Product Specification | Download Link⤵️
Title | হজ্বের সফরনামা বাইতুল্লাহর মুসাফির |
Author | মাওলানা আবু তাহের মিসবাহ |
Publisher | দারুল কলম |
Quality | Buy Hardcover From Wafilife |
ISBN | 9879849066453 |
Edition | 1st Published, 2009 |
Number of Pages | 431 |
Country | বাংলাদেশ |
Language | বাংলা |
রিভিউ নং -১ | M. Hasan Sifat – April 7, 2020
আজ থেকে প্রায় ৩৮ বছর আগে ১৪০৩ হিজরীর কয়েকটি সফরের জীবন্ত বর্ননা উঠে এসেছে এই বইটিতে । বইটি লিখেছেন– ইসলামী বাংলা সাহিত্যের একজন অনন্য ব্যক্তিত্ব– “মাওলানা আবু তাহের মিছবাহ্” । যার সাহিত্য কথা মানুষকে তার রবের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয় । গলিয়ে দেয় কঠিন ও পাষান হৃদয়গুলোকে । মক্কা,মদিনা ছাড়াও বইটিতে পাকিস্তান, আবুধাবি, ইরাক সফরের কথাও এসেছে । লেখা হয়েছে রক্তভেজা ও অশ্রুঝরা কারবালার কাহিনীও । আরো আছে সমকালীন ইসলামী ইতিহাস ও ইরাক-ইরান যুদ্ধের অজানা সব রহস্য ।
বইটি নিছক কোনো সফরনামা ছিলো না, ছিলো আল্লাহর ঘরে আল্লাহর এক প্রেমিক বান্দার জীবন্ত সফর,জীবন্ত হজ্ব এবং যিয়ারত । যা ভাবিয়েছে, কাঁদিয়েছে আর কল্পনার জগতে আলোড়ন সৃষ্টি করে দিয়েছে । লেখকের কলম কালি ঝড়িয়েছে বইয়ের পাতায়-পাতায় আর দাগ কেটেছে আমার মতো পাঠকদের হৃদয়ের অলিতে-গলিতে । মৃত হৃদয়েও জাগিয়ে তুলেছে প্রানের স্পন্দন । বহু বছরের শুকনো চোখকেও করেছে অশ্রুসিক্ত । সফরের আবেগঘন মূহুর্তগুলোকে শব্দ আর বাক্যের অলংকারে মুড়িয়ে দিয়ে পাঠক হৃদয়ে ঝড় বইয়ে দিয়েছেন লেখক । নিঃসন্দেহে এই বইয়ের সাহিত্যমান উঁচু স্তরের । ইসলামি অঙ্গনে সাহিত্যমানের যে দুর্বলতা ছিল তার ভিত নাড়িয়ে দিয়েছে এই বই । বাংলা সাহিত্যের বিচারে বইটি একটি অনন্য সংযোজন । বইটির পাতায় পাতায় লেখক সাহিত্যের যে মায়াজাল বুনে গিয়েছেন তা সাহিত্যপ্রেমী যেকোনো পাঠককে এক প্রশান্তিময় সুখ দান করবে ।
–
❖ পাঠ্যানুভূতি—
▔▔▔▔▔▔▔▔▔▔▔
একজন লেখকের ভ্রমন কাহিনীর বিবরণ কতটা জীবন্ত আর হৃদয়গ্রাহী হতে পারে “বাইতুল্লাহর মুসাফির” না পড়লে হয়তো বুঝতেই পারতাম না । পড়ার সময় মনে হয়েছে, সব ঘটনাগুলো নিজের চোখের সামনে ঘটছে । অজান্তেই ভিজে উঠেছে চোখ । রয়েছে “আদবিয়্যাত” ও “রূহানিয়্যাতের” অপূর্ব সম্মিলন । বইটি পড়ে যেমন লেখকের সাহিত্য সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়েছি ঠিক তেমনি, হৃদয়ের গভীরে ভাবের তরঙ্গে আন্দোলিত হয়েছি । যার কারনে আমার মত পাঠক হৃদয়ে এই বই ও বইয়ের লেখক স্থান করে নিয়েছে মনের মণিকোঠায় ।
–
তবে বইয়ের শেষ দিকে, মানে হজ্বের আলোচনার পর ধৈর্য হারিয়ে ফেলেছি । শেষ দিকের আলোচনাগুলো বইয়ের সাথে অপ্রাসঙ্গিক মনে হয়েছে । বইয়ে শুধু বাইতুল্লাহর সফর নিয়ে আলোচনা থাকলেই ভাল লাগতো ।
–
❖ বইটির শিক্ষনীয় বিষয়—
▔▔▔▔▔▔▔▔▔▔▔▔▔▔▔▔
বইয়ের প্রতিটি পাতায় রয়েছে প্রচুর শিক্ষনীয় বিষয় । এই গোটা সফরনামায় ৩টি শিক্ষনীয় দিক বারবার সামনে এসেছে । সেগুলো হচ্ছেঃ—
(১) সকল আমলের তাৎপর্য অনুধাবন করা এবং স্মৃতিকে জাগরূক রাখা ।
(২) হজ্ব ও হজ্বের বিভিন্ন স্থানে উপস্থিত হয়ে নিজেকে দূর অতীতের মাঝে বিলীন করে দেয়া এবং তার সাথে অন্তরকে জুড়ে দেয়া ।
(৩) সূক্ষ থেকে সূক্ষতর এবং উচ্চ থেকে উচ্চতর ভাব ও ভাবনা এবং আবেগ ও অনুভূতির মাঝে নিমগ্ন থাকা ।
–
❖ বইটি যাদের জন্য—
▔▔▔▔▔▔▔▔▔▔▔▔▔▔
এই সফরনামাটি মূলত চার শ্রেনীর লোকের জন্য ।
[১]— যারা শীঘ্রই বাইতুল্লাহর মুসাফির হতে যাচ্ছেন তাদের জন্য ।
[২]— যারা হজ্বের গুরুত্বের প্রতি উদাসীন ।
[৩]— যারা সফরনামায় বাংলা সাহিত্যের অমৃত স্বাদ পেতে চান ।
[৪]— যারা মনে করে টাকা আছে হজ্বে না গেলে মানুষ কি মনে করবে ! কিংবা এলাকার লোকের কাছে “হাজী সাব” উপাধী পাওয়ার মানসিকতা নিয়ে থাকেন তাদের চিন্তাধারায় আমূল পরিবর্তন আনার জন্য বইটি এক কথায় অনবদ্য ।
–
❖ শেষ কথা—
▔▔▔▔▔▔▔▔▔▔
প্রিয় ভাই, আপনি যদি সাহিত্য দিয়ে আপনার হৃদয়কে আন্দোলিত করতে চান, তন্ময় হয়ে বইয়ের পাতায় ডুবে থাকতে চান, তাহলে কেন “বাইতুল্লাহর মুসাফির” পাঠ করছেন না ??
আপনার জন্য করজোরে মিনতি রইলো মহান রবের নিকট একবার হলেও যেন মহান রব আপনাকে এই বইটি পড়ার সৌভাগ্য দান করেন । আশা করি, বইটি পড়লে সফর থেকে লেখকের কুড়িয়ে আনা মুক্তোগুলো পাঠক হৃদয়ে “বাইতুল্লাহ্ এবং নবীজির রওজা” নিয়ে স্বপ্নের এক নতুন ডানা মেলতে সাহায্য করবে । হৃদয়ে ভালোবাসার এক নতুন প্রদীপ প্রজ্বলিত হবে আর নতুন নতুন সব অনুভব-অনুভূতির তরঙ্গ দোলায় হৃদয় আন্দোলিত হবে ।
.
==============================
➤ বইটি “দারুল কলম” প্রকাশনী থেকে প্রথম প্রকাশিত হয়ঃ– ২০০৯ সালে ।
➤ পৃষ্ঠা সংখ্যাঃ— ৪৩১ ।
➤ নির্ধারিত মূল্যঃ—- ২০০ টাকা ।
রিভিউ নং -২ |fahimmuhammad.iisd – September 14, 2020:
চাই না ধনসম্পদ, চাই না খ্যাতি ও সম্মান
তোমার ঘরের ছায়া মাওলা শুধু করো দান…”
পৃথিবীর সব মানুষেরই কোন না কোন স্বপ্ন থাকে,স্বপ্ন দেখেই মানুষ বেঁচে থাকে। স্বপ্নই মানুষের জীবন এবং স্বপ্নই অবলম্বন। মানুষের জীবন যেমন বিচিত্র তেমনই বিচিত্র তার জীবনের স্বপ্ন, কিন্তু মু’মিনের সারাজিবনের স্
বপ্ন শুধু একটি, দীদারে বাইতুল্লাহ এবং যিয়ারাতে মাদীনাহ। মু’মিন স্বপ্ন দেখে কালো গিলাফের এবং সবুজ গম্ভুজের। একদিন সে বায়তুল্লাহ তাওয়াফ করবে এবং নবীজীর রওযায় সালামের নযরানা পেশ করবে-এই সুমধুর স্বপ্ন দেখেই মু’মিন বেঁচে থাকে,দিনাতিপাত করে। এ স্বপ্নই মুমিনের জীবন, তার জীবনে বেঁচে থাকার অবলম্বন।সেজন্য বাংলার কবি লিখেছেন- “বক্ষে আমার কাবার ছবি,নয়নে মুহাম্মদ রাসুল…”
○ বইটির বিষয়বস্তু ও প্রধান আকর্ষণঃ
“বায়তুল্লাহর মুসাফির” বইটি লেখকের যিয়ারাতে বায়তুল্লাহর আবেগ মিশ্রিত যথাপযুক্ত বর্ণনার বহিঃপ্রকাশ। সাথে আছে বিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়কালের মুসলিম বিশ্বের উল্লেখযোগ্য দেশ গুলোর ভৌগলিক নান্দনিকতার বিবরণ, রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের সুচিন্তনীয় মতামত এবং অকপটে দিয়ে গেছেন দেশবাসীর জন্য মুক্তোঝরা উপদেশাবলি। এ সফরনামায় লেখক সউদি আরব সহ বিভিন্ন দেশের গন্যমান্য ব্যক্তিদের সাথে সাক্ষাত করেছেন, মুসলিম বিশ্বের সংকট নিরসনের সুচিন্তনীয় মতামত দিয়েছেন এবং প্রেস্ক্রাইব করেছেন অমূল্য দিকনির্দেশনাসমুহ ।
○ আমার অনুভূতিঃ
বইটি পড়ে আমার মনে হয়েছে আমি যেন ভ্রমন করছি লেখকের সাথে সেই সুদূরবিস্তৃত মক্কা এবং মদীনার প্রশস্ত রাস্তাধরে। লেখক লিখেছেন কেবল নিজেকে নিয়ে নয় বরং প্রত্যেক পাঠককে সাথে নিয়েছেন তার যাত্রাপথের বিভিন্ন প্রান্তরে। লেখকের ভ্রমন বিস্তর, পাঠক হিসেবে পেয়েছি বিস্তর বর্ণনার দক্ষ প্রকাশভঙ্গী। অন্তর দুলেছে ইশকে ইলাহির তরঙ্গদোলায়। বায়তুল্লাহ যিয়ারাতের তামান্না অন্তরে কষাঘাত করেছে প্রতিমুহূর্তে। বইটির পাঠক সৌভাগ্যবানদের তালিকায় আপনাকে স্বাগতম।
○ বইটির কিছু বিশেষত্বঃ
০১. চমৎকার বর্ণনাভঙ্গি ও নির্মোহ বিশ্লেষণ।
০২. বাইতুল্লাহর প্রতি অপরিসীম আবেগের পরিস্ফুটন।
০৩.শ্রেষ্ঠ ইসলামি চিন্তাবিদদের সাথে মতবিনিময়।
০৪. পাঠকের প্রতি নসিহাহ ও বায়তুল্লাহ যিয়ারাতের কিছু সতর্কবাণী।
০৫. অকপটতা এবং আদবের শিক্ষণ।
০৬. টুকরো-টুকরো ইতিহাসের পাতায় সাময়িক বিচরণ।
০৭. বায়তুল্লাহ সফরকারীর প্রতি উপদেশ ও দিকনির্দেশনা।
০৮.অনবদ্য লেখনী এবং উক্তির প্রয়োগযোগ্যতা।
○ বইটি কাদের জন্যঃ
এ পয়েন্টে বলতে বাধ্য হচ্ছি যে,বইটি কাদের জন্য নয়? সমৃদ্ধ শব্দসম্ভারের নান্দনিকতাপ্রিয় সকল বইপ্রেমি এবং সুন্দর শব্দগঠনপদ্ধতির প্রিয়সী সকল বয়সী মানুষের জন্য এই বইটি পড়া উচিত। বিশেষ করে বায়তুল্লাহ যিয়ারাতের আবেগের ফুল্কি যাদের হৃদয়ে পরিস্ফুটিত হয় তাদের জন্য বইটি পড়া অবশ্য বাঞ্চনীয়। বইটি তাদের জন্য, যারা এবার বায়তুল্লাহর মুসাফিরদের কাতারে শামিল হবেন।আশা করা যায়, এর মাধ্যেম তাদের দিলে ইশক ও মোহাব্বত আরো উদ্দীপ্ত হবে। তাদের অন্তরে প্রেম ও ভালবাসার প্রদীপ নতুন করে প্রজ্জ্বলিত হবে। নতুন নতুন অনুভব-অনুভূতির তরঙ্গদোলায় তাদের হৃদয় আরো আন্দোলিত হবে।
○ বইটির ভাল দিক সম্বলিত অংশঃ
বইটির প্রত্যেকটি অংশে খুব সুন্দর হেডলাইনের অধীনে যথোপযুক্ত বর্ণনার পাশাপাশি বিভিন্ন আরবি,ফারসি কবিতার ছন্দ প্রয়োগ করা হয়েছে।লেখক তার লেখনীতে বাঙালি কবিদের ধর্মীয় ছন্দগুলোরও যথা প্রকাশ ঘটিয়েছেন। বর্ণনাচ্ছলে কুরআনের আয়াত এবং হাদিস থেকে বিভিন্ন শিক্ষামুলক ঘটনার অবতারণা করেছেন নিপুণতার সাথে।
বইটির আরেকটি উল্লেখযোগ্য দিক হলো, স্বল্পমূল্য। ৪৩১ পৃষ্ঠার বৃহৎ বইটির ক্রয়মূল্য মাত্র দুইশত টাকা।
○ যে বিষয়টি ভাল লাগে নিঃ
এ পয়েন্টে আসলে বলার মত কিছু নেই। কারণ বিশাল সমুদ্রের অজস্র জলরাশিতে এক ফোঁটা কালি তেমন মুল্যই পায়না। তবুও যে দিকটি প্রকাশকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করার মত তা হলো, লিখার ফন্টগুলো আরেকটু বড় হলে পড়তে সুবিধা হয়। এতে করে চোখের উপর নির্বিচার চাপ প্রয়োগ কিছুটা লাঘব হবে বলে আশা করা যায়।
○ লেখক সম্পর্কেঃ
সাহিত্যের গুনগত মানে সমৃদ্ধ “বায়তুল্লাহর মুসাফির” বইটির লেখক “আবু তাহের মিসবাহ” হুজুর। তার লিখিত কোনো বই যারা পড়েছেন, অকপটেই স্বীকার করতে বাধ্য হবেন তার লিখার সাহিত্যিক মনন, শব্দচয়নের যৌক্তিকতা, বানানের ব্যাকরণসিদ্ধতা, উক্তির প্রয়োগযোগ্যতা এককথায় অনন্য আর অনবদ্য। তথ্যবহুল বর্ণনার পাশাপাশি আবেগের এক অপূর্ব মিশ্রন কোন বইয়ের পাতায় কোনো লেখক যদি লিখে থাকেন,তাহলে তাদের কাতারে নিঃসন্দেহে প্রথম দিকের অবস্থান এই বইটির লেখকের।
○ বইটি থেকে পছন্দের একটি উক্তিঃ
“দুনিয়াতে সন্তানের জন্য মা হলেন আল্লাহর রহমতের ‘আঁচল’। তুমি যত বড় হও, কিংবা যত ছোট; তুমি যত ভালো হও কিংবা যত মন্দ, মা শুধু জানেন তোমার মাথার উপর মমতার আঁচল ধরে রাখতে। দুর্ভাগা সন্তান অনেক সময় নিজের হাতে মাথার উপরের এই মমতার আঁচল ছিন্ন করে ফেলে।তারপরো মমতাময়ী মা সেই ছিন্ন আঁচলটুকু ধরে রাখেন সন্তানের মাথার উপর ।
প্রিয় পাঠক, তুমি যদি বিশ্বাস করো যে, আমি তোমার কল্যাণকামী তাহলে একটি উপদেশ শোনো, সারা জীবন মায়ের আঁচলের নীচে থাকার চেষ্টা করো । যতদিন তিনি বেঁচে আছেন চোখের পানি দিয়ে তাঁর পায়ের পাতা ভিজিয়ে রেখো, আর মৃত্যুর পর ভিজিয়ে রেখো তাঁর কবরের মাটি ! তাহলে আল্লাহ্ তোমাকে চিরকাল সিক্ত করে রাখবেন তাঁর করুণার শিশিরে।”
○ শেষ কথাঃ
পরিশেষে, ‘বায়তুল্লাহর মুসাফির’ বইটি পড়ার আমন্ত্রণ জানিয়ে শেষ করছি। প্রত্যেক মুমিনের অন্তরের লুক্কায়িত আজন্ম লালিত স্বপ্ন “বায়তুল্লাহ যিয়ারাত ও যিয়ারাতে মাদিনাহ” বাস্তবায়ন করে হজ্জ্বে মাকবুল ও মাবরুর নসীব করে সৌভাগ্যবানদের তালিকা আরো সম্প্রসারিত করুন মহান আল্লাহ তা’য়ালা, আমাকে এবং আপনাকে দিয়ে।
0 মন্তব্যসমূহ
ℹ️ Your Opinion is very important to us, Please Writer your comment below about this Post.....