[PDF] সীরাহ মুহাম্মদ প্রথম খন্ড এবং দ্বিতীয় খণ্ড রেইনড্রপস পিডিএফ - Sirah Muhammad (sa:) First & Last Raindrops

[PDF] সীরাহ মুহাম্মদ প্রথম খন্ড এবং দ্বিতীয় খণ্ড রেইনড্রপস পিডিএফ - Sirah Muhammad (sa:) First & Last Raindrops

সীরাহ মুহাম্মদ (সা:) (প্রথম ও শেষ খন্ড) পিডিএফ/PDF

লেখক: Jim Tanvir
সংস্করণ: Mar 2018
বিষয়: অভিধান
প্রকাশক: Raindrop Publication

সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য , যিনি তাঁর নগণ্য কিছু বান্দাকে তাঁর শ্রেষ্ঠতম বান্দার জীবনকথা মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার তৌফিক দিয়েছেন । রাসূলুল্লাহ মুহাম্মাদ হচ্ছেন এমন একজন , চৌদ্দশ বছর পরেও যাকে নিয়ে মুগ্ধতা এতটুকু কমেনি । যারা তাকে জেনেছে , তারা তাঁকে ভালোবেসেছে ; যত বেশি জেনেছে , তত বেশি ভালোবেসেছে । যারা তাঁকে জানেনি , তাঁরা ভালোবাসার নদী দেখলেও মহাসমুদ্র দেখেনি । 

না - দেখেও যাকে পৃথিবীর মানুষ সবচাইতে বেশি ভালোবেসেছে , তিনি হলেন রাসূলুল্লাহ । গল্পের নায়কদের কথা মানুষ খানিক বাদেই ভুলে যায় , ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্বদের প্রভাব টিকে থাকে বড়জোর কয়েকটা বছর , কিন্তু রাসূলুল্লাহ এমন একজন যাকে এত বছর পরেও লোকেরা ভালোবাসে , তাঁর অনুসরণ করে , তাঁর সম্মানে নিজের জীবন দিয়ে দেয় । জীবদ্দশায় আবু জাহেলরা তাঁকে ভয় করতো , মৃত্যুর পরে আবু জাহেলের উত্তরসূরিরা তাঁর অনুসারীদের ভয় করে । থেকে শুরু করে বারাক ওবামা কিন্তু দুর্ভাগ্য , যে জাতির কাছে ‘ মুহাম্মাদ ' * আছে , সে জাতিকে আজ টং এর মামা প্রত্যেকেই দিকনির্দেশনা দিতে ব্যতিব্যস্ত । মুসলিমদের আজকে অমুসলিমরা ইসলাম শেখায় , উন্নয়ন আর সমৃদ্ধির সবক দেয় । বিষয়টা লজ্জা আর গ্লানির । 

আমরা রাসূলুল্লাহকে চিনলেও তাঁকে আমরা জানিনা । জানিনা বলেই তিনি কারো কাছে নিছক একজন ' ভালো মানুষ ' , আর দশজন মনীষির মতো , যারা কিনা কিছু দার্শনিক তত্ত্ব আর নীতিকথা বলে খালাস ! কিংবা কারো কাছে তিনি একজন ‘ ধর্মপ্রচারক ’ , কিছু ভালো ভালো কাজ করেছেন , এই যা ! কিন্তু তাঁর আসল পরিচয় হচ্ছে তিনি একজন রাসূল । তিনি একটা গ্লোবাল মিশন নিয়ে এসেছিলেন এবং আমরা সেই মিশনের অংশ । আল্লাহ এই সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষটিকে পাঠিয়েছেন আমাদের জীবনের প্রতিটি বিষয়ে পথ দেখানোর জন্য । তিনি মানুষকে সেই পথ দেখিয়ে গেছেন যে পথ খুঁজে পেতে আমাদের বুদ্ধিজীবী - দার্শনিক - বিজ্ঞানী আমলারা মাথা কুটে মরে , কিন্তু সমাধান খুঁজে পায় না । এই সমস্যার একটিই সমাধান । তা হলো রাসূলুল্লাহকে জানা । আর জানার জন্যই তাঁর সীরাহ পড়া । 

রাসূলুল্লাহর * সীরাহ হচ্ছে তাঁর ব্যক্তিত্ব , তাঁর ব্যক্তি জীবন , তাঁর মধুওয়াত , তাঁর নেতৃত্ব এবং তাঁর চারপাশের মানুষগুলো নিয়ে একটি চমৎকার কাহিনীপ্রবাহ । রাসূলুল্লাহর * সীরাহ পড়লে ইনশা আল্লাহ , ইসলাম সম্পর্কে আমাদের সংকীর্ণ ধারণার দেয়ালগুলো ভেঙে যাবে । রাসূলুল্লাহর * জীবন সম্পর্কে জানলে , ইসলামবিদ্বেষীদের প্রোপাগান্ডা শুনে আমাদের মনে যে ‘ খচখচ ' হয় সেটা দূর হয়ে যাবে , বিইযনিল্লাহ । আমরা জানব রাসূলুল্লাহ কত চমৎকার একজন মানুষ ছিলেন । তিনি কারো মন জয় করতেন , কাউকে রুখে দিতেন , আর কাউকে মোকাবিলা করতেন । নিজের ঘর থেকে শুরু করে যুদ্ধের ময়দান – প্রতিটি ক্ষেত্রে তিনি ছিলেন • একজন বুদ্ধিদীপ্ত ব্যক্তিত্ব । যারা তাঁকে ভালোবেসেছে , তাদের জীবন আমূল বদলে গেছে , যে জাতি তাঁর অনুসরণ করেছে , তাদের ভাগ্য বদলে গেছে । এমন একজন মানুষ সম্বন্ধে যদি আমরা না জানি না মানি , তাহলে তো আমরাই ' মিস ' করলাম ! আদর্শিক দৈন্যতার কারণে ইতিহাস বলতে হয়তো আমরা ৫২ বা ৭১ এর আগে কিছু চিন্তা করতে পারি না , কিন্তু রাসূলুল্লাহ ও তাঁর সাহাবাদের ইতিহাসের সামনে সকল ইতিহাসই ম্লান । 

পৃথিবীর যত বিপ্লব , তার সবক'টা রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কিছু পরিবর্তন করে কয়েক দশক বা সর্বোচ্চ কয়েক শতক পরেই হুমড়ি খেয়ে পড়েছে । কিন্তু যে বিপ্লবের সূচনা রাসূলুল্লাহ * করেছেন , সেটা চলবে ততদিন , যতদিন না মুসলিম জাতির সমগ্র পৃথিবীর উপর বিজয়ী হবে । বাংলা ভাষায় রাসূলুল্লাহর * একাধিক সীরাহ থাকা সত্ত্বেও আমরা এই সীরাহতে হাত দিয়েছি মূলত দুটি কারণে । একটা হলো , মুসলিমরা সীরাহকে গল্প হিসেবে পড়ে , কিন্তু সেখান থেকে কিছু শেখে না । এই সমাজের আবু জাহেল কিংবা মুনাফিক আবদুল্লাহ ইবন উবাইদেররকে তারা চিনতে পারে না । এই সীরাহতে প্রায় প্রতিটি ঘটনা থেকে কী শেখার আছে তা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে । 

দ্বিতীয় ব্যাপারটি ভাষাগত । দীর্ঘদিন ধরে ইসলামকে আমাদের দেশের মূলধারার শিক্ষা থেকে দূরে ঠেলে দেওয়ায় ইসলামী সাহিত্যের সাথে সাধারণ মানুষের বেশ দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে । আমাদের দেশের স্কুল - কলেজগুলোতে যে ধরনের সাহিত্য আমরা পড়েছি , সেগুলোর সাথে ইসলামী সাহিত্যকর্মের ভাষাগত ব্যবধান তৈরি হওয়ায় বরেণ্য আলিমদের লেখা বইগুলো পড়েও মানুষ যথাযথভাবে উপকৃত হতে ব্যর্থ হচ্ছে । এই সীরাহ সেই ব্যবধানকে কমিয়ে আনার প্রয়াস । 

চৌদ্দশো বছর আগের কথাগুলো যেন আমরা আমাদের পরিস্থিতির সাথে মেলাতে পারি , সেই সময়ের আলোয় নিজেদের দেখতে পারি সে জন্য প্রয়োজন ভাষাগত দেয়ালটি ভেঙে ফেলা । সে উদ্দেশ্যে এই সীরাহতে কাহিনিগুলোকে বর্ণনা করা হয়েছে কিছুটা আধুনিক যুগের ঢঙে , যেন পাঠক স্বাচ্ছন্দ্যের সাথে নবীজির যুগে প্রবেশ করতে পারে । এই সীরাহর বিষয়বস্তুগুলো মূলত নেওয়া হয়েছে শাইখ আলি আস - সাল্লাবির রচিত সীরাহ এবং আর - রাহীকুল মাখতুম থেকে ।

রেইনড্রপস এর ভাইবোনেরা চেয়েছে কেবল একটি প্রাণবন্ত ও আকর্ষণীয় সীরাহ উপহার দিতে , যেন রাসূলুল্লাহকে আমরা ভালোবাসতে পারি , তাঁর জন্য জীবন দিতে পারি । সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লাম ।
জিম তানভীর ২০ রবিউস সানি , ১৪৩৭ হিজরী ।

সীরাহ মুহাম্মাদ (সঃ) ডাউনলোড | প্রথম খন্ড - দিত্বীয় খন্ড

সিরাহ বা সিরাত অর্থ কি ?

ইসলামী বিশ্বকোষ’ সিরাতের অর্থ লিখেছে-
১. যাওয়া, যাত্রা করা, চলা।
২. মাজহাব বা তরিকা।
৩. সুন্নাহ।
৪. আকৃতি।
৫. অবস্থা।
৬. কীর্তি।
৭. কাহিনী, প্রাচীনদের জীবন ও ঘটনাবলীর বর্ণনা।
৮. নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর গাজওয়ার (যুদ্ধের) বর্ণনা।
৯. অমুসলিমদের সঙ্গে সম্পর্ক, যুদ্ধ এবং শান্তির সময়ে মুহাম্মদ (সা.) যা বৈধ মনে করতেন তার বর্ণনা কিংবা মুহাম্মদ (সা.)-এর জীবন চরিত; সম্প্রসারিত অর্থে বীর পুরুষদের কীর্তির বর্ণনা।


পবিত্র কোরআনে কারিমে সিরাত শব্দটি শুধুমাত্র একবারই ব্যবহৃত হয়েছে। সূরা ত্বহার ওই আয়াতে বলা হয়েছে, ‘তুমি তাকে ধরো এবং ভয় পেয়ো না। আমি তাকে পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে দেব, যেরূপ প্রথমে এটি ছিল। ’

এখানে সিরাত শব্দটি আভিধানিক অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। মোটকথা, সিরাতের আভিধানিক অর্থ হলো, কোনো ভালো মানুষের বা নেককার মানুষের চাল-চলন, ওঠাবসা, কাজ, মেজাজ-মর্জি। এককথায় জীবন পদ্ধতি বা জীবন চরিত।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ