পিএইচডির গল্প : আসিফ নজরুল (Review & Short PDF Link)

পিএইচডির গল্প : আসিফ নজরুল (Review & Short PDF Link)

পিএইচডির গল্প by আসিফ নজরুল

(শিক্ষক, আইন বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং লেখক, কলামিস্ট, রাজনৈতিক বিশ্লেষক।)
বাতিঘর প্রকাশনী।
(হাই কোয়ালিটি পেপার, বাইন্ডিং, মুদ্রণ লোভনীয়)
মোট পৃষ্ঠা-১২০
মুদ্রিত মূল্য:২৫০ টাকা।

"আফিস নজরুলের জন্ম পুরান ঢাকার গলিতে। নাটকীয় ঘটনাচক্রে তিনি লন্ডনে গেলেন পিএইচডি করতে।.....শুরু হলো তার জীবনের ভয়াবহ সংগ্রামের কাহিনি।...."
(ফ্লপে লিখা)

পিএইচডির গল্প বই পরিচিতি

''পিএইচডির গল্প'' বইটি লেখকের আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ। পুরো গল্পটি তিনি মোট সাত পর্বে বিভক্ত করেছেন এবং প্রতিটি পর্বের শুরুতে রয়েছে উপশিরোনাম। সহজ-সরল ও সাবলীল ভাষায় লেখা "গল্পটি"কে করেছে প্রাণবন্ত।

 পিএইচডির গল্প মূলপাঠ,

এ গল্প লেখকের ব্যক্তি জীবনের অকল্পনীয় টানাপোড়নের গল্প।
প্রথম পর্বে লালবাগের নামকরা ওয়েস্ট এন্ড হাই স্কুলে পড়ার কথা, পরিবারের পরিচয়, সংসারের প্রথম মৃত্যু (লেখকের ছোট বোনের), পুরান ঢাকার অলিগলিতে কাটানো সোনালী স্মৃতি, প্রতিটা মধ্যবিত্ত পরিবারের স্বপ্ন ও বাস্তবতা এসবের কথা বলেছেন।

বিচিত্রা পত্রিকার অনুসন্ধানী সাংবাদিক ও লেখক হিসেবে আত্মপ্রকাশ, ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে ৩৬ দিনের অভিজ্ঞতা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে যোগদান এবং পিএইচডি করার ইচ্ছা এসকল বিষয় সম্পর্কে লেখক খুব অল্প কথায় ফুটে তুলেছেন প্রথম পর্বে।
এ আত্মজীবনীতে লেখক বলেছেন, তিনি ছিলেন- ভীতু, অন্তর্মুখী, লাজুক ও নির্বিরোধী। পরবর্তীতে প্রবল ইচ্ছা শক্তি থেকে কমনওয়েলথ স্কলারশিপ নিয়ে, পিএইচডি করারা জন্য লন্ডনের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেন। পিএইচডির গল্প বইটি পড়লে জানতে পারবেন, লেখকের লন্ডনে থাকাকালীন জীবনের ভয়াবহ সংগ্রামের কাহিনি।

লেখক পিএইচডি করেছেন, স্কুল অব ওরিয়েন্টাল অ্যান্ড আফ্রিকান স্টাডিজ(সোয়াস)।
সোয়াস ১৯১৬ সাথে প্রতিষ্ঠিত ইংল্যান্ডের একটি পাবলিক রিসার্চ বিশ্ববিদ্যালয়।
লেখকের পিএইচডি'র সুপারভাইজার ছিলেন, ইউরোপ-আমেরিকাতে খ্যাতি ছড়িয়ে পড়া শিক্ষক, আইনজীবী ও পরিবেশ বিষয়ক বিশেষজ্ঞ ফিলিপ স্যান্ডস।
পুরো বইটি জুড়ে রয়েছে লেখকের জীবনের উত্থান-পতনের কাহিনি। পিএইচডি করার সময়ে লন্ডন জীবনে তিল তিল করে পার করা প্রতিটি দিনের কথা।
এবং শুভাকাঙ্ক্ষীদের সান্নিধ্য ও জীবন সংগ্রামের কঠিন বাস্তবতা।

পিএইচডির গল্প বই থেকে নেওয়া কথা (লাইন),

★★নতুন করে বুঝতে পারি একটা দিনে থাকে ২৪ ঘণ্টা। খাওয়াদাওয়া,ঘোরাঘুরি আর বিনোদনের পরও থাকে কমপক্ষে ১২ ঘণ্টা। ঘড়ি ধরে ধরে ১২ ঘণ্টা পড়তে শুরু করলাম। পরে দেখি পড়তে পড়তে কখন কোথায় সময় চলে গেসে খেয়ালও থাকতো না।

আমার জন্য আরেক সমস্যা হয়ে দাঁড়ায় ইংরেজিতে দুর্বলতা। বড় বড় ডকুমেন্টে দাঁতভাঙা শব্দের সমাহার দেখে সত্যি ভয় পেয়ে যায়।....এক আর্টিকেল পাঁচ-সাতবার পড়ি, ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিবিসি শুনি।
(অনুপ্রেরণামূলক) 

পড়াতে হলে পড়তে হয়। যত একঘেয়ে, দুর্বোধ্য আর নিরস হোক, বিদ্যাশিক্ষা করার একটা মনগড়ে ওঠে।

পিএইচডির গল্প বইটি আমরা কেন পড়বো?

আমরা জানি, বই পড়ার মধ্য দিয়ে অন্যের চোখ দিয়ে আমরা পৃথিবী দেখতে পারি। এই বইটি পড়ে, অল্প সময়ের ব্যবধানে আপনি সেই সকল অভিজ্ঞতা সম্পর্কে জানতে পারবেন, যা লেখন নিজে তিলতিল করে সাড়ে চার(৪) বছরে অর্জন করেছে।

                     পিএইচডির গল্প : আসিফ নজরুল
পিএইচডির গল্প : আসিফ নজরুল (Review & Short PDF Link)
বছর দুই তিন হবে আমি এই লেখক কাম কলামিস্ট কাম একজন শিক্ষকের লিখনি পড়েছি ফেসবুকেরই কল্যানে।তুমুল জনপ্রিয় নাম হওয়ার পরও আমি উনাকে চিনেছি মাত্র কিছুদিন হলো,আর তা কেবলমাত্র বিভিন্ন কলাম পড়ার সুবাদে।
এবছর বই মেলায় যাওয়ার ভিষণ ইচ্ছে থাকার পরও করোনার প্রকোপ খুব বেশি থাকায় নিজের মনকে অবদমিত করে রেখেছিলাম।কিন্তু উইশ লিস্টে যেসব বই রেখেছিলাম তার প্রায় সব বইই রকমারি থেকে কিনে এনিছি দফায় দফায়।তারই একটা ছিল এই পিএইচডির গল্প।
.
আবার এদিকে পিএইচডি শব্দটার সাথে পরিচিত হয়েছিালম ছোটবেলায়, ক্লাস ফাইভ/সিক্সে থাকতে।আমাদের একজন বাংলার শিক্ষক ছিকেন,অমায়িক ভদ্রলোক যাকে বলে তিনি ছিলেন তা।স্যার প্রথম ক্লাসে বলেছিল তিনি পিএইচডির জন্য লিখাপড়া করবেন তাই অল্পকিছুিন আমাদের ক্লাস নিতে পারবেন।এই জিনিসটা আসলে কি তখন ওই ছোট মাথায় আসে নাই।কেবল ডিকশনারি ঘেটে যা বাইর করেবুঝেছিলাম তাতেআমার মাথা খুব একটা কাজ করে নাই।যাই হোক আমার কষ্ট ছিল যেই স্যার এত সুন্দর করে আমাদের Easy Bangla পড়ায়, বাংলার মতন কঠিন বিষয়কেও আনন্দ নিয়ে পড়ায় এবং আমি ক্লাসে সম্পূর্ণ মনোযোগ রাখি ওই স্যার যা পড়তে যাবেন সেটা অবশ্যই দরকারি কািছু এবং বড় হয়ে আমাকেও ওই পড়াটা পড়তে হবে।কিন্তু ওটা পড়া আর হয়ে ওঠে নাই।আব্বা চাইলেও হয় নাই।হয়ত ভিতরের তাগিদটা মরে গিয়েছিল নয়ত কেউ যে থাকে না একটু আইডল মানব বা আমার পড়ালেখার আনন্দ খুশি মনে শেয়ার করবে বা উৎসাহ দিবে তা পাই নাই।
.
আবার এটাও হতে পারেঅনেক অনেক বছর বিদেশের মাটিতে থাকতে থাকতে আমি অতিষ্ঠ হয়ে ওঠেছিলাম তাই হয়ে ওঠে নাই।কিন্তু সব ছাপিয়ে যা আমার মনে আছে তা হলো বিয়ের পর হাসব্যান্ড বলেছিল, ফেরদৌস আর কত পড়বা একটু সংসারি হও।অনেক তো পড়েছো, যতটুকু পড়েছো সম্মান নিয়ে দেশের মাটিতে থাকার মতন হয়েছে।এতপড়ে দেশে এসে পরে আর কোথাও সেটেল হতে পারবানা।একমাত্র শিক্ষকতা করা ছাড়া!ওই আমার শেষ ইচ্ছে ছিল লিখাপড়ার জন্য মন নষ্ট হয়ে যাওয়া, তারপর একাডেমিক লাইনের জন্য খুব একটা তাগিদ অনুভব করি নাই,যা এখন আফসোস হলেও মেনে নিয়েছি।
.
কিন্তু ড.আসিফ নজরুল এর পিএইচডির গল্প বইটা পড়ার সময় খুব স্মৃতিকাতর হচ্ছিলাম।কত ঘাত প্রতিঘাত পার হয়ে এসে মানুষ সর্বোচ্চ শিখরে পৌছায়, আর এদিকে আমার মতন মানুষ সামান্য কষ্ট করাটাকে বড় কিছু ভেবে লিখাপড়ায় ছেদ ঘটিয়ে দেশে পরে আছি!
গল্পটা মূলত জীবন নিয়ে লিখা, সমসাময়িক অবস্থা গুলো যা মুটামুটি সবার একই হয় তা জানিয়ে লিখা।একটা বিষয় সবচেয়ে মজার ছিল তা হলো উনার লিখার ভিতর যতগুলো মানুষের নাম এসেছে তাদের লিখাপড়ার স্বকীয়তা ওঠে এসেছে তাদের অনেককেই চিনি।কেউ কেউ সরাসরি সিনিয়র, আবার কাউকে কাউকে দূর থেকে দেখে চেনা আসলে যারা একই গন্ডির, একই মেধার তারা কোন না কোনভাবে একে অপরের সাথে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে থাকে।
.
এখানে অনেক মানুষের আনন্দ, বেদনা, হাহাকার ওঠে এসেছে, আর সেগুলো কিভাবে তাকে বদলে দেয়, তথা মানুষকে বদলায় তা ওঠে এসেছে।মূলত একটা মানুষের জিতে যাওয়ার গল্প, অনেক পিছন থেকে এসে কঠিন পরিশ্রম, সংকল্প আর জেদ করে জিতে যাওয়ার গল্প এটা।এমন বিজয় এটা যা সবার জীবনে যদি নাও থেকে থাকে, তারপরও যে এইভাবে জিতে যায় পিছন থেকে এসে তাকে লোকজন ভালবাসে,শ্রদ্ধা করে,সম্মান করে এবং গর্ব করে ফিরে না এমন মানুষ খুব কমই আসলে পাওয়া যায়।

১২০ পৃষ্ঠার এই বইটা পড়তে সর্বোচ্চ দু'ঘন্টা সময় লাগবে।তবে পড়ে অবশ্যই ভাল বোধ করবেন।

Buy Hardcover From Rokomari Or Read Short PDF

কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি 
Shanjida Afroz আপুকে।
সভাপতি ও উদ্যোক্তা,
দিনাজপুর ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা।
Review Credit 💕 Monirul Islam Monir

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ