Product Specification
Title | আর ছাড়বো না নামায |
Author | মুহাম্মাদ শাকিল হোসাইন |
Publisher | মিনারাহ পাবলিকেশন্স |
Quality | পেপারব্যাক |
Edition | 1st Published, 2020 |
Number of Pages | 64 |
Country | বাংলাদেশ |
Language | বাংলা |
আর ছাড়বো না নামায
লেখক : মুহাম্মাদ শাকিল হোসাইন
প্রকাশনী : রাইয়ান প্রকাশন
বিষয় : সালাত/নামায, ইবাদত ও আমল
পৃষ্ঠা : 56, কভার : পেপার ব্যাক
ভাষা : বাংলা
সব তাঁবুরই একটি খুঁটি থাকে, গাছের মাটির সাথে লাগোয়া একটা শিকড় থাকে। ইসলাম নামের বিশাল ও সুশোভিত বটবৃক্ষের শিকড় এবং গোটা বিশ্বকে ছেয়ে যাওয়া তাঁবুর খুঁটি হলো তাওহীদ, এরপরেই আরেকটি খুঁটি, যার নাম নামায। ইসলামে সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বোত্তম ইবাদাত হলো নামায। তাওহীদের সবচেয়ে দৃশ্যমান প্রকাশ নামায। কুফর-শিরক ও ঈমানের মাঝে পার্থক্যকারী নামায। নামায আল্লাহর সাথে সাক্ষাত। নামায অন্তরের খোরাক।
কিন্তু আফসোস……আজ মুসলিম উম্মাহর দশা এতটাই অধঃপতিত হয়েছে যে, মুসলিম কিন্তু নামায পড়ে না- এমনটাই যেন স্বাভাবিক হয়ে গেছে। আযান শুনেও না শোনাটাই যেন রীতি হয়ে গেছে। আগেকার লোকেরা নামায ছাড়লে তাকে সন্দেহ করতেন, কিন্তু এখন নামায পড়লেই বরং তাকে সংশয়ের দৃষ্টিতে দেখা হয়।
উম্মাহর প্রত্যেকটি সদস্যের প্রতি, নিজের আপন নীড়ে ফিরে আসার আহ্বান নিয়ে, নিজের স্বভাবধর্মের দাবীতে প্রত্যাবর্তন করার আকুতি নিয়েই এই বইটি। ‘আর ছাড়বো না নামায’ হয়ে উঠুক প্রত্যেকের মনের আন্তরিক দৃঢ় ইচ্ছা।
উম্মাহর প্রত্যেকটি সদস্যের প্রতি, নিজের আপন নীড়ে ফিরে আসার আহ্বান নিয়ে, নিজের স্বভাবধর্মের দাবীতে প্রত্যাবর্তন করার আকুতি নিয়েই এই বইটি। ‘আর ছাড়বো না নামায’ হয়ে উঠুক প্রত্যেকের মনের আন্তরিক দৃঢ় ইচ্ছা।
_______________________________________
সূচিপত্র
দিনগুলো পড়ে মনে -০৭
নামায কি খুব কঠিন কিছু? -১০
তারপর কী হবে? -১২
কিন্তু নামায পড়তে কষ্ট লাগে যে!-১৯
ভাইয়া! আমি সবই বুঝি! -২৭
আসলেই বিশ্বাস করি তো? -২৮
বয়স হলে নামায ধরবো! -৩১
আমার অন্তর তো পরিষ্কার! নামায লাগে না! -৩৭
আল্লাহ তো ক্ষমাশীল! -৩৮
আরও কিছু কথা -৩৯
জীবন্ত নামায -৫১
শেষকথা -৫৪
__________________________________________
দিনগুলো পড়ে মনে
চারিপাশে আগুন। লেলিহান আগুন। এক অংশ আরেক অংশকে গিলে খাচ্ছে যেন। এখনই কাউকে ধাক্কা দেয়া হবে সেই আগুনে। আরও অনেকেই আছে যাদের ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়া হবে সেই আগুনের সমুদ্রে। অনেক দূরে আরও একদল লোক। তবে তাদের আগুনে ফেলা হবে না। তারা তো আগুনের ধারে কাছেও নেই। তারা মনোরম বাগানে আরাম-আয়েশে বসে আছে। চারদিকে অজস্র ফল-ফলাদি আর পানীয়ের সমাহার। অপার্থিব সুন্দর বাগানের নায-নিয়ামত ভোগ করছে। বসে বসে আগুনের বাসিন্দাদের নিয়ে আলোচনা করছে। হঠাৎ তাদের মধ্যে থেকে কেউ একজন আগুনের বাসিন্দাদের একজনকে কি যেন জিজ্ঞেস করে বসলো। দূর হওয়া সত্ত্বেও আগুনের বাসিন্দারা পরিষ্কারভাবেই তার কথা শুনতে পেলো। সে জিজ্ঞেস করছে,
ما سلككم في سقر
তোমাদের এই আগুনে কোন জিনিস নিক্ষেপ করছে?
আগুনের বাসিন্দারা জবাব দিলো,
لم نك من المصلين
আমরা নামাযীদের অন্তর্ভুক্ত ছিলাম না।
সেদিন আগুনের ধারে বসে পৃথিবীতে কাটানো দিনগুলোর কথা মনে পড়বে তাদের। খুব মনে পড়বে। স্মৃতির পাতায় ভেসে উঠবে পৃথিবীতে কাটিয়ে আসা
১. সূরা মুদ্দাচ্ছির, ৪২-৪৩
সেই দিনগুলোর কথা। তবে স্মৃতি হবে খুবই যন্ত্রণাদায়ক। দগদগে ফোড়ার মতন কষ্টদায়ক। হবে আফসোস আর হতাশায় ভরা। মনে করতে থাকবে কীভাবে তারা দিনের পর দিন নামায ত্যাগ করেছে। ফজরের আযান দিয়েছে। রাতের নীরবতা ভেঙেছে। কিন্তু তখনো তারা ছিলো গভীর ঘুমে মগ্ন। পাখিরা জেগে উঠেছিলো তবে জাগতে পারেনি তারা। কেন? ‘আরেকটু ঘুমিয়ে নিই’ ‘সকালে ঘুম থেকে উঠতে অনেক কষ্ট হয়’ ‘এখন না ঘুমালে অফিস/ভার্সিটি/কলেজ/স্কুলে গিয়ে ঘুম আসবে’ এসব বাহানা দিয়ে নিজেকে ভুলিয়ে রেখেছিলো। আচ্ছা, ফজরের পরে যুহরের কি হলো? তা পড়েনি কেন? ও হ্যাঁ, ভুলেই গেছি, ওই সময় তারা অফিসে থাকত, নাহয় ভার্সিটিতে, নাহয় নিজের ঘরের কাজ, বাচ্চা-কাচ্চাসহ হাজারো ঝামেলার! মধ্যে; তাই নামায পড়ার সময় করা হয়ে ওঠেনি তাদের।
এভাবে আসরের সময়ও চলে গিয়েছিলো, হয়ত বাসে বসে পাবজি গেইম খেলায় ব্যস্ত ছিলো কেউ, কেউ কেউ সারাদিন ভার্সিটি শেষে বাসের জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে ঘুমের চোটে হাই তুলছিলো, আবার কেউ কেউ মশগুল ছিলো ম্যাসেঞ্জারে নিজের গার্লফ্রেন্ডের সাথে কথা বলতে, কোন স্টিকারটা তার মনের ভাবখানা বেস্টাম বেস্টভাবে প্রকাশ করতে পারে সেই পরিসংখ্যান কষতে কষতে মন ছিলো মশগুল, নাহয় পুরো মার্কেট ঘুরে বেস্ট জামাটা কেনার জন্য এ জামা ও জামা হাতড়ে বেড়াচ্ছিলো একদল; যাই হোক, নামাযের জন্য মসজিদের দিকে যাওয়া তাদের হয়নি।
মুসাল্লাটা নিয়ে বাসায় নামাযটা পড়ার মত ফুরসতও তাদের মেলেনি। আর মাগরিবের সময় বাদুড়ের মত ঝুলে ঝুলে অফিস থেকে ফিরতে হত বাসায়, ফিরতে ফিরতে একটু ফেইসবুকে ঢু মেরে এর ওর পোস্ট দেখা, লাইক-কমেন্ট-শেয়ার করা, নাহয় কোচিংয়ে পড়তে যেত হত, আর তা নাহলে ঘরে সিরিয়াল দেখার মত গুরুত্বপূর্ণ! কাজের মাঝে নামাযের কথা ঘুণাক্ষরেও মনে পড়েনি তাদের, যদিও চুলায় দেয়া ডালটা উথলে উঠলো কিনা তা দেখার জন্য বেশ কয়েকবারই রান্নাঘরে যাওয়া হয়েছিলো,
তবে দেরি একদন্ডও করেনি, তাড়াতাড়ি ফিরে এসেই বসে পড়েছিলো দূরদর্শনের অপেরা শো দেখার জন্য। আর এশা! সেটা তো রিমোট নিয়ে বিশ্বের খবর দেখার সময়, বাসার সবাই মিলে একটু-আধটু গল্পগুজব করার টাইম, ওই সময় কি নামায পড়া যায়? তারপরে যা কিছু সময় থাকে তখন কি খাওয়া-দাওয়ার পর আর শরীরটা চলে? সারাদিন খাটাখাটনির পরে কি আর ওই সময়ে কিছু করা যায়? একদমই না। এই ভাবনা ভেবে মনটাকে বুঝ দিয়ে তারা প্রবেশ করেছিলো ঘুমের রাজ্যে। এভাবেই লাটিমের
মত ঘুরত তাদের দিন আর দৈনন্দিন রুটিনের চক্র। যেখানে ছিলো না আখিরাতের জন্য সময়, আর না সময় ছিলো নামাযের। আজ তারা সেদিনের কথাগুলো মনে করছে। মনে একগাদা হতাশা আর না পাওয়ার যন্ত্রণা করছে ভিড়, নষ্ট করা সেই মুহূর্তগুলোর জন্য হচ্ছে নিজের ওপর রাগ। কিন্তু কিছুই করার নেই। কিচ্ছুটি নয়। সময় হাত থেকে ফসকে গেছে। সেদিন তারা আপনা থেকেই বলে উঠবে,
يا ليتني قدمت لحياتي
“হায়! আমার এই (আখিরাতের) জীবনের জন্য আমি যদি আগেভাগেই
কিছু পাঠাতাম।”
২. সূরা ফজর, ৮৯৪।
_____________________________________
নামায কি খুব কঠিন কিছু?
নামায কিন্তু খুব কঠিন কাজ! অনেক কঠিন! এই ওঠো, তারপর প্রয়োজনীয় কাজ সারো, তারপর পানি দিয়ে হাতমুখ-মাথা ধোও, এরপর আবার জামাকাপড় পরো, হেঁটে হেঁটে মসজিদে যাও, এত কষ্ট কে করে? যে কাজ করতে কষ্ট হয় সে কাজ করার কি দরকার? কোনোই দরকার নেই, রেখে দাও। অত্যন্ত যৌক্তিক বাহানা বটে! কিন্তু আসলেই বাস্তবতার নিরিখে কি এই বাহানা টেকে?
মনে করুন, আপনার অফিস বাসা থেকে অনেক দূরে। আপনি থাকেন ঢাকা সিটিতে আর আপনার অফিস নারায়ণগঞ্জে কিংবা গাজীপুরে। সকালটা হলেই ভেতর থেকে অদৃশ্য অ্যালার্ম বাজিয়ে কে যেন জাগিয়ে তোলে আপনাকে। প্রতিদিন সকালে উঠছেন। মুখহাত ধুচ্ছেন। তাড়াতাড়ি খেয়ে নিচ্ছেন। ব্যাগে ল্যাপটপটা নিলেন কি না, টিফিন বক্সটা ঢুকালেন কি না, মোবাইলটা পকেটে আছে কি না দেখেটেখে আপনি রওয়ানা হয়ে গেলেন। টেম্পু করে বাসস্ট্যান্ড। তারপর সেখান থেকে দেড় থেকে দুই ঘন্টার রাস্তা পার হয়ে আপনার অফিস। নাহয় কমলাপুর যেয়ে ট্রেনের জন্য অপেক্ষা। অপেক্ষার প্রহর কখনো আধা ঘন্টা কখনো এর বেশিও হয়। কিন্তু তারপরও ট্রেন আসামাত্রই আপনি চড়ে বসেন।
নিজের সিটটা দখল করেন। কারণ? আপনাকে অফিসে যেতে হবে যে। অফিস না করলে, ইনকাম না করলে, আপনার বাবা-মা, স্ত্রী-সন্তানরা কি খাবে? উপার্জন না করলে তাদের মুখে অন্ন কীভাবে তুলে দেবেন? তাদের ভরণপোষণ আপনি কীভাবে করবেন? সারাদিন অসহনীয় কষ্ট আর পরিশ্রমের পর সেই আপনি আবার একইভাবে বাসায় ফেরেন। বাসের দীর্ঘ জ্যামে বসে থেকে, কখনো বা হেঁটে হেঁটে, ঘামে ভিজে নেয়ে, কখনো ঘুমে ঢুলতে ঢুলতে। বাসায় ফেরেন ভালোবাসার স্ত্রীর জন্য, সন্তানের হাসি, খুনসুটি আর দুষ্টুমি দেখার জন্য, বুড়ো মা-বাবার স্নেহ আর হাতের ছোঁয়া পাওয়ার জন্য। এই পুরো পরিবার
আপনার ওপর নির্ভরশীল। তারা আপনার রক্ত পানি করা অর্থের ওপরই বেঁচে আছে। এতকিছু ভাবলে আপনার সারাদিনের কষ্ট গলে পানি হয়ে যায়। রাতে এসে এদের আদর-স্নেহ-ভালোবাসা আপনাকে পরেরদিন বাসা থেকে ঘুম কামাই দিয়ে ভোরের দিকে বের হওয়া, গিয়ে রিকশা পাওয়া না পাওয়ার টেনশন, বাসটা ঠিকঠাক মত ধরার চাপ, একলাফে কিংবা দৌড়ে বাসে ওঠার ঝুঁকি, বাসে ঘুমুতে ঘুমুতে বা ঝিমুতে ঝিমুতে অফিসের দিকে যাওয়ার যন্ত্রণা, অফিসে দেরি হলে স্যারের বকা খাওয়ার ভয়, তারপর সারাদিন অফিসে কাজের ভার, উর্ধ্বর্তনের গঞ্জনা সবকিছু অবলীলায় সহ্য করার এক আশ্চর্য ক্ষমতা দেয়। সত্যি বলছি না আমি?
কিন্তু সেই তুলনায় নামায আসলে কতটুকু কঠিন? শরীয়ত মোতাবেক ওযু করে তারপর ফরযটা আর তারপর কিছু সুন্নাত, ব্যস! এত কষ্ট করতে পারছেন দুনিয়ার জন্য আর সেই তুলনায় অনেক কম কষ্ট করতে পারবেন না আখিরাতের জন্য? যেই আখিরাতের জীবনের কোনো তুলনাই দুনিয়ার জীবনের সাথে হয় না, হতে পারে না। দুনিয়ার জীবন যদি পানির একটি ফোঁটা হয়, তবে আখিরাত কূলহীন বিশাল সমুদ্র। পানির একটি ফোঁটার জন্য কষ্ট তো অনেক করেছেন, আখিরাতের কী হবে, ভেবেছেন কি ভাই? আপনিও ভেবেছেন কি কিছু, বোন? ভেবে দেখুন না! নামায কঠিন—এই অযুহাতের যৌক্তিকতা আসলে কতটুকু! আমার মনে হচ্ছে না এই কথার আদৌ কোনো যৌক্তিকতা আছে। সব হচ্ছে আমার ও আপনার ঐকান্তিকতা ও নিষ্ঠা।
আমাদের যদি নামাযের প্রতি নিষ্ঠা থাকে, আমরা যদি নামাযের মত ফরয আদায়ে দায়িত্ববান হই তবে আমাদের কাছে নামায মোটেও কঠিন কিছু মনে হবে না। অফিস করা, পড়াশোনা করার পেছনে অন্তরের খাঁটি নিষ্ঠা ও ঐকান্তিকতা আছে, তাই আমাদের এসব কাজ করতে হাজার কষ্ট হলেও তা গায়ে লাগে না, দিব্যি করা হয়ে যায়। যেই কাজের প্রতি ঐকান্তিকতা থাকে না, সেই কাজের সামান্য কষ্ট দেখেই পিছিয়ে যাওয়া হবে, এটাই কিন্তু স্বাভাবিক। ব্যাপারটা হচ্ছে আসলে অন্তরের অন্তরের নিয়্যাতের, ইন্টেনশনের। তাই ভাই ও বোন আমার! নামাযের প্রতি নিষ্ঠা আনুন। তবে দেখবেন আপনার আর কষ্ট মনে হচ্ছে না নামাযকে। আর দেরী নয়! আজ থেকেই শুরু করুন নামায, অন্তরের বিশুদ্ধতা ও নিষ্ঠা সহকারে নামায। এখন থেকেই। নামায কিন্তু ওত কঠিন নয়, মোটেও নয়।
আরো পড়তে অথবা দেখতে :- অনুগ্রহ করে Hardcopy ক্রয় করুন।
Buy Hardcover From Wafilife Or Rokomari
অনুরোধঃ- বই : আর ছাড়বো না নামায এর প্রি অর্ডার চলছে ... তাই আর ছাড়বো না নামায বইটি PDF Free Download চাহিয়া লেখকদের নিরুৎসাহিত করিবেন না।
We Respect Every Author Hardwork - boipaw.com™
0 মন্তব্যসমূহ
ℹ️ Your Opinion is very important to us, Please Writer your comment below about this Post.....