মক্কা মদিনা জেরুজালেম - লেখক : আব্দুল্লাহ ইবনে মাহমুদ | Mokka Modina O Jerujalem - Abdullah IBN Mahmud

মক্কা মদিনা জেরুজালেম (pdf download no available)
লেখক : আব্দুল্লাহ ইবনে মাহমুদ
প্রকাশনী : অন্যধারা
বিষয় : ইসলামি ইতিহাস ও ঐতিহ্য
কভার : হার্ড কভার
আইএসবিএন : 9789849638339, ভাষা : বাংলা।
Image



সহস্র স্মৃতির মক্কা নগরী .........
আমি তখন খুবই ছোট| মক্কার কাছের খোলা এক সমভূমি মুজদালিফা য় (musdalifah) দাঁড়িয়ে আছি| সন্ধ্যার পর পর, জীবনে প্রথমবারের মতো তখন দেখলাম, মাগরিব আর ইশার নামাজ একসাথে পড়ে ফেলছে লোকে| কী অদ্ভুত! কিছুক্ষণ পর উঁচু এক ভ্যানগাড়ি এসে থামলো সামনে| পেছনের দরজা খুলে দুজন লোক কার্টন ভর্তি পানির বোতল বের করলো| গাড়ি থেকে না নেমেই বিনে পয়সায় ছুঁড়ে মারতে লাগলো ওসব বোতল| কীভাবে কীভাবে যেন আমি একটি বোতল ধরেও ফেললাম|

এই স্মৃতিগুলো কেমন করে এখনও মনে আছে, আমি জানি না| তবে আমার বয়স তখন এত কম যে, কোনোভাবেই বুঝতে পারছিলাম না, লাখ লাখ লোক কেন সাদা কাপড় পরে এই শহরে আলস্নাহর ঘর দেখতে সারি বেঁধে চলে এসেছে

বড় হয়ে ওঠার সাথে সাথে বারবার শোনা ঘটনাগুলোর মর্ম বুঝতে পারলাম| সেই সাথে মাথায় ঢুকতে শুরম্ন করলো, কেন এই মরম্ন নগরী পৃথিবীর দেড়শো কোটিরও বেশি মানুষের কাছে মহাপবিত্র| এই বইতে সেই মক্কা নগরীর বৃত্তান্য় দিয়েই হোক লেখার শুরম্ন

বাংলায় আমরা যাকে ‘মক্কা’ (.)বলে ডাকি, আরবিতে তার পুরো নাম ও উচ্চারণ ‘মাক্কাহ আল-মুকাররামাহ’ (in Salil is)। সৌদি আরবের মক্কা প্রদেশের প্রশাসনিক কেন্দ্র| (সৌদি আরবের ১৩টি প্রদেশ রয়েছে|) ইসলাম ধর্মের পবিত্রতম শহর এই মক্কা নগরী| লোহিত সাগরের পাড়ের জেদ্দা নগরী থেকে ৭০ কিলোমিটার ভেতরে, সমুদ্র থেকে ২৭৭ মিটার বা ৯০৯ ফুট উঁচুতে অবস্থিত মক্কা| করোনা মহামারি শুরম্নর আগে আগে শহরটির জনসংখ্যা ছিল প্রায় সাড়ে বিশ লক্ষ| অর্থাৎ রাজধানী রিয়াদ ও জেদ্দার পর মক্কা সৌদি আরবের তৃতীয় জনবহুল শহর| তবে ভ্রমণকারীদের নিয়ে হিসেব করলে মক্কাকে পেছনে ফেলার কোনো উপায়ই নেই! তীর্থযাত্রীদের জমায়েতে জনসংখ্যা গিয়ে ঠেকে তিনগুণে!

মক্কা নগরী মহানবী হযরত মুহাম্মাদ (সা)-এর জন্মস্থান, পবিত্র কাবা গৃহের শহর এবং বার্ষিক হজ্ব ও উমরার কারণে ইসলামে বিশেষ মর্যাদার অধিকারী| প্রত্যেক সামর্থ্যবান মুসলিমের জীবনে অন্য়ত একবার পবিত্র হজ্ব পালন করা বাধ্যতামূলক| এ কারণেই প্রতি বছর এত তীর্থ যাত্রীর সমাগম হয় এ নগরীতে|

১৯২৫ সালে সৌদ পরিবার মক্কা শহরের ক্ষমতা হাতে পান| এরপর থেকে পরিবর্তন আসতে থাকে শহরের স্থাপত্যে| বিভিন্ন অবকাঠামোর পরিবর্তন, সম্প্রসারণ, আধুনিকায়ন, ইত্যাদি চমৎকার কাজের পাশাপাশি ঐতিহাসিক স্মৃতি সংবলিত নানা স্থান ধ্বংস করে দেয়ার জন্য সৌদ প্রশাসন সমালোচিতও হয়| এ মুহূর্তে পৃথিবীর সবচেয়ে ব্যয়বহুল স্থাপনাগুলোর মাঝে দুটো মক্কাতেই অবস্থিত| উলেস্নখ্য, মক্কা নগরীতে কোনো অমুসলিমের প্রবেশ জ্ঞানত নিষেধ |

মক্কা প্রদেশের সবচেয়ে জনবহুল শহর জেদ্দা হলেও, মক্কা-ই এর রাজধানী, এর পাশাপাশি তাইফ (casil) শহরটিও এর অংশ| সৌদি সরকারের অধীনে মক্কার স্থানীয় প্রশাসনের ১৪ জন নির্বাচিত প্রতিনিধি মক্কা দেখা-শোনার দায়িত্ব পালন করেন| মক্কার মেয়রকে আরবিতে ‘আমিন’ ডাকা হয়|

‘মাক্কা’ শব্দের কোনো অর্থ জানা নেই, তবে ধারণা করা হয় এটি এই উপত্যকার প্রাক্তন নাম ‘বাক্কা’-র সমার্থক| বলা হয়ে থাকে, মুহাম্মাদ (সা)-এর আমলে, দক্ষিণ আরবের ভাষায় ‘ম’ এবং ‘ব’ প্রতিস্থাপন করা যেত| সৌদি সরকার গধশশধ্য বা ‘মাক্কাহ’-কে সরকারি বানান হিসেবে স্বীকৃতি দিলেও, বহির্বিশ্বে এ বানান ব্যবহৃত হতে দেখা যায় না, বরং গবপপধ (মেকা) বা বাংলায় ‘মক্কা’-ই প্রচলিত| ‘মাক্কাহ আল মুকাররামা' অর্থ 'সম্মানিত মক্কা'| মক্কা নামটির উলেস্নখ কুরআনেও আছে (সুরা ফাতহ ৪৮:২৪)|

‘মেকা’ বলার প্রচলন রয়েছে, যা এখানের হজ্বের সমাগম থেকে উদ্ভূত| মক্কার আদি নাম আর অর্থ নিয়ে আমরা অন্য অধ্যায়ে আলোচনা করব|

কুরআনে মক্কাকে উম্মুল কুরা (siii) বা ‘সকল জনপদের মাতা’ বলা হয়েছে (সুরা আনআম ৬:৯২)| হাদিসেও একে বিভিন্ন নামে ডাকা হয়েছে| ‘তিহামাহ’ (is) নামটি ঐতিহাসিকভাবে বলা হলেও ভৌগলিকভাবে একে সঠিক বলে মনে হয় না| কারণ তিহামাহ একটি বিশাল অঞ্চল, হেজাজের উত্তরার্ধ, যার ছোট একটি অংশ মক্কা| ইহুদী ও খ্রিস্টীয় কিতাবে এ এলাকাকে ফারান বা পারান মরম্ন বলে উলেস্নখ করা হয়েছে| হিব্রম্ন উচ্চারণ ‘মিদবার পারান’ (17827277) অর্থাৎ ‘পারানের মরম্ন’ | লোহিত সাগর পেরিয়ে মিসর থেকে বেরিয়ে আসার পর মুসা (আ)-এর নেতৃত্বে পারান মরম্নর কাছে বনী ইসরাইল এক সময় বসবাস করতো বলে তাওরাতে উলেস্নখ রয়েছে| তবে তাদের সাথে ইসমাইলিদের দেখা হয়েছিল কি না, তার উলেস্নখ সেখানে নেই| অবশ্য ইসলামি সূত্রে উলেস্নখ আছে, মুসা (আ) পারান মরম্নতে, মানে মক্কায় গিয়ে হজ্ব পালন করেছিলেন| তাবারানি আল-মুজাম আল কাবির (১২২৮৩) হাদিসগ্রন্থ থেকে ইবনে আব্বাস (রা)-এর বরাতে বলেন, রাসুল (সা) বলেছিলেন, “সত্তরজন নবী (মিনা’র) আল খায়েফ মসজিদে নামাজ আদায় করেছেন| এমনকি নবী মুসাও (আ)| 

আমি যেন তাকে দেখতে পাচ্ছি, দুই টুকরো কাতওয়ানি পোশাক তার গায়ে, ইহরাম বাঁধা, শানুয়া'র উটের পিঠে করে আসছেন, হাতে তার মোচড়ানো তালপাতা|” শানুয়া হলো সেই ইয়েমেনি গোত্র, যাদের উত্তরসূরি ছিলেন মদিনার সাহায্যকারী আনসারেরা| আর খায়েফ মসজিদের কথায় পরে আসছি| হাদিসে ৭০ বা ৭৫ জন নবীর মক্কায় হজ্ব করার কথা উলেস্নখ রয়েছে| বাইবেলে কেবল এটুকুই উলেস্নখ আছে যে, মুসা (আ) ও তার ভাই হারম্নন (আ) ফারাওয়ের সামনে গিয়ে বলেন, “ইসরাইলের মাবুদ আলস্নাহ বলছেন, আমার লোকদেরকে প্রস্থান করতে দাও, যেন তারা আমার উদ্দেশ্যে মরম্নতে তীর্থ পালন করতে পারে|” (হিজরত বা বুক অফ এক্সোডাস, ৫:১) ঈসা (আ)-এর ব্যাপারে মুসলিম শরিফের হাদিসে উলেস্নখ রয়েছে, তিনি দাজ্জালকে হত্যা করার পর হজ্ব বা উমরা, বা দুটিই পালন করবেন|

বাইবেলে পারান ভূমির কথা এভাবে উলেস্নখ রয়েছে, “আলস্নাহ্ বালকটির কান্নার আওয়াজ শুনলেন; আর আলস্নাহ ফেরেশতা আকাশ থেকে ডেকে হাজেরাকে বললেন, হাজেরা, তোমার কি হলো? ভয় করো না, বালকটি যেখানে আছে, আলস্নাহ্ সেই স্থান থেকে ওর কান্নার আওয়াজ শুনেছেন; তুমি উঠে বালকটিকে তুলে নাও; কারণ আমি ওকে একটি মহাজাতি করবো (অর্থাৎ তাকে একটি মহাজাতির নেতা বানাবো)| তখন আলস্নাহ্ তার চোখ খুলে দিলেন, তাতে সে পানিতে পূর্ণ একটি কূপ দেখতে পেল, আর সেখানে গিয়ে কুয়াতে পানি পূর্ণ করে বালকটিকে পান করাল| পরে আলস্নাহ্ বালকটির সহবর্তী হলেন, আর সে (ইসমাইল) বড় হয়ে উঠলো এবং মরম্নপ্রান্য়রে থেকে তীরন্দাজ হলো| সে পারান মরম্ন-প্রারে বাস করতে লাগলো| আর তার মা তার বিয়ের জন্য মিসর দেশ থেকে একটি কন্যা নিয়ে এলো|” (তাওরাত, পয়দায়েশ, বুক অফ জেনেসিস ২১:১৭-২১)

বাইবেলে পারানের আরেকটি গুরম্নত্বপূর্ণ উলেস্নখ পাওয়া যায় দ্বিতীয় বিবরণে| সেখানে সিনাই পর্বতের (যাকে লোকে ‘তুর পর্বত’ ডাকে) ও সেয়ীর পর্বতের (ঈসার পর্বত) মতো করে পারানের পর্বত থেকেও মাবুদের শরীয়ত আসার উলেস্নখ রয়েছে দোয়া আকারে “মাবুদ সিনাই থেকে আসলেন, সেয়ীর পর্বত থেকে তাদের প্রতি উদিত হলেন; পারান পর্বত থেকে তাঁর তেজ প্রকাশ করলেন, অযুত অযুত পবিত্র লোকদের কাছে আসলেন; তাদের জন্য তাঁর ডান হাতে অগ্নিময় শরীয়ত|” (ওল্ড টেস্টামেন্ট, দ্বিতীয় বিবরণ/বুক অফ ডিউটেরনমি, ৩৩:২)

বাইবেলে রাজা দাউদ (আ) নিজেও কোনো এক কারণে পারানে গিয়েছিলেন বলে উলেস্নখ আছে (ফার্স্ট বুক অফ স্যামুয়েল, ২৫:১), যদিও ইসলামে উলেস্নখ আছে তিনি হজ্ব করেন সেখানে|

ইহুদীদের নবী হাবাককুক (আ) বাইবেলে বলেন, “আলস্নাহ আত্মপ্রকাশ করতে চলেছেন পারানের পর্বতে|” (হাবাককুক ৩:৩) অবাক করা ব্যাপার, আমাদের হাতে এখন ওয়াহব ইবনে মুনাব্বিহ'র সংকলিত “কিতাব আল-তিজান” রয়েছে, যেটি কিনা আইয়ামে জাহিলিয়া বা ইসলাম আবির্ভাবের আগের সময়ের আরব কবিতার একটি সংকলন বা সমগ্র, সেখানে মক্কা নগরীর বাইরের পাহাড়কে উলেস্নখ করা আছে ‘ফারান পর্বত’ (তাল ফারান) বলে| বলা বাহুল্য, আরবিতে ‘প’ নেই, আছে ‘ফ’| তাবিইন এই ভদ্রলোক ওয়াহব ইবনে মুনাব্বিহ মূলত ইয়েমেনি বা পারসিক কোনো গোত্রের উত্তরসূরি| 

তিনি ৬৫৪/৬৫৫ সালের দিকে জন্মগ্রহণ করেন, মারা যান ৭২৫ থেকে ৭৩৭ সালের মাঝে কোনো এক সময়| ইসরাইলি ধর্ম সম্পর্কে তার অগাধ জ্ঞান ছিল| তার আদি ও আসল কাসাসুল আম্বিয়া সমগ্রের কথা শুনে থাকতে পারেন, যেখানে তিনি ইসলামি ও ইসরাইলি সকল বর্ণনা যুক্ত করেন| তার বাবা ছিলেন একজন সাহাবী| ওয়াহব ইহুদী ধর্ম থেকে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন, এবং তার জানা এ দুই ধর্মের সম্মিলন ঘটান লেখনির মাধ্যমে| তার আরেকটি বিখ্যাত গ্রন্থ ছিল 'কিতাব আল ইসরাইলিয়াত’ যা কালের গহ্বরে হারিয়ে গিয়েছে| কিন্তু তার সেই লেখনির কিছু কিছু (অম্মত ২৫টি কাহিনী) পরবর্তীতে স্থান পায় আরব্য রজনীর গল্পগ্রন্থে, যা বর্তমানে ‘আলিফ লায়লা’ নামে পরিচিত| আরব উপদ্বীপে বসবাস ছিল জুরহুম (8) গোত্রের| তাদেরকে দ্বিতীয় জুরহুমও বলা হয়| গ্রিকরা তাদেরকে চিনতো গোরহামাইট (এড়তত্যধসরঃব) নামে| আসলে, বনি জুরহুম ইয়েমেন থেকে মক্কায় অভিবাসী হয়ে আসে, তারা মূলত দক্ষিণ আরবের জাতি অর্থাৎ কাহতানি (subsi)|কাহতানিরা দুই ভাগে বিভক্তহিমিয়ার এবং কাহলান| ইয়েমেনের হিমিয়ার রাজ্যকে (is islaa) গ্রিক ও রোমানরা ডাকতো ‘হোমেরিট রাজ্য’ বলে| ১১০ খ্রিস্টপূর্বে এই রাজ্য স্থাপন করা হয়| ৫০০ সালের দিকে এর রাজধানীর নাম ছিল ‘সানা | আর ‘কাহলান’ (৬৮৬) ছিল ইয়েমেনের সাবা'র আরেকটি প্রধান গোত্র| হিমিয়ারদের সাথে তাদের সংঘর্ষ লেগেই থাকতো| এই কাহতানিদের থেকে আলাদা ছিল উত্তর বা উচ্চ আরবের ‘আদনানি’-রা|

কাহতানি এসেছে কাহতানের নাম থেকে, আরবি ও হিব্রম্নতে তাকে ‘ইয়াকতান’ (197;) (ii) নামেও ডাকা হয়| তাকে নিয়ে আরব ও ইসরাইলি কথ্য ইতিহাস ও কিংবদন্য়িতে আছে নানা বর্ণনা| যেমন ধরম্নন, কাহতানকে নবী হুদ (আ)-এর পুত্র বলা হয়ে থাকে, আবার হুদ (আ)-কে হিব্রম্নতে ‘এবের’ (19) বলে মন্ত্ৰব্য করেছেন অনেকে, আরবিতে বিকল্প উচ্চারণ আবির (১৬)| এ কথা সত্য হোক না হোক, তাওরাতে উলেস্নখিত ‘এবের’-কে ইসমাইলি ও ইসরাইলিদের পূর্বপুরম্নষ বলে উলেস্নখ করা হয়েছে। আবার কারো কারো ধারণা, এবের থেকেই ‘হিব্রম্ন’ নামটির উৎপত্তি| নূহ (আ)-এর তিন পুত্র শাম, হাম ও ইয়াফেস| মহাপস্নাবনের পর তাদের সম্মানসম্মতি বিস্সার লাভ করে| উলেস্নখ্য, ‘শাম’-এর নাম থেকেই শামদেশ বা মধ্যপ্রাচ্যের সিরীয় অঞ্চলের নাম এসেছে| তাছাড়া সেমেটিক ভাষার ‘সাম’ও তার নাম থেকেই আগত| শামের উত্তরপুরম্নষ ছিলেন এবের| এবেরের দুই সম্মানের একজন ছিলেন ইয়াকতান বা কাহতান| তাওরাত বলছে, এই কাহতানের আবার ১৩ পুত্ৰ- আলমোদাদ, শেলেফ, হাসারমাওত (np7s0), ইয়েরাহ, হাদোরাম, আজাল, দিকলাহ, ওবাল, আবিমায়েল, সাবা, ওফীর, হাভিলা ও ইয়োবাব|

কথিত আছে, শামের বংশধরদের মধ্যে যুবরাজ হন কাহতান, হামের বংশ থেকে নমরূদ এবং ইয়াফেসের বংশ থেকে ফেনেখ| এই তিন যুবরাজ ব্যবিলনের টাওয়ার বা “টাওয়ার অফ বাবেল” নির্মাণের জন্য ইট বানানোর নির্দেশ দেন সবাইকে| কিন্তু কাহতানের নিজের কয়েকজন পুত্র, এবং ইব্রাহিম (আ) ও লুত (আ)সহ মোট ১২জন এ আদেশ অমান্য করেন| কাহতান নিজেও মনে মনে সম্ভবত এ টাওয়ারের বিরোধী ছিলেন| তিনি এই অবাধ্য ১২ জনকে মেসোপটেমিয়ার শিনার এলাকা থেকে পালিয়ে যেতে সাহায্য করেন, যেন তারা পাহাড়ে লুকিয়ে পড়তে পারেন| কাহতানের এ কা-ে বাকি 
দুই যুবরাজ অনেক রেগে যান| যাই হোক, এসব কাহিনী নাহয় তোলা থাকুক অন্য কোনো বইয়ের জন্য| প্রসঙ্গে ফিরি

কাহতানের পুত্রদের মাঝে কয়েকজন বেশ বিখ্যাত হন| যেমন, সাবা'র নাম থেকেই সাবা রাজত্বের উৎপত্তি (হেনরি রাইডার হ্যাগার্ডের ‘রানী শেবার আংটি’র সেই শেবা)| আজাল ছিল ইয়েমেনের রাজধানী ‘সানা’-র আদি নাম| কাহতানের তৃতীয় সম্মান হাসারমাওত (এ is) নিজেও আরবে নামকরা ছিলেন| তারপর ধরমন জুরহুমের (৪) কথা, যিনি দ্বিতীয় জুরহুম গোত্র স্থাপন করেন, যাদের কাছ থেকে ইব্রাহিম (আ)-এর ফারানবাসী পুত্র ইসমাইল (আ) আরবি ভাষা শিখেছিলেন| এর বহু পরে আসলে হিমিয়ার ও কাহলান ভাগ হয়| এরকম নিকট সম্পর্কের কারণে সেমিটিক ভাষাগুলোর মাঝে অনেক মিল পাওয়া যায়আরবি, হিব্রম্ন, আরামায়িক, ফিনিসীয়, নাবতীয়, হিমিয়ার, ইত্যাদি|

কাহতানিদের সাথে আরেকটি নাম উচ্চারিত হয়- আদনানি (issilise), এরা আদনানের বংশধর| ইসমাইল (আ)-এর পুত্র কেদার (৩২), আর আদনান (jlic) ছিলেন এই কেদারের বংশধর| হযরত মুহাম্মাদ (সা)-এর প্রচলিত বংশতালিকায় পূর্বপুরম্নষ হিসেবে আমরা আদনানের নাম পাই| আরবে আদনানি নামে পরিচিত হলেও হিব্রম্নতে তারা পরিচিত কেদারী নামে| বাইবেলে ইয়ারামিয়া (আ)-এর কিতাবে।

আরো পড়তে অথবা দেখতে :- অনুগ্রহ করে Hardcopy ক্রয় করুন। Any Kind Of Information..! Please Mail Us At.. contactwithboipaw@gmail.com

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ