Product Specification
Title | উম্মাহর ঐক্য পথ ও পন্থা |
Author | মাওলানা মুহাম্মাদ আবদুল মালেক |
Publisher | মারকাযুদ দাওয়াহ আলইসলামিয়া |
Quality | PDF file Download Free Link ⤵️ |
Edition | 3rd Edition, 2015 |
Number of Pages | 206 |
Country | বাংলাদেশ |
Language | বাংলা |
Product Summary...
মতভেদ কখন বিভেদ হয়?
ভূমিকায় উল্লেখিত আয়াত ও হাদীস থেকে ঐক্য ও সম্প্রীতির গুরুত্ব যেমন বোঝা যায়, তেমনি এ কথাও বোঝা যায়, সকল মতভেদ বিভেদ নয়। বিষয়টি এভাবে বোঝা যেতে পারে, কুরআন ও সুন্নাহর সুস্পষ্ট বর্ণনা অনুযায়ী নবী ও রাসূলগণের মধ্যে কোনো বিভেদ ছিল না। তারা পরস্পর অভিন্ন ছিলেন। যদিও শরীয়তের বিধিবিধান সবার এক ছিল না, পার্থক্য ও বিভিন্নতা ছিল। কিন্তু তা ছিল ওহী ও দলিলভিত্তিক। বোঝা গেল, ফুরূ বা শাখাগত বিষয়ে দলিলভিত্তিক মতপার্থক্য বিভেদ-বিচ্ছিন্নতা নয় ।
সবাই জানেন, দাউদ আ. ছিলেন আল্লাহর নবী। তাঁর পুত্র সুলাইমান আ.ও নবী ছিলেন। এক মোকাদ্দমার রায় সম্পর্কে দুজনের মাঝে ইজতিহাদগত মতপার্থক্য হল। আল্লাহ তাআলা কুরআন মজীদে তাঁদের মতপার্থক্যের দিকে ইঙ্গিত করেছেন এবং সুলাইমান আ.-এর ইজতিহাদ যে আল্লাহ তাআলার মানশা মোতাবেক ছিল সেদিকেও ইশারা করেছেন। তবে পিতাপুত্র উভয়ের প্রশংসা করেছেন। তো এখানে ইজতিহাদের পার্থক্য হয়েছে, কিন্তু বিভেদ হয়নি। এই পার্থক্যের আগেও যেমন পিতাপুত্র দুই নবী এক ছিলেন, তেমনি পার্থক্যের পরও। আয়াতটি এই- (সূরা আম্বিয়া (২১): ৭৮-৭৯)
وداؤد وسليمن إذ يحكمن في الحرث إذ نفشت فيه غنم القوم ، وكنا يحكيهم شهرين فقهننها سليمن وكلا اتينا حكما وعلما
আগ্রহী পাঠক এই আয়াতের ব্যাখ্যা তাফসীরে ইবনে কাসীর, তাফসীরে কুরতুবী (১১/৩০৭-৩১৯) ও অন্যান্য তাফসীরের কিতাব থেকে দেখতে পারেন।
তো দলিলভিত্তিক শরয়ী মতভেদকে ‘ফুরকা' বা বিভেদ-বিচ্ছিন্নতা মনে করা ভুল। এ ভুলের শিকার যেন কেউ না হয় তার জন্য বিভেদ-বিচ্ছিন্নতার সুরতগুলো ভালোভাবে জেনে নেওয়া চাই। আর তা এই
১. দ্বীন ইসলামে দাখিল না হওয়া, ইসলামের বিরোধিতা করা বা ইসলাম থেকে খারিজ হয়ে যাওয়া- এগুলো সর্বাবস্থায় দ্বীনের ক্ষেত্রে বিভেদ-বিচ্ছিন্নতা। তাওহীদ এবং দ্বীনের অন্যান্য মৌলিক বিষয়, যেগুলোকে পরিভাষায় ‘জরুরিয়াতে দ্বীন' বলে, তার কোনো একটির অস্বীকার বা অপব্যাখ্যা হচ্ছে ইরতিদাদ (মুরতাদ হওয়া) যা দ্বীনের ক্ষেত্রে বিচ্ছিন্নতার জঘন্যতম প্রকার। এগুলো থেকে বাঁচার একমাত্র উপায় দ্বীন ইসলামকে মনেপ্রাণে গ্রহণ করা। ২. ইসলামী আকীদাসমূহ এবং দ্বীন ও দ্বীনের পরিভাষাসমূহ বোঝার ক্ষেত্রে
খেয়ালখুশির অনুসরণ করে খুলাফায়ে রাশেদীন ও সাহাবীগণের পথ থেকে বিচ্যুত হওয়া। এটাও বিচ্ছিন্নতা। হাদীস শরীফে কঠিন ভাষায় এর নিন্দা করা হয়েছে এবং তা থেকে বাঁচার জন্য দুটি জিনিসকে দৃঢ়ভাবে ধারণের আদেশ করা হয়েছে : আসসুন্নাহ এবং আলজামাআ। এ কারণে যে জামাত সিরাতে মুস্তাকীমের উপর অটল থাকে তাদের নাম 'আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআহ।' তাদের পথ থেকে যারাই বিচ্যুত হয়েছে তারাই এই বিভেদ-বিচ্ছিন্নতার শিকার হয়েছে। আর বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর যদি তা কোনো দল ও ফের্কার জন্ম দেয় তাহলে তা তো আরও জঘন্য।
নিম্নোক্ত হাদীসগুলো লক্ষ করুন প্রথম হাদীসটি সুনান-মাসানীদসহ অনেক কিতাবে আছে। এমনকি সহীহ শিরোনামে সংকলিত কোনো কোনো কিতাবেও আছে। যেমন, সহীহ ইবনে হিব্বান। আমি এখন ইমাম বুখারী রহ. ও ইমাম আবু দাউদ রহ. প্রমুখ ইমামের উস্তাদ ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল রহ.-এর সংকলিত ‘মুসনাদ' থেকে হাদীসটি উল্লেখ করছি। আহমদ ইবনে হাম্বল রহ. বলেন
حدثنا الوليد بن مسلم، حدثنا ثور بن يزيد، حدثنا خالد بن معدان، قال: حدثنا عبد الرحمن بن عمرو السلمي، وحجر بن حجر قالا: أتينا العرباض بن سارية وهو ممن نزل فيه « ولا على الذين إذا ما اتوك لتحملهم قلت لا أجد ما أحيلكم عليه (التوبة: ٩٢) فسلمنا، وقلنا: أتيناك زائرين وعائدين ومقتبسين. فقال عرباض : صلى بنا رسول الله صلى الله عليه وسلم الصبح ذات يوم، ثم أقبل علينا، فوعظنا موعظة بليغة ذرفت منها العيون، ووجلت منها القلوب، فقال قائل: يا رسول الله، كأن لهذه موعظة مودع، فماذا تعهد إلينا؟ فقال: «أوصيكم بتقوى الله، والسمع والطاعة، وإن كان عبدا حبشيا، فإنه من يعش منكم بعدي فسيرى اختلافا كثيرا، فعليكم بسنتي وسنة الخلفاء الراشدين المهديين، تمسكوا بها، وعضوا عليها بالنواجذ، وإياكم ومحدثات الأمور، فإن كل محدثة بدعة، وكل
-হাদীস ১৭১৪৫, ২৮/৩৭৫, মুআসসাসাতুর রিসালা থেকে প্রকাশিত শাইখ শুআইব আলআরনাউত ও তাঁর সহকর্মীদের তাহকীক ও সম্পাদিত নুসখা এরপর আরও দুটি সনদ আছে। ১৭১৪২ নং হাদীসের টীকায় শাইখ শুআইব আলআরনাউত ও তাঁর সহকর্মীরা এ হাদীসের বিভিন্ন রেওয়ায়েত, সমর্থক বর্ণনা ও তাখরীজসহ বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। হাদীসটি মুতালাক্কা বিল-কবুল অর্থাৎ হাদীস ও ফিকহের ইমামগণের নিকট প্রসিদ্ধ ও স্বীকৃত একটি সহীহ হাদীস। —আলমুস্তাখরাজ, আবু নুআইম ১/৩৫-৩৭
মূল হাদীসের তরজমা
ইরবায ইবনে সারিয়া রা. বলেন, একদিন আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের নিয়ে ফজরের নামায পড়লেন। এরপর আমাদের দিকে ফিরে এক সারগর্ভ বক্তৃতা করলেন। এতে আমাদের চোখ অশ্রুসজল হল এবং হৃদয় ভীতকম্পিত হল। একজন আরয করলেন, আল্লাহ রাসূল! এ যেন বিদায়কালের উপদেশ। আপনি আমাদের (আরও) কী অসিয়ত করছেন? আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমাদেরকে অসিয়ত করছি আল্লাহকে ভয় করার এবং আমীরের আনুগত্য করার, যদি সে হাবশি গোলামও হয়। কারণ আমার পর তোমাদের যারা বেঁচে থাকবে তারা বহু ইখতিলাফ দেখতে পাবে। তখন আমার সুন্নাহ) ও আমার হেদায়েতের পথের পথিক খলীফাগণের সুন্নাহকে সর্বশক্তি দিয়ে ধারণ করবে। আর সকল নবউদ্ভাবিত বিষয় থেকে দূরে থাকবে। কারণ সকল নবউদ্ভাবিত বিষয় বিদআত। আর সকল বিদআত গোমরাহি।
হাদীসের ব্যাখ্যা
আল্লাহর রাসূলের বয়ান থেকে সাহাবায়ে কেরামের মনে হয়েছে, এটি তাঁর বিদায়ী বয়ান। তাই তাঁরা কিছু মৌলিক নীতি চেয়েছেন, যা তাঁর অনুপস্থিতিতে আলোকবর্তিকা হিসাবে কাজ করবে। জবাব থেকে বোঝা যাচ্ছে, হয়ত তাঁরা একটি মানদণ্ড চেয়েছেন, যার দ্বারা দ্বন্দ্ব ও মতভেদের ক্ষেত্রে ফয়সালা করা যাবে। আল্লাহর রাসূল বলেছেন, 'তোমাদের মধ্যে যারা আমার পর বেঁচে থাকবে তারা বহু ইখতিলাফ দেখতে পাবে।' এখানে ইখতিলাফটা ব্যাপক। যেকোনো ধরনের ইখতিলাফ হতে পারে। ইখতিলাফ যখন হবে তখন করণীয় কী?
(5) এখানে ‘সুন্নাহ' অর্থ নববী আদর্শ এবং পথ ও পন্থা।
0 মন্তব্যসমূহ
ℹ️ Your Opinion is very important to us, Please Writer your comment below about this Post.....