বইঃ নারীর আর্থিক অধিকার ও ইসলাম PDF (short link)
লেখক : মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ রাহমানী
প্রকাশনী : রাহবার
বিষয় : ইসলামে নারী
অনুবাদক : মাহিয়াত সাওরা
সম্পাদক : রাইহান খাইরুল্লাহ
পৃষ্ঠা : 128, কভার : হার্ড কভার
ভাষা : বাংলা
সাপ্লায়ার জানিয়েছেন এই পণ্যটি 15 February প্রকাশিত হতে পারে। প্রকাশিত হওয়ার সাথে সাথে পণ্যটি পেতে আগেই অর্ডার করে রাখুন ।
নারী-ক্ষমতায়ন ও গ্লোবালাইজেশনের এই যুগে নারীর আর্থিক অধিকার এবং কর্মপরিধি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এটা সত্য যে, আমাদের সমাজে নারীরা আর্থিকভাবে অধিকারবঞ্চিত। অধিকাংশ সময় ভরণপোষণ থেকে শুরু করে মোহর, উত্তরাধিকার বা অন্যান্য আর্থিক ক্ষেত্রে তারা শিকার হয় বঞ্চনা আর নিগ্রহের। বহুকাল ধরে চলে আসা এই অবিচার তাদেরকে পশ্চিমা নারী আন্দোলনের প্রতি আগ্রহী করে তোলে।
অর্থনৈতিক মুক্তি ও স্বনির্ভরতার স্বপ্নে তারা পা রাখে ঘরের বাইরে, কর্মের জগতে। অথচ নারীর আর্থিক অধিকার ইসলামপ্রদত্ত এবং অলঙ্ঘনীয়। তার ভরণপোষণ, মোহর, উত্তরাধিকার সবই শরিয়তের অপরিহার্য বিধান। প্রয়োজনসাপেক্ষে অনুমতি আছে তার উপার্জনেরও। দুঃখজনকভাবে আমাদের নারীরা তাদের এই অধিকারগুলো সম্পর্কে বেখবর। ‘নারীর আর্থিক অধিকার ও ইসলাম’ বইটি নারীদেরকে জানাচ্ছে, তাদের আর্থিক অধিকার কী, অধিকারের সীমারেখা কতটুকু এবং তারতম্য কেন।
জানাচ্ছে তাদের উপার্জনের সুযোগ ও পরিধি। . অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ডের অন্যতম দায়িত্বশীল, ভারতের বিদগ্ধ আলেম, বিখ্যাত ফকিহ ও গবেষক মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ রহমানীর দুটি বই ‘খাওয়াতিন কে মালি হুকুক’ এবং ‘খাওয়াতিন কি মুলাযামাত’-এর অনূদিত রূপ ‘নারীর আর্থিক অধিকার ও ইসলাম’।
বইটির কিছু জায়গায় প্রয়োজনীয় সংযোজন-বিয়োজন করা হয়েছে এবং শেষে ‘নারীর কর্মপরিধি’ শিরোনামে সংযুক্ত করা হয়েছে মুফতি মুহাম্মাদ আবু বকর জাবের কাসেমী ও মুফতি রফীউদ্দীন হানীফ কাসেমীর একটি গুরুত্বপূর্ণ রচনা। আমরা আশাবাদী, বইটি সকল মুসলিমের জন্য উপকারী হবে, ইনশাআল্লাহ।
নারীদের উত্তরাধিকার, দান, অসিয়ত এবং নারী
ইসলাম আগমনের পূর্বে পৃথিবীর অধিকাংশ ধর্মে উত্তরাধিকার সম্পদে নারীর কোনো অধিকার আছে বলে মনেই করা হতো না। আরবরা মনে করত, যে ব্যক্তি গোত্রের প্রতিরক্ষা করতে পারে এবং যুদ্ধ করার ক্ষমতা রাখে, কেবল সে-ই মিরাসের হকদার হবে।
ইহুদি ধর্মে পুরো উত্তরাধিকার সম্পত্তি প্রথম পুত্রের হক মনে করা হতো। হিন্দু ধর্মেও নারীরা মিরাসের অংশ পেত না। এমনকি ইউরোপেও উনিশ শতক পর্যন্ত মেয়েরা মিরাস থেকে বঞ্চিত হতো।
ইসলাম যেখানে পুরুষ আত্মীয়দেরকে উত্তরাধিকারে অংশীদার বানিয়েছে, সেখানে তাদের সমপর্যায়ের নারীদেরকেও মিরাসের হকদার আখ্যা দিয়েছে। পিতার মতো মাতাকে, ছেলের সাথে মেয়েকে, ভাইয়ের সাথে বোনকে, স্বামীর মতো স্ত্রীকে । আজ পুরো পৃথিবীতে উত্তরাধিকার সম্পত্তিতে নারীর যে অধিকার সাব্যস্ত হয়েছে, এটা মূলত ইসলামেরই উপহার।
উত্তরাধিকার এবং নারী
ইসলামি উত্তরাধিকার আইনে যেসব আত্মীয়কে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে, যারা কোনো অবস্থায় মিরাস থেকে বঞ্চিত হবে না, তারা মোট ছয়জন। তাদের মধ্যে তিনজন পুরুষ : পিতা, পুত্র, স্বামী। আর তিনজন নারী : মাতা, কন্যা, স্ত্রী। এছাড়াও বিশেষ গুরুত্ব পায় আসহাবুল ফারায়েয, অর্থাৎ এমন আত্মীয়, যাদের অংশ কুরআনে নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। আসহাবুল ফারায়েযের মধ্যে পুরুষের তুলনায় নারী আত্মীয়ের সংখ্যাই বেশি। কারণ, পুরুষ ছয় অবস্থায় আসহাবুল ফারায়েযের অন্তর্ভুক্ত হয়, আর নারী সতেরো অবস্থায় আসহাবুল ফারায়েয হিসেবে মিরাসের হকদার হয়।
উত্তরাধিকার সম্পদে কোন কোন নারী অংশ পাবে এবং তাদের অংশের পরিমাণ কতটুকু হবে, তা এখানে উল্লেখ করা হলো :
ক. দুই তৃতীয়াংশ
১. দুই অথবা দুইয়ের অধিক মেয়ে
২. দুই অথবা দুইয়ের অধিক পৌত্রী ৩. দুই অথবা দুইয়ের অধিক সহোদরা
৪. দুই অথবা দুইয়ের অধিক বৈমাত্রেয় বোন
খ. অর্ধেক
১. এক মেয়ে ২. এক পৌত্রী ৩. এক সহোদরা ৪. এক বৈমাত্রেয় বোন
গ. এক তৃতীয়াংশ
১. মা ২. বৈপিত্রেয় বোন
ঘ. এক ষষ্ঠাংশ
১. মা ২. দাদি ৩. পৌত্রী ৪. বৈমাত্রেয় বোন ৫. বৈপিত্রেয় বোন
ঙ. এক চতুর্থাংশ
১. স্ত্রী
চ. এক অষ্টমাংশ
১. স্ত্রী
এটা স্পষ্ট যে, নির্দিষ্ট অংশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি হলো দুই তৃতীয়াংশ, তারপর অর্ধেক। এই ‘দুই তৃতীয়াংশে’ কোনো পুরুষ অংশীদার হয় না। আর ‘অর্ধেকে’ শুধুমাত্র স্বামী হকদার হতে পারে, তাও যখন মৃত ব্যক্তির কোনো
সন্তান থাকবে না।
পরিমাণের হিসেবে নারীর মিরাসের অংশ পাওয়ার চারটি অবস্থা রয়েছে : পাবে দশ লাখ, আর দুই ভাইয়ের প্রত্যেকে পাঁচ লাখ করে মোট দশ লাখ টাকার হকদার হবে। এরকম আরো অনেক অবস্থা রয়েছে, যখন নারীর উত্তরাধিকারের অংশ
পুরুষের তুলনায় বেশি হয়ে যায়। যখন শুধু নারীই ওয়ারিস হয়
কিছু ক্ষেত্রে এমনও হয় যে, উত্তরাধিকার সম্পত্তি শুধু নারীই পায়, তার সমপর্যায়ের পুরুষ পায় না। যেমন : কোনো মহিলা স্বামী, বাবা, মা, মেয়ে ও নাতনি রেখে মারা গেলে তার সম্পত্তি থেকে নাতনি এক ষষ্ঠাংশ পাবে। কিন্তু নাতনির বদলে যদি নাতি রেখে মারা যায়, তাহলে নাতি কিছুই পাবে না। তেমনিভাবে মহিলা যদি স্বামী, আপন বোন ও বৈমাত্রেয় বোন রেখে মারা যায়, তাহলে বৈমাত্রেয় বোন পাবে এক ষষ্ঠাংশ। কিন্তু বৈমাত্রেয় বোনের জায়গায় বৈমাত্রেয় ভাই হলে সে কিছুই পাবে না।
এছাড়া আরো অনেক অবস্থায় নারী মিরাসের হকদার হয়, কিন্তু পুরুষ হয় না।
নারীর অংশ কখন কম হয় এবং কেন?
যেসব ওয়ারিস অপরিহার্যভাবে মিরাসের অংশ পায়, যেমন বাবা-মা, ছেলে মেয়ে, স্বামী-স্ত্রী, তাদের মধ্যে পুরুষের অংশ বেশি হয় অথবা দ্বিগুণ হয়। তার মানে এই নয় যে, নারীরা এখানে লিঙ্গবৈষম্যের শিকার। বরং এ বণ্টনের মূলনীতি হলো, যার দায়িত্ব যত বেশি, তার অধিকারও তত বেশি। এই মূলনীতি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এভাবে বর্ণনা করেছেন :
الخراج بالضمان
এর সারমর্ম হলো, যে উপকার গ্রহণ করবে, সে-ই ক্ষতি বহন করবে।
এ দৃষ্টিকোণ থেকে নারী-পুরুষের আর্থিক দায়-দায়িত্বকে তুলনা করলে ব্যাপারটা স্পষ্ট হয়ে যাবে। পুরুষের ওপর যেমন তার নিজের প্রয়োজন পূরণ অপরিহার্য, তেমনি তার কাঁধে রয়েছে স্ত্রীর ভরণপোষণ এবং সন্তানের প্রতিপালন, শিক্ষাদীক্ষা ও বিবাহের দায়িত্বও। এমনকি স্ত্রী যদি দুগ্ধপোষ্য শিশুকে দুধপান করাতে অনিচ্ছুক হয়, তাহলে বাচ্চার দুধের ব্যবস্থা করাও বাবার জন্য অপরিহার্য। পিতামাতা, এমনকি এতিম ও অবিবাহিত ভাই এবং বিধবা, তালাকপ্রাপ্তা বোনদের দেখাশোনার দায়িত্বও অধিকাংশ সময় পরিবারের পুরুষ মানুষটিই করে থাকে। পিতার অবর্তমানে নাতি-নাতনিদের প্রতিপালনের দায়িত্ব পুরুষেরই হয়।
মোটকথা, প্রায় সমস্ত আর্থিক দায়িত্ব পুরুষকে দেওয়া হয়েছে। নারীকে এসব দায়িত্বের ভার খুব কমই বহন করতে হয়। এমনকি নারী নিজের ভরণপোষণের দায়িত্ব থেকেও স্বাধীন । বিত্তশালী নারীর স্বামী যদি গরিব হয়, তখনও স্বামীর ওপর স্ত্রীর ভরণপোষণের দায়িত্ব থাকে। এই দৃষ্টিকোণ থেকে উত্তরাধিকার সম্পত্তিতে পিতা-মাতা, পুত্র-কন্যা, স্বামী-স্ত্রীর অংশের ব্যবধান আরো বেশি হওয়া উচিত ছিল, কিন্তু নারীদের কোমলতা ও নাজুকতাকে সামনে রেখে মিরাসের অংশে ব্যবধান কম রাখা হয়েছে।
এ ব্যাপারটিকে আরেকভাবে বোঝানো যেতে পারে। ইসলামে মা-বাবার গুরুত্ব ও সম্মান সন্তানের চেয়ে বেশি। এ হিসেবে মিরাসে বাবা-মায়ের অংশ সন্তানের চেয়ে বেশি হওয়া উচিত ছিল, অথচ তা হয়নি। বাবা-মা সন্তানের তুলনায় কম অংশই পেয়ে থাকেন। কারণ, একদিকে যেমন বাবা-মায়ের দায়িত্বের ভার ধীরে ধীরে কমে আসতে থাকে, অপরদিকে সন্তান দায়িত্বের সুবিশাল জগতে পথচলা শুরু করে। এ কারণেই মিরাসে সন্তানের অংশ বেশি আর বাবা-মায়ের অংশ কম রাখা হয়েছে।
মোটকথা, পরিবারের ভরণপোষণ আইনের সাথে উত্তরাধিকার আইনের সূক্ষ্ম সম্পর্ক রয়েছে। যার দায়িত্ব বেশি, তার অধিকারও বেশি; এটি এমন ন্যায়ানুগ মূলনীতি, যার প্রয়োজনীয়তা কোনো বিবেকসম্পন্ন ব্যক্তি অস্বীকার করতে পারবে না।
মিরাস থেকে বঞ্চিত করার গুনাহ
বর্তমান সময়ে মিরাসের প্রশ্নে সমাজের মূল সমস্যা হলো, নারীকে তার প্রাপ্য মিরাস থেকে বঞ্চিত করা। কুরআনুল কারীমে মিরাসকে এটা বড় বা আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্ধারিত বলে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে, সাথে এ বলে
• সূরা নিসা ১১
বইটির বাকি অংশ দেখতে বা পড়তে - অনুগ্রহ করে Hardcopy ক্রয় করুন।
We Respect Every Author Hardwork - boipaw.com™
0 মন্তব্যসমূহ
ℹ️ Your Opinion is very important to us, Please Writer your comment below about this Post.....