‌ঈমান কেন বাড়ে কেন কমে - লেখক : শায়খ আব্দুর রাজ্জাক ইবন আব্দুল মুহসিন আল বদর | Iman Keno Bare Keno Kome By Shaykh Abdur Razzak Ibn Abdul Muhsin Al Badr

ঈমান কেন বাড়ে কেন কমে (no pdf download free)
লেখক : শায়খ আব্দুর রাজ্জাক ইবন আব্দুল মুহসিন আল বদর
প্রকাশনী : সীরাত পাবলিকেশন
বিষয় : ঈমান ও আকীদা
পৃষ্ঠা : 112
কভার : পেপার ব্যাক
Image


কোন কোন বিষয় ঈমানের জন্য উপকারি আর কোন কোনটি ক্ষতিকর সে ব্যাপারে কুরআনের বিভিন্ন আয়াত এবং রাসূলের অসংখ্য হাদিসে স্পষ্ট করে বলে দেওয়া আছে। কিন্তু সবার জন্য তা একসাথে, এক মজলিসে জানা সম্ভব নয়। একত্রে একসাথে পেয়ে যাওয়াটাও সহজ নয়। তাই প্রয়োজন একটি সংকলন, একটি গ্রন্থের; যেখানে বিষয়গুলোকে সন্নিবিষ্ট করা হবে। খুলে খুলে স্পষ্ট করে ঈমানের জন্য উপকারি ও ক্ষতিকারক উপকরণ উপাদানগুলো তুলে ধরা হবে।

আর আমাদের বক্ষমান বইটিতে সে কাজই করা হয়েছে খুব যত্নের সাথে।শাইখ আব্দুর রাযযাক বিন আব্দুল মুহসিন আল বদর বিরচিত ঈমান সম্পর্কিত অসাধারণ গ্রন্থ হলো ‘যিয়াদাতুল ঈমান ওয়া নুকসানুহু ওয়া হুকমুল ইসতিসনা-ই ফি-হ’। আর সেই গ্রন্থের একটি অধ্যায় হলো ‘আসবাবু যিয়াদাতিল ঈমান ওয়া নুকসানিহি’। এই “ঈমান কেন বাড়ে কেন কমে” বইটি এই অধ্যায়েরই বাংলা অনুবাদ। এই অধ্যায়টির বিষয়বস্তুর গুরুত্ব ও প্রয়োজন বিবেচনা করে গ্রন্থকার এটিকে আলাদা পুস্তিকারূপে প্রকাশ করেছেন। অনুবাদের ক্ষেত্রে সেটিকেই সামনে রাখা হয়েছে। 

                   প্রাককথন

হানযালা রাদিয়াল্লাহু আনহু; রাসূলের মহান সাহাবি। উহুদের ময়দানে তিনি শাহাদাত বরণ করেছেন। 'গাসিলুল মালাইকাহ’ তাঁর সম্মাননীয় উপাধি। একদিন তিনি ঘর থেকে হন্তদন্ত হয়ে বেরোলেন। ছুটলেন রাসূলের বারাকাহপূর্ণ সংশ্রবের দিকে। পথে দেখা হলো আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহুর সাথে। জিজ্ঞেস করলেন, হানযালা, এরূপ অস্থির-পেরেশান হয়ে কোথায় চলেছ? তিনি বললেন, হানযালা তো মুনাফিক হয়ে গেছে! আবু বকর বললেন, সুবহানআল্লাহ! এটা কী বলছ! তিনি বললেন, হ্যাঁ, আমরা যখন রাসূলের সামনে থাকি তিনি আমাদেরকে এরূপভাবে জান্নাত জাহান্নামের বর্ণনা শোনান; যেন আমরা তা স্বচক্ষে দেখতে পাচ্ছি। অতঃপর যখন পরিবার-পরিজন, সন্তান-সন্তুতি, ধন-সম্পদের সংস্পর্শে যাই তখন আমরা সবকিছু ভুলে বসি। আবু বকর বললেন, আমারও তো এমন হয়। অতঃপর তাঁরা রাসূলের কাছে গেলেন। সব কিছু খুলে বললেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন- 'সেই সত্তার শপথ যার হাতে আমার জীবন, আমার কাছে থাকলে তোমাদের যে অবস্থার সৃষ্টি হয়, বাইরে গিয়েও যদি সেরকমটা বজায় থাকত তাহলে তোমাদের ঘরে ও পথে এসে ফেরেশতারা মুসাফাহা করত। তবে হানযালা, সময় সময় তা পরিবর্তন হয়।

ঈমানের সম্পদ লাভ করার পর তা হারানোর মতো দুর্ভাগ্য আর কিছুই হতে পারে না। সাহাবায়ে কিরাম রাদিয়াল্লাহু আনহুম নিজেদের ঈমানকে সংরক্ষণ করতে সর্বদা সতর্ক থেকেছেন। কষ্ট ও যাতনার প্রবল তুফান সয়ে সয়ে ঈমানের পরীক্ষায় তারা পূর্ণমাত্রায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। ফলে আল্লাহ তাআলা তাদের ঈমানকে বানিয়েছেন সবার ঈমানের মানদন্ড। তাদের ঈমানদীপ্ত জীবনকে বানিয়েছেন অফুরান প্রেরণার উৎস।

একজন মুমিনের কাছে সবচে' দামি ও মূল্যবান সম্পদ তাঁর ঈমান। ঈমানের মতো মূল্যবান সম্পদকে হরণের জন্য যেই শত্রু বাঁকে বাঁকে ওঁৎ পেতে বসে থাকে সে খুবই ধূর্ত, তার কূটচাল খুবই মারাত্মক। নবি-রাসূল, সাহাবা, সাধারণ মুসলিম— সবার পিছনেই সে লেগে থেকেছে আমরণ।

সম্পদ যত মূল্যবান হবে তা রক্ষা করার নিরাপত্তাব্যবস্থাও হতে হবে ততটাই শক্তিশালী। ঈমানের মতো মূল্যবান বস্তুকে সংরক্ষণের জন্য তার ধারক প্রতিটি ঈমানদারকে হতে হবে নিরাপত্তাব্যবস্থায় সজ্জিত। এতে অবহেলা করলেই বিপত্তি। আল্লাহর অগণিত বান্দা শয়তানের ধূর্তামির ফাঁদে পা দিয়ে নিজেদের ঈমান খুইয়েছে, বিশ্বাসের মূল্যবান সম্পদকে হারিয়েছে।

ঈমান কোনো জড়বস্তু নয়, বিশ্বাস ও চেতনার নাম ঈমান। বিশ্বাসের অনুকূলে কিছু করলে কিছু ঘটলে যেমন তা পোক্ত হয়, আবার প্রতিকূল কাজকর্মের কারণে তা কখনো দুর্বল হয়ে পড়ে, কখনো ভেঙ্গে যায়। ঈমানেরও আছে সবলতা ও দুর্বলতা। আছে হ্রাস ও বৃদ্ধি। ঈমানের অনুকূল কাজকর্মের কারণে তা সবল ও প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে। তার ভিত্তি ও কাঠামো হয়ে ওঠে সুদৃঢ়। আর প্রতিকূল কর্মকান্ডের কারণে সে দুর্বল ও নির্জীব হয়ে পড়ে। তার ভিত্তি ও কাঠামো হয়ে পড়ে নড়বড়ে।

দুনিয়াজুড়ে আল্লাহ তাআলা এমন বহু উপকরণ ও উপাদান ছড়িয়ে রেখেছেন যেগুলোর কোনোটা ঈমানকে বৃদ্ধি করে আর কোনোটা কমিয়ে দেয়। সেগুলোর কোনোটা মৌলিক আর কোনোটা সহায়ক। একজন প্রকৃত ঈমানদাররের কর্তব্য সেসব উপকরণ উপাদান সম্পর্কে জানা। ঈমানের উপর সেগুলোর প্রভাব কিরূপ—সে সম্বন্ধে জ্ঞান অর্জন করা। এতে অবহেলা প্রদর্শনের কোনো অবকাশ নেই।

কোন কোন বিষয় ঈমানের জন্য উপকারি আর কোন কোনটি ক্ষতিকর সে ব্যাপারে কুরআনের বিভিন্ন আয়াত এবং রাসূলের অসংখ্য হাদিসে স্পষ্ট করে বলে দেওয়া আছে। কিন্তু সবার জন্য তা একসাথে, এক মজলিসে জানা সম্ভব নয়। একত্রে একসাথে পেয়ে যাওয়াটাও সহজ নয়। তাই প্রয়োজন একটি সংকলন, একটি গ্রন্থের; যেখানে বিষয়গুলোকে সন্নিবিষ্ট করা হবে। খুলে খুলে স্পষ্ট করে ঈমানের জন্য উপকারি ও ক্ষতিকারক উপকরণ উপাদানগুলো তুলে ধরা হবে।

আর আমাদের বক্ষমান বইটিতে সে কাজই করা হয়েছে খুব যত্নের সাথে।

শাইখ আব্দুর রাযযাক বিন আব্দুল মুহসিন আল বদর বিরচিত ঈমান সম্পর্কিত অসাধারণ গ্রন্থ হলো 'যিয়াদাতুল ঈমান ওয়া নুকসানুহু ওয়া হুকমুল ইসতিসনা-ই ফি-হ'। আর সেই গ্রন্থের একটি অধ্যায় হলো 'আসবাবু যিয়াদাতিল ঈমান ওয়া নুকসানিহি। আমাদের হাতের 'ঈমান কেন বাড়ে কেন কমে' বইটি এই অধ্যায়েরই বাংলা অনুবাদ। এই অধ্যায়টির বিষয়বস্তুর গুরুত্ব ও প্রয়োজন বিবেচনা করে গ্রন্থকার এটিকে আলাদা পুস্তিকারূপে প্রকাশ করেছেন। অনুবাদের ক্ষেত্রে আমরা সেটিকেই সামনে রেখেছি।

আল্লাহ তালালা আমাদের ঈমানকে রক্ষা করুন। অনুবাদের সকল ভুলত্রুটি ক্ষমা করে বইটি সবার জন্য উপকারি বানিয়ে দিন, নাজাতের উসিলা হিসেবে কবুল করুন। আমীন।

- রুহুল আমীন উবাইদী

                      ভূমিকা

সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ তাআলার জন্য। আমরা তাঁর কাছেই সাহায্য চাই এবং তাঁর কাছেই ক্ষমা প্রার্থনা করি। আমরা আল্লাহর কাছে আশ্রয় কামনা করি হৃদয়ের অনিষ্ট এবং কর্মের কদর্যতা থেকে। তিনি যাকে হিদায়াত দেন কেউ তাকে ভ্রষ্ট করতে পারে না, আর যাকে পথচ্যুত করেন তাকে কেউ পথ দেখাতে পারে না। আমরা সাক্ষ্য দিচ্ছি আল্লাহ তাআলা এক, তাঁর কোনো শরিক নেই। আমরা আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহ তাআলার বান্দা ও রাসূল। আল্লাহ তাঁর এবং পরিবারবর্গ ও সহচরবৃন্দের উপর করুণা ও শান্তি অবতীর্ণ করুন।

পরকথা হলো

ঈমানের সুউচ্চ মর্যাদা এবং উচ্চতর অবস্থান সবার কাছে স্পষ্ট। কেননা ঈমান হলো সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ, সবচেয়ে অত্যাবশ্যকীয় এবং সুমহান মর্যাদাপূর্ণ একটি বিষয়। দুনিয়া এবং আখিরাতের সমূহ কল্যাণ নির্ভর করে ঈমানের অস্তিত্ব, তার ন্যায্যতা ও যথার্থতার উপর। ঈমানের আছে অসংখ্য উপকারিতা এবং কল্যাণ।

ঈমানের প্রতি একজন মুসলিমের যত্নশীলতা হবে যেকোনো কিছুর চেয়ে বেশি। উম্মাহর পূর্ববর্তীদের মাঝে প্রধান, অগ্রগণ্য এবং শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিবর্গের ঈমানের প্রতি যত্নশীলতা ছিল সীমাহীন। এর প্রতি তাদের গুরুত্ব ছিল তুলনাহীন। তাঁরা ঈমানের ক্ষেত্রে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হতেন, নিজেদের আমলকে যাচাই করতেন এবং পরস্পর উপদেশ বিনিময় করতেন। এক্ষেত্রে তাদের থেকে অনেক কিছুই বর্ণিত হয়েছে। আমরা তাদের কয়েকটি উক্তি উল্লেখ করছি।

এক. উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু তাঁর সঙ্গীদের বলতেন, ‘এসো, আমাদের ঈমানকে বৃদ্ধি করি।'

দুই. আব্দুল্লাহ ইবনু মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলতেন, 'আমাদের সাথে বসো। আমরা আমাদের ঈমানকে বৃদ্ধি করব।'

তিনি তাঁর দুআয় বলতেন, 'হে আল্লাহ, আমার ঈমান, বিশ্বাস এবং উপলব্ধি বাড়িয়ে দিন।'

তিন. মুআয ইবনু জাবাল রাদিয়াল্লাহু আনহু বলতেন, 'আমাদের সাথে বসো। কিছু মুহূর্ত ঈমান নবায়ন করি।

চার. আব্দুল্লাহ ইবনু রাওয়াহা রাদিয়াল্লাহু আনহু তাঁর সঙ্গীদের হাত ধরে বলতেন, ‘এসো, আমরা কিছু মুহূর্ত ঈমান নবায়ন করি। আল্লাহ তাআলাকে স্মরণ করি এবং তাঁর আনুগত্যের মাধ্যমে ঈমানকে বৃদ্ধি করি। হয়তো তিনি স্বীয় ক্ষমার সাথে আমাদেরকে স্মরণ করবেন।'

পাঁচ. আবু দারদা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, 'বান্দার বিচক্ষণতা হলো সে জানবে— সে কি ঈমান বৃদ্ধি করছে নাকি কমাচ্ছে? তার বিচক্ষণতা হলো শয়তানের ধোঁকা এবং প্রতারণা সম্পর্কে সে জানবে— তা কোত্থেকে কীভাবে আসে??

ছয়. উমাইর ইবনু হাবিব আল খিতমি রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, “ঈমান বাড়ে এবং কমে।' জিজ্ঞেস করা হলো, ঈমানের বাড়া-কমা কীভাবে বোঝা যাবে? তিনি বললেন, 'যখন আমরা আল্লাহ তাআলার যিকির করব, তাঁর প্রশংসা এবং তাসবিহ পাঠ করব— বুঝবে, এটাই ঈমানের বৃদ্ধি। আর যখন তাঁর থেকে উদাসীন হয়ে পড়ব, মন থেকে তাঁর স্মরণ হারিয়ে ফেলব এবং তাকে ভুলে যাব— বুঝবে, এটাই ঈমানের হ্রাস পাওয়া।'

সাত. তাবিয়িদের মাঝে অগ্রগণ্য এবং সম্মানিত ব্যক্তিত্ব আলকামাহ রহিমাহুল্লাহ তাঁর সঙ্গীদের বলতেন, 'আমাদের সাথে চলো, আমরা ঈমান বৃদ্ধি করব।'

আট. আব্দুর রহমান ইবনু আমর আল আওযায়ি রহিমাহুল্লাহকে ঈমান সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলো— তা কি বৃদ্ধি পায়? তিনি বললেন, 'হ্যাঁ, একসময় তা সুদৃঢ় পাহাড়ের মতো হয়ে ওঠে।' আবার জিজ্ঞাসা করা হলো— তা কি কমে? তিনি বললেন, 'হ্যাঁ, এমনকি এক সময় তার রেশও অবশিষ্ট থাকে না।'

নয়. আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআহর মহান ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল রহিমাহুল্লাহকে জিজ্ঞেস করা হলো—ঈমান কি বাড়ে কমে? তিনি বললেন, ‘বাড়তে বাড়তে এক সময় তা সপ্ত আকাশ ছুঁয়ে যায়। আর কমতে কমতে এক সময় সপ্ত জমিনের অতলে গিয়ে ঠেকে।'

তিনি বলতেন, ‘ঈমান হলো কথা এবং কর্ম। তা বাড়ে এবং কমে। ভালো কাজ করলে তা বৃদ্ধি পায়। মন্দ কাজ করলে তা কমে যায়।

মহান পূর্বসুরিদের থেকে এরকম আরও অনেক কথা বর্ণিত হয়েছে। তাদের জীবন ও কর্ম সম্পর্কে যে পড়াশোনা করবে, তা নিয়ে চিন্তা ভাবনা করবে—সে দেখতে পাবে কেমন ছিল ঈমানের প্রতি তাদের যত্ন! কতটা গুরুত্ব তারা দিতেন এ ব্যাপারে!

বোঝা গেল, তারা মনে করতেন এমন অনেক উপকরণ এবং কারণ রয়েছে যেগুলো ঈমানকে বৃদ্ধি করে, শক্তিশালী এবং পরিপুষ্ট করে। আবার অনেক বিষয় এমন আছে যেগুলো ঈমানকে কমিয়ে দেয়, দুর্বল এবং পুষ্টিহীন করে তোলে। তাই তারা ঈমানবৃদ্ধির কারণ এবং উপকরণগুলোর ব্যাপারে খুবই যত্ন নিতেন এবং ঈমানের ক্ষতিকারক ও দুর্বলকারক বিষয়গুলো থেকে খুবই সতর্কতা অবলম্বন করতেন। তারা তো ছিলেন উম্মাহর শ্রেষ্ঠ এবং বরেণ্য ব্যক্তিবর্গ।

সুতরাং এসব বিষয় জানা- অর্থাৎ ঈমান বাড়া ও কমার কারণসমূহ উপলব্ধি করার উপকারিতা সীমাহীন। এতে আছে প্রভূত কল্যাণ। বরং এসব বিষয় সম্পর্কে ভালোভাবে জানা এবং সেগুলোর প্রকৃতি সম্বন্ধে জ্ঞান অর্জন করা অত্যাবশ্যক। কেননা ঈমানই হলো বান্দার পূর্ণতা, তার সাফল্য ও সৌভাগ্য। দুনিয়া ও আখিরাতে এর মাধ্যমেই তার মর্যাদা বৃদ্ধি পাবে। ইহকাল এবং পরকালে সমস্ত কল্যাণ হাসিলের পথ ও পন্থা এটাই। আর ঈমান কখনো শক্তিশালী হবে না এবং পূর্ণতায় পৌঁছুবে না—তা শক্তিশালী ও পূর্ণতায় পৌঁছানোর যথাযথ পদ্ধতি অবলম্বন ছাড়া।

তাই নিজের কল্যাণ ও সৌভাগ্য প্রত্যাশী একজন মুসলিমের জন্য আবশ্যক হলো এসব উপায় উপকরণ ভালোভাবে জানা। সেগুলো নিয়ে চিন্তা করা এবং জীবন চলার পথে প্রয়োগ করা। যেন তা বাড়ে, শক্তিশালী ও পরিপুষ্ট হয়। আর যেসব কারণে ঈমান কমে যায় সেসব থেকে সযত্ন দূরত্ব অবলম্বন করা। সেসবে নিপতিত হওয়া থেকে বেঁচে চলা; যেন এর কঠিন পরিণতি এবং যন্ত্রণাময় পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে না হয়।

আল্লামা ইবনু সা’দি রহিমাহুল্লাহ বলেন, 'তাওফিকপ্রাপ্ত মুমিন সর্বদা দুটি ব্যাপারে চেষ্টা করে যায়:

এক. নিজের ঈমান ও তার শাখা প্রশাখার ব্যাপারে পরীক্ষা নিরীক্ষা, সে অনুপাতে ইলম হাসিল এবং তার বাস্তবায়ন।

দুই. ঈমান বিনষ্টকারি বিষয় এবং যেসব প্রকাশ্য ও গোপন ফিতনা ঈমানকে

ক্ষতিগ্রস্ত করে—সেসব দূর করার প্রচেষ্টা।

প্রথমটির ব্যাপারে সে নিজের কমতির প্রতিবিধান করে। আর দ্বিতীয়টির ব্যাপারে করে আন্তরিক তাওবা; এর মাধ্যমে সে নিজের ক্ষতি পুষিয়ে নেয়। ১)

প্রিয় পাঠক, নিচের আলোচনায় ঈমানের বৃদ্ধি এবং কমতির গুরুত্ব ও উপকরণ সম্পর্কে আলোকপাত করা হয়েছে। এটা মূলত আমার রচিত গ্রন্থ ‘যিয়াদাতুল ঈমান ওয়া নুকসানুহ ওয়া হুকমুল ইসতিসনা ফি-হ'র একটি পরিচ্ছেদ। কিছু প্রিয়জন এবং শুভাকাঙ্খী অনুরোধ করেছেন এটিকে স্বতন্ত্র পুস্তিকা হিসেবে ছেপে দিতে, যেন সর্বসাধারণ তা থেকে উপকৃত হতে পারে। আল্লাহ তাআলার প্রশংসা জ্ঞাপন করছি, তাঁর অনুগ্রহ এবং তাওফিকেই এটা সম্ভব হলো।

-শাইখ আব্দুর রাযযাক বিন আব্দুল মুহসিন আল-বদর

আরো পড়তে অথবা দেখতে :- অনুগ্রহ করে Hardcopy ক্রয় করুন | we Respect Every Author Hardwork-boipaw team| 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ