বইয়ের নামঃ বৃষ্টিমুখর রৌদ্রমুখর
লেখকঃ আবদুল্লাহ মাহমুদ নজীব
প্রকাশনীঃ সিয়ান পাবলিকেশন লিমিটেড
মুদ্রিত মূল্যঃ ৩৪৫ টাকা
পৃষ্ঠা সংখ্যাঃ ২২৪
প্রাপ্তিস্থানঃ সিয়ান পাবলিকেশন লিমিটেড। দোকান নং ৩, দ্বিতীয় তলা, ইসলামী টাওয়ার, বাংলা বাজার, ঢাকা।
...................
★আমরা বই পড়ি কেন? জানার জন্য, নিজেদের জানা, এ পৃথিবীকে জানা, আমাদের সৃষ্টিকর্তাকে জানা। জ্ঞানের উৎস সর্বজ্ঞ স্রষ্টা, এই জ্ঞানই সভ্যতাকে এগিয়ে নেয়, সমাজকে টিকিয়ে রাখে।
#বই সম্পর্কেঃ
★প্রতিটি বাক্যের প্রতিটি শব্দে তৃপ্তি আর তৃপ্তি! এমন বইও হয়! যে বই কোন বিরক্তি ছাড়া টানা পড়া যায়। বৃষ্টির বর্ণনা, রোদের বর্ণনা, ফুল, পাখির বর্ণনা, পড়তে গিয়ে মনে হয়, আমিই হাটছি ওই পথে। পড়ছিনা, দেখছি সব নিজ চোখে।
★বইটিতে যে ফুল, ফল পাখি, রোদ-বৃষ্টির বর্ণনা করা হয়েছে তা বাংলাদেশের প্রতিটি গ্রামে, এলাকায় কম বেশি দেখা যায় কিন্তু আমরা কয়জনই বা এভাবে চিন্তা করি, অনুভব করি?
প্রকৃতির এ রূপ সৌন্দর্য, উপকার, অপকারের পিছনে কার হাতে? কে পরিচালনা করেন? কখনো এমন করে চিন্তা করি আমরা?
★জীবনে চলার পথে প্রতিটি কাজের, কথার একটা তরিকা আছে। আছে সুন্দর নিয়ম কানুন, যা মহান আল্লাহ তা'য়ালা তাঁর রাসূলের মাধ্যমে দুনিয়াবাসীকে জানিয়েছেন। সেগুলো মানা না মানার সুফল, কুফলের কাহিনী বর্ণনা করেছেন।
কুরআনে হাজারো জনপদ, মানুষ ধ্বংস হয়েছে তা অমান্য করার কারণে আর হাজারো মানুষ সম্মানের উচ্চ শিখরে স্থান লাভ করেছেন তা মানার কারণে।
#বই থেকেঃ
১.ফজরে আমি উঠতে পারিনাঃ
ফজরে উঠতে না পারলে কি হয় এবং উঠার সহজ কিছু ট্রিকস দেয়া আছে। ফজর সম্পর্কে অনেক হাদীসও উল্লেখ করা হয়েছে। যেমন,
"পৃথিবী এবং পৃথিবীর মধ্যবর্তী যা কিছু আছে, তারচেয়ে উত্তম ফজরের দুই রাকাত (সুন্নাত) সালাত।"
"জামায়াত সহকারে যে 'ইশা আদায় করলো, সে যেন অর্ধরাত্রি ধরে (নফল) সালাত আদায় করলো; এবং জামায়াত সহকারে যে ফজর আদায় করলো, সে যেন সারারাত ধরে (নফল) সালাত আদায় করলো।"(সাহীহ মুসলিম: ১৫২৩; সুনান আবূ দাউদ: ৫৫৫)
২. আজি ঝর ঝর মুখর বাদল দিনেঃ
বৃষ্টির অপরূপ সৌন্দর্য, তার উপকার, অপকার, কুরআন-হাদীস এবং কবিদের ছড়া-কবিতার আলোকে সাজানো অধ্যায়। যেমন,
"আল্লাহ তা'য়ালা আমাকে যে হিদায়াত ও 'ইলম সহকারে পাঠিয়েছেন; তার দৃষ্টান্ত সেই বৃষ্টির ন্যায়, যা কোন জমিনে বর্ষিত হয়, আর সে-ভূমির উৎকৃষ্ট কতকাংশ পানি গ্রহণ করে এবং প্রচুর তরতাজা ঘাস-পাতা উৎপন্ন করে।
আর কতকাংশ হল অনুর্বর মাটি, যা পানি আটকিয়ে রাখে, ফলে আল্লাহ তা'য়ালা তা দিয়ে মানুষের উপকার পৌঁছান এবং মানুষ তা থেকে পান করে ও পশু চরায়।
এ বৃষ্টি জমিনের আরও কিছু অংশে বর্ষিত হয়। এ অংশগুলো টিলাময়। কোন পানিও ধারণ করে না, কোন লতাপাতাও উৎপন্ন করে না।
এই উপমা সেইসব লোকের, যারা আল্লাহর দ্বীনের জ্ঞানে ব্যুৎপত্তি অর্জন করে এবং আল্লাহ তাদেরকে হিদায়াত ও জ্ঞান দিয়ে অলংকৃত করেন, যা দিয়ে আমাকে পাঠিয়েছেন। তারা জ্ঞান অর্জন করে এবং জ্ঞান শিক্ষা দেয়। আর তৃতীয় উপমাটি সেইসব লোকের, যারা তার প্রতি মাথা তুলেও তাকায়না এবং আল্লাহর হিদায়াতকে গ্রহণ করে না, যা দ্বারা আমি প্রেরিত হয়েছি।"(সাহীহুল বুখারী: ৭৯; সাহীহ মুসলিম: ২২৮২)
(এ হাদীসে হিদায়াত ও ইলমকে তুলনা করা হয়েছে বৃষ্টির সাথে)
৩. রৌদ্রমুখরঃ গ্রীষ্মকাল এবং ফল সম্পর্কে জানার জন্য, পাশাপাশি রোদের সাথে জাহান্নামের বর্ণনার আয়াত দিয়ে সাজানো অধ্যায়।
যেমন,
"এবং তারা বললো: তোমরা এই গরমে অভিযানে বের হয়ো না। আপনি বলুন: জাহান্নামের আগুন এরচেয়েও বেশি উত্তপ্ত। যদি তারা বুঝতো! "(সূরা আত-তাওবা,৯ : ৮১)
৪. আজি এ বসন্তে জাগ্রত দ্বারেঃ
বসন্ত এসেছে। পত্র পল্লব ফিরে পেয়েছে প্রান, চারপাশে ফুলের ঘ্রাণ আর পাখির গান। শীতের নিষ্প্রাণতায় কদিন আগেই মৃতপ্রায় হয়ে যাওয়া প্রকৃতি এখন সজীবতায় মুখর। বসন্তের এই প্রাণ আমাদের প্রাণেও কি সঞ্চার হতে পারেনা?
#মন্তব্যঃ জ্ঞানের আঁধার বই। কিন্তু সব বই কি জ্ঞানের আঁধার হতে পারে?
না, সে সব বই ই জ্ঞানের আঁধার হতে পারে যা মহান স্রষ্টার প্রেরিত আল-কুরআন এবং তাঁর রাসূলের হাদীস থেকে একজন জ্ঞানী নিজে ধারণ করার পর ওভাবে লিখতেও পারে যা পড়ার পর পাঠকের মন, প্রাণেও সে অনূভুতি আসে, সে জ্ঞান তাদের মধ্যেও ছড়িয়ে যায়। এ বইটি সেরকম একটি বই।
★বইয়ের শেষে কভারে লেখা কথাগুলোর সাথে একমত হতেই হবে,
"বিষন্নতার প্রহরগুলোকে প্রাণ ফিরিয়ে দেয়ার জন্য, জীবনের উঠোনকে জান্নাতের পুষ্প-সৌরভে শোভিত করার প্রেরণা যোগানোর জন্য, বিশ্বাসী তারুণ্যকে সুন্নাহ'র সবুজতা চিনিয়ে দেয়ার প্রয়াস এ বই।"
#বইটি কেন পড়া উচিত?
★আল্লাহর রাসূলের (স.) কাছে "হৃদয়ের বসন্ত" ছিলো আল-কুরআন, আমাদের চিরচেনা বসন্তের আবহ সামনে রেখে হৃদয়ের বসন্তের আবাহন অনুভব করা যায় কীভাবে? নিসর্গের গল্প শুনাতে শুনাতে কুরআনের বসন্তকে ছোঁয়ার প্রাণোদনা পেতে আপনাকে পড়তেই হবে এ বই।
★বয়সের কোন বাঁধা নেই বইটি পড়তে, সব বয়সের মানুষরাই পড়ে সমান আনন্দ পাবে।
★বয়স্করা দীর্ঘশ্বাস নিয়ে ভাববেন, ওই সময়টা কাটিয়ে এসেছি অনেক কিছুই জানতামনা কিংবা জেনেও হয়তো না করা থেকে গেছে। তওবা করে নিজেদের শুধরে নেয়ার চেষ্টা করবেন।
★সমবয়সীরা ভাববে, আমরাওতো দেখি কিন্তু অনুভব করতে পারিনা কেন? ভয় আর বিনয় নিয়ে আল্লাহর দরবারে ক্ষমা চাইবে আর এমনই হতে, চলতে চেষ্টা করে যাবে।
★ছোটরা'তো সবচেয়ে বেশি লাভবান হবে। নাম না জানা ফুল, ফল, পাখি আর প্রকৃতির বর্ণনার পাশাপাশি কুরআন, হাদীসের আলোকে সেসবের উপকার, অপকার সম্পর্কে জানবে। নিজেদের জীবনে তা বাস্তবায়ন করতে পারবে। কারণ, বইটি জীবন চলার পথে একটা গাইড লাইন হতে পারে। ছোটদের মনে এমন বইয়ের প্রভাব পড়া খুবই দরকার। তাহলে বড় হওয়ার পর খারাপ পথে যাওয়ার আশংকা অনেকাংশে কমবে।
লেখক পরিচিতিঃ আবদুল্লাহ মাহমুদ নজীবের জন্ম চট্রগ্রামের লোহাগাড়াতে, ১৯৯৭ সনের ২২ জানুয়ারি। ড. মাহমুদুল হক ওসমানী ও জাহান আরা ইয়াসমিন-এর প্রথম সন্তান তিনি। কবিতা ও প্রবন্ধগল্পে ইতিমধ্যেই তিনি সব্যসাচী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। 'বৃষ্টিমুখর রৌদ্রমুখর' তার চতুর্থ প্রকাশনা।
0 মন্তব্যসমূহ
ℹ️ Your Opinion is very important to us, Please Writer your comment below about this Post.....