নববি চরিত্রের সৌন্দর্য, লেখক : ড. রাগিব সারজানী, সাইয়েদ আবুল হাসান আলী নদভী

নববি চরিত্রের সৌন্দর্য (pdf full no available)
লেখক : ড. রাগিব সারজানী, সাইয়েদ আবুল হাসান আলী নদভী
প্রকাশনী : দারুত তিবইয়ান
বিষয় : সীরাতে রাসূল (সা.)
অনুবাদক : আবদুল্লাহ বিন মুহাম্মদ
পৃষ্ঠা : 112
ভাষা : বাংলা

সাপ্লায়ার জানিয়েছেন এই পণ্যটি 28 February প্রকাশিত হতে পারে। প্রকাশিত হওয়ার সাথে সাথে পণ্যটি পেতে আগেই অর্ডার করে রাখুন ।

সংক্ষিপ্ত বর্ণনা.........
হজরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। আমাদের প্রিয়নবি। সাইয়িদুল মুরসালিন। বিশ্ববাসীর জন্য যিনি আদর্শ। আল্লাহ যাঁর ব্যাপারে বলেছেন; হে নবি, আপনি হলেন বিশ্ববাসীর জন্য উত্তম আদর্শ।

রাসুল সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জীবনের প্রতিটি পদে পদে আমাদের জন্য কি নেই। ঘর-সংসার, রাজা-গোলাম, ইবাদত-বন্দেগিসহ জীবনের প্রতিটি পর্বে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর উম্মতের জন্য রেখে গেছেন উত্তম আদর্শের নমুনা—তাঁর নিজ আমলের মাধ্যমে।

সাইয়িদ আবুল হাসান আলি নদবি রাহিমাহুল্লাহ ও ড. রাগিব সারজানি এ বিষয়ে নিজ নিজ গ্রন্থে সে বিষয়টি তুলে ধরেছেন। লেখক খুবই সুন্দরভাবে দেখিয়েছেন; নবিজি সাংসারিক জীবনে কেমন ছিলেন; নবিজির দয়া-মহানুভবতা কেমন ছিল। নবিজির ইবাদত; অনুগ্রহ; নামাজ-রোজাসহ জীবনের নানা অধ্যায়ে রাসুল সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কী কী আদর্শ আছে এবং তা বাস্তবায়নের সঠিক পদ্ধতি লেখক এ গ্রন্থে তুলে ধরেছেন। আশা করি বইটি আমাদের জন্য উত্তম পথনির্দেশক হিসেবে কাজ করবে। ইনশাআল্লাহ।
Image

               নববি চরিত্রের সৌন্দর্য

রাসুলুল্লাহর সচ্চরিত্র, উত্তম গুণাবলি এবং সুনিপুণ দেহসৌষ্ঠব।

নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উত্তম চরিত্র, সৌন্দর্যমণ্ডিত গুণাবলি এবং অভিজাত জীবনচরিত সম্পর্কে হজরত হিন্দ বিন আবি হালাহ রাদিআল্লাহু আনহু (তিনি উম্মুল মুমিনিন হজরত খাদিজা রাদিআল্লাহু আনহার পুত্র এবং হজরত হাসান, হুসাইন রাদিআল্লাহু আনহুমার মামা ছিলেন। তিনি অত্যন্ত গ্রহণযোগ্য ও সুসাহিত্যিক ছিলেন) তার ভাষায় বলেন :

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সবসময় আখেরাতের চিন্তা এবং আখেরাতের পরিণামের ভাবনায় নিমগ্ন থাকতেন। নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিয়মিত অবস্থা এমন ছিল, তিনি কখনো স্বস্তিবোধ করতেন না। অধিকাংশ সময় নিরবতার মাঝে পার করতেন। একদমই অপ্রয়োজনীয় কথা বলতেন না। যখন কথা বলার প্রয়োজন বোধ করতেন খুব স্পষ্ট করে মুখ খুলতেন এবং কথা বলতেন, এবং সেভাবেই শেষ করতেন। তাঁর কথা, বক্তৃতা সবসময় পরিষ্কার, সুস্পষ্ট এবং ধীরগতিতে হতো। না তাতে অপ্রয়োজনীয় কোনো কথা থাকত, না তা অতিরিক্ত সংক্ষিপ্ত হয়ে যেত।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের স্বভাব ছিল খুবই শান্ত, এবং কথাবার্তায় ছিলেন খুবই কোমল ও নম্র। রুক্ষতা, কঠোরতা ছিল তাঁর স্বভাববিরোধী। তিনি না কাউকে তিরস্কার করতেন, আর না নিজে তিরস্কৃত হওয়া পছন্দ করতেন। নেয়ামতের


[১] অর্থাৎ অহংকারিদের মতো যোগিতা কিংবা আত্মম্ভরিতা দেখি কথা বলতেন না। [২] এখানে all শব্দ আনা হয়েছে। এখানকার 'মিম' অক্ষরটিকে জবর, পেশ উভয়ই পড়া যায়। পেশযোগে পড়লে অর্থ দাঁড়াবে : তিনি কাউকে তিরস্কার করতেন না। আর যদি জবরযোগে পড়া হয়, তবে অর্থ দাঁড়াবে : নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজের জন্য তিরস্কার কিংবা অপদস্থতা পছন্দ করতেন না। উদ্দেশ্য এমন হবে: না তিনি কঠোর ব্যবহার করতেন না তিনি এমন দুর্বল মননের ছিলেন যে প্রত্যেক বিষয়কেই মেনে নিবেন। বরং তিনি কমল এবং বড়ত্বের সমুষ্ঠি ছিলেন।

পূর্ণ সম্মান করতেন এবং তার খুব খেয়াল রাখতেন— সেটা পরিমাণে যত নগন্যই হোক না কেন! কখনোই তিনি নেয়ামতের দুর্নাম করতেন না। দুনিয়া এবং দুনিয়ার সাথে সম্পৃক্ত যেকোনো ঘটনা ঘটত, সেসব নিয়ে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কখনো রাগান্বিত হতেন না। কিন্তু যখন আল্লাহ তাআলার কোনো নির্দেশ অমান্য করা হতো, তখন নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের গোস্বার সামনে কেউ স্থির থাকতে পারত না—যতক্ষণ না তিনি এই কাজের ক্ষতিপূরণ আদায় করে নিতেন।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজের জন্য না কখনো রাগান্বিত হতেন, না কখনো তার ক্ষতিপূরণ আদায় করতেন। যখন তিনি কোনোদিকে ইশারা করতেন, পুরো হাত দিয়ে ইশারা করতেন। যখন কোনো অবাক করা বিষয় বলতেন, বিস্তারিত বলতেন। কথা বলার সময় ডান হাতের কব্জিকে বাম হাতের আঙুল দিয়ে ধরে রাখতেন। কটু কিংবা অমনঃপুত কথা হলে সেদিক থেকে চেহারা মোবারক ঘুরিয়ে নিতেন এবং বিমুখ হয়ে যেতেন। কখনো আনন্দিত হলে মাথা নিচু করে নিতেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাসি অধিকাংশ সময় তাবাসসুম ছিল, হাসলে শুধু নবিজির মুক্তার ন্যায় চকচকে পবিত্র দাঁত মোবারক প্রকাশ পেত।

হজরত আলি রাদিআল্লাহু আনহু, যিনি নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বংশের ছিলেন, যার ইলমের এক বিশাল ভাণ্ডার অর্জিত ছিল, যার চরিত্র, ভাবনা, দর্শন অন্য সাধারণ মানুষ থেকে উৎকৃষ্ট ছিল এবং যিনি নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছের মানুষদের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। সেজন্য তিনি নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের চারিত্রিক গুণাবলি এবং ব্যবহারবিধি সবচেয়ে ভালো জানতেন। তিনি নবিজির ঐশ্বর্যপূর্ণ চরিত্র সম্পর্কে বলতেন—

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সবসময় নোংরা কথাবার্তা, নির্লজ্জতা এবং বেহুদা কাজ থেকে দূরে থাকতেন। ঘটনাক্রমেও এমন কোনো কথা কিংবা কাজ তাঁর দ্বারা সংঘটিত হতো না। কিছু ক্রয় করার সময় কখনোই তাঁর আওয়াজ উঁচু করতেন না। খারাপ কাজের শোধ কখনোই খারাপ কিছু দিয়ে নিতেন না, বরং ক্ষমা ও উত্তম ব্যবহারের মাধ্যমে তা সমাধা করতেন। নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কখনো কারো ওপর হাত তুলেননি, কেবল তখনই হাত তুলতেন—যখন যুদ্ধের ময়দানে কেউ নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সামনে লড়তে আসত। স্ত্রী কিংবা গোলামের ওপর কখনোই হাত তুলতেন না। আমি কখনোই নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে তাঁর ওপর করা অন্যায় অত্যাচারের প্রতিশোধ নিতে দেখিনি—যতক্ষণ না কেউ আল্লাহ তাআলার নির্ধারিত গণ্ডির বাহিরে চলে যায়, অথবা মহিয়ানের ইজ্জত সম্মানে বিন্দুমাত্র আঁচড় ফেলে। 

হ্যাঁ, কেউ যদি আল্লাহ তাআলার কোনো নির্দেশকে অবমূল্যায়ন করে। কিংবা আল্লাহ তাআলার সন্মানে বিন্দুমাত্র আঁচ আনার চেষ্টা করে। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের থেকে অধিক রাগান্বিত কেউ হতো না। যখন দুটি বিষয় থাকত, নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তূলনামূলক সহজ বিষয়টিকেই গ্রহণ করতেন। যখন তিনি নিজ আবাসস্থলে আগমন করতেন, একদম সাধারণ মানুষের মতো থাকতেন। নিজের কাপড় পরিষ্কার করতেন, বকরির দুধ দোহন করতেন এবং নিজের সমস্ত প্রয়োজন নিজেই পূরণ করতেন।

সবসময় নিজের জিহ্বা মোবারক নিয়ন্ত্রণে রাখতেন। কেবল সে কথাই বলতেন, যার মাধ্যমে কোনো উপকার পাওয়া যায়। সকলের মন রক্ষা করে চলতেন, কখনো কারো প্রতি ঘৃণা পোষণ করতেন না। কোনো গোত্র কিংবা বংশের সম্মানিত ব্যক্তি আসলে তাদের সাথে খুব সম্মান এবং মর্যাদাপূর্ণ ব্যবহার করতেন, তাদেরকে ভালো এবং উত্তম কাজে একতাবদ্ধ হতে উৎসাহিত করতেন, অনুগতদের বিষয়ে সতর্ক থাকার হুঁশিয়ারি করতেন। তিনি নিজের সৌহাদ্যপূর্ণ সম্পর্ক ও উত্তম ব্যবহার থেকে কাউকে নিরাশ না করার আদেশ করতেন। তিনি নিজ পরিবার-পরিজনের নিয়মিত খবর রাখতেন। লোকেদের কাছে তাদের হাল-হাকিকত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করতেন।

ভালো কাজের ব্যাপারে ভালো বলতেন এবং সেটাকে শক্তিশালী করতেন। খারাপ কাজকে খারাপ বলতেন এবং তাকে দমিয়ে রাখার চেষ্টা করতেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের লেনদেন সংযত এবং এক ধারায় ছিল। তিনি কখনো কোনো বিষয় থেকে সম্পূর্ণ গাফেল হয়ে যেতেন না। ভয় করতেন অন্য লোকেরাও যাতে গাফেল হয়ে পথভ্রষ্ট না হয়ে পড়ে। প্রত্যেক অবস্থায় যেকোনো জায়গার জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী প্রয়োজন অনুপাতে নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিকট বিদ্যমান থাকত। তিনি না কারো প্রাপ্য আদায়ে সংকীর্ণ মনোভাব রাখতেন, না সীমাতিরিক্ত দিয়ে দিতেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিকটবর্তী তারাই হতো—যারা সবার মধ্যে উত্তম এবং গ্রহণযোগ্য সাব্যস্ত হতো। নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিকট সবচেয়ে প্রিয় তারা হতো, যারা সকলের ভালো চাইত এবং স্বাভাবিক জীবনযাপন করত। 

সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ এবং নৈকট্যপ্রাপ্ত সে ব্যক্তি ছিল যে সহানুভব, ধৈর্য, পরোপকার এবং অন্যের সহযোগিতায় সবচেয়ে অধিক ভূমিকা রাখত। তিনি আল্লাহর নাম জপতে জপতে দাঁড়াতেন এবং জপতে জপতেই বসতেন। যখন নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কোথাও আগমন করতেন, মজলিসের যেখানে জায়গা খালি পেতেন, সেখানেই বসে যেতেন এবং অন্যদেরও এই আদেশ করতেন। তিনি নিজ মজলিসে সকলকে (মনোযোগ এবং একাগ্রতার বিষয়ে) সমপরিমাণ অংশ দিতেন। নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মজলিসে উপস্থিত সকল শ্রোতা ভাবত, তার থেকে অধিক মনোনিবেশ নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অন্য কারো প্রতি করেননি। যদি কোনো ব্যক্তি নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে কোনো কারণে বসতে বলত কিংবা কোনো প্রয়োজনে তাঁর সাথে কথা বলতে চাইত, নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একদম শান্ত এবং নিবিড় হয়ে তার পূর্ণ কথা শুনতেন—যতক্ষণ না সে ব্যক্তি নিজের কথা শেষ করে চুপ হয়ে যেতেন। যদি কোনো ব্যক্তি নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে কিছু চাইত বা সাহায্যপ্রার্থনা করত, তবে তার প্রয়োজন পূরণের পূর্বে তিনি ফিরতেন না, অথবা কমপক্ষে নরম ও মিষ্ঠ ভাষায় তাকে সন্তুষ্টির জবাব দিতেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উত্তম ব্যবহার সকলের জন্য উন্মুক্ত ছিল এবং নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সকলের দায়িত্ববান পিতা বনে গিয়েছিলেন। আর সকল মানুষের দায়িত্ব পালনে নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কোনো তফাৎ করেননি, বরং তাঁর কাছে সবার প্রাপ্তি বরাবর হতো। নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মজলিস ইলম, আধ্যাত্মিকতা, লজ্জা শরম, ধৈর্য, আমানতদারির মজলিস ছিল। না সেখানে কেউ তার কণ্ঠ উঁচু করত, না সেখানে কারো দোষচর্চা হতো। না কারো সম্মান কিংবা আত্মমর্যাদায় আঘাত করা হতো, না কারো অপারগতার ওপর ভর্ৎসনা করা হতো। সবাই একে অপরের সমমূল্যায়ণ পেত। শুধুমাত্র খোদাভীতির ওপর ভিত্তি করেই একের ওপর অপরের মর্যাদা বৃদ্ধি পেত। নবিজির মজলিসে ছোটরা বড়দের সম্মান করত, বড়রা ছোটদের স্নেহ এবং ভালোবাসায় আগলে রাখত। সেখানে অভাবগ্রস্তকে নিজের ওপর প্রাধান্য দেওয়া হতো। বিদেশী ও পথিকদের দেখভাল করা হতো এবং যেকোনো পরিস্থিতিতে তাদের রক্ষার কড়া নির্দেশ থাকত।

হজরত আলি রাদিআল্লাহু আনহু আরও বলেন— রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সবসময় হাস্যোজ্জল চেহারা ও সজীব হাস্যবদনে থাকতেন। তিনি খুবই শান্ত চরিত্রের এবং নরম মনের অধিকারি ছিলেন। না কঠিন মেজাজের ছিলেন, না কঠিন ভাষা ব্যবহার করতেন। আওয়াজ উঁচু করে কথা বলতেন না, বেহুদা ও অপ্রয়োজনীয় কথাও বলতেন না। না কারো ওপর দোষ চাপাতেন, আর সংকীর্ণ মনের অধিকারী ছিলেন। যে কথা নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পছন্দ না হতো তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতেন (অর্থাৎ তা থেকে নিবৃত্ত থাকতেন এবং কোনো কথা বলতেন না)। তবে সরাসরি বিমুখ ভাব প্রকাশ করতেন না, কোনো জবাবও দিতেন না।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনটি কাজ থেকে নিজেকে সবসময় বাঁচিয়ে রাখতেন—

ক. কারো দোষচর্চা করতেন না।

[৩] অর্থাৎ খুব দ্রুতই দয়ালু হয়ে যেতেন। অনেক বেশি মেহেরবান এবং দয়াময় ছিলেন। খুব দ্রুত এবং খুব সহজেই মাফ করে দিতেন। এখানের আরেকটি উদ্দেশ্য এটাও হয়, তিনি কখনো কারো সাথে ঝগড়া করতেন না। একটি মত এমনও পাওয়া যায়, এর দ্বারা উদ্দেশ্য শান্ত, গাম্ভীর্যপূর্ণ এবং খুশু-খুজু
খ. কারো ওপর অন্যায় দোষ চাপাতেন না।

গ. কারো দুর্বলতা কিংবা গোপন কাজের পিছনে লাগতেন না।

তিনি শুধু সেসব কথাই বলতেন, যার মাধ্যমে উপকৃত হওয়ার আশংকা করতেন। যখন তিনি কথা বলতেন মজলিসে উপস্থিত সকল ব্যক্তি তাদের মাথা এভাবে নামিয়ে নিতেন, মনে হতো তাদের মাথার ওপর কোনো পাখি অবস্থান করছে। "" যখন নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলে শেষ করতেন, তখন তারা কথা বলত। কখনো নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সামনে উচ্চ আওয়াজে কথা বলত না। নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দরবারে যদি কোনো ব্যক্তি কথা বলত, বাকিরা খামুশ হয়ে তার কথা শুনত যতক্ষণ না তার বলা শেষ হতো। নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মজলিসে প্রত্যেক ব্যক্তির গুরুত্ব সে পরিমাণ হতো, তার আগের ব্যক্তির যে পরিমাণ মূল্যায়ণ করা হতো (অর্থাৎ পূর্ণ তৃপ্তিসহকারে তার কথা বলার সুযোগ থাকত, এবং পূর্ণ মনোযোগ দিয়ে তার কথা শোনা হতো)।

যে কথায় সবাই হাসত, নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামও সে কথায় হাসতেন। যে বিষয়ে সবাই আশ্চর্যবোধ করত, তিনিও সে কথায় আশ্চর্যবোধ প্রকাশ করতেন। মুসাফির এবং বিদেশীদের ভিন্ন চোখে দেখতেন না, তাদের সবধরনের কথা শুনতেন অত্যন্ত ধৈর্য ও সহনশীলতার সাথে যতক্ষণ না কোনো সাহাবি হজরত এমন লোককে নিজের দিকে আকর্ষিত করত (যাতে নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ওপর পীড়াদায়ক না হয়)।

নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলতেন, 'যদি কোনো দুর্দশাগ্রস্ত তোমার সামনে আসে, তবে তাকে সাহায্য করো!' রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম শুধু তাদের প্রশংসা বা কৃতজ্ঞতাই শুনতেন, যারা সে বিষয়ে সীমাতিক্রম করত না। কারো কথা বলার মাঝখানে তিনি কথা বলতেন না এবং কারো কথাকে মাঝখানে থামিয়ে দিতেন না। হ্যাঁ, যদি কেউ সীমা পার করে ফেলত, তবে তাকে চুপ হয়ে যেতে বলতেন কিংবা স্বয়ং সে মজলিস থেকে উঠে যেতেন—যাতে সে লোক কথা সমাপ্ত করে।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সবার থেকে প্রশস্ত দিল, উদার মনোভাব, মিষ্টভাষী এবং দয়ালু চরিত্রের অধিকারী ছিলেন। লেনদেনের ব্যাপারে খুবই সতর্ক এবং আমানতদারিতে সর্বোচ্চ স্তরের ব্যক্তিত্ব ছিলেন। যে নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে প্রথমবার দেখত, সে ভীত হয়ে পড়ত। যখন তাঁর সান্নিধ্যে থাকত, তাঁর বিষয়ে জানাশোনা বাড়ত, তখন নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অনুসারী

[৪] অর্থাৎ বিলকুল নাড়াচাড়া করতেন না, নাড়ালে হয়তো মাথার উপর থেকে পাখি উড়ে যাবে।
এবং শুভাকাঙ্ক্ষিতে পরিণত হতো। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নৈকট্যপ্রাপ্তরা বলতেন, 'না, আমি নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পূর্বে এমন ব্যক্তিত্বসম্পন্ন কাউকে দেখেছি, না নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পর এমন কাউকে দেখেছি।’la]

আল্লাহ তাআলা তাঁর নবিকে পরিপূর্ণতার সজ্জায় সজ্জিত করেছেন এবং দয়া ও ভালোবাসার সৌন্দর্যে অলঙ্কিত করেছেন। হজরত হিন্দ বিন আবি হালাহ রাদিআল্লাহু আনহু বলেন—

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আত্মপ্রত্যয়, গাম্ভীর্য এবং শান ও শওকতের বাহক ছিলেন। অন্য সাধারণের নিকটও অত্যন্ত প্রিয়ভাজন ছিলেন। নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের চেহারা চৌদ্দ তারিখ রাতের চাঁদের চেয়েও অধিক চমকদার ছিল।

হজরত বারা বিন আ’জিব রাদিআল্লাহু আনহু বলতে—নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মাঝারি গড়নের ছিলেন। আমি একবার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে লাল আলখেল্লা পরিহিত দেখেছিলাম। এর থেকে সুন্দর কোনো কিছু আমি আর কখনো দেখিনি।

হজরত আবু হুরাইরা রাদিআল্লাহু আনহু বলতে— রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মাঝারি গড়নের ছিলেন, প্রায় দীর্ঘকায়। গাত্র ছিল অত্যন্ত গৌরবর্ণের, দাড়ি মোবারকের চুল ছিল কালো, মুখাবয়ব ছিল অত্যন্ত সুন্দর, ভ্রুযুগল ছিল দীর্ঘ। বর্ণনার শেষদিকে বলেন, আমি নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আগে কিংবা পরে তাঁর অনুরূপ কাউকে দেখিনি।[৮]

হজরত আনাস রাদিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলে—আমি রেশম এবং রেশমের কাপড়কেও নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হস্ত মোবারকের চেয়ে মোলায়েম পাইনি। আর নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সুগন্ধির সমতুল্য কোনো সুগন্ধিও পাইনি। (১)

[৫] শামায়েলে তিরমিজি।

[৬] হজর

ত হাসান রাদিআল্লাহু আনহু থেকে হিন্দ রাদিআল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন (শামায়েলে তিরমিজি)। [৮] বোখারী শরিফ, আল আদাবুল মুফরাদ, 'নবি সা. কারো দিকে ফিরলে পূর্ণ ফিরতেন' অনুচ্ছেদ।

[৭] বোখারী, মুসলিম।

[৯] বোখারী, মুসলিম।

আল্লাহ তাআলার সাথে সম্পর্ক .......
আল্লাহ তাআলা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে রেসালাত এবং তার প্রিয়দের মাঝে অন্তর্ভুক্ত করেছেন, এবং নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আগে পরের সব গুনাহ মাফ করে দিয়েছেন। তথাপিও নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইবাদত-বন্দেগীর ক্ষেত্রে সবচেয়ে এগিয়ে এবং সব থেকে মনোযোগী ছিলেন।

হজরত মুগিরা বিন শু’বা রাদিআল্লাহু আনহু বলেন: একবার নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নামাজে (নফল) এত দীর্ঘ সময় পর্যন্ত দাঁড়িয়ে রইলেন যে, তার কদম মোবারকে যখম হয়ে গেল। বলা হলো আপনার তো আগে পরের সকল গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়েছে। এটা শুনে নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, আমি কি আল্লাহ তাআলার কৃতজ্ঞ বান্দা হবো না?”

হজরত আয়শা রাদিআল্লাহু আনহা বলেন: রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কোরআন শরিফের এক আয়াত পড়তে পড়তে গোটা রাত পার করে দিতেন। হজরত আবু জর রাদিআল্লাহু আনহু বলেন: রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম

রাতে নামাজে দাঁড়ালেন এবং এক আয়াতের মাধ্যমে সকাল হয়ে গেল। আয়াতটি এই

ছিল—

إن تعذبهم فإنهم عبادك وإن تغفر لهم فإنك أنت العزيز الحكيم

অর্থ : যদি আপনি তাদেরকে শাস্তি দিন, তবে তারা তো আপনারই দাস। আর যদি আপনি তাদের ক্ষমা করেন, তবে আপনিই পরাক্রমশালী মহা জ্ঞানী। [সূরা মায়েদাহ : ১১৮]

হজরত আয়শা রাদিআল্লাহু আনহা থেকে অপর এক বর্ণনায় বলা হয়েছে : রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন রোজা রাখতেন, রোজা রাখার আধিক্য দেখে আমরা বলতাম, এখন থেকে আপনি হয়তো প্রতিদিনই রোজা থাকবেন। আর যখন রোজা রাখা বন্ধ করতেন, আমরা ভাবতাম তিনি আর রোজাই রাখবেন না।”

[১০] এই বর্ণনাটি ইমাম বোখারি রহিমাহুল্লাহ সূরা ফাতহের তাফসিরে ইমাম মুসলিম, তিরমিজি এবং নাসায়ি রহিমাহুল্লাহ 'আহয়াউল-লাইল' অধ্যায়ে বয়ান করেছেন।

[১১] তিরমিজি। [১২ নাসায়ি রহিমাহুল্লাহ 'তারদিয়াতুল আয়াহ' অধ্যায়ে, ইবনে মাজাহ রহিমাহুল্লাহ ‘মা-জা-আ ফিল-কোরআনি বিল-লাইল' অধ্যায়ে হাদিসটি বর্ণনা করেছেন।

[১৩] এইসব কথা নফল রোজার ব্যাপারে বলা হয়েছে।

হজরত আনাস রাদিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, যদি কোনো ব্যক্তি নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে রাতে নামাজরত দেখতে চাইত, তবে তাই পেত। আর কেউ যদি তাকে শয়ন অবস্থায় দেখতে চাইত, তবে সেভাবেই দেখতে পারত।

হজরত আবদুল্লাহ ইবনুশ শাখির রাদিআল্লাহু আনহু বলেন: আমি নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দরবারে হাজির হলাম, আমি দেখলাম তিনি নামাজরত আছেন এবং কান্নার প্রকোপে নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বক্ষ মোবারক থেকে এমন আওয়াজ বের হচ্ছে, যেন তাঁর হেঁচকি উঠে যাচ্ছে। ে

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নামাজ ছাড়া অন্যকিছুতে প্রফুল্ল হতেন না। নামাজের পরও বুঝা যেত, তিনি নামাজের দিকেই আগ্রহী ও উৎসাহী আছেন। নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলতেন, আমার চোখ শীতল হয় নামাজের মাধ্যমেই।

সাহাবায়ে কেরাম রাদিআল্লাহু আনহুমের বক্তব্য এমন: যখন কোনো সমস্যার বিষয় সামনে আসত, নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তৎক্ষণাৎ নামাজের পাবন্দ হয়ে যেতেন।*

হজরত আবু দারদা রাদিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, যখন কখনো রাতে ঝড়-তুফান আরম্ভ হতো, নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মসজিদে অবস্থান নিতেন, যতক্ষণ না ঝড়ো হওয়া থেমে যেত। যদি কোনো আসমানি পরিবর্তন সূর্যগ্রহণ কিংবা চন্দ্রগ্রহণের ঘটনা ঘটত, তখন নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নামাজে ছুটে যেতেন এবং গ্রহণ শেষ হয়ে আকাশ পরিষ্কার হওয়া পর্যন্ত এর থেকে পানাহের দুআ করতেন।”

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সবসময় নামাজের জন্য উৎসাহী থাকতেন এবং আদায় ব্যতি রেখে প্রশান্তি অনুভব করতেন না। যতক্ষণ নামাজ আদায় না করে থাকতেন—আফসোস ও অশান্তির মধ্যে সময় কাটাতেন।

একবার নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজ মুআজ্জিন হজরত বেলাল রাদিআল্লাহু আনহুকে বললেন : বেলাল, নামাজের পাবন্দি করো, এবং অন্তরের স্বস্তি অর্জন করো!

[১৪] সহীহুল বোখারি, 'কিয়ামুন নাবিয়্যি ওয়া নাওমিহি' অধ্যায়।

[১৫] শামায়েলে তিরমিজি। [১৬] আবু দাউদ।

[১৭] তিবরানি। [১৮] আবু দাউদ।

নবিজির দৃষ্টিতে দুনিয়ার অবস্থান এবং তার প্রতি অনীহা

দিনার, দেরহাম দুনিয়ার পদ ও ঐশ্বর্যের সাথে নবিজির সম্পর্ক এমন ছিল যে, অর্থ সম্পদের বড় থেকে বড় স্তুপ, উচ্চ পর্যায়ের বাক্য, নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দৃষ্টিতে অবস্থান তৈরির কোনো যোগ্যতা রাখত না। কেননা নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ইমানি, রূহানি দরসগাহে উপবিষ্ট ছাত্ররা—আরব অনারবে অবস্থানরত তার অনুসারী এবং শুভাকাঙ্ক্ষিরাও দিনার দেরহামকে মূল্যহীন টুকরোর চেয়ে অধিক মূল্যায়ন করেন না। তাদের দরবেশী জীবনযাপন, দুনিয়ার চাকচিক্যের প্রতি অনীহা, অন্যের প্রয়োজনে নিজ সম্পদ ব্যয়ের প্রবণতা এবং অন্যকে নিজের ওপর প্রাধান্য দেওয়ার মানসিকতা, শত্রুর সাথে নম্র ব্যবহার, একের ওপর অন্যকে প্রাধান্য না দেওয়ার ঐতিহাসিক প্রামাণিক ঘটনাপুঞ্জি মনুষ্য মস্তিষ্ককে দ্বিধায় ফেলে দেয়।”

যখন নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অনুসারিদের অনুসারির এই হাল, সেখানে অনুমান করা যাক, স্বয়ং নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম- যিনি এই দুনিয়াবিমূখ দলের প্রধান ইমাম, পথপ্রদর্শক ও প্রত্যেক ভালো, স্বচ্ছ, উত্তম কাজে তাদের নেতা—সেই মহান ব্যক্তির অবস্থান কেমন হবে এ বিষয়ে—তা কি আর বলার প্রয়োজন রাখে?

আর সেজন নামরা এই বিষয়ে কেবল সেসকল কথাগুলোই তুলে ধরব, যা সাহাবায়ে কেরাম রাদিআল্লাহু আনহুমের জবান হয়ে আমাদের কাছে এসে পৌঁছেছে।

[১৯] এই বিষয়ের ওপর বিস্তারিত জ্ঞান অর্জনের জন্য আবদুল্লাহ বিন মোবারক রহিমাহুল্লাহর কিতাবুল জুহুদ'

গ্রন্থটি অত্যন্ত উপকারী হবে।
আরো পড়তে অথবা দেখতে :- অনুগ্রহ করে Hardcopy ক্রয় করুন।
We Respect Every Author Hardwork - boipaw.com™

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ