বিসিএস নাকি উচ্চ শিক্ষা - লেখক : ড. মোহাম্মদ সরোয়ার হোসেন | BCS Naki Uccho Shikkha By Dr. Mohammad Sarwar Hossain Books

বিসিএস নাকি উচ্চ শিক্ষা (pdf free download no available)
লেখক : ড. মোহাম্মদ সরোয়ার হোসেন
প্রকাশনী : Level Up Publishing
বিষয় : শিক্ষা বিষয়ক
পৃষ্ঠা : 128, কভার : হার্ড কভার
Image

দুনিয়াজুড়ে কত যে অযুত-নিযুত সম্ভাবনা ছড়িয়ে আছে তার হিসেব নেই । আমাদের তরুণেরা চাইলে সহজেই সেগুলো লুফে নিতে পারে । বিশ্বজুড়ে উড়াল দিতে পারে উচ্চশিক্ষার উদ্দেশে । এই পন্থায় সম্মানজনক জীবিকা অর্জনের নিশ্চয়তা যেমন আছে, আছে জ্ঞানবিজ্ঞানে অবদান রাখারও সুযোগ । অথচ আমাদের দেশের অধিকাংশ শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য বিসিএসের মধ্যে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে । 

বিসিএস নিয়ে চারদিকে এমন উন্মাদনা ছড়িয়ে রাখা হয়েছে যে তরুণরা আর অন্যকিছু নিয়ে ভাবতেই পারছে না । অথচ, বিসিএসে পাশের হার ১ পার্সেন্টেরও কম ।অন্যদিকে, উচ্চশিক্ষার বেলায় বিসিএসের মতো এতটা অসম প্রতিযোগিতাও নেই । আমাদের পাশের দেশগুলোর বিপুল পরিমাণ শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষার উদ্দেশে প্রতি বছর বিদেশে পাড়ি জমাচ্ছে । এক্ষেত্রে আমাদের শিক্ষার্থীদের পিছিয়ে থাকার অন্যতম কারণ ‘ইনফরমেশন গ্যাপ’—তথ্যগত ঘাটতি । আর সেই ঘাটতিগুলো পুরণের লক্ষ্যেই এই গ্রন্থটির অবতারণা । 

বিদেশে উচ্চশিক্ষায় কী পরিমাণ সুযোগ আছে এবং কীভাবে সে দিকে আগাতে হবে, মোটকথা বিদেশে উচ্চশিক্ষার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত যা কিছু প্রয়োজন তার সবই উঠে এসেছে এই দুই মলাটের ভেতর । বিসিএসের অবাস্তব মোহ কাটিয়ে বিদেশে উচ্চশিক্ষামুখী সুনাগরিক গড়ে তোলায় মাইলফলক হবে এ বই, ইনশাআল্লাহ ।

 বেকারত্বের অভিশাপে উচ্চশিক্ষিতরা হতাশাগ্রস্ত

কর্মসংস্থান-সংক্রান্ত অস্বাভাবিক প্রতিযোগিতা ও অনিশ্চয়তার কারণে দেশের জব প্রত্যাশী গ্রাজুয়েটরা মানসিকভাবে উদ্বিগ্ন ও হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ছে। আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশিত ৯৮৮ জন বেকার গ্রাজুয়েটের ওপর এক গবেষণায় দেখা গেছে, শতকরা ৮১ ভাগ জব প্রত্যাশী ডিপ্রেশনে ভুগছে।[১] আর্থিক সংগতি হবে কি না সেই চিন্তা হতাশাগ্রস্ত হওয়ার পেছনে অনুঘটকের ভূমিকা বেশ জোরেশোরেই পালন করে। প্রথম আলোর ২০১৯ সালের তারুণ্য জরিপ অনুযায়ী, দেশের ৭৭ দশমিক ৬ শতাংশ তরুণই কর্মসংস্থান নিয়ে উদ্বিগ্ন। এ ছাড়াও জরিপে অংশ নেওয়া উচ্চশিক্ষিত ব্যক্তিদের প্রায় ৯১ শতাংশ। ভবিষ্যৎ কর্মসংস্থান নিয়ে দুশ্চিন্তায় ভোগে। দেশে প্রতিযোগিতা, সামাজিক অস্থিরতা, ভবিষ্যৎ কর্মজীবন নিয়ে দুশ্চিন্তা তরুণ-তরুণীদের ভেতরে পরোক্ষভাবে আত্মহত্যার প্রবণতা বাড়িয়ে দিচ্ছে। মূলধারার পত্রিকায় প্রকাশিত পুলিশের তথ্যানুযায়ী ২০২১ সালের প্রথম ৬ মাসে প্রায় সাড়ে ৭ হাজার মানুষ আত্মহত্যা করেছে, যাদের বেশিরভাগের বয়স ১৮-৩০ বছরের মধ্যে।

‘বিসিএস’কে একমাত্র লক্ষ্য বানানো কেন খুব ঝুঁকিপূর্ণ?

বিসিএস পেশা সামাজিক মর্যাদা হিসেবে বর্তমানে বিশেষ স্থান দখল করে বসে আছে। এক সময় গার্ডিয়ানরা সন্তানদের প্রকৌশলী, চিকিৎসক বানাতে স্বপ্ন দেখতেন; এখন দেখছেন বিসিএস ক্যাডার নিয়ে। বিয়ের ক্ষেত্রেও সেই একই দশা, সরকারি চাকরি থাকলে ধাক্কা দিয়ে গুরুত্ব বাড়ে। একসময় টেকনিক্যাল সেক্টরে বেসরকারি জবে প্রারম্ভিক বেতন বিসিএস ক্যাডারের তুলনায় বেশি ছিল। এখন বিসিএস জবের শুরুতেই ৪০ হাজার টাকার বেশি বেতন দিয়ে দেওয়া হয়। মূল বেতনের সাথে অতিরিক্ত হিসেবে বিভিন্ন ধরনের সুযোগ-সুবিধা (যেমন : চিকিৎসাভাতা, উৎসবভাতা, ভ্রমণ, বাড়িভাড়া, কাপড় পরিষ্কার করার ভাতা, প্রেষণভাতা, আপ্যায়নভাতা, যাতায়াত ভাতা, টিফিনভাতা, ঝুঁকিভাতা) রয়েছে।

[1] "Financial threat, hardship and distress predict depression, anxiety and stress among the unemployed youths: A Bangladeshi multi-city study (2020)"- Journal of Affective Disorders, Volume 276, Pages 1149-1158

[২] ‘উদ্বেগ বেশি কর্মসংস্থান নিয়ে প্রথম আলো, ২৩ ডিসেম্বর ২০২০
চাকরিটাও নিরাপদ। সমাজে একটা ধারণা প্রোথিত হয়েছে যে, বিসিএস বা সরকারি চাকরি একবার পেয়ে গেলে তা আর কখনো যাবে না; তাই একবার বাগিয়ে নিতে পারলে পুরো জীবনটাই গোছানো হয়ে গেলো। টাকার পাহাড় বানানোর সুযোগ তো রয়েই গেছে তাদের জন্য, যাদের দুর্নীতিতে জড়িত হতে কোনো বিবেকবোধ কাজ করে না। বিশেষ করে যারা প্রশাসনিক পদে থাকেন, তাদেরকে সাধারণ মানুষ ক্ষমতাবান হিসেবে অহেতুক একটা সমীহ করে। এসব কারণে বিসিএস নিয়ে সমাজে বিস্ময়কর রকমের উন্মাদনা তৈরি হয়েছে।

এইসব কারণে বিসিএস পরীক্ষা সব বিভাগের (বিজ্ঞান, প্রকৌশল, চিকিৎসক, কৃষিবিদ এবং অন্যান্য এপ্লাইড বিষয়, কলা সমাজবিজ্ঞান, বাণিজ্য) গ্রাজুয়েটদের জন্য হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের মঞ্চ। অনেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েই বিসিএসকে টার্গেট করে প্রস্তুতি শুরু করেন। সেশন জটের কারণে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রি অর্জন করতে প্রায় ২ বছর বেশি সময় লেগে যায়। এরপর বিসিএস প্রত্যাশীরা সাধারণত ৪-৫ বার পরীক্ষায় অংশ নেন। এজন্য সব মিলে প্রায় ৮-১০ বছরব্যাপী দীর্ঘ উৎকণ্ঠা ও মানসিক চাপের মধ্যে দিয়ে যেতে হয় বিসিএস প্রত্যাশীদের। সরকারি চাকরিতে ঢোকার বয়স আরো ৫ বছর বাড়িয়ে ৩৫ বছর করার জন্য আন্দোলন চলছে, যাতে বিসিএস বা অন্যান্য সরকারি চাকরিতে চেষ্টা করার আরো সুযোগ থাকে।

বিসিএস পরীক্ষায় অকৃতকার্য বা ব্যর্থ হওয়ার সম্ভাবনা শতকরা ৯৯ ভাগের বেশি। গত ৪১তম এবং ৪২তম বিসিএস প্রত্যাশীদের তথ্য পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, বিসিএস ক্যাডারে অন্তর্ভুক্ত বা কৃতকার্য হয় শতকরা শূন্য দশমিক পাঁচেরও (০.৫%) নিচে। যেমন : ৪১তম বিসিএসে আবেদন জমা পড়েছে মোট ৪ লাখ ৭৫ হাজার, যেখানে পদসংখ্যা মাত্র ২,১৩৫। 

অর্থাৎ, প্রতিটি পদের জন্য ২০০ এর বেশি প্রার্থী প্রতিযোগিতা করে এবং শেষপর্যন্ত প্রতি ১০০ জনে ৯৯ জনেরও বেশি ব্যর্থ হয়! শুধু বিকল্প ক্যারিয়ার গড়ার যে সুযোগ রয়েছে, সেই তথ্যের অভাব এবং মানসিকতাজনিত কারণে বিসিএস নামক মরীচিকার পেছনে ছুটে ছুটে অনেকেই বিভ্রান্ত হয়ে হতাশায় ডুবে যাচ্ছে। সামাজিক ও পারিবারিক প্রভাবে ইদানীং স্কুল-কলেজ লেভেল থেকেও অনেক মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীরা বিসিএস এর স্বপ্ন দেখতে শুরু করে। আফসোস, এই উন্মাদনার ফলে গ্রাজুয়েটরা দেশে বা বিদেশে কারিয়ার গঠনের অন্যান্য সহজ সুযোগ লুফে নিতে পারছে না।

বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য প্রস্তুতি কীভাবে নিতে হবে?

বিদেশে ডিগ্রি অর্জনের মূলমন্ত্র— প্রস্তুতি থেকে ভর্তি প্রক্রিয়া

বিদেশে উচ্চশিক্ষার মাধ্যমে ক্যারিয়ার গঠন একটা দীর্ঘমেয়াদি প্রচেষ্টার অংশ। কেন বিদেশে উচ্চশিক্ষা করতে চাই, তা সবার আগে নিজের কাছে স্পষ্ট থাকতে হবে। লক্ষ্য ঠিক করতে পারলে গন্তব্যে পৌঁছা সহজ হয়। তাই প্রথমত আন্তরিকভাবে ইচ্ছা পোষণ করতে হবে। এর জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা বা যোগ্যতা আস্তে আস্তে অজান্তেই অর্জিত হয়ে যায়, যদি কেউ পরিকল্পনামাফিক ও নিয়মতান্ত্রিকভাবে ধৈর্যসহকারে চেষ্টা করেন।

উচ্চশিক্ষার জন্য যারা চেষ্টা করবে, তাদেরকে ৩টি ধাপের মধ্যে দিয়ে যেতে হবে। এগুলো হচ্ছে :

১) কিছু গুরুত্বপূর্ণ দক্ষতা অর্জন

২) পছন্দসই দেশে সময়মতো ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু করা এবং

৩) নতুন পরিবেশে খাপ খাওয়ানো ও ডিগ্রি শেষ করা।

স্কলারশিপের জন্য আবেদন দুইভাবে করার সিস্টেম আছে—বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধ্যমে অথবা সরাসরি প্রফেসরের সাথে যোগাযোগ করে। নিচের ছবিতে উচ্চশিক্ষা বৃত্তি পেতে কোন কোন দক্ষতা অর্জন করতে হবে (বিস্তারিত পরবর্তী সেকশনগুলোতে) এবং কীভাবে আবেদন প্রক্রিয়া প্রসেস করা হয়, তার ফ্লো-চার্ট দেখানো হয়েছে।

কোন প্রোগ্রাম টার্গেট করা উচিত—মাস্টার্স নাকি পিএইচডি?

এটা নির্ভর করবে আপনি কোন অনুষদে পড়াশোনা করেছেন এবং কোন ধরনের ক্যারিয়ার গঠন করতে চান, তার ওপর। যদি শিক্ষকতা বা গবেষণায় আত্মনিয়োগ করতে চান, তবে পিএইচডি ডিগ্রি নেওয়া বাধ্যতামূলক। অন্যদিকে যারা টেকনিক্যাল বিষয়ে (যেমন : ইঞ্জিনিয়ারিং, কম্পিউটার সায়েন্স, ডাটা সায়েন্স, পরিসংখ্যান) বিদেশে কোনো প্রতিষ্ঠান বা ইন্ডাস্ট্রিতে জব করতে চান, তাদের পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করা তেমন জরুরি নয়। এসব অনুষদে পিএইচডি ডিগ্রি ক্ষেত্রবিশেষে জবের সুযোগকে বরং সীমিত করতে পারে।

লাইফ সায়েন্স বা বায়োলজি (মাইক্রোবায়োলজি, বায়োকেমিস্ট্রি, ফার্মাসি, উদ্ভিদবিদ্যা, প্রাণিবিদ্যা, মৎস্যবিজ্ঞান, বায়োটেকনোলজি, কৃষিবিজ্ঞান ইত্যাদি) ফিল্ডে ইন্ডাস্ট্রি বা অ্যাকাডেমিক (বিশ্ববিদ্যালয়, রিসার্চ প্রতিষ্ঠান) পজিশন পেতে পিএইচডি ডিগ্রি মুখ্য ভূমিকা পালন করে। বাণিজ্য অনুষদে শুধু মাস্টার্স ডিগ্রি (যেমন এমবিএ) করে বিদেশে জব পাওয়া যায়। জনারেল সায়েন্স (পদার্থ, কেমিস্ট্রি), সমাজবিজ্ঞান, আর্টস ডিসিপ্লিনে পিএইচডি

ডিগ্রি ক্যারিয়ার গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। পোস্ট গ্রাজুয়েশনের সময় আপনি ডিসিপ্লিন পরিবর্তন করে নতুন ফিল্ডে ক্যারিয়ার বানাতেও পারেন। আমার পরিচিত সার্কেলে দুজনকে চিনি, যারা বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স করে আমেরিকায় ডাটাসায়েন্স-এনালাইটিক্সে ডিগ্রি করেন। তাদের একজন ডাটা সায়েন্টিস্ট হিসেবে বিশ্ববিখ্যাত প্রতিষ্ঠান নাসায় জব করেন, অন্যজন গুগলে ক্লাউড বেইজড ডাটা এনালাইটিক্স ফিল্ডে জব করছেন। জানাশোনা এমন লোক আছে, যারা দেশ থেকে রসায়নে পাস করে বিদেশে উচ্চশিক্ষা নিয়ে প্রতিষ্ঠিত মলিকিউলার বায়োলজি, বায়োটেকনোলজি, জেনেটিক্স ফিল্ডে বিজ্ঞানী, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন। মোদ্দাকথা—বিদেশে উচ্চশিক্ষার সময় পছন্দের বিষয়ে নতুন করে পড়াশোনা এবং ক্যারিয়ার গঠনের সুযোগ রয়েছে।

উচ্চশিক্ষা বৃত্তির জন্য অত্যাবশ্যকীয় যেসব কাগজপত্র প্রয়োজন

বিদেশে উচ্চশিক্ষা গ্রহণে যে কাগজপত্র বা ডকুমেন্টগুলো অত্যাবশ্যকীয়— ১। বিভিন্ন ডিগ্রির সার্টিফিকেট (এসএসসি, এইচএসসি, স্নাতক/স্নাতকোত্তর) ও

মার্কশিট/ট্রান্সক্রিপ্ট

স্নাতক বা স্নাতকোত্তর পরীক্ষায় সিজিপিএ কমপক্ষে ২.৫ থেকে ৩ থাকতে হবে। এটা নির্ভর করবে কোন দেশে চেষ্টা করা হচ্ছে। ভালো রেজাল্টের মূল্যায়ন সবাই করে। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় একটু সচেতন হলে সিজিপিএ ৩.৫ অর্জন করতে তেমন বেগ পেতে হয় না। এরপরও কারোর রেজাল্ট আশানুরূপ না হলেও অন্যভাবে সেটা পূরণ করা যায় (যেমন: রিসার্চ অভিজ্ঞতা, বৈজ্ঞানিক জার্নালে প্রকাশিত গবেষণাপত্র সম্পর্কিত বিষয়ে পত্রিকা বা ব্লগে প্রকাশিত প্রবন্ধ, অ্যাওয়ার্ড সহ স্পেশাল কোনো যোগ্যতা—কোডিং সফটওয়্যার ইত্যাদি)।

২। পেশাদার জীবনবৃত্তান্ত বা সিভি

মনে রাখবেন আপনাকে কেউ চেনে না। আপনার জীবনবৃত্তান্ত আপনাকে অন্যের সামনে উপস্থাপন করে, আপনার হয়ে কথা বলবে। আপনি কে, আপনি কী করেছেন এবং আপনি বৃত্তির জন্য যোগ্য কি না—এসব বিষয় কেন্দ্র করে সিভি তৈরি করা হয়। এখন অনলাইনে এই বিষয়ে অনেক প্রবন্ধ, ফর্মেট-টেমপ্লেট, ভিডিও রয়েছে, যা আপনাকে আকর্ষণীয় সিভি বানাতে সহযোগিতা করবে। অথবা অভিজ্ঞ, সফল ব্যক্তিদের কাছ থেকেও সাহায্য নিয়ে তৈরি করতে পারেন আপনার

জীবনবৃত্তান্ত।

৩। অনুপ্রেরণা পত্র বা লেটার অফ মোটিভেশন

এই পত্র আবেদনকারীকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে লিখতে হয়। এই পত্রের মাধ্যমে নিজের সম্পর্কে (কেন আগ্রহী) বলার পাশাপাশি কেন নিজেকে স্কলারশিপ বা ফান্ডিং অথবা কোনো কোর্সে ভর্তির উপযুক্ত মনে করেন, তার স্বপক্ষে যুক্তি দাঁড় করাতে হয়। এসওপি (SOP- Statement of Purpose) স্কলারশিপ অর্জনে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কেননা এর মাধ্যমেই আসলে একজন শিক্ষার্থীর গুণগত মান বিচার করা হয়। মোটিভেশন লেটার কীভাবে তৈরি করতে হয়, তা নিয়ে অনলাইনে আর্টিকেল, ভিডিও ও টিপস রয়েছে। এগুলো স্টাডি করে আপনি ভালো মোটিভেশন লেটার প্রস্তুত করতে পারবেন। এই বিষয়ে আপনার সুপারভাইজার বা মেন্টরের পরামর্শ অনেক কার্যকর হতে পারে।

৪। সুপারিশ পত্র বা লেটার অব রিকমেন্ডেশন (LOR)

বিদেশে উচ্চশিক্ষা গ্রহণে ভর্তি বা স্কলারশিপ পেতে সাধারণত দুটো সুপারিশপত্র প্রয়োজন। এগুলো সাধারণত সুপারভাইজার (বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-সুপারভাইজার) যিনি আপনাকে ভালোভাবে জানেন, আপনার সম্পর্কে মূল্যায়ন করতে পারবেন। যেকোনো গবেষণা প্রতিষ্ঠান বা ইন্ডাস্ট্রির (যেমন : ফার্মাসিউটিক্যাল ইন্ডাস্ট্রি বা এনজিও) ডিরেক্টর অথবা রিপোর্টিং সুপারভাইজার আপনার জন্য সুপারিশপত্র লিখতে পারেন। খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, রিসার্চ মেন্টর ছাড়া অ্যাকাডেমিক জব বা গবেষক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হওয়া প্রায় অসম্ভব। 

সুপারভাইজারের সুনাম, গবেষণার ট্র্যাক রেকর্ডও আপনার বৃত্তি বা জব পেতে বড়সড়ো ভূমিকা রাখতে পারে। নৈতিকতাসম্পন্ন মেন্টর বছরের পর বছর ধরে নিরলস পরিশ্রম করে নেটওয়ার্ক গড়ে তোলেন। এই বিষয়ে নিজের এক সাম্প্রতিক অভিজ্ঞতা প্রাসঙ্গিক হতে পারে—আমার এক স্পেশাল রিকমেন্ডেশনে শুধু অনার্স পাশ করা একজন আমেরিকায় সরাসরি পিএইচডি স্কলারশিপ পেয়েছে। সেই প্রফেসর ব্যক্তিগতভাবে ই ই-মেইল করে আবেদনকারী সম্পর্কে মূল্যায়ন করতে অনুরোধ করেন। আমি তখন ব্যক্তিগত রিসার্চ ট্র্যাক উল্লেখ করে সেই প্রফেসরকে অনুপ্রাণিত করতে চেষ্টা করি, যাতে আমার স্টুডেন্টকে স্কলারশিপের জন্য নির্বাচিত করেন এবং সেটা করেছে।

আরো পড়তে অথবা দেখতে :- অনুগ্রহ করে Hardcopy ক্রয় করুন। We Respect Every Author Hardwork-boipaw ™

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ