাদের বদলা দেওয়া হবে। [সূরা যুমার ১০]
৪. বোঝা গেল, অবাধ্য ও জালেম ব্যক্তি থেকে এমন কিছু চাওয়া জায়েয আছে, যা তার জন্য উপকারী। যেমন ওই নারী ফেরআউনের নিকট দাবি জানিয়েছিল যে, তার এবং তার সন্তানদের হাড় এবং তাদের পোড়ানো ছাইগুলো যেন একই জায়গায় দাফন করা হয়।
৫. আল্লাহ তার বন্ধুদের জন্য বিপদ হতে বের হওয়ার একটা উপায় অবশ্যই বের করে দেন।
৬. নেককার পুরুষ এবং নারীর কারামত প্রমাণ হয়।
৭. যে-কাজ স্বভাবের উর্ধ্বে, সেটাও কারামতের সাথে সম্পর্কিত।
আরো পড়তে অথবা দেখতে :- অনুগ্রহ করে Hardcopy ক্রয় করুন।
We Respect Every Author Hardwork - boipaw.com™
0 মন্তব্যসমূহ
ℹ️ Your Opinion is very important to us, Please Writer your comment below about this Post.....