জলরঙ লেখকঃ সুব্রত কুমার মোহন্ত | Jolrong by Subrata Kumar Mohanto

জলরঙ বই রিভিউ লেখকঃ সুব্রত কুমার মোহন্ত | Jolrong by Subrata Kumar Mohanto Books  জলরঙ উপন্যাস রিভিউ ও পিডিএফ PDF Download no Available

বইয়ের নামঃ জলরঙ
লেখকঃ সুব্রত কুমার মোহন্ত 
প্রকাশনীঃ কলম যোদ্ধা প্রকাশনী
বইয়ের ধরণঃ সামাজিক এবং চিরায়িত উপন্যাস!
ISBN : 9789849507826
Edition : 1st Published, 2020
পৃষ্ঠাঃ ১৪৪
মূল্যঃ ৩০০৳

মূল গল্প....
নবনীতা অতি সাধারণ একটি মেয়ে । যে কৈশোরে প্রেমের সংস্পর্শে এসেছে , ভালোবেসেছে কিন্তু সে প্রেম তার আত্মসম্মানে আঘাত হানতে চেয়েও পারেনি । আত্মসম্মান রক্ষার্থে অবলীলায় বিসর্জন দিয়েছে নিজের বহুদিনের ভালোবাসাকে । বাবা মায়ের অনেক আদরে বড় হওয়া মেয়েটি যখনই সংসার নামক চক্রে জড়িয়ে পড়লো , তখনো সে সুনিপুণ দক্ষতার সঙ্গে সম্পর্কগুলোকে বিনি সুতোর মালার মতো জুড়ে দিলো । স্বামী , সন্তান নিয়ে যেন তার সংসার নয় , চাঁদের হাট ! কিন্তু মানুষ বদলায় , সম্পর্কের মানে বদলায় , জীবনের গতি বদলায় । নবনীতার সাজানো - গোছানো জীবনেও হঠাৎ প্রতারণা নামক ঝড় এলো । সাধারণত , মানুষ প্রতারিত হলে ভেঙে পড়ে , আত্মহত্যার পথ বেছে নেয় কিন্তু এটা নবনীতার গল্প । নিজের প্রতি হওয়া সব অন্যায়কে সহ্য করে ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প । মেয়ে বলে নিজেকে সমাজের চিরাচরিত নিয়মে বেঁধে না ফেলার গল্প । দুঃখ নামক মারণবিষ সেবন করে সুখ নামক রক্তিম সূর্যের সম্মুখীন হবার গল্প । গল্পটা নবনীতার , একজন সাধারণ নারী থেকে যে হয়ে উঠেছে অসাধারণ !

         সুব্রত কুমার মোহন্ত পরিচিতি 
জলরঙ বই রিভিউ লেখকঃ সুব্রত কুমার মোহন্ত | Jolrong by Subrata Kumar Mohanto Books  জলরঙ উপন্যাস রিভিউ ও পিডিএফ PDF Download no Available
লেখক : সুব্রত কুমার মোহন্ত । পিতা সুশীল কুমার মোহন্ত । মাতা ঝরনা রাণী মোহন্ত । স্থায়ী ঠিকানা : শিবগঞ্জ , বগুড়া । বাবা সাহিত্যের ছাত্র ছিলেন বলে , ছোটবেলা থেকেই তাঁর কাছে সাহিত্যের পাঠ শুরু । এরপর গল্প , কবিতা , উপন্যাস পড়া এবং লেখালেখির শুরু । “ জলরঙ ” লেখকের প্রথম প্রকাশিত উপন্যাস । ইতিপূর্বে লেখকের একক কবিতার বই “ বৃত্ত বন্দি বৃষ্টি ” , “ ভালোবাসার জল ” , “ ফাগুনের কাছে শ্রাবণের চিঠি ” প্রকাশিত হয়েছে ।

               জলরঙ বই রিভিউ

🌼প্রারম্ভিক: "জলরঙ"- নাম শুনলে আমাদের চোখে তা দিয়ে আকাঁ খুব সুন্দর সুন্দর চিত্রকর্ম ভেসে উঠে।আবার এই রং দিয়ে আঁকা চিত্রকর্মের উপর একটু পানি পড়লেই খানিকটা ধুয়ে মুছে যায়।আমাদের জীবনটাও ঠিক জলরঙে আঁকা ছবির মতোই রঙিন,যা সবাই দেখতে পায়।কিন্তু তারা দেখতে পায় না, কিভাবে সে রঙ গোপনে ধুয়ে যায় প্রতিদিন।আমি মনে করি, লেখক বইটির নামকরণে সার্থক হয়েছেন।
গল্পটি নবনীতার,একজন সাধারণ নারী থেকে যে হয়ে উঠেছে অসাধারণ! 

🌼প্রধান চরিত্র:
১.নবনীতা
২.রঙ্গন
৩.মিতা
৩.মৌলি বেগম(নীতার মা)
৪.মিলন রহমান(নীতার বাবা)
৫.শিমুল,রাহুল,সালেহার মা
এছাড়াও বেশ কিছু পাশ্ব এবং ক্ষনস্থায়ী চরিত্র রয়েছে!

🌼মূল কাহিনি সংক্ষেপ:
নবনীতা অতি সাধারণ শিক্ষিত একটি মেয়ে যে স্বাভাবিক ভাবেই কৈশোরে প্রেমের সংস্পর্শে এসেছে।ভালোবেসেছে, কিন্তু সে প্রেম তার আত্মসম্মানে আঘাত হানতে চেয়েও পারে নি।আত্মসম্মান রক্ষার্থে অবলীলায় বিসর্জন দিয়েছে নিজের বহু দিনের ভালোবাসাকে।
বাবার পছন্দে রঙ্গনকে বিয়ে করে মেয়েটি যখন সংসার নামক চক্রে জড়িয়ে পড়লো,তখনও সে সুনিপুণ দক্ষতার সাথে সম্পর্কগুলোকে বিনি সুতোর মালার মতো জুড়ে দিলো।স্বামী সংসার নিয়ে যেন তার সংসার নয়,চাঁদের হাট!

কিন্তু সময় যেমন পরিবর্তনশীল মানুষও তেমনি পরিবর্তনশীল।অনেক বাঁধা বিঘ্নতা পেরিয়ে নবনীতা যখন জীবনকে সাজিয়ে গুছিয়ে নিয়েছে,ঠিক তখনি বিবাহিত জীবনের কয়েক বছর পর হঠাৎ করে তার জীবনেও প্রতারণা নামক ঝড় এলো।
তবে নবনীতা ভেঙে পরেনি। অন্যদের মতো আ*ত্ম*হ*ত্যা* -র পথও বেছে নেয়নি।
কারণ এটি নবনীতার গল্প!নিজের প্রতি হওয়া সব অন্যায়কে সহ্য করে ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প।
সমস্ত বাঁধাকে তুচ্ছ করে জীবন নামক যুদ্ধে জয় হওয়ার গল্প।মেয়ে বলে সমাজে অবহেলিত না হয়ে বরং পূর্নাঙ্গ শিক্ষিত হয়ে নিজের জীবনকে এমন এক স্থানে দাঁড় করানোর গল্প,যেখানে সমাজের চোখে একজন সম্মানি ব্যক্তি নবনীতা। জীবনের শেষ পরিনতি কখনো তাকে হাসিয়েছে কখনো বা নিজের জীবনের কিছু অপূর্ণতার কথা ভাবিয়ে কাঁদিয়েছে!তবে সবকিছু মিলিয়েই এ যেনো এক অসাধারণ নারী! 🌼

🌼ব্যক্তিগত পাঠ্যানুভূতি:
 সমাজবিজ্ঞানের ভাষায় একটি কথা আছে,"প্রত্যেকটি ভালো মানুষ ভালো হয়,খারাপ হওয়ার সুযোগের অভাবে!"
আমাদের চারপাশে এমন অনেক মানুষ আছে,যারা আামাদের মাঝে বছরের পর বছর ভালো একজন মানুষ হিসেবে থাকে, অর্থচ সুযোগ পেলেই তাঁরা খারাপ হবার পথও বেছে নেয় যা আমরা ঘুনাক্ষরেও টের পাইনা!
বইটি পরার পর আমি মনে করি,সমসাময়িক পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের সকলের উচিত বইটি একবার হলেও পরে দেখা।বর্তমান সময়ে ধোঁকা,অভিনয়,খারাপের মুখোশ পরে আমাদের মাঝে ভালো সেজে থাকা, এগুলো যেনো অহরহ!তবে ঘুরে দাঁড়ানোর মতো মানসিক বল যদি সকলেরই থাকতো তাহলে হয়তো যেকোনো পরিস্থিতিতেই নবনীতার মতো জীবনকে সুন্দর একটা অবস্থানে গিয়ে দাঁড় করাতে পারতো। উপন্যাসের শুরুতে লেখক সমসাময়িক ঘটনার মতো খুব স্বাভাবিক জীবনযাত্রা তুলে ধরেছেন।তবে যত এগিয়েছি ততো আগ্রহ জন্মেছে।বারবার নিজেকে নীতার স্থানে দাড় করিয়ে কখনো পুলকিত হয়েছি বা কখনো রোমাঞ্চিত।

🌼পরিশিষ্ট: আমাদের সমাজের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এরকম অসংখ্য নবনীতা!দুঃখ নামক মরণবিষ সেবন করে সুখ নামক রক্তিম সূর্যের সম্মুখীন হবার জন্য চিরকাল অম্লান হয়ে থাকবে আমাদের সমাজের নবনীতারা!

প্রিয় কিছু লাইন🌼-

""হতে পারতো,
তুলো তুলো মেঘ ভেসে এসে
একটি শরৎ সন্ধ্যা,
অথবা এক জোড়া শালিকের ডানা মেলা,
অথবা চঞ্চুতে কুটো ধরে উড়ে চলা কৃষ্ণ ফিঙে। 
হয়নি।

হয়েছে-
থৈ থৈ জল ছাপানো খরস্রোতা নদী
মেঘ জমে জমে নিকষ কালো অন্ধকার 
শিকারীর শরে বিদ্ধ নীড়ে ফেরা পাখি।"""

ব্যক্তিগত রেটিং-০৯.৫/১০
রিভিউ কারীর নাম💕বুশরা খানম মুমু

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ