কিশোর উপন্যাস : অলসপুরে সোনার কলস
বইয়ের ধরণ: কিশোর উপন্যাস
প্রকাশনী: পাললিক সৌরভ
প্রচ্ছদ: উত্তম সেন
স্টল নম্বর: ২৪
পৃষ্ঠা: ১১০
দাম: ১৫০
রিশাদ আর মাসুদের অলসপুরে সোনার কলস খুঁজতে ভিড় করে একদল প্রতারক, ঠক, দুষ্কৃতকারী। মূলতঃ সোনার কলসকে কেন্দ্র করে উপন্যাসের পটভূমি রচিত । ভেতরে সময় সময় ফিরে এসেছে নানা অনুষঙ্গ; সেটি উপন্যাসের ক্ষেত্রে দূষণীয় নয়। দুবৃত্তরা( দৌলত,হাকিম,রতন) লাল পয়সা মতো গুজব রটিয়ে অলসপুরে সোনার কলস আছে। এক কান, দুই কান করে কানাকানি শুরু হয়ে যায় গ্রামে; কোথায় সোনার কলস? জলিল শেখকে কব্জা করে সুদি মুন্সী থেকে টাকা হাতিয়ে নিতে চায়। নাটকীয়ভাবে জলিল শেখ প্রথমে রাজি হলেও পরে পিছ পা হয়। দুবৃত্তদের গর্তে পা দিয়ে বিপদ ডেকে আনতে রাজি হয় না। পরিকল্পনা ভেস্তে গেলেও সমাজের কুচক্রী মহল থেমে থাকে নানা উপায় তাদের স্বার্থ হাসিল করতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। খুঁজতে থাকে নতুন মক্কেল;- যাকে বশে আনতে পারবে। একসময় খুঁজে পায় তাদের কাংখিত রাহেলাকে। স্বামী দেশের বাইরে থাকে; সংসার চালায় রাহেলা। তাকে স্বপ্ন দেখায় তিন লাখ টাকার বিনিময়ে হাতের মুঠোয় এনে দিবে; দরগাভিটার মাটি নিজে লুকিয়ে থাকা কোটি কোটি টাকার সোনার কলস। স্বপ্ন বিলাসী রাহেলার চোখ চক চক করতে থাকে লোভে, নিয়মিত যোগাযোগ করতে দৌলত গংদের সাথে - এভাবে চলতে থাকে উপন্যাসের পটভূমি।
উপন্যাসে আরো কয়েকটি মুখের প্রতিচ্ছবি দেখতে পাই; সমুদ্রে স্বামী হারানো মহিলাটি পূর্ণবাসন, সাইমুমের পরোপকারী মনোভাব আমাদের চিন্তার জগৎকে সমৃদ্ধ করে। মেব্বার, চেয়ারম্যানের বাধা পাহাড় ডিঙিয়ে এগিয়ে যায় সাইমুম। ডানপিটে মিন্টুর ভুমিকা ছিল দুর্দান্ত।
এলিয়ট ছিলেন গোঁডা ধার্মিক। রোমান ক্যাথলিকবাদের বিশ্বাসী এবং তার " ওয়েস্ট ল্যান্ড " কাব্যে বাইবেলীয় অনুষঙ্গ খুঁজে পাওয়া যায় প্রকটভাবে । নিজের ধর্ম বিশ্বাসে কাব্যে প্রকাশ করতে বেশ আগ্রহী ছিলেন, এমনকি তা ছাড়িয়ে যায় তাঁর ইহুদিবিদ্বেষী মনোভাব প্রকাশে। অলসপুরে সোনার কলস উপনাসে ঔপন্যাসিক তার ধর্ম বিশ্বাসের জায়গাটি কিশোর পাঠকদের কোমল হৃদয়ে গেঁথে দিয়েছেন। ইনশাআল্লাহ শব্দের যথাযথ ব্যবহার, নবীন মাঝি প্রতিকূল আবহাওয়া নামাজ ছাড়ে না, সবসময় শুকরিয়া জ্ঞাপন করে মহান আল্লাহ কাছে; এক ধরনের তৃপ্তি ঢেকুরের প্রতিচ্ছবি দেখতে পাওয়া যায়, তার চোখমুখে সবসময়। সমুদ্রে ভ্রমণের চিএকল্পটি একটু মনোযোগ দিয়ে পড়লে, গেঁথে যাবে পাঠকের হৃদয়ে।
১৮৫৬ সাল বষ্কিমচন্দ্র প্রথম কবিতা বই " ললিত ও মানস" প্রকাশিত হয়। যদিও প্রথম প্রকাশিত কপিগুলো বিক্রেতার আলমারি পচে যায়, অবিক্রিত অবস্থায়। পরে ফিরে গদ্যে, খ্যাতি পায় বাংলার শেলী।
কবি নজরুল একসময় গল্প লিখতেন। ছোট গল্প লিখে বন্ধু শৈলেনকে শুনায়; - তুমি গদ্য লিখে কখনো বঙ্কিমচন্দ্র হতে পারবে না। নজরুলকে ক্ষেপাতো শৈলেন। একসময় বন্ধু নজরুল পেশা বদল করে, প্রচুর কবিতা লিখতে থাকে। চারদিকে নামডাক পড়ে যায়- যুদ্ধ ফেরত হাবিলদার নজরুলের। গান লিখছে, গান গাইছে, সভায় সমিতিতে, কবিতা লিখছে, শুনাচ্ছে বাড়ির আড্ডায়, ছেলের হোস্টেল নজরুলকে নিয়ে টানাটানি। অবসর নেওয়া সময় নেই তার। তখন শৈলেন বলে, নজরুলের খ্যাতিতে আমি আপ্লুত, যদি সে কবিতা না লিখে শুধু গল্প লিখতো মরতো।
কথাগুলো বলছি ছড়াকার আরকানুল ইসলাম জন্যও। ভালো ছড়া লিখে, ছন্দে তার দখল ভালো। কিশোর উপন্যাসের পাশাপাশি তার একটি ছড়ার বই জন্য বহুদিন ধরে আমরা অপেক্ষায় আছি।
Review Credit 💕 ফয়সাল সৈয়দ
0 মন্তব্যসমূহ
ℹ️ Your Opinion is very important to us, Please Writer your comment below about this Post.....