ইমাম তিরমিযী রহ এর সংক্ষিপ্ত জীবনী
জন্ম ও বংশ পরিচয় : ইমাম তিরমিযী রহ . - এর নাম মুহাম্মদ । পিতার নাম ‘ ঈসা , দাদার নাম সাওরাহ । উপনাম আবু ‘ ঈসা । পুরো নাম আবু ঈসা মুহাম্মদ ইবনে ‘ ঈসা ইবনে সাওরাহ ইবনে মুসা আত তিরমিযী রহ .। তার পূর্বপুরুষগণ মরদ শহর থেকে খুরাসানের ( বর্তমান তাজিকিস্তানের ) ‘ তিরমিয ’ নামক শহরে এসে বসতি স্থাপন করেন । খুরাসান ছিলো অসংখ্য ইসলামী মনীষীর জন্মভূমি । অনেক ইমাম সেখানে জন্মগ্রহণ করেছেন । এ জন্য এ শহরকে মনীষীদের শহর ' বলা হয় । এই শহরে ইমাম তিরমিযী রহ . ২০৯ মতান্তরে ২১০ হিজরীতে জন্মগ্রহণ করেন ।
শিক্ষা জীবন :
তিনি বহু ইমামের জন্মভূমি নিজ শহর তিরমিযেই প্রাথমিক শিক্ষা শুরু করেন । এরপর হেযায , মিসর , সিরিয়া , কূফা , বসরা ও বাগদাদসহ অনেক দেশ ও জনপদে সফর করে তিনি উলূমে নববী হাসিল করেন । ইমাম বুখারী , মুসলিম , আবূ দাউদ রহ . ছাড়াও আরো যাদের কাছ থেকে তিনি হাদীছ শিখেছেন তাদের অন্যতম হলেন , আহমদ ইবনে মানী ’ , মুহাম্মদ ইবনে বাশশার , মুহাম্মদ ইবনুল মুছান্না , হান্নাদ ইবনুস সারী , মাহমুদ ইবনে গায়লান , কুতাইবা ইবনে সাঈদ প্রমুখ তার অনেক শায়খ ইমামগণও তার কাছ থেকে হাদীস শুনেছেন । হাদীস এবং উলূমে হাদীসে তার অগাধ জ্ঞান ও পাণ্ডিত্যের স্বীকৃতি স্বরূপ তার শায়খ ইমাম বুখারী রহ . - এর এ মন্তব্যই যথেষ্ট যে , ' তুমি আমার কাছ থেকে যতটুকু ফায়দা অর্জন করেছো আমি তোমার কাছ থেকে তার চেয়ে বেশী ফায়দা অর্জন করেছি । ইমাম তিরমিযী রহ . জামে ' তিরমিযীর এক জায়গায় বলেছেন , ' মুহাম্মদ ইবনে ইসমাঈল ( বুখারী ) এ হাদীস আমার কাছ থেকে শুনেছেন ' ।
প্রখর মেধা শক্তি
ইমাম তিরমিযী রহ . - এর মেধা ও স্মরণ শক্তি ছিল অতুলনীয় বরং প্রবাদতুল্য । বিশ্বে সর্বকালের সেরা মেধা ও প্রতিভা সম্পন্ন ব্যক্তিদের মধ্যে তিনি ছিলেন অন্যতম । তার মেধা শক্তির প্রমাণ হিসাবে জীবনী গ্রন্থগুলোতে অনেক ঘটনাই বর্ণিত আছে । শাহ আব্দুল আযীয মুহাদ্দেসে দেহলবী রহ . । গ্রন্থে একটি ঘটনা উল্লেখ করেছেন । ইজাজাতের ভিত্তিতে কোন এক শায়খের নিকট কিছু হাদীস রেওয়ায়াত করার অনুমতি লাভ করেন । কোন এক সফরে ঐ শায়খের সাথে তার সাক্ষাৎ ঘটে । তাই তিনি চাইলেন , ঐ দু'টি জুয সরাসরি শায়খের নিকট থেকে শুনে নিবেন । শায়খ তার এ আবেদনে সারা দিয়ে বললেন , ঐ জুয দু’টি নিয়ে আসো । কিন্তু দুর্ভাগ্য যে ,
ঐ সফরে জুয দু'টি নিয়ে আসা হয়নি । তাই তিনি সাদা কাগজ নিয়ে বসে পড়েন । তিনি এমনভাবে শায়খের হাদীস শুনছিলেন যেন তিনি শায়খের বর্ণনার সাথে তার লিখিত পাণ্ডুলিপি এমনভাবে মিলিয়ে দেখছেন । কিন্তু হঠাৎ শায়খের দৃষ্টি যখন ঐ সাদা কাগজে নিবদ্ধ হল তখন তিনি নাখোশ হয়ে বললেন , এ তোমার লজ্জা করছে না ? ' তখন ইমাম তিরমিযী রহ . তাকে কিতাব না আনার বিষয়টি অবহিত করেন এবং বলেন , তবে আপনি এতোক্ষণ যত হাদীস শুনিয়েছেন তার সবগুলোই আমার হুবহু স্মরণ আছে । শায়খ তখন বললেন , ‘ বোধ হয় আগে থেকেই তুমি এ হাদীসগুলো জানতে ? ইমাম তিরমিযী রহ . বললেন , তাহলে নতুন করে কিছু রেওয়ায়াত করুন , আমি তা শুনিয়ে দেই । শায়খ নতুন চল্লিশটি হাদীস শুনালেন , শায়খের মুখ থেকে শুনে তিরমিযী রহ . ও হাদীসগুলোও হুবহু শুনিয়ে দিলেন । শায়খ তখন অভিভূত হয়ে বললেন , slee evf , তোমার মতো ( ধীশক্তির অধিকারী ) আর কাউকে দেখিনি । | তার প্রখর মেধা শক্তির আরেকটি মশহুর ঘটনা আছে । তিনি শেষ বয়ষে দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলেন । দৃষ্টি শক্তি হারানোর পর একবার হজ্বের সফরে যাচ্ছিলেন । পথিমধ্যে এক জায়গায় হঠাৎ মাথা নীচু করে পথ চললেন । এতে সফরসঙ্গীরা বিস্মিত হয়ে মাথা নীচু করার কারণ জানতে চাইল । তিনি বললেন কেন , এখানে না একটি গাছ আছে ? পথের ওপর ঝুঁকে পড়ায় পথচারীদের মাথা নীচু করে চলতে হয় । তাই যদি না হয় আমার কথা যদি ভুল হয় তাহলে আমি আর হাদীস রেওয়ায়াত করবো না । ধরে নেবো আমার স্মরণ শক্তি হ্রাস পেয়েছে । সফরসঙ্গীরা স্থানীয় বয়স্ক লোকদের কাছে জিজ্ঞেস করে জানতে পারল , সত্যিই সেখানে একটি গাছ ছিলো , পথচারীদের পথ চলতে অসুবিধা হয় বিধায় তা কেটে ফেলা হয়েছে । ইমাম তিরমিযী রহ . তখন শান্ত হলেন এবং আল্লাহর শোকর আদায় করলেন । তার প্রখর মেধা ও অসাধারণ ধীশক্তির আরো অনেক ঘটনা জীবনী গ্রন্থগুলোতে পাওয়া যায় । রচনাবলী : ইমাম তিরমিযী রহ . - এর রচিত অমূল্য গ্রন্থসমূহের অন্যতম হল জামে ’ তিরমিযী । যার পুরো নাম all , ii je amay andle all so all Jsraes ijhen is reall রেজ ell কেনা alleil , ফিকহী দৃষ্টিকোন থেকে এ কিতাব যেমন গুরুত্বপূর্ণ তেমনি উলূমে হাদীসের দৃষ্টিকোণ থেকেও তা অতি গুরুত্বপূর্ণ । তার অপর কটি গ্রন্থ হল , SJI JWall , niaji jaji , jihadi ওফাত ঃ হাদীসের এই মহান ইমাম ১৩ রজব সোমবার ২৭৯ হিজরী সনে ইন্তেকাল করেন । আল্লাহ তাঁর কবরকে নূর ও রহমতে পরিপূর্ণ করুন । আমীন ।
0 মন্তব্যসমূহ
ℹ️ Your Opinion is very important to us, Please Writer your comment below about this Post.....