[PDF] নবি জীবনের গল্প আরিফ আজাদ | Nobi Jiboner Golpo by Arif Azad (new book)

বই নবি জীবনের গল্প pdf নবি জীবনের গল্প আরিফ আজাদ pdf নবী জীবনের গল্প বই রিভিউ নবী জীবনী জীবনের গল্প বই pdf জবাব আরিফ আজাদ

নবি জীবনের গল্প by আরিফ আজাদ

#২ বেস্টসেলার সীরাতে রাসূল (সা.)
লেখক : আরিফ আজাদ
প্রকাশনী : সমকালীন প্রকাশন
বিষয় : সীরাতে রাসূল (সা.), নবীজির সীরাহ বিষয়ক সেরা বইগুলো
পৃষ্ঠা : 144, 
কভার : পেপার ব্যাক
📂 Google Drive PDF Link

আরিফ আজাদের নতুন বই ‘নবি জীবনের গল্প’। প্রিয় নবিকে ভিন্নভাবে দেখার দূরবীক্ষণ যন্ত্র। সীরাতের বাঁকে বাঁকে ছড়িয়ে থাকা নববি মণিমুক্তো। নবি জীবনের প্রতিটি পঙ্‌ক্তি বাঙ্‌ময় হয়ে আছে নানা ঘটনা-মাধুর্যে। বড় অমূল্য সেই মুহূর্তগুলো। আরিফ আজাদ এই বইতে সেই মুহূর্তগুলো এঁকেছেন কলমের কালিতে। গল্পে গল্পে তিনি দেখিয়েছেন প্রিয় নবি কেমন ছিলেন ঘরে-বাইরে, মসজিদে-মজলিসে, মদীনার অলিতে গলিতে, সাহাবিদের ঘরদোরে, শক্ত চাটাইয়ে, কেমন সময় কাটতো প্রিয়তমা স্ত্রীদের সাথে কিংবা নিশি জাগরণে রবের সামনে ঠায় দাঁড়িয়ে থেকে।


পাঠক এই বইতে আবিষ্কার করবেন এমন একজন ব্যক্তিকে, যিনি ছিলেন মানুষ, আবার একই সাথে আল্লাহর দূত। সৃষ্টির সেরা হয়েও যার জীবনটা কাটতো অতি সাধারণভাবে, তবে ছিল মনুষ্যের সেরা রূপ। নবিকুলের শিরোমণিকে আসুন আমরাও নতুন করে জানি।
____________________________

            ঘরের নবি, পরের নবি

মক্কা বিজয়ের আগের ঘটনা। নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার চৌদ্দশত সাহাবি-সমেত মদিনা থেকে উমরা করার উদ্দেশ্যে মক্কা অভিমুখে রওনা করলেন। অনেকদিন পর নবিজি একেবারে সদলবলে নিজ মাতৃভূমিতে ফিরে যাচ্ছেন। অনেক বছর পরে মক্কার তৃষিত জনপদ আবার পেতে যাচ্ছে আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পদধূলি। শুধু নবিজিই নন, অনেক সাহাবি, যারা একদিন তিরস্কৃত হয়েছিলেন নিজেদের জনপদে, প্রবল পরাক্রমে যাদেরকে উৎখাত করা হয়েছিলো, যারা একদিন পেছনে রেখে এসেছিলেন আত্মার সকল সম্পর্ক, ছিন্ন করেছিলেন বংশীয় সকল বন্ধন—তারাও আজ ফিরে যাচ্ছেন তাদের পিতৃভূমিতে। আল্লাহর পবিত্র ঘর তাওয়াফের সুযোগ এবং জন্মভূমির জন্য নাড়ির অপার্থিব টান— দুটোর সম্মিলিত আনন্দে যেন মাতোয়ারা সকলের মন।

সবকিছু ঠিকঠাকমতোই এগুচ্ছিলো। কিন্তু মাঝপথে বাদ সাধলো মক্কার কাফিরেরা। তারা ভাবলো—মুহাম্মাদ যদি কোনোভাবে একবার মক্কায় ঢুকে পড়ে, তাহলে তাকে নতুন করে উচ্ছেদ করা হয়তো আর কখনোই সম্ভব হবে না। সেখানে হয়তো তার সঙ্গীসাথীদের নিয়ে গড়ে তুলবেন নতুন কোনো সৈন্যবাহিনী যা দ্বারা তিনি মক্কা দখল করে ছাড়বেন।

এহেন শঙ্কা থেকে মক্কার কাফিরেরা নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং সাহাবিদের দলটাকে মক্কায় ঢুকতে না দেওয়ার ব্যাপারে দৃঢ় অবস্থান গ্রহণ করলো। তারা মাঝপথে মুসলিমদের পথ অবরোধ করে বসলো এবং তাদের পক্ষ থেকে জানানো হলো যে, নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে তারা কোনোভাবেই মক্কায় ঢুকতে দেবে না। এর জন্য যা করতে হয় করবে।

সাহাবিদের নিয়ে নবিজি তখন হুদাইবিয়া নামক মরুভূমির একটি উপকণ্ঠে অবস্থান করছিলেন। মক্কার কাফিরদের পক্ষ থেকে বাধাগ্রস্ত হয়ে তিনি সেখানেই আপাতত যাত্রা বিরতি টানলেন। তাঁবু টেনে নিলেন সকলের বিশ্রামের জন্য।

সাহাবিদের মধ্য থেকে উসমান রাযিয়াল্লাহু আনহুকে নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মক্কায় পাঠানোর জন্য মনস্থির করলেন। শত্রু শিবিরে উসমান রাযিয়াল্লাহু আনহুকে পাঠানোর উদ্দেশ্য হলো এই— মক্কায় যেসকল সম্ভ্রান্ত বংশ রয়েছে, উসমান রাযিয়াল্লাহু আনহু তেমন একটা বংশের প্রতিনিধি। তার ওপর উসমান রাযিয়াল্লাহু আনহুর ব্যাবসায়িক সম্পর্ক এবং অন্য অনেক কারণে মক্কার লোকেরা তখনও তাকে সম্মানের চোখে দেখতো। এমন বিপদসংকুল শত্রুর ডেরায় পা রাখার জন্যে তাই উসমান রাযিয়াল্লাহু আনহুর চাইতে উপযুক্ত কেউ তখন নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সামনে ছিলো না।

উসমান রাযিয়াল্লাহু আনহুকে উদ্দেশ্য করে নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘উসমান, কুরাইশদের বলবে যে, তাদের সাথে কোনো ধরনের যুদ্ধ করার অভিপ্রায় নিয়ে আমরা আসিনি। আল্লাহর ঘর তাওয়াফই আমাদের একমাত্র উদ্দেশ্য। তাওয়াফ শেষ করেই আমরা পুনরায় মদিনায় ফিরে যাবো।'

নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নির্দেশ পেয়ে উসমান রাযিয়াল্লাহু আনহু মক্কার উদ্দেশ্যে যাত্রা করলেন।

দিনের পর দিন পার হয়, কিন্তু ভালোমন্দ কোনো সংবাদ-সমেত উসমান রাযিয়াল্লাহু আনহুর আর ফিরে আসা হয় না। অপেক্ষার প্রহর দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হয়। সবাই উন্মুখ হয়ে তার জন্য পথ চেয়ে বসে থাকে। উসমান ফিরবেন এবং সাথে বহন করবেন একটা সুসংবাদ। মুসলিমদের উমরা করতে দেওয়ার ব্যাপারে মক্কার মুশরিকদের দ্বিমত নেই কোনো—এমন একটা আনন্দ-সংবাদের জন্য অপেক্ষায় সকলে।

কিন্তু একদিন মুসলিম শিবিরে একটা খবর চাউর হলো জোরেশোরে—উসমান রাযিয়াল্লাহু আনহুকে কুরাইশরা হত্যা করেছে। খবরটা শুনে নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অসম্ভব রেগে গেলেন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ