সফলতার সূত্র
লেখক : আরিফুল ইসলামপ্রকাশনী : মুহাম্মদ পাবলিকেশন
বিষয় : আত্ম উন্নয়ন ও মোটিভেশন, আত্মশুদ্ধি ও অনুপ্রেরণা
পৃষ্ঠা : 160
সাপ্লায়ার জানিয়েছেন এই পণ্যটি 28 February প্রকাশিত হতে পারে। প্রকাশিত হওয়ার সাথে সাথে পণ্যটি পেতে আগেই অর্ডার করে রাখুন ।
সফল হওয়া আমাদের সকলের এই সুন্দর গ্রহে বসবাসের আকাঙ্ক্ষা। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি শিশু, যুবক বা বৃদ্ধ হোক তা বিবেচ্য নয়, আমাদের বিস্তৃত জীবৎকালের প্রতিটি পর্যায়ে এটি আমাদের অন্তর্নির্মিত ইচ্ছাসফল হওয়া এবং আরও ব্যাপক সাফল্যের দিকে ধারাবাহিকভাবে এগিয়ে যাওয়া।
কিন্তু সফল হওয়ার পথ সহজ নয়। সাফল্য অর্জনের জন্য পাড়ি দিতে হয় নানা বাধা-বিপত্তি, পেছনে ফেলে এগিয়ে যেতে হয় জীবনের নানান ঘাত-প্রতিঘাতকে। জীবন চলার পথকে সাফল্যমণ্ডিত করতে তাই এমন কিছু উপলব্ধির প্রয়োজন হয়, যা আপনার গভীর জীবনবোধকে জাগ্রত করে তুলতে পারে।
‘সফলতার সূত্র’ এমনই একটি গ্রন্থ; যা আপনার সফলতার উপলব্ধির কারণ হবে। যা আপনাকে সফল হতে স্বপ্ন দেখাবে। আজকের পৃথিবীখ্যাত সফল ব্যক্তিদের সফলতার গল্প শোনাবে।
সফলতার সূত্র
মানুষ কোনো কিছুর গুরুত্ব বোঝাতে ‘কসম' করে থাকে। তখন তারা বলে, ‘আল্লাহর কসম করে বলছি'। যখন কেউ এভাবে কোনো কথা বলে, তখন বুঝে নিতে হয় কথাটি আর ১০টি কথার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
আল্লাহ যখন কোনো কিছুর কসম করে বলেন, তখন সেটার গুরুত্ব এমনিতেই বেড়ে যায়। সেই কথাটি অন্য সকল কথার চেয়ে বেশি মনোযোগ দিয়ে শুনতে হয়। কথার গুরুত্ব বোঝাতে আল্লাহর জন্য একবার কসম করাই যথেষ্ট। সেই জায়গায় আল্লাহ
একটি কথা বলার আগে ১১ বার কসম করেছেন! তাহলে সেই কথাটি কতটা গুরুত্বপূর্ণ
হবে ভাবা যায়?
সুরা আশ-শামসের শুরুতে আল্লাহ ১১ বার কসম করেন। আল্লাহ যেসব বিষয়ের কসম করেন, সেগুলো হলো—সূর্য, সূর্যের আলো, চন্দ্র, দিন, রাত, আকাশ, পৃথিবী, মানুষ এবং তাঁর নিজের (একাধিকবার)।
এতগুলো কসমের পর আল্লাহ গুরুত্বপূর্ণ কথাটি বলেন——সে সফলকাম হয়েছে, যে নিজেকে পরিশুদ্ধ করেছে। এবং সেই ব্যর্থ হয়েছে, যে নিজেকে কলুষিত করেছে।' [সুরা আশ-শামস ৯১:৯-১০]
আল্লাহ সফলতার সূত্র বলে দেন। আল্লাহ এটাও জানিয়ে দেন কারা ব্যর্থ। মানুষ স্বভাবত চায় সফল হতে, ব্যর্থ হতে কেউই চায় না। আমার কাছে প্রায়ই কিছু মানুষ এসে বলে, তারা মনের মধ্যে শান্তি অনুভব করেন না, কেমন যেন অস্থিরতা কাজ করে। এর থেকে পরিত্রাণের উপায় কী?
মনের অস্থিরতা থেকে পরিত্রাণের অনেকগুলো উপায় আছে। তারমধ্যে অন্যতম হলো নামাজ পড়া। নামাজ মানুষের দুনিয়াবি সমস্যার যেমন সমাধান করতে পারে, তেমনি পারে পরকালের মুক্তি দিতে। মুয়াজ্জিন যখন আজান দেন, তখন আহ্বান করেন
নামাজের দিকে। এই আহ্বানের মধ্যে একটি বাক্য হলো ‘হাইয়াল আল ফালাহ'। যার অর্থ হলো, এসো সফলতার দিকে, এসো কল্যাণের দিকে। নামাজের মধ্যেই রয়েছে সফলতা, নামাজের মধ্যেই রয়েছে কল্যাণ।
একবার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর সাহাবিদের জিজ্ঞেস করলেন, “বলো তো, যদি কারো বাড়ির সামনে একটি নদী থাকে, আর সে তাতে প্রতিদিন পাঁচবার গোসল করে, তাহলে কি তার শরীরে কোনো ময়লা থাকবে?? সাহাবিরা জবাব দিলেন, 'না, তার শরীরে কোনো ময়লা থাকবে না।'
অতঃপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন—'এটা হলো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের উদাহরণ। এর মাধ্যমে আল্লাহ বান্দার গুনাহসমূহ মিটিয়ে দেন।' [সহিহুল বুখারি: ৫২৮]
মানুষের শরীরে ময়লা থাকলে গোসল করার পর যেমন ময়লা থাকে না, তেমনি মানুষ নামাজ পড়তে থাকলে গুনাহ মাফ হয়। যে মাসে এক দিন গোসল করে বা বছরে দুই দিন গোসল করে, তার পাশে বসতে আপনার কেমন লাগবে? সে যদি কোনো খাবার নিয়ে আসে, সেটা খেতে আপনার অস্বস্তি লাগবে না?
তাহলে চিন্তা করুন, যে মাসে দু-একবার বা বছরে দু-তিন দিন নামাজ পড়ে, তার অবস্থা কেমন? তার অন্তরে কেমন ময়লা জমে থাকে? গোসল না করলে যেমন শরীরে ময়লা জমে থাকে, নামাজ না পড়লে অন্তরে গুনাহ জমে থাকে। এই গুনাহের ফলে অন্তরে কালো দাগ বাড়তে থাকে।
ডাক্তাররা যেমন রোগের সাথে ওষুধকে যুক্ত করেন, তেমনি আত্মার পরিশুদ্ধতার সাথে নামাজ যুক্ত। নামাজ ছাড়া আত্মার পরিশুদ্ধি আশা করা যায় না। আর আত্মা পরিশুদ্ধ না হলে আল্লাহ জানিয়ে দেন, সফল হওয়া যায় না।
যারা নামাজ পড়ে না তারা ‘কাফির’ নাকি ‘ফাসিক’ এই নিয়ে আলিমগণ আলোচনা করেন, তর্ক-বিতর্ক করেন। আপনি কেন চাইবেন এই আলোচনায় নিজেকে অন্তর্ভুক্ত করতে? আলিমগণের ক্রসফায়ার আলোচনার সামনে নিজেকে দাঁড় করার দুঃসাহস দেখাবার কী দরকার? তারচেয়ে তো অনেক সহজ নামাজ পড়া। আপনি যদি নামাজ পড়েন, আপনার তো ঐ আলোচনা শোনার দরকার নেই। কারণ, আপনি তখন নামাজ ত্যাগকারীর অন্তর্ভুক্ত না। আপনি যখনই নামাজ ত্যাগ করা শুরু করবেন, তখন আপনি নামাজ ত্যাগকারীর বিধানসংক্রান্ত আলোচনার বিষয়বস্তু হয়ে পড়বেন। যার কোনোটিই আপনার জন্য উত্তম না
অনেকেই নামাজ পড়তে চায় না। কেননা, তারা নামাজের স্বাদ পায়নি। আপনাকে যদি ‘হাজীর বিরিয়ানি’ খাওয়ার দাওয়াত দেওয়া হয়, যদি বলা হয় অমুক দিন রেস্টুরেন্টে উপস্থিত হতে, আপনি দেখবেন সময় হিশেব করা শুরু করে দেবেন। কবে সেই দিন
আসবে। দেখা যাবে নির্ধারিত দিন এলে মেজবানের আগেই আপনি সেখানে উপস্থিত হবেন। কারণ, আপনি জানেন হাজীর বিরিয়ানির কেমন স্বাদ।
কিন্তু, যে কখনো সেটা খায়নি, তাকে দাওয়াত দিলে সে কি সমান উৎসাহ দেখাবে? নাকি সে তেমন আগ্রহ দেখাবে না?
নামাজে যারা স্বাদ পেয়েছে এবং যারা স্বাদ পায়নি, তাদের উদাহরণ তেমন। তারা অপেক্ষা করে কখন নামাজে দাঁড়াবে, কখন নামাজের সময় হবে। ফজর থেকে জোহর পর্যন্ত প্রায় ৭-৮ ঘণ্টা সময় থাকে। এই সময়টুকু কেউ কেউ নামাজ পড়া ছাড়াই কাটিয়ে দেয়। কিন্তু, যাদের নামাজ না পড়লে মন ছটফট করে, তারা এই সময়টুকু নামাজ ছাড়া থাকতে পারে না। তখন তারা দোহার নামাজসহ অন্যান্য সুন্নাত-নফল পড়ে।
যারা নামাজে স্বাদ পেয়েছে, তাদের নামাজ পড়ার ধরনই অন্য রকম। আবদুল্লাহ ইবনু জুবাইর রাদিয়াল্লাহু আনহু যখন নামাজে দাঁড়াতেন। দূর থেকে দেখলে মনে হতো একটি গাছ দাঁড়িয়ে আছে। পাখিরা তাঁকে গাছ মনে করে তাঁর মাথার ওপর, কাঁধের ওপর বসতো।
শাদ্দাদ ইবনু আউস রাহিমাহুল্লাহ যখন বিছানায় যেতেন, তখন এপাশ-ওপাশ করতেন। তাঁর ঘুম আসতো না। তিনি বলতেন, 'হে আল্লাহ! জাহান্নামের আগুন আমার ঘুম হারাম করে দিয়েছে।'
অতঃপর বিছানা থেকে উঠে নামাজ পড়া শুরু করতেন। এভাবে নামাজ পড়তেন ফজর
নামাজের প্রতি সালাফদের ভালোবাসা এত বেশি ছিল যে, সবকিছুর চেয়ে তারা নামাজকে প্রাধান্য দিতেন। কারণ, তারা নামাজের স্বাদ অনুভব করতে পারেন।
আদি ইবনু হাতেম রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, “এমন কোনো সময় আসেনি যে, আজান হয়েছে আর আমি অজু ছাড়া আছি।' অর্থাৎ, আজান হবার আগেই তিনি নামাজের অপেক্ষা করতেন।
সায়িদ ইবনুল মুসাইয়িব রাহিমাহুল্লাহর ইনতিকালের পূর্বে তাঁর সন্তানরা কান্না করে। তিনি তাদেরকে সান্ত্বনা দিয়ে বলেন, 'তোমরা কেঁদো না। আল্লাহর প্রতি সুধারণা রাখো। তোমাদের বাবার এই মসজিদে ৪০ বছর কখনো তাকবিরে তাহরিমা ছুটে যায়নি। যে অর্থাৎ, ইমাম সাহেবের প্রথম তাকবিরে তিনি একটানা ৪০ বছর উপস্থিত ছিলেন।
[১] সিফাতুস সাফওয়া : ১/৭০৯ [২] হিলইয়াতুল আউলিয়া, ২/১৬২।–নিরীক্ষক
আবু আমর ইবনু আ'লা রাহিমাহুল্লাহ ছিলেন কুরআনের বিখ্যাত সাত কারির একজন। একবার তিনি নামাজে ইমামতি শুরু করার আগে বললেন 'কাতার সোজা করুন'। এটা বলা মাত্র তিনি মাটিতে ঢলে পড়লেন। লোকজন তাঁকে তুলে নিয়ে বিছানায় রাখলো। পরদিন তাঁর জ্ঞান ফিরলো। স্বাভাবিক হবার পর জিজ্ঞেস করা হলো, কী হয়েছে? তিনি জবাব দেন, ‘আমি নামাজে দাঁড়ানোর জন্য সবাইকে বললাম ‘কাতার সোজা করুন'। এটা বলার পর আমার মনে পড়লো, আল্লাহ আমাকেও তো সোজা হতে বলেন। আমি তো সোজা পথে চলতে পারছি না, অথচ মানুষকে বলছি সোজা হতে!
নামাজ নিয়ে তারা এত ভাবতেন যে, এই ভাবনা তাদেরকে অস্থির করে তুলতো। নামাজের মধ্যে তারা জীবনের উদ্দেশ্য খুঁজতে চাইতেন। যার নামাজ ঠিক, তার সবকিছু ঠিক।
উমর ইবনুল খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু আনহু তাঁর অধীনস্থ কর্মকর্তাদের কাছে লিখেন, 'আমার মতে তোমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে নামাজ। অতএব, যে এটার রক্ষণাবেক্ষণ করলো এবং নিষ্ঠার সাথে পালন করলো, সে নিজের দ্বীনের হেফাজত করলো। আর যে নামাজকে নষ্ট করলো, সে নামাজ ছাড়া অন্যান্য ধর্মীয় দ্বীনি কাজেরও অধিক নষ্টকারী হবে। [৩]
নামাজ আপনাকে কতটুকু প্রতিদান দেবে, সেটা নির্ভর করছে আপনি কতটা যত্নের সাথে নামাজ আদায় করছেন। অনেকেই বলে যে, কুরআনে আছে নামাজ মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখে। আমি নামাজ পড়ি। কই, নামাজ তো আমাকে মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখে না!
এটার জবাব হলো, যেহেতু আল্লাহ কুরআনে বলেছেন নামাজ মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখে, সেহেতু আল্লাহর কথা সত্য। নামাজ আপনাকে মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখছে না, এর মানে হলো যেভাবে নামাজ পড়ার কথা, আপনি সেভাবে নামাজ পড়ছেন না। ভুল কুরআনে নয়; আপনার নামাজে। সাহাবি-তাবেয়ি তথা সালাফগণ যেমন নিষ্ঠার সাথে নামাজ পড়তেন, আপনার নামাজ আর তাদের নামাজের তুলনা করলেই দেখতে পাবেন ব্যর্থতা কোথায়!
[৩] মুয়াত্তা, ইমাম মালিক, হাদিস : ৬।
ইতিহাসেরবাঁক পরিবর্তনকারী
টাইম ম্যাগাজিন-এর মতে অ্যামেরিকার সেরা ২৫ জন প্রভাবশালীর একজন হলেন স্টিফেন কভেই। তিনি নিউইয়র্ক টাইমস বেস্ট সেলার The 7 Habits of Highly Effective People বইয়ের লেখক।
তার একটি বিখ্যাত উক্তি আছে। তিনি বলেন- 'I am not a product of my circumstances. I am a product of my decisions." ‘আমার পারিপার্শ্বিক পরিবেশ-পরিস্থিতি আমাকে তৈরি করেনি। আমাকে তৈরি করেছে
আমার সিদ্ধান্ত।'
আমাদের সবকিছুর জন্য আমাদের আশেপাশের পরিবেশকে দায়ী করতে তিনি আগ্রহী নন। তার মতে, আমরা যে সিদ্ধান্ত নিই, সেই সিদ্ধান্তগুলো আমাদের স্বকীয়তা। আমাদের সিদ্ধান্তগুলো আমাদের আশেপাশের মানুষদের চেয়ে আলাদা করে তোলে।
সমাজের সবাই যে দিকে যাচ্ছে সেদিকে যাওয়াটা সিদ্ধান্ত নয়। সিদ্ধান্ত হলো সবাই সেদিকে কেন যাচ্ছে, কীভাবে যাচ্ছে, গেলে কী হবে না হবে সেটা বুঝেশুনে আগানো অথবা অন্যদিকে যাওয়া। যখন আপনি সবার মতো চলতে থাকবেন, তখন আপনি সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন না। আপনি অনুসরণ করছেন। যখন জেনে-বুঝে অনুসরণ করবেন, সেটা হবে সিদ্ধান্ত।
স্টিফেন কভেই সফল মানুষদের ৭টি অভ্যাস নিয়ে আলোচনা করেছেন। প্রথম যে অভ্যাসটি রেখেছেন, সেটা হলো Proactivity; বা সক্রিয়তা।
ইসলামে সক্রিয়তার গুরুত্ব এত বেশি যে, আল্লাহ পবিত্র কুরআনে সক্রিয়তার প্রশংসা করেছেন। একটি কাজ যদি দুজন করে, আগে যে করে তার মর্যাদা এবং পরে যে করে তার মর্যাদা সমান নয়। যে নতুন পথের সূচনা করে, সে যতটা ঝুঁকি নেয়, তার দেখানো পথে বাকিদের ততটা ঝুঁকি নিতে হয় না। অনেকেই অলস বসে আছে, একজন দায়িত্ব
নিয়ে এগিয়ে গেল। যে দায়িত্ব নিয়ে এগিয়ে গেল, তার মর্যাদা তাদের চেয়ে বেশি, যারা বসে ছিল বা পরবর্তী সময়ে যোগদান করে।
মুসা আলাইহিস সালাম আল্লাহকে বলেন, “হে আমার রব! আমি তাড়াতাড়ি আপনার নিকট এসেছি, যাতে আপনি খুশি হন।' [সুরা ত্বহা ২০ : ৮৪]
আল্লাহ সক্রিয়তার গুণ পছন্দ করেন। তিনি মানুষকে অগ্রবর্তী হতে আহ্বান জানান। আল্লাহ পবিত্র কুরআনে বলেন—
তোমরা তোমাদের রবের পক্ষ থেকে ক্ষমা ও সেই জান্নাতের দিকে প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হও, যার প্রশস্ততা আসমান ও জমিনের প্রশস্ততার মতো। [সুরা আল-হাদিদ ৫৭ : ২১]
অগ্রবর্তী ও পশ্চাৎবর্তী লোকদের মর্যাদা আল্লাহর কাছে সমান নয়। যারা এগিয়ে গিয়েছে, তাদের মর্যাদা আল্লাহর কাছে অনেক বেশি। আল্লাহ পবিত্র কুরআনে অগ্রবর্তীদের মর্যাদার কথা উল্লেখ করে বলেন—
তোমাদের মধ্যে যারা (মক্কা) বিজয়ের পূর্বে ব্যয় করেছ এবং যুদ্ধ করেছ, তারা (অন্যদের মতো) সমান নয়। তারা মর্যাদায় তাদের চেয়ে শ্রেষ্ঠ, যারা পরে ব্যয় করেছে ও যুদ্ধ করেছে। [ সুরা আল-হাদিদ ৫৭ : ১০]
ইসলাম যখন দুর্বল ছিল, যারা শত নির্যাতনের মুখে ইসলামের পক্ষে থেকেছে, দান করেছে, যুদ্ধ করেছে তারা আল্লাহর কাছে শ্রেষ্ঠ। অন্যদিকে যারা মক্কা বিজয়ের পর ইসলাম গ্রহণ করেছে, তাদেরকে সেরকম কষ্ট করতে হয়নি, যেরকম কষ্ট করেছেন আবু বকর, আলি, বিলাল, খাব্বাব, আম্মার রাদিয়াল্লাহু আনহুম।
যারা সক্রিয়, যারা সবার আগে সাড়া দেয় তাদেরকে আল্লাহ যেমন প্রশংসা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামও তেমনি তাদের জন্য দুআ করেন।
হে আল্লাহ! আমার উম্মতের ভোরবেলার মধ্যে তাদেরকে বরকত ও প্রাচুর্য দান করুন। [৪]
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কোথাও সেনাবাহিনী পাঠাতে চাইলে ভোরবেলা পাঠাতেন। এই হাদিসের বর্ণনাকারী সাখর আল-গামিদি রাদিয়াল্লাহু আনহু ছিলেন একজন ব্যবসায়ী। তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাদিসটি অনুসারে বরকত পেতে আগ্রহী ছিলেন। ফলে তিনি তাঁর ব্যবসায়িক কাজ শুরু করতেন খুব ভোরে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দুআর বরকত তিনি হাতেনাতে পান। অল্প সময়ের মধ্যে তিনি অনেক সম্পদের মালিক হন।
[৪] সুনানুত তিরমিজি, হাদিস : ১২১২
আমরা অনেকেই দেরিতে ঘুম থেকে উঠি। দিনের কাজ শুরু করি সকাল ১০-১১টায়। দিনের বরকতের মুহূর্ত আমরা মিস করি। এই সময়টা আমরা ঘুমিয়ে কাটাই। ফলে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দুআর বরকত আমরা পাই না। দিনে কাজ করার মতো সময় পাই না। সকালে ফজরের নামাজ পড়ে যদি আমরা পড়তে বসি, কাজ শুরু করে দিই, তাহলে দেখা যেত দুপুর হতেই আমাদের কাজ শেষ হয়ে যেত। হাতে থাকত অফুরন্ত সময়। ফলে রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমাতে পারতাম। আমরা দিন শুরু করি দেরি করে, এজন্য রাতে ঘুমাইও দেরিতে। যার ফলে ফজরের নামাজে সময়মতো উঠতে পারি না!
সক্রিয়তা হলো সিদ্ধান্ত। সিদ্ধান্ত নিতে সাহস লাগে। যারা সক্রিয় না, দেখবেন তারা অজুহাত খুঁজে বেড়ায়। তাদেরকে যদি বলেন, 'আসেন ভাই, মানুষকে দাওয়াত দিতে যাই, একটা আলোচনা শুনি' তারা সময়ের অজুহাত দেখায়। অথচ যারা সক্রিয়, তারা কোনো না কোনোভাবে সময় বের করে নেয়। যারা সক্রিয়, তারাও তো কোনো কিছুতে ব্যস্ত থাকে। তারা কীভাবে সময় বের করে? কারণ, তারা মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকে। ‘সক্রিয়তা’ চর্চা করতে হয়। এই চর্চা থামিয়ে দিলে দেখবেন আপনি হাতে সময় পাবেন না, কোনো কিছু করতে সাহস পাবেন না।
আপনি সক্রিয় হতে গেলে সুযোগের অপেক্ষা করবেন না। সুযোগ আপনি নিজেই করে নেবেন। তখন কেউ আপনাকে দায়িত্ব দেবে না, আপনি নিজেই নিজের কাঁধে দায়িত্ব নেবেন।
আখিরাত যাদের প্রধান লক্ষ্য, এমন না যে তারা দুনিয়া ভুলে নির্জনে বসবাস করে। তারা দুনিয়াতে থাকাবস্থায়ই আখিরাতের প্রস্তুতি নেয়। তারা খায়, ঘুমায়, কাজ করে, মা-বাবাকে সময় দেয়, স্ত্রী-সন্তানকে সময় দেয়, সমাজকে সময় দেয়; তারপরও তারা আখিরাতের দিকে মনোযোগ দিতে পারে। কারণ, তারা যাই করে না কেন, আখিরাতের লক্ষ্য তাদের সামনে থাকে। ফলে মা-বাবাকে সময় দেওয়া, স্ত্রীকে সময় দেওয়া, উপার্জন করা, পুরোটাই তাদের আখিরাতের কাজে লাগে।
অন্যদিকে, যারা শুধু দুনিয়া নিয়ে ব্যস্ত, তাদেরকে আখিরাতের কাজ করতে আলাদা করে সময় বের করতে হয়। তবুও তারা সময় বের করতে পারে না। অথচ, তারা যে দুনিয়া নিয়ে ব্যস্ত, সেই দুনিয়ার পেছনে মূল লক্ষ্য যদি থাকে আখিরাত, তাহলে সেই নিয়া নিয়ে ব্যস্ত থাকাটা তাদের আখিরাতের কাজে লাগত।
যেমন ধরুন, একজন ডাক্তার। তাকে আখিরাতের জন্য আলাদা করে কী করতে হয়? তিনি রোগী দেখছেন, তাদের সাথে উত্তম ব্যবহার করছেন, সবার প্রতি যথাসাধ্য ইনসাফ করছেন, অভাবী রোগীকে বিনামূল্যে বা কম ফি-তে দেখছেন, আল্লাহর আদেশ
মেনে চলছেন, নিষেধ থেকে বিরত থাকছেন। তার এই কাজগুলোই তো আখিরাতের কাজ।
নবি-রাসুলগণের পর অন্যতম শ্রেষ্ঠ ব্যক্তি হলেন আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু। নবি রাসুলদের পর শ্রেষ্ঠ উপাধি হলো ‘আস-সিদ্দিক’। আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু সেই উপাধি লাভ করেন।
তাঁর কাছে যখন ইসলামের দাওয়াত পৌঁছে, তখন তিনি অপেক্ষা করেননি বাকিরা কী করে সেটা দেখতে। তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নবুয়ত লাভের আগের জীবন সম্পর্কে জানতেন। সেই হিশেবে তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বার্তা মেনে নেন। তিনি রাসুলুল্লাহর পরিবারের বাইরে প্রথম ব্যক্তি হিশেবে ইসলাম গ্রহণ করেন।
ইসলাম গ্রহণ করেই তিনি ক্ষান্ত হননি। নিজের মেধা, শ্রম, অর্থ ইসলামের জন্য ব্যয় করেন। সেই সময় মক্কার শ্রেষ্ঠ লোকগুলোকে তিনি দাওয়াত দেন। তাঁর দাওয়াতে তারা ইসলাম গ্রহণ করেন। তাদের মধ্যে পাঁচজন হলেন—
উসমান ইবনু আফফান রাদিয়াল্লাহু আনহু
তালহা রাদিয়াল্লাহু আনহু
জুবাইর ইবনু আউয়াম রাদিয়াল্লাহু আনহু
আবদুর রহমান ইবনু আউফ রাদিয়াল্লাহু আনহু সা’দ ইবনু আবি ওয়াক্কাস রাদিয়াল্লাহু আনহু
এই পাঁচজন সাহাবি ছিলেন প্রথমদিকের ইসলাম গ্রহণকারী। তারা সবাই আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহুর দাওয়াতে ইসলাম গ্রহণ করেন। প্রত্যেকেই দুনিয়ার বুকে জান্নাতের সুসংবাদ পান।
এই পাঁচজনের মধ্যে দুজন ছিলেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আত্মীয়। তারা হলেন জুবাইর ইবনুল আওয়াম ও সা’দ ইবনু আবি ওয়াক্কাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা। জুবাইর ইবনুল আওয়াম রাদিয়াল্লাহু আনহু ছিলেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ফুপাতো ভাই, সা'দ ইবনু আবি ওয়াক্কাস রাদিয়াল্লাহু আনহু ছিলেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দুঃসম্পর্কের মামা।
আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু অপেক্ষা করেননি যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর নিজের আত্মীয়দের গিয়ে দাওয়াত দেবেন, তিনি না গেলেও হবে। তিনি বরং নিজেই যান তা দেরকে দাওয়াত দিতে।
যেকোনো ধরনের নেক কাজে আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু সবার চেয়ে এগিয়ে থাকতেন। একদিন সকালে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাহাবিদের সাথে বসা ছিলেন। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, “তোমাদের মধ্যে আজ কে রোজা রেখেছ?'
আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন, ‘আমি।'
“তোমাদের মধ্যে কে আজ কোনো জানাজায় গিয়েছ?'
আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন, “আমি।'
‘তোমাদের মধ্যে কে আজ কোনো মিসকিনকে খাবার দিয়েছ?'
আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন, ‘আমি।'
‘তোমাদের মধ্যে কে আজ কোনো অসুস্থ ব্যক্তিক দেখতে গিয়েছ?'
আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন, ‘আমি।'
অতঃপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, 'যখন কোনো ব্যক্তির মধ্যে এসব কাজের সমাবেশ ঘটে, সে অবশ্যই জান্নাতে যাবে।”
কোনো কোনো বর্ণনায় পাওয়া যায়, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সকালবেলা সাহাবিদের এই প্রশ্নগুলো করেন। তার মানে, দিনের শুরুতে আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু এত এত নেক আমল করেছেন, পুরো দিনে কী পরিমাণ নেক আমল করতেন ভাবা যায়? তিনি একটি নেক আমল করেই বসে থাকেননি। একটির পর আরেকটি করেছেন, তারপর আরেকটি; এভাবে নেক আমল করতেই থাকেন।
যারা নেক আমল করার জন্য সময় পান না, রোগী দেখতে যাবার জন্য সময় বের করতে পারেন না, জানাজায় যাবার জন্য সময় পান না, দান করার জন্য সময় পান না; আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহুর ঘটনাটি জানার পর তাদের আর অজুহাতের সুযোগ রইল না। নেক আমল করতে হলে যে খুব বেশি প্ল্যান করতে হবে, এমন না। আপনার চোখের সামনেই সুযোগ দেখতে পাবেন, সেই সুযোগগুলো কাজে লাগাতে হবে।
মনে করুন, জানাজায় যাবার জন্য আপনি ঘর থেকে বের হলেন। ঘর থেকে বের হয়ে কাউকে দান করতে পারেন। জানাজা পড়ে বাড়ি ফেরার পথে একজন অসুস্থকে দেখে আসতে পারেন। এতে করে একই সময়ে তিনটি নেক আমল করা হয়ে গেল। যারা সক্রিয়, তারা এভাবে সুযোগ বের করে নেয়। আর যারা নিষ্ক্রিয়, তারা শুধু অজুহাত খোঁজে।
[৫] সহিহু মুসলিম, হাদিস : ১০২৮।-নিরীক্ষক
খন্দক যুদ্ধে মুসলিমরা খুবই চিন্তিত ছিল। মুসলিমদের অবস্থা ছিল জলে কুমির, ডাঙ্গায় বাঘের মতো। মদিনার বাইরে শত্রুরা জড়ো হয়েছে, মদিনার ভেতরেও শত্রু। এমন অবস্থায় একজন নওমুসলিম রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে যান। তাঁর নাম নুয়াইম ইবনু মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু। তিনি যে মুসলিম হয়েছেন, সেটা মদিনার বাইরের শত্রু ও ভেতরের শত্রু কেউই জানতো না। উভয়পক্ষের সাথে তাঁর সুসম্পর্ক ছিল।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে গেলে রাসুলুল্লাহ তাকে বললেন, তিনি কিছু করতে পারলে যেন করেন। উভয়পক্ষের সাথে পূর্বের সুসম্পর্ককে কাজে লাগিয়ে নুয়াইম ইবনু মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু একটি কৌশল আঁটেন। এমনভাবে কৌশল করেন, যার ফলে শত্রুদের মধ্যকার ঐক্য ভেঙে গেল। শত্রুরা পিছু হটলো।
একজন নওমুসলিম সাহাবি চিন্তা করেননি যে, আরো কিছুদিন যাক, তারপর ইসলামের সেবা করবো। যখনই তিনি সময় ও সুযোগ পান, তখনই নিজেকে ইসলামের সেবায় উৎসর্গ করেন। ফলে মুসলিম বাহিনীর মধ্যে যে ভয় ও শঙ্কা তৈরি হয়েছিল, সেটা কেটে গেল। তাঁর কৌশলের কারণে মুসলিমরা ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পেয়ে গেল।
সুলাইমান আলাইহিস সালাম তাঁর বাহিনী নিয়ে যাত্রা করছেন। তখন পিঁপড়াদের একটি উপত্যকায় পৌঁছেন। মানুষজন হাঁটার সময় পায়ের নিচে পিঁপড়া আছে কিনা সেটা সাধারণত দেখার চেষ্টা করে না। পিঁপড়া পিষে ফেললেও তার তেমন খারাপ লাগে না, কারণ, সে জানতো না। অন্যদিকে, পিঁপড়াদের কাছে তো এটা জীবন-মরণের প্রশ্ন।
একটি পিঁপড়া লক্ষ করলো নবি সুলাইমান আলাইহিস সালামের বাহিনী আসছে। পিঁপড়াটি সবাইকে সতর্ক করে দিলো, “হে পিঁপড়ারা! তোমরা নিজেদের ঘরে প্রবেশ করো। সুলাইমান ও তাঁর বাহিনী যেন অজ্ঞাতসারে তোমাদের পিষে না ফেলে।' [সুরা আন-নামল ২৭: ১৮]
নবি সুলাইমান আলাইহিস সালামকে আল্লাহ পশুপাখির ভাষা বোঝার সক্ষমতা দান করেন। তিনি পিঁপড়ার কথা শুনতে পান। ফলে পিঁপড়ার উপত্যকার ওপর দিয়ে না গিয়ে যাত্রাপথ একটু পরিবর্তন করেন।
পবিত্র কুরআন আল্লাহর প্রেরিত বাণী, মুসলিমদের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিতাব। এই কিতাবে আল্লাহ একটি পিঁপড়ার কথোপকথন উল্লেখ করছেন। পিঁপড়ার এই কথোপকথনের গুরুত্ব কী?
একটি পিঁপড়া যখন দেখতে পেল সবার জীবন শঙ্কার মধ্যে, তখন সে নিজে একা বাঁচার চিন্তা করলো না। সে চাইলে একা একা সরে যেতে পারতো। কিন্তু পিঁপড়াটি বাকিদের জীবন নিয়ে চিন্তা করলো; বাকিরা যেন পিষ্ট না হয় সেজন্য সতর্ক করে দিলো। পুরো
জাতিকে নিয়ে পিঁপড়ার যে দুশ্চিন্তা, পিঁপড়ার সতর্কীকরণের ব্যাপারটি আল্লাহর পছন্দ হলো। তিনি পৃথিবীর মানুষদেরকে এই ছোট্ট পিঁপড়ার ঘটনা শোনালেন। যাতে তারাও বিপদের সময় শুধু নিজের কথা না ভেবে বাকিদের কথা ভাবে, বিপদে পড়লে তারা যেন একা একা পালিয়ে না বেড়ায়।
মানুষের ছোট্ট একটি কাজ ইতিহাসের বাঁক বদলে দিতে পারে। একটি পিঁপড়ার উদ্যোগ তার পুরো সম্প্রদায়কে বাঁচিয়ে দিলো। আগ বাড়িয়ে উদ্যোগ নেওয়া, কোনো সৎকাজ করা আল্লাহর কাছে এত প্রিয় যে, তিনি পবিত্র কুরআনে সেগুলোর কথা উল্লেখ করেন ও প্রশংসা করেন।
একজন মুসলিম নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করতে পারে না। তাকে সবসময় চোখ-কান খোলা রাখতে হয়। যখনই কোনো কিছু করার সুযোগ আসবে, সাথে সাথে সেই সুযোগ কাজে লাগাতে হবে। একবার সুযোগ মিস হয়ে গেলে আফসোস করেও কাজ হবে না। বদর যুদ্ধে যারা অংশগ্রহণ করতে পারেনি, তারা সারাজীবন আফসোস করতে থাকে। তাবুক যুদ্ধে যে কয়েকজন সাহাবি অংশগ্রহণ করতে পারেনি, প্রায় দেড় মাসের বেশি তারা আফসোস করে। কখনো কখনো আপনাকেই সুযোগ করে নিতে হবে, সুযোগের অপেক্ষায় বসে থাকলে হবে না। যেমনটা আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু করতেন।
আরো পড়তে অথবা দেখতে অনুগ্রহ করে Hardcopy ক্রয় করুন we Respect Every Author Hardwork-boipaw team
0 মন্তব্যসমূহ
ℹ️ Your Opinion is very important to us, Please Writer your comment below about this Post.....