বুকের ভেতর বিষাদপুর : সোয়েব আল হাসান | Buker Bhetor Bishadpur by Shoeb Al Hasan

বইয়ের নাম : বুকের ভেতর বিষাদপুর
লেখক: সোয়েব আল হাসান
প্রকাশনী : তাম্রলিপি 
প্রথম প্রকাশ : ফেব্রুয়ারি, ২০২২
মুদ্রিত মূল্য : ৩২০ টাকা
'বুকের ভেতর বিষাদপুর ' বইটি এক কথায় অসাধারণ লেগেছে। উপন্যাসে অনেক গুলো চরিত্র। প্রত্যেক টা চরিত্র কে লেখক সুন্দর ভাবে ফুটিয়ে তুলেছে। উপন্যাসের প্রধান চরিত্র কয়ন। পুরো নাম কয়ন আল কাকসি। কয়ন নিজের ইচ্ছে মতো চলতে ভালোবাসে। কারো অধীনে থাকা থাকতে তার ভালো লাগে না। উপন্যাসের প্রথম অংশ কে অনেক হাস্যকর করেছিল 'অন্তু ' চরিত্র টি।কিছু কিছু লাইনে হাসি থামাতে পারছিলাম না। উপন্যাসের আরেকটি চরিত্র হলো মেঘাদ্রিতা। মেঘাদ্রিতার কয়নের প্রতি ভালোবাসাটা ছিলো প্রকাশিত কিন্তু কয়নের ভালোবাসা অপ্রকাশিত ই থেকে যায়। গ্রামের পরিবেশ টা উপন্যাস কে আরো সুন্দর করছে। পড়ার সময় বার বার আমার গ্রাম কেই কল্পনা করেছি। উপন্যাসের শেষ অংশ যে এতো বেদনাদায়ক হবে,প্রথম অংশ পড়ে তা কল্পনা করিনি।শেষ অংশ পড়তে পড়তে কখন যে চোখ ভিজে গেছে খেয়ালই করিনি।

লেখকের লেখার ভক্ত আমি অনেক আগে থেকেই। 'বুকের ভেতর বিষাদপুর' পড়ে ভালো লাগা আরো হাজার গুণ বেড়ে গেছে। চাইলে এক দিনেই বইটা পড়া শেষ হবে। যারা যারা বইটা পড়েন নি তারা ধার করে নিয়ে হলেও বইটা পড়েন। আশা করি ভালো লাগবে।

প্রিয় কিছু লাইন: 
*রূপবতী মেয়েদের চেয়ে গুণবতী মেয়েরা কতই না ভালো! রূপ না থাক,গুণ দিয়ে তারা তাদের প্রিয় মানুষগুলোকে সারাজীবন মোহিত করে রাখে।

*ভাঙা আয়নায় নাকি মুখ দেখতে নেই,আয়ু কমে যায়।তাই আর আয়না দেখি না।আয়ু সংরক্ষিত থাক।কেন জানি অনেক দিন বাঁচতে ইচ্ছে করে আমার।

*এলোমেলো চিন্তা যখন মনের মাঝে এসে উঁকি দেয় তখন নিজেকেই চেনা কষ্ট হয়।বেশির ভাগ মানুষ ই ইহলোকের মায়া ত্যাগ করে নিজেকে চেনার আগেই।

সবশেষে লেখকের জন্য অনেক দোয়া ও ভালোবাসা। আরো অনেক সুন্দর সুন্দর বই আমাদের উপহার দিন।

[বি.দ্র] : ভুল ত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
রিভিউ দিয়েছেন : 💕 রাফিয়া রিয়া

বইয়ের নাম: বুকের ভেতর বিষাদপুর
লেখক : সোয়েব আল হাসান
ধরণঃ উপন্যাস 
প্রথম প্রকাশ: ফেব্রুয়ারি ২০২২
প্রকাশক: এ কে এম তারিকুল ইসলাম রনি
প্রকাশনী : তাম্রলিপি
প্রচ্ছদ: এইচ এম খালিদ 
মলাট মূল্য: ৩২০
ছবি: সংগৃহীত

                  #বুক রিভিউ
          বুকের ভেতর বিষাদপুর

এক কাপ অভিমানী চা ও মেঘমানবী এই দুটো বই পড়ার পর লেখকের লেখার প্রতি একরকম ভালো অনুভব করতে শুরু করি।সাবলীল কথায়,সাধারন ঘটনাগুলোকে অসাধারন ভাবে ফুটিয়ে তুলবার অন্য রকম একটা ক্ষমতা রাখেন তিনি।

তাই অপেক্ষা করছিলাম তার পরবর্তী বইটি কবে হাতে পাবো।সব অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে কিছুদিন আগে প্রকাশিত হয়েছে তার প্রথম উপন্যাস বুকের ভেতর বিষাদপুর।ইতোমধ্যে বইটি হাতেও পেয়েছি।ব্যস্ততার কারনে বইটি পড়ে শেষ করতে একটু সময় লাগলো।

এই বইটির প্রতি আগ্রহের আরেকটা কারন হচ্ছে বইটির কিছু গল্প আগে পেইজে পড়েছি এবং তুহিন ভাইয়া বইটি পড়ে তার অনুভূতি প্রকাশ করে সেটি দেখে আমার ভেতর এক অদ্ভুত টান অনুভব করছিলাম।তাছাড়া লেখকের শব্দ চয়নের ফ্যান আমি আগে থেকেই।তাই ভাবছিলাম এত চমৎকার গল্পের পাঠক না হয়ে উপায় কি??

# পাঠ_প্রতিক্রিয়া

"বুকের ভেতর বিষাদপুর" উপন্যাসটি আমার কাছে দারুন এক অভিজ্ঞতা।লেখকের লেখনীতে ফুটে উঠেছে অসাধারন ভাবে প্রতিটি চরিএ। উপন্যাসটিকে প্রেমের উপন্যাস পুরোপুরি বলা যায় না।কারন এখানে অনেক গুলো চরিএ নিয়ে উপন্যাসটি লেখা।এই উপন্যাসের সব থেকে মজার চরিএ হচ্ছে অন্তু।আর মূল চরিএ যেটি সেটি হচ্ছে কয়ন নামক এক যুবক।যে তার জীবনের উদ্দেশ্য নিয়ে কখনো ভাবে না।সে সব সময় নিজের খেয়াল খুশিতে চলতে পছন্দ করে।গল্পে লেখক কয়ন চরিএটা এত সুন্দর করে ফুটিয়ে তুলেছেন যেন ঘটনাগুলো আমি চোখের সামনে ঘটতে দেখছি।কয়ন ছেলেটি বেশ মাতৃভক্ত ছিল।কয়নের পরীক্ষা চলছিল হঠাৎ তার ভাই অন্তু এসে জানায় চাচী খুব অসুস্হ হয়ে পড়েছে এই কথা শোনা মাএই কয়ন বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হয় পরীক্ষা বাদ দিয়ে।এই যে কয়নের মায়ের জন্য কয়নের যে ভালোবাসা সেই ব্যাপারটি আমার হৃদয় স্পর্শ করেছে।
বইটির শুরুটা মজার থাকলেও কোথাও গিয়ে বিষাদের ছায়ায় ভরপুর ছিল।যে ছায়ার মধ্য থেকে কয়ন চরিএটি আলোর মতো ফুটে ওঠেছে সুন্দর ভাবে।

উপন্যাসে অন্যতম আর এক চরিএ মেঘাদ্রিতা।মেঘাদ্রিতা হচ্ছে নাজিম সাহেবের মেয়ে।কোন এক পাবলিক বাসে প্রথম দেখা হয় মেঘাদ্রিতার সাথে কয়নের।কেউ কাউকে আগে থেকে চেনে না।এর পর থেকে কোন না কোন ভাবে বার বার দেখা হয়ে যায় কয়ন আর মেঘাদ্রিতার।একদিন মেঘাদ্রিতা বিপদে পড়ে সেটা কয়নকে জানায় কিন্তু কয়ন মেয়েটিকে সেভাবে চেনে না ভালো করে তবুও তার একবাক্যে বলা কথায় কয়ন অস্হির হয়ে গেল তাকে উপকার করার জন্য।একজন অচেনা মেয়ের জন্য তার যে অনুভূতি সেটি প্রকাশ পেয়েছে এই উপন্যাসে।কথা হতে থাকে কয়নের সাথে মেঘাদ্রিতার। চলতে থাকে কয়ন আর মেঘাদ্রিতার গল্প।মেঘাদ্রিতা কয়নকে ভালোবাসার কথা প্রকাশ করলেও কয়নের আর প্রকাশ করা হয়না ভালোবাসার কথা।অপ্রকাশিত থেকে যায় কয়নের ভালোবাসা।।।

এখানে বন্ধুত্বের ভালোবাসা, প্রিয়জনের ভালোবাসা আবেগ, অনুভূতি, খারাপ লাগা, ভালো লাগা সবটা জুড়ে বুকের ভেতর
 বিষাদপুর উপন্যাস।

প্রতিটি ঘটনা এত বাস্তবিক যে পড়তে গিয়ে মনে হতে পারে আরে এই ঘটনাটা আমার সাথে ঘটেছে।।পুরো উপন্যাস পড়ে চোখের কোনে খানিকটা জল জমে গিয়েছিল আমার।

# প্রিয় কিছু লাইন:

. রুপবতী মেয়েদের চেয়ে গুনবতী মেয়েরা কতই না ভালো! রুপ না থাক গুন দিয়ে তারা তাদের প্রিয় মানুষগুলোকে সারা জীবন মোহিত রাখে।রুপ মানুষকে কিছু সময় আচ্ছন্ন করে রাখে আর গুন সারা জীবন করতেই হয়।

.বৃদ্ধা হাসি হাসি মুখ করে ভালোবাসার দৃষ্টিতে তার স্বামীর দিকে তাকাবেন।আর বৃদ্ধ চায়ে চুমুক দেবেন স্ত্রীর চোখে তাকিয়ে।আহা! ভালোবাসা কত রকমের।জীবন ফুরিয়ে যায়, ভালোবাসা ফুরায় না।
# উৎসর্গ পএ: 

বই সবাই লেখে তবে এত আবেগ নিয়ে কেউ উৎসর্গ পএ লিখে কিনা আমার জানা নেই।উৎসর্গ পএটি ভীষন ভালো লেগেছে।।।বাবা মায়ের সাথে সন্তানে বন্ধন এমন অটুট থাকুক আজীবন।।।

# লেখককে নিয়ে কিছু কথা:

লেখক সোয়েব আল হাসানের লেখার ভাষা সাবলীল।কাহিনীর গভীরে প্রবেশ করতে পাঠকের খুব বেশী বেগ পেতে হয় না।বুকের ভেতর বিষাদপুর উপন্যাসটি লেখকের প্রথম উপন্যাস।সে অনুযায়ী তিনি চমৎকার কাজ করেছেন।পাঠক মাএই তা স্বীকার করতে বাধ্য হবে আশা করি।।।

# সমাপ্তি:

একটা গল্পের সমাপ্তিতে হয়তো দেখা যায় সম্পর্কের মিল হচ্ছে বা সম্পর্ক ছিন্ন হচ্ছে কিন্তু বুকের ভেতর বিষাদপুর গল্পটা যেভাবে শেষ হয়েছে সেটা এভাবে শেষ না হলেও পারতো।।।

সর্বোপরি একটা কথা বলতে চাই লেখক কি লিখেছেন এটা আপনি? Rokomari Link

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ