আনপ্রটেক্টেড - লেখক : মিরিয়াম গ্রসম্যান এম.ডি | Unprotected By Miriam Grossman M.D

আনপ্রটেক্টেড - Unprotected 
লেখক : মিরিয়াম গ্রসম্যান এম.ডি
প্রকাশনী : সিয়ান পাবলিকেশন
বিষয় : ইসলামে নারী
অনুবাদক : আশিক আরমান নিলয়, সানজিদা সিদ্দিকী কথা
পৃষ্ঠা : 220, কভার : পেপার ব্যাক
আইএসবিএন : 9789848046135, ভাষা : বাংলা
Image
সাপ্লায়ার জানিয়েছেন এই বইটি 5 March 2022 প্রকাশিত হতে পারে। 

আমি যেখানে কাজ করি, সেখানে আমরা কিছু বিষয় নিয়ে পড়ে থাকি আর কিছু বিষয় একেবারে এড়িয়ে যাই। শিশুকালে নির্যাতিত হওয়ার সম্ভাবনা জিজ্ঞেস করি ঠিকই, কিন্তু গত সপ্তাহের রিলেশান নিয়ে না। কী খেয়েছ তা জিজ্ঞেস করা হয়; কিন্তু কয়বার গর্ভপাত করেছে, তা জিজ্ঞেস করা যাবে না। বাবা-মায়ের উচ্চাকাঙ্ক্ষা নিয়ে আমরা চিন্তিত; কিন্তু হার্পিসের বেদনা, অনৈতিকতার বিপদ, আর ক্যারিয়ারবাদী নারীদের জীবনে ঘনিয়ে আসা বন্ধ্যাত্ব নিয়ে সবাই চুপ। আত্মহত্যা প্রতিরোধে আমরা জাগ্রত সৈনিক; কিন্তু স্রষ্টা আর জীবনের চূড়ান্ত অর্থ নিয়ে আলোচনাকে মুখ টিপে থামিয়ে দিই।একচোখা ‘স্বাস্থ্যশিক্ষা’ আমাদের ছেলেমেয়েদের ভুল তথ্য জানাচ্ছে। 

নারীদেরকে বিশ্বাস করানো হয় যে, তারাও পুরুষদের মতো সন্তান নিতে দেরি করতে পারে। বিরক্ত আর ক্ষুব্ধ হয়ে তাই লিখলাম Unprotected. এসব ঝামেলায় জড়ানোর ইচ্ছে ছিল না; কিন্তু বইটি যেন আমার দরজায় এসে করাঘাত করতে শুরু করেছিল। এর একেকটি অধ্যায় আমার জীবনের সঙ্গে মিশে গেছে। আমার অফিসে আসা প্রতিটি শিক্ষার্থীর সঙ্গে একটু একটু করে বেড়েছে এই বন্ধন। সময় আমাকে মুখ খুলতে প্ররোচিত করেছে আমাকে; কিন্তু এরই সঙ্গে এসেছে ভয় ও দুশ্চিন্তা। 

পলিটিক্যালি ইনকারেক্ট হওয়ার জন্য কতটা মূল্য দিতে হবে আমাকে?হয়তো ঝামেলা এড়ানোর মানসে আমি নিজের এসব দৃষ্টিভঙ্গি নিজের কাছেই রেখেছিলাম। কারণ, মুখ খুললেই নানারকম তকমা ছুটে আসবে। তাই বিতর্ক এড়িয়ে চলতে থাকি। ইমেইল বা মন্তব্য এসে যখন বিরক্ত করত, রা করতাম না। কিন্তু এরপর দেখা পেলাম ব্রায়ান এবং স্টেসির, তখন থেকেই আমার সমস্যা শুরু হয়। চুপ থাকা কী করে সম্ভব? তাদের গল্পটা তো ব্যতিক্রম কিছু না। দেশ জুড়ে লাখো তরুণ-তরুণীর জীবন তো এই একই গল্প বলে যাচ্ছে।                       

                               আনপ্রটেক্টেড

পারফর্মিং আর্টসের ছাত্রী হেদার, বয়স উনিশ বছর। তার যখন আন্ডারগ্রাজুয়েশনের প্রথম বছর, তখন সে এখানে এসেছিল একজন সাইকোলজিস্টের সন্ধানে। কারণ ছিল তার খামখেয়ালি আচরণ, ক্ষণে ক্ষণে পালটে যাওয়া মেজাজ আর হঠাৎ করেই কারণে-অকারণে কান্না পাওয়া স্বভাব। এমনিতে সে হাসিখুসি, মিশুক ও প্রাণোচ্ছল মেয়ে। বেশ বিনোদনপ্রেমীও। সময়গুলো ভালোই কাটছিল ওর; কিন্তু গত কয়েক মাস ধরে কী যে হয়েছে, প্রায়ই নিজের রুমে নিজেকে বন্দি করে ফেলে। নিজেকে অপদার্থ মনে হয়, এমনকি ঘেন্নাও হয় নিজের প্রতি। জীবনের এই অধ্যায়টা এতটাই ভয়ংকর যাচ্ছিল যে, ওর স্কুল আর বন্ধুদের সঙ্গে সম্পর্কেও এর প্রভাব পড়তে শুরু করে। 

স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, যোগব্যায়াম—সবই করে দেখেছে সে; কিন্তু কিছুতেই যেন নিজেকে সেভাবে খুঁজে পাচ্ছিল না, যেভাবে পেলে এই যে বুকের ভিতর গভীর পাহাড় চেপে আছে, সেটা চলে যাবে। আর এর পিছনে কোনো কারণও সে খুঁজে পাচ্ছিল না। ওর সাইকোলজিস্ট শেষে ওকে আমার কাছে পাঠাল।

আমাদের কথা হলো। সে নিজেই খুব জোর দিয়ে বলছিল যে, তার এরকম মুডসুইং-এর সত্যিকার অর্থে কোনো কারণ নেই। জীবন ভালোই কাটছে, অভিযোগ করার মতো কিছুই হাজার চেষ্টা করেও খুঁজে পাচ্ছিল না সে। স্কুল ওর পছন্দের জায়গা, বন্ধুও অনেক। তার পরিবার বেশ সহানুভূতিশীল। টাকাপয়সার সমস্যা নেই, এমনকি শারীরিক অবস্থাও যথেষ্ট ভালো।

‘কত দিন হলো এরকম?' আমি জিজ্ঞেস করলাম।

“উমম, ঠিক বলতে পারব না। হয়তো বা... যদ্দূর মনে হয় এই বছরের শুরু

থেকে। অবশ্য আগে থেকেই কিছুটা হীনম্মন্যতায় ভুগতাম; কিন্তু এখন ব্যাপারটা আমাকে ভিতর থেকে একেবারে কুঁড়ে খাচ্ছে।' ‘আচ্ছা আমাকে একটা কথা বলো দেখি, অপ্রত্যাশিত কিছু কি ঘটেছিল এর

মধ্যে, একটু ভেবে দেখো তো।'

কিছুক্ষণ চিন্তা করে হেদার বলল – উহু, মনে হয় না। আমি আসলে ভেবেও তেমন কিছু পেলাম না।

জীবনে এরকম কিছু সময় আসে, যখন আপাতদৃষ্টিতে কোনো কারণ ছাড়াই প্রায় নিরীহভাবে কিছু লক্ষণ সামনে এসে দাঁড়ায়; তবুও আরেকবার জিজ্ঞেস করলাম,

হেদার, আরেকটু ভালো করে ভেবে দেখো। এই গত শরতে বা শীতের শুরুতে কি প্রিয় কাউকে বা কিছু হারিয়েছ বা আদরের পোষা প্রাণীটি মারা গেছে? ভয়ংকর বা বিপজ্জনক কিছু কি ঘটেছে? অথবা কোনো সম্পর্কে নতুন করে জড়ানো বা ভেঙে যাওয়ার ঘটনা? এমনও তো হতে পারে যে, তুমি মেরুদণ্ড শিরশির করা ভয়ংকর কোনো কিছুর ভিতর দিয়ে গিয়েছ!

ও অনেকক্ষণ চিন্তায় ডুবে রইল। একটু থেমে বলল—একটা ব্যাপার মাথায় আসছে। থ্যাংকসগিভিং প্রোগ্রামের সময় থেকে আমার একজন ‘ফ্রেন্ড উইথ বেনিফিট’ ছিল। আমি আসলে ব্যাপারটা নিয়ে কিছুটা দ্বিধাগ্রস্তও।

‘আচ্ছা, পুরো ব্যাপারটা একটু খুলে বলো দেখি।'

‘একটা পার্টিতে দেখা হয়েছিল ওর সঙ্গে। আর কেন জানি আমার ওকে খুব ভালোও লেগে গেল; তারপর থেকেই আমাদের এই বন্ধুত্ব চলতে থাকে। তবে ছোট একটা সমস্যা ছিল। আস্তে আস্তে আমি ওর প্রতি আবেগিকভাবে অনেকটা নির্ভরশীল হয়ে পড়ি। আমি চাইতাম ওর সঙ্গে আরও বেশি সময় কাটাতে। শপিং-এ যাওয়া, মুভি দেখা, গল্প করা—এসব। আমার কাছে এ সবকিছুই ছিল বন্ধুত্বের অনুষঙ্গ; কিন্তু সে মানা করত। তার মতে এসবের অর্থ দাঁড়াবে যে, আমরা

📝[১] এমন বন্ধু যার সাথে বিভিন্ন সময় বা উপলক্ষ্যে শারীরিক সম্পর্ক করা হয়।📝

রিলেশনশিপে আছি, যা সে চায় না। বুঝলাম না কাহিনী। মনে হলো যেন আমি “ফ্রেন্ড’ অংশটা পেলাম না; কিন্তু সে ঠিকই সব ‘বেনিফিট’ লুটে নিচ্ছে। আমি পুরো বিষয়টাতে হতভম্ব, আমার মাথায় ব্যাপারটা প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের মতো ঘুরপাক খাচ্ছিল। আমার কাছে ফ্রেন্ডশিপ মানে যেসব পাওয়া, তার কিছুই আমি পাচ্ছি না। কারণ সে একটা বাউন্ডারি সেট করে দিয়েছে, আবার অন্য দিক দিয়ে সে কিন্তু সব সুবিধাই নিচ্ছে, কারণ আমি তাকে কোনো বাউন্ডারি সেট করে দিইনি। পুরো ব্যাপারটা আমাকে শেষ করে দিচ্ছিল।'

হেদারকে সত্যিকার অর্থেই হতভম্ব মনে হচ্ছিল বিষয়টা নিয়ে।

‘আমার কি মনে হয় জানো হেদার?' আমি বললাম ‘এরকম মনে হওয়াটাই

স্বাভাবিক। এই যে জট পাকানো একটা অনুভূতি তোমার হচ্ছে, এরকম আরও

অনেকেরই হয়। সে যা চায়, তার পুরোটা তুমি উজাড় করে দিচ্ছ ঠিকই; কিন্তু তোমার চাওয়াটা অপূর্ণই রয়ে যাচ্ছে।' ‘হু, আমি এ ব্যাপারটা নিয়ে মারাত্মক মানসিক যাতনায় ভুগছি। তার সঙ্গে সময়

কাটিয়ে বাড়ি ফেরার পর খুবই একা অনুভব হয়।

আমরা অনেকক্ষণ কথা বললাম ওর বিষণ্নতা নিয়ে, । মনের ভিতরের তীব্র বাসনা আর তার সঙ্গে বাস্তবতার যে যোজন যোজন দূরত্ব, সেসব নিয়ে। তারপর জানতে চাইলাম,

আচ্ছা, তোমার কী মনে হয়—এই যে ইদানীংকালের এসব রাজ্যের বিষাদ তোমার ওপর ভর করে, মুডসুইং হয়, জগৎ-সংসার অসহ্য লাগে, বিষণ্নতা, নিজেকে ঘৃণা করা, এই সবকিছু কি কোনোভাবে ওই সম্পর্কের টানাপোড়েনের সঙ্গে সম্পর্কিত হতে পারে?

ও আমার কথাকে পুরোপুরি উড়িয়ে না দিয়ে বলল, জানি না, হতে পারে... আচ্ছা আপনার কী মনে হয়?
                               ড্যামেজ কন্ট্রোল

কুশ বছরের স্টেসি কাটাকুটি করতে পছন্দ করে। ভাববেন না যেন, রান্নার এ জন্য সবজি বা ক্র্যাফটিং-এর জন্য রঙিন কাগল্পে। নিজের শরীরে চলে তার এই কাটাকুটির অভিযান। না, সে সব সময়ই যে এমনটা করে ব্যাপারটা তা নয়; বরং যখন সে স্ট্রেসে থাকে, যেমন: ওর কোচ বা রুমমেটের সঙ্গে মন কষাকষি হলো, এসে ঝালটা মেটাবে যেয়ে নিজের চামড়ার ওপরে। হাত কাটার জন্য ছুরি, কাঁচি বা রেজর—এগুলো থেকেই কোনো একটা বেছে নেয় স্টেসি; তবে কাটার সময় সাবধান থাকে, যাতে শিরা না কেটে যায়। এখনই মরার কোনো ইচ্ছে ওর নেই। কেবল খানিকটা রক্তক্ষরণ হবে। নিজেকে কিছু যন্ত্রণা দেওয়া হলো, আর সঙ্গে জমে থাকা খেদটুকুও ঝাড়া হলো।

যাকে আমরা মেডিক্যালের ভাষায় SIB অর্থাৎ সেল্‌ফ ইনজ্যুরিয়াস বিহেইভিয়ার

বলে থাকি, তা নিয়েই স্টেসিকে রেফার করা হয়েছে আমার কাছে। স্টেসির মতো সমস্যায় ভোগে এরকম ভুক্তভোগীর সংখ্যা নেহাত কম নয়। অধিকাংশ মেয়েই আত্মপক্ষ সমর্থনে বলে থাকে, বাঁধভাঙা আবেগকে নিয়ন্ত্রণ

করতে না পেরে নিজেদের এমন ক্ষতি করে থাকে ওরা।

স্টেসির জীবনের গল্পটা আমি বেশ আগ্রহ নিয়ে শুনলাম। ও একজন অ্যাথলেট ছিল। একজন নিয়োগপ্রাপ্ত সাঁতারু। ওর দিন শুরু হতো ভোর পাঁচটায়। উঠেই ল্যাপের পর ল্যাপ প্র্যাকটিস। এরপর বিকেলে অন্তত দু-ঘণ্টা জিমে ওয়ার্ক আউট। শরীর ঠিক রাখাটাই ওর কাছে সব থেকে জরুরি। স্টেসিকে ভীষণ সতর্ক থাকতে হতো তার খাবারদাবারের ব্যাপারে। সব ধরনের প্রসেড ফুড আর এডিটিভ থেকে নিরাপদ দূরত্বে থাকতে হতো ভেজিটেরিয়ান হিসেবে। সেই সঙ্গে নিতে হতো প্রচুর পরিমাণে নিউট্রিশনাল সাপ্লিমেন্ট। না কোনো অ্যালকোহল, না নিকোটিন, না কোনো মারিজুয়ানা! এমনকি সোডাও না। সম্বল শুধুই বোতলজাত পানি৷

ক্যাম্পাসের বেশির ভাগ ছাত্রছাত্রীই যখন লাঞ্চে ট্যাকো, পিজা বা অন্য কোনো লোভনীয় আইটেম নিয়ে বসত, ওদিকে স্টেসির লাঞ্চ শুধুই ভেজিটেবল। দিনের পর দিন। ব্যাপারটা সহজ ছিল না ওর জন্য।

সে বেশ বুঝত, এই যে এত মেনে চলা, এত ধরাবাঁধা জীবন, বিনিময়ে তার প্রাপ্তির ঝুলিটাও অগ্রাহ্য করার মতো নয়। এত বড় প্রাপ্তির জন্য এতটুকু পরিশ্রম করাই যায়। তার স্বাভাবিক ওজন, নিয়ন্ত্রিত রক্তচাপ, আর পুলের দুর্দান্ত পারফরম্যান্স—সবই ছিল ঈর্ষা করার মতোই।

বাহ্যিকভাবে স্টেসির পরিবারকে মোটামুটি সফল এবং সুখী পরিবার বলা যায়। তারা যথেষ্ট দায়িত্বশীল। স্টেসি মা-বাবাকে সচরাচর পাশেই পেয়েছে, শুধুমাত্র ওই আবেগের জায়গাটুকু ছাড়া। মা নিজেও ডিপ্রেশনে ভুগছিলেন। একটি ভাই, স্টেসির চেয়ে বয়সে ছোট। ইতোমধ্যেই অ্যালকোহল আর ড্রাগে আসক্ত। এহেন পরিস্থিতিতে স্টেসি হয়ে উঠল ‘স্টার’, পরিবারের গর্ব আর অহংকারের কেন্দ্রবিন্দু। সেই সঙ্গে এক গ্যালাক্সি পরিমাণ প্রত্যাশাও চেপে বসল তার ওপর।

কাটাকুটির শুরুটা হয়েছিল কলেজের প্রথম বর্ষে।

একটা গুরুত্বপূর্ণ প্রতিযোগিতা ছিল সেদিন। স্টেসি মোটেও ভালো পারফর্ম করতে পারেনি। কোচ যথেষ্ট ক্ষেপে গিয়েছিলেন। ফাইনালের আর বেশি দেরি নেই। ওদিকে তার একটা রিসার্চ পেপারের ডেডলাইনও ঘাড়ের কাছে নিঃশ্বাস ফেলছে। এর মধ্যে আবার রুমমেটের সঙ্গে বিচ্ছিরি রকমের এক দফা ঝগড়া হয়ে গেল।

বাড়িতে ফোন দিয়েছিল স্টেসি। মনে হচ্ছিল সব মিলিয়ে ওর দম বন্ধ হয়ে আসছে। একটু সাপোর্ট, পরিবারের একটু সান্নিধ্য ভীষণ দরকার ছিল ওই মুহূর্তটায়; কিন্তু আর কিছু বলার সুযোগ হলো না। আবার অঘটন ঘটিয়েছে তার ভাই শ্যন। বাবার গাড়িটা পুরোটাই গেছে। এত কিছুর মধ্যে স্টেসি আর নতুন করে ওর বাবা মায়ের চিন্তার কারণ হতে চায়নি। তা ছাড়া ভাইয়ের সমস্যার তুলনায় তারটা তেমন বড় কিছুও নয়।

সেদিন সন্ধ্যায় ফুঁসে ওঠা রাগ আর হতাশায় ডুবে থাকা স্টেসি কী মনে করে একটা প্লাস্টিকের ছুরি নিল হাতে। আচ্ছামতো খোঁচাখুঁচি করল নিজের কব্জিতে।

অবাক হয়ে স্টেসি দেখল, এতে ওর বরং ভালো লাগছে। মাথার ভিতর রাগের যে বুদ্ৰুদটা ওকে অমন ছটফট করাচ্ছিল, সেটা যেন আস্তে আস্তে শান্ত হয়ে এলো। এরপর থেকে যখনই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে যেত, স্টেসি বারে বারে অবলম্বন করত নিজেকে শান্ত করার অদ্ভূত এই কৌশল।

আমাদের সেন্টারে প্রায় বছর খানেক স্টেসির আসা যাওয়া ছিল। তারপর তাকে পাঠানো হয় সাইক্রিয়াটিক ইভালুয়েশনের জন্য। কিছু থেরাপির মাধ্যমে তার যথেষ্ট অগ্রগতিও হয়েছিল। ওর সোশ্যাল ওয়ার্কার ওকে সাহায্য করছিল ওর মানসিক কষ্টের জায়গাগুলো চিহ্নিত করতে। সেগুলো নিয়ে ভাবতে, বলতে, প্রয়োজনে লিখে রাখতে। ধীরে ধীরে উপলব্ধি এলো তার মধ্যে। নিজের বিধ্বংসী সত্তার সঙ্গে মোকাবিলা করাটাও শিখে নিতে লাগল। এরপরই এলো সেই দুঃসংবাদ, যা হতাশা থেকে তিল তিল করে ওর উঠে দাঁড়ানোর স্বপ্নটাকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে দিলো প্রায়।

শিক্ষার্থীদের জন্য আয়োজিত বাৎসরিক স্বাস্থ্য পরীক্ষায় অংশগ্রহণের পরপরই স্টেসিকে তলব করা হলো। ওর প্যাপ টেস্টের রিপোর্ট স্বাভাবিক ছিল না। ধারণা করা হচ্ছিল, স্টেসি এইচপিভি দ্বারা সংক্রমিত, যা একটি যৌনবাহিত ইনফেকশন। তাকে দ্রুতই একজন গাইনোকলোজিস্টের শরণাপন্ন হতে হবে এবং খুব সম্ভবত বায়োপসি করতে হবে।

স্টেসি বলতে লাগল, বিস্ময়ে আমি বাকরুদ্ধ হয়ে গেলাম। প্রথম বার যখন এটার ব্যাপারে আমাকে জানানো হলো, আমি কিছুতেই মেলাতে পারছিলাম না— কীভাবে সম্ভব? আমি তো অল্প কয়েকজনের সঙ্গে অন্তরঙ্গ হয়েছি কেবল। তা ছাড়া প্রত্যেকেই সব সময় উপযুক্ত প্রোটেকশন অর্থাৎ কনডম ব্যবহার করত। সত্যিই বিশ্বাস করতে পারছি না। আমি জানি, এটা সব থেকে কমন এসটিডি। প্রতি বছর নাকি এতে দশ লক্ষেরও বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়। 

আরো পড়তে অথবা দেখতে :- অনুগ্রহ করে Hardcopy ক্রয় করুন। 

অনুরোধঃ- বই : আনপ্রটেক্টেড লেখক : মিরিয়াম গ্রসম্যান এম.ডি এর প্রি অর্ডার চলছে ... তাই আনপ্রটেক্টেড বইটি PDF Free Download চাহিয়া লেখকদের নিরুৎসাহিত করিবেন না।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ