লেখক : আবদুল্লাহ বিন মুহাম্মাদ
প্রকাশনী : নিয়ন পাবলিকেশন
বিষয় : ইসলামি উপন্যাস
সম্পাদক : উবায়দুল হক খান
পৃষ্ঠা : 125, কভার : হার্ড কভার
প্রদীপ্ত পথের সন্ধানে
ফাইজা : ইসলামপূর্ব যুগে একজন নারী ছিল শুধুই ভোগপণ্য। তখন বাজার বসত নারীবিক্রির। লুটপাট করে কাফেলার নারীদের বিক্রি করা হতো—সস্তা পণ্য হিসেবে। যখন যে, যেভাবে চাইত ভোগ করতে পারত। নিজ স্ত্রীকে খেলার বস্তু করতে দ্বিধা করত না। স্ত্রীকে বাজি রাখত। উপহার হিসেবে দিয়ে দিত। কন্যাসন্তান জন্মালে তা নিজের জন্য অভিশাপ ভাবত। পরিণামে জীবন্ত দাফন করে দিত। এমনই ঘটত ইসলামপূর্বযুগে একজন নারীর সাথে।
নুসাইবা : আচ্ছা থাম তো। তুই যে এসব বলছিস; এসবের কোনো প্রমাণ আছে, তোদের কুরআন ছাড়া?
ফাইজাকে থামিয়ে প্রশ্ন করল নুসাইবা।
🚫 এই বইটির সম্পূর্ণ গল্পগুলো উপভোগ করতে অনুগ্রহ করে Hardcopy ক্রয় করুন।
ফাইজা : নুসাইবা, প্রথমত প্রমাণ হিসেবে আমাদের কাছে কুরআনই যথেষ্ট। আর তোর বোঝার জন্য অমুসলিম এবং নাস্তিক ঐতিহাসিকদের কিছু কথা তুলে ধরার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছি।
রবার্ট স্পেন্সার, স্যার উইলিয়াম মুর, গিবন, তাদের বর্ণনায় উল্লেখ করেন— ইসলামপূর্ব আরব ছিল রুক্ষ। নারীদের জন্য হিংস্রতা আর ভীতির এক কলঙ্কময় ইতিহাস। নারীদের নারী কম পণ্য ভাবা হতো অধিক। রুক্ষতা ছিল তাদের প্রতি পুরুষদের চিরাচরিত অভ্যাস। তাদেরকে বন্ধক রাখা হতো। কন্যাসন্তান হলে জীবন্ত দাফন করা হতো।
কিন্তু দেখ—ইসলাম নারীকে সম্মান দিয়েছে। বলা হয়েছে—‘যে ব্যক্তি তিনটি কন্যাসন্তানকে লালনপালন করল, তাদেরকে আদব শিক্ষা দিল; বিয়ে দিল এবং তাদের সাথে সুন্দর ব্যবহার করল— তার জন্য রয়েছে জান্নাত।'
অন্যত্র বলা হয়েছে— ‘যার কন্যাসন্তান জন্মাল; অতঃপর সে তাকে কষ্ট দেয়নি, অসন্তুষ্ট হয়নি, এবং পুত্রসন্তানকে তার ওপর প্রাধান্য দেয়নি, সে সেই মেয়ের কারণে জান্নাতে যাবে।
Badruddoza, Muhammad (sm): His Teachings and Contribution, p. 39; Islamic Foundation, Agargaon, Sher-e-Bangla Nagar, 6th edition, 2009. Robert Spencer, The Truth About Muhammad p. 34; An Eagle Publishing Company, Washington, DC, 2006.
Sir William Muir, Life of Mahomet, p. 509, london, 1858. সুনানু আবি দাউদ, হাদিস নং : ৫১৪৬।
সহিহ বুখারি, হাদিস নং : ৫৯৯১।
স্রষ্টা কি পুরুষতান্ত্রিক ?
নুসাইবা : আচ্ছা ফাইজা, তুই যে এতসব ফজিলতের কথা বলছিস, এর সবই তো পিতার জন্য। এতে নারীর মর্যাদা কোথায় বৃদ্ধি পেল? ফাইজা : আচ্ছা নুসাইবা, তুই খেলা দেখিস?
নুসাইবা : হুম দেখি তো।
ফাইজা : খেলায় জিতলে খেলোয়াড়দের অভিনন্দন কেন জানাস?
নুসাইবা : তারা আমাদের দেশকে, দলকে সম্মানিত করছে সকলের সামনে।
তাদের দ্বারা দেশের সম্মান বাড়ছে—সেজন্য।
ফাইজা : আচ্ছা এতে কি খেলোয়াড়দের সম্মান বাড়ে?
নুসাইবা : হুম।
ফাইজা : কেন বাড়বে? তারা তো দেশের সম্মান বাড়াচ্ছে, তাতে তার সম্মান বাড়বে কেন?
নুসাইবা : তার জন্যই তো দেশ সম্মানিত হচ্ছে, তার সম্মান বাড়বে না কেন—
অবশ্যই বাড়বে।
ফাইজা : আচ্ছা তাহলে দেখা গেল যার জন্য কেউ সম্মানিত হয় সে নিজেও সম্মানিত হয়।
নুসাইবা : হুম হয়।
ফাইজা : তাহলে এখানে কেন এমন ব্যাখ্যা হবে, মেয়ের জন্য পিতা সম্মানিত হলেও মেয়ে সম্মানিত হবে না?
নুসাইবা : ফাইজা, আসলে কী জানিস; মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই মর্যাদার কথা বলেছেন— কারণ, তিনিও কন্যাসন্তানের জনক ছিলেন। অন্যথায় কখনো এ কথা বলতেন না।
ফাইজা : এটাও তোর ভুল ধারণা। তিনজন পুত্রসন্তান জন্মেছিল তাঁর। মেয়ে চারজন। তিনি তো নিজেও একজন পুরুষ ছিলেন, তারপরও কেন বললেন না— ‘পুরুষ সন্তানকে লালনপালন করলে জান্নাতে দেওয়া হবে??
নুসাইবা : আচ্ছা ফাইজা, কুরআন-হাদিসের যে বিষয়গুলো নিয়ে তোকে প্রশ্ন করলাম, এসব তো কোরআনেরই অংশ। এগুলো দিয়েই মানুষ কীভাবে বিভ্রান্তি ছড়াতে পারে?
ভার্সিটি থেকে ফেরার সময় ফাইজাকে উদ্দেশ্য করে নুসাইবার প্রশ্ন।
ফাইজা : নুসাইবা, একটি প্রসিদ্ধ কথা আছে না—‘অল্প বিদ্যা ভয়ংকর?’
নুসাইবা : হুম। তো?
ফাইজা : তোর হয়েছে সে অবস্থা। প্রথমত, শুধু অনুবাদ পড়ে অনেককিছুই তুই বুঝতে পারবি না। সেজন্য উচিত তোর নিজস্ব চিন্তাভাবনার জগৎটাকে যাচাই করা। বুদ্ধিবৃত্তিক দাসত্বের পর্দাটা উঠিয়ে ফেলা।
তারপর কুরআনুল কারীমের তরজমার সাথে সাথে শানে নুজুল, তাফসিরও পড়া। নয়তো তোকে বিভ্রান্তির জন্য কোরআনের একটি আয়াতই যথেষ্ট। যেমন—নারীরা তোমাদের শস্যক্ষেত।'
নুসাইবা : আচ্ছা তাহলে আমি যদি কুরআন বুঝতে চাই—কীভাবে শুরু করলে
ভালো হবে?
ফাইজা : প্রথমেই কুরআন কারিম অধ্যয়ন শুরু করলে বিভ্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা
প্রচুর। সেজন্য সবচেয়ে ভালো হয় আরবি শিখে আরবিতে কুরআন বুঝে নেওয়া। এটা হবে সবচেয়ে উত্তম পন্থা। তা ছাড়াও যদি পড়তে চাস তাহলে ‘তাফসিরে মারেফুল কুরআন পড়তে পারিস। শানে নুজুল, তাফসিরসহ পড়তে পারবি। বিভ্রান্তির আশঙ্কা ক্ষীণ। নুসাইবা : আচ্ছা অনুবাদক, সংগ্রাহক, বর্ণনাকারী, সিরাত রচনাকারী এদের সব
পুরুষরাই কেন—নারীরা কেন হতে পারে না?
ফাইজা : কেন নয়! সর্বোচ্চ হাদিস বর্ণনাকারীদের দ্বিতীয়জন হজরত আয়শা রাদিআল্লাহু আনহা। তা ছাড়া হাফসা রাদিআল্লাহু আনহাসহ আরও অনেক নারী সাহাবী হাদিস বর্ণনা করেছেন। সিরাতও লিখেছেন অনেকে।
* বর্তমান পুরো বিশ্বের মনস্তত্ত্বে রাজত্ব করা পাশ্চাত্য সভ্যতা আমাদের মানসিকতা এমনভাবে তৈরি করে দিয়েছে যে আমরা তাদের মতোই ভাবি; যার ভিত্তি ন্যায়ের ওপর নয়–ইচ্ছার ওপর। যা কোরআনের বিপক্ষেই সবক দেয় আমাদের সবসময়।
পুরুষরা যদি হুর পায় তাহলে নারীরা কি পাবে?
নুসাইবা আজ বোরকা পরে এসেছে। অন্যকে বোরকা না পরার প্রতি উদ্বুদ্ধকারী মেয়েটি আজ নিজেই বোরকা পরিহিতা। অনেকে অনেককিছুই বলাবলি করছে। কেউ কেউ ঠাট্টা করে বলছে—‘সূর্য আজ কোনদিকে?’ এসব নিয়ে কানাকানি হবে নুসাইবা তা আগ থেকেই জানে। তাই তেমন কান দিচ্ছে না সেসবে। তা ছাড়া কেউ সরাসরি তাকে কিছু বলতেও আসেনি।
এক সময় শার্ট-প্যান্ট পরে একমঞ্চে বক্তৃতা দিত নুসাইবা আর রেশমি। বিতর্ক করত নাস্তিকতার পক্ষে। রেশমি আজ প্রিয় বান্ধবীকে এভাবে দেখে কঠিনভাবে দুঃখ পেল। তাই কিছু না বলে বেশিক্ষণ টিকতে পারল না।
রেশমি : নুসাইবা, আজ হঠাৎ বোরকা পরে এলি যে?
নুসাইবা : পরলাম। তাতে সমস্যার তো কিছু দেখছি না।
রেশমি : হাত-পা-মুখ ঢেকে ভূত সাজা কেমন দেখায় বল! আরে, জীবনটাকে উপভোগ কর! এসব গোঁয়ার্তুমি বাদ দে। ক্লাস শেষে চল, একটা পার্টি আছে।
নুসাইবা : রেশমি, বস তো! আমার কথা শোন একটু! আমি আমার আজকের আর পূর্বের একটি অভিজ্ঞতা শেয়ার করি তোর সাথে। জানিস তো আমি আর ফাইজা প্রায়ই একসাথে আসি। ও বোরকা পরে আসে। ওর সাথে যখন আসি তখন ছেলেরা তেমন কোনো ইভটিজিং করে না। কিন্তু যেদিন একা আসি, অনেক বেশি ইভটিজিংয়ের শিকার হই। আর ইভটিজিং একটা মেয়ের পক্ষে কতোটা ক্ষতিকারক—এটা তুই ভালো বুঝিস। কিন্তু আজ যখন আমি ভার্সিটিতে এলাম, একাই ছিলাম। কেউ আমাকে কিছু বলেনি। ইভটিজিংও করেনি। বুঝতেই পারছিস ভয়ংকর একটা বিপদ থেকে বেঁচে গেলাম। ধরে নিলাম ছেলেরা খারাপ কিছু করত না। কিন্তু ভয় তো একটা থেকেই যাচ্ছে—যদি খারাপ কিছু করে বসে? বোরকা পরার মাধ্যমে সে ভয়টা না থাকলে, খারাপ কী?
রেশমি : তোদের ধর্ম পরতে বলে দেখে তোরা বোরকা পরিস, এসব ভেবে পরিস না।
নুসাইবা : হুম ঠিকই বলেছিস। তবে তোর জানা দরকার আমাদের ধর্ম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনবিধান।
ইসলাম কি নারীদের ঠকিয়েছে?
ক্লাস শেষ। নুসাইবা আর রেশমি ফিরছিল। রেশমির মগজে নুসাইবার কথাগুলো ঘুরপাক খাচ্ছে। সাথে সাথে আরও কিছু ভাবনা। বিতর্কে ঠকে যাওয়াটাও অপমান। জিততে হয় যেকোনো মূল্যে। রেশমির মাথায় হঠাৎ একটি প্রশ্ন এল। সাথে সাথে উগড়েও দিল—
রেশমি : নুসাইবা, তুই যে বললি জান্নাতে যে—যা চাইবে তাই পাবে। জানিস, এখানেও তোর একটা ভুল রয়ে গেছে, কিংবা ভুল ধারণা, ভুল চাওয়া। দেখ, ‘যে যা চাইবে তাই পাবে'—বলতে গিয়ে এখানে আরবি শব্দ কুম (১) ব্যবহার করা হয়েছে, যেটা পুরুষবাচক। যার মানে দাঁড়ায় এটা বলা হয়েছে পুরুষদের জন্য, নারীদের জন্য নয়। নারীরা যা চাইবে তাই পাবে না। অর্থাৎ নারীদের ঠকানো হবে ওপারেও।
নুসাইবা : সত্যি বিষয়টা ভাবার মতো। কিন্তু তার জন্য—যে আরবি ভাষা সম্পর্কে জ্ঞান রাখে না। শোন, আরবি ব্যাকরণ অনুযায়ী ‘পুরুষ-মহিলা দুজনই উদ্দেশ্য এমন জায়গায় (১) পুরুষবাচক সর্বনামই ব্যবহৃত হয়।
রেশমি: তাহলে তো আরবি ভাষাটাই নারীদের অবমূল্যায়ন করেছে। এরকম ভাষায় কেন কুরআন নাজিল হলো?
নুসাইবা : বর্তমান সময়ে আন্তর্জাতিক ভাষা ‘ইংরেজি’ । বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সম্মানিত লেখা ‘বাংলাদেশ সংবিধান'। যার অবমাননার শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। সেই সংবিধানের ইংরেজি অনুবাদ যদি দেখিস—তাহলে স্পষ্ট দেখতে পাবি, সেখানেও একইরকম ব্যবহার করা হয়েছে। যেখানে পুরুষ-মহিলা উভয় লিঙ্গই উদ্দেশ্য, সেখানে পুরুষবাচক সর্বনামই ব্যবহার হয়েছে। তাই বলে কি তুই ‘বাংলাদেশ সংবিধান' বর্জন করতে পারবি?
রেশমি : সংবিধানের কথা বাদ দে। কিন্তু কুরআন শরিফেই তো এমন অনেক আয়াত আছে—যেখানে নারী-পুরুষ আলাদা বলা হয়েছে। যেমন আলে ইমরানের ১৯৫ নম্বর আয়াত। তো এখানে বললে সমস্যার কী ছিল?
নুসাইবা : যাক তুই স্বীকার করলি বাংলাদেশ সংবিধানের চেয়ে কুরআন নারীকে অধিক সম্মান দিয়েছে। তারপর তোর সংশয় দূর করা যাক! প্রথম কথা হলো সাধারণত এভাবে ব্যবহৃত হয় আরবি ব্যাকরণে। আর আরবি ভাষার সর্বোচ্চ সাহিত্যপূর্ণ গ্রন্থ হলো আল-কুরআন।
নারীরা নবী না হওয়ার কারণ
ফারজানা : আচ্ছা নুসাইবা, পৃথিবীর অর্ধেক তো নারী। তাদেরও রয়েছে ইবাদত। বিধিনিষেধ। পুরুষদের মতো তাদেরও নামাজ-রোজা করতে হয়। এসবের নীতিমালা তো বাতলে দেন নবি-রাসুলগণ। কিন্তু বল তো; এখনোবধি কোনো নারী নবি এসেছেন কি—যিনি নারীদের পথ বাতলে দিয়েছেন? আসেননি। এটা কোন ধরনের নিয়ম হলো?
নুসাইবা : ফারজানা শোন, প্রথমত নারীদের আল্লাহ তাআলা ঘরের দায়িত্ব অর্পণ করেছেন। স্বামী, সন্তান সামলানোর দায়িত্ব দিয়েছেন। এ ছাড়াও নারীরা মাসের নির্দিষ্ট সময়ে একটি অপারগতার মধ্যে থাকে। আবার যিনি নবি হবেন; নামাজের ইমামতির দায়িত্ব তার। মাসের এই সময়গুলোতে একজন নারী নামাজ কীভাবে পড়াবে?
আবার দেখা গেল—নারীকে দাওয়াতের কাজ এবং সন্তানসন্ততি পালনের দায়িত্ব সব একসাথে দিয়ে দেওয়া হলো—তখন তার ওপর জুলুম হয়ে যাবে। না চাইলেও সন্তান লালনের দায়িত্ব মাকেই নিতে হবে; দুধ তো আর বাবা খাওয়াতে পারবে না।
আরেকটি বিষয় দেখ—হজরত মুসা, ঈসা, জাকারিয়া, ইউনুস, নুহ আলাইহিমুস সালাম দাওয়াত দিতে গিয়ে কতোভাবে অপমানিত হয়েছেন। অত্যাচার সহ্য করেছেন। সর্বোপরি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তায়েফের ময়দানে, কাবা চত্বরে, বাজারে, অবরোধে—কতোভাবে অপমানিত, অপদস্থ হয়েছেন। আঘাত পেয়েছেন। একজন নারী কীভাবে এটা সহ্য করবে?
শেষ একটা বিষয় দেখ, কতোভাবে নারীরা ধর্ষিত হচ্ছে। একজন নারী নবি যদি ঈমানের দাওয়াত দিতে দিতে ওই শ্রেণীর লোকদের সামনে পড়ে যেত—ধর্ষিত হতো। তখন কি তার সম্মানহানি হতো না?
ফারজানা: তাহলে নারীরা দীন শিখবে কীভাবে?
নুসাইবা : বিবাহের পূর্বে সে যদি পর্দা রক্ষা করে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে দীন শিখতে চায়, শিখবে। যেভাবে পুরুষরা শেখে। আর তা সম্ভব না হলে নিজের মা থেকে, বোন থেকে, বা অন্য যেকোনো মহিলা থেকে শিখবে। যেমন—আয়শা রাদিআল্লাহু আনহা থেকে মহিলারা দীন শিখত। আর বিয়ের পর স্বামীর থেকে দ্বীন শিখবে। এটা বরং প্রাতিষ্ঠানিকভাবে শেখার চেয়ে সহজ এবং ফলপ্রসূ।
ফারজানা : আচ্ছা ইসলাম কি মেয়েদের কলেজ-ভার্সিটিতে পড়ার অনুমতি দেয়? আমি তো জানি ইসলামিস্টরা তাদের মেয়েদের পড়ালেখা করতে দেয় না।
ধর্ষণ এবং বৈবাহিক ধর্ষণ
নুসাইবার পরীক্ষা শেষ। একটা টেনশন গুম হলো। হালকা লাগছে। কয়েকদিন কেটে গেল এভাবেই। ফারজানার কথা মনে পড়ছে। কী অবস্থায় আছে মেয়েটা— কে জানে! মেয়েটা একসময় দীন মেনে চলত । নামাজ-রোজা নিয়মিত আদায় করত। বেপর্দা বের হতো না। অন্ধকারে হারিয়ে যাওয়া সেই ফারজানাকে আলোতে আনার পূর্বে নুসাইবার যেন স্বস্তি মিলছে না। তাই একদিন মাহফুজের অনুমতিতে রেশমিকে নিয়ে ফারজানাদের বাসায় গেল সে।
কিছু না জানিয়ে হঠাৎ করেই ফারজানাদের বাসায় উপস্থিত নুসাইবা। ফোনেও জানানো হয়নি। ফারজানা রুমে বসে ফোন টিপছিল। নুসাইবাদের দেখে আনন্দে দাঁড়িয়ে গেল। ভালো-মন্দ জিজ্ঞেস শেষে পাশে বসতে বলল। পাশে বসতে বসতে নুসাইবা জিজ্ঞেস করল—
নুসাইবা : কী করছিলি ফোনে?
ফারজানা : এই তো, একটা বই পড়ছিলাম।
নুসাইবা : কী বিষয়ক?
ফারজানা ইসলাম নারীদের ধর্ষণের বিষয়ে কতো বড় অপরাধ করেছে – সে : বিষয়ে।
নুসাইবা : যেমন?
ফারজানা : যেমন দেখ—ধর্ষিত নারী যদি চারজন সাক্ষী উপস্থাপন করতে না পারে তাহলে ধর্ষণকারীর কোনো শাস্তিই নেই, তুইই বল ধর্ষণ কি কেউ মানুষের সামনে করে—যে চারজন সাক্ষী উপস্থাপন করবে?
নুসাইবা : ফারজানা, সাক্ষ্য উপস্থাপন ছাড়া কি কারও ওপর দোষ দেওয়া ঠিক হবে? বা প্রমাণ না হলে? তোরাই তো বলিস দোষ প্রমাণিত হওয়ার আগে সবাই নির্দোষ। এখন ধর, তোর একার কথায় রায় দেওয়া হবে–তুই তো যে-কাউকেই ফাঁসিয়ে দিতে পারিস। যেমন—তোর বয়ফ্রেন্ডের ওপর রাগ হলো, মামলা ঠুকে দিলি—শেষ। তার মৃত্যুদণ্ড। এটা কি ঠিক হবে?
ফারজানা : তা না। কিন্তু প্রমাণটা কীভাবে করব?
0 মন্তব্যসমূহ
ℹ️ Your Opinion is very important to us, Please Writer your comment below about this Post.....