ভূতের মেয়ে লীলাবতী - শফীউদ্দীন সরদার | Vuter Meye Lilaboti - Sofiuddin Sordar Books [PDF]

Image

Vuter Meye Lilaboti Story PDF Book Specification

Title ভূতের মেয়ে লীলাবতী
Author শফীউদ্দীন সরদার
Publisher আধুনিক প্রকাশনী
Quality পেপারব্যাক
Edition 1st Published, 2006
Number of Pages 28
Country বাংলাদেশ
Language বাংলা

মস্ত এক রাজবাড়ী । রাজবাড়ীর পাশেই বিশাল এক তালগাছ । সেই তালগাছে বাস করে এক ভূত আর এক ভূতনী । ভূতটা বর ভূতনীটা বউ । এরা চুরি করে খায় । তাই এদের নাম হয়েছে চোরা - চুন্নী । আর সব ভূতেরা ঘেন্না করে এদের । বলে , এরা ভূত জাতির কলংক । চুরি করে খায় , ছিঃ ! এ চোরা আর চুন্নী কিন্তু ভাত মাছ চুরি করে খায় না । এরা খায় মানুষের কচি কচি বাচ্চা । একেবারেই কচি । মায়ের পেট থেকে বেরিয়েই যে বাচ্চা কেঁদে উঠে , সেই বাচ্চা । দুইকান সব সময় খাড়া রাখে এরা ।

মায়ের পেট থেকে বেরিয়ে কোথাও কোনো বাচ্চা কেঁদে উঠলেই এরা তা শুনতে পায় । অমনি বাচ্চাটাকে খাওয়ার বড় লোভ হয় এদের । টপ্ টপ্ করে পানি পড়ে জিব দিয়ে । তখনই চোরা - চুন্নী দুইজন ছুটে যায় বাচ্চাটাকে চুরি করে আনার জন্য । চুরি করার কায়দাটাও যে সে কায়দা নয় । একেবারেই ভেল্কি বাজী । ছুঃমন্তর ছুঃ । বাচ্চাকে কোলের কাছে শোয়ায়ে মা একটু চোখ বুজলেই কম্ম কাবার । একপলকেই চুরি করা শেষ । বাচ্চাটা মেয়ে হলে চুন্নীটা তখনই বাচ্চার রূপ ধরে বিছানায় শোয় আর আসল বাচ্চাকে তুলে

নিয়ে চোরাটা চলে যায় তাল গাছে । বাচ্চার মা কিছু বুঝতেই পারে না । চোখ মেললেই সে দেখতে পায় – বাচ্চাটা তার পাশেই শুয়ে আছে । এটা যে আসল বাচ্চা নয় , চুন্নীটা বাচ্চার রূপ ধরে শুয়ে আছে , মা তা বুঝবে কি করে ? এর পরের ঘটনা আরো চমৎকার । একটা বেলা না যেতেই হাত পা খিচিয়ে দুই চোখ উল্টিয়ে মরে যায় বাচ্চাটা । মানে , বাচ্চার রূপ ধরে থাকা ঐ চুন্নীটা মরে যাওয়ার ভান করে । সবাই ভাবে অসুখ হয়েই মরে গেল বাচ্চাটা । এরপর বাচ্চাটাকে কবর দিয়ে এলেই ব্যস , চুন্নীকে আর পায় কে ? কবর থেকে বেরিয়ে সে ছুটে যায় তাল গাছে । আসল বাচ্চা নিয়ে চোরাটা তালগাছে বসে থাকে । 

চুন্নী ফিরে এলেই বর বউ দুজন মজা করে বাচ্চাটাকে খায় । বাচ্চাটা ছেলে হলেও ঐ একই ব্যাপার । তখন চোরাটা বাচ্চার রূপ ধরে থাকে আর চুন্নীটা আসল বাচ্চা নিয়ে চলে আসে তালগাছে । ভূতের কাণ্ডতো ! এদের বুদ্ধির শেষ নেই । রাজবাড়ীর পাশে ঐ তালগাছে বসে চোরা - চুন্নী বর বউ চুরি করা বাচ্চা খায় , আর ঐ তালগাছেই ঘুমায় । প্রত্যেকবার তারা দূরের গাঁ থেকে কচি বাচ্চা চুরি করে আনে । হঠাৎ ঘটলো এক মজার ঘটনা । এবার রাজবাড়ীর ভেতরেই কেঁদে উঠলো এক কচি বাচ্চা । অনেকদিন পরে রাজরাণী এমাত্র একটা কন্যা সন্তান প্রসব করলেন রাজবাড়ীতে । কচি বাচ্চার কান্না শুনেই আনন্দে নেচে উঠলো চোরা আর চুন্নী । খাবারটা তাদের আজ একদম হাতের কাছে । খুশীতে ডগমগ তারা । খুশী তারা হবেই তো । তারা যে আসলেই ভূত । পাড়া পড়শীর উপর কি কোনো দয়া আছে তাদের ? এরা যার গাছে থাকে , তার ঘাড়ই ভাংগে । রাজবাড়ীর পাশেই বাস করে তারা । রাজ বাড়ীর লোকেরা তাদের পড়শী । 

কিন্তু তাহলে কি হয় ? ভূতেরা কি ওসব কথা ভাবে ? রাজ বাড়ীর ভেতরে বাচ্চার কান্না শুনতে পেয়েই ঐ কচি রাজকন্যাকে চুরি করে আনার জন্যে তারা ছুটে গেল সেখানে । চুন্নীটা রাজকন্যার রূপ ধরে মায়ের কাছে শুয়ে রইলো আর চোরাটা ঐ একইভাবে রাজকন্যাকে তুলে নিয়ে চলে এলো তালগাছে । এরপর আবার ঐ একই ঘটনা । হাত পা খিচিয়ে দুইচোখ উল্টিয়ে মরে গেল রাজকন্যা । মানে , রাজকন্যার রূপধরে থাকা ঐ চুন্নীটা মরে গেল মিছেমিছি । মরা রাজকন্যাকে কবর দেয়ার পর কবর থেকে উঠে এলো চুন্নী । বাচ্চাটাকে খাওয়ার জন্যে তালগাছে এসে এঁটে সেটে বসলো ।

 কিন্তু বর বউ দুজন বাচ্চাটাকে খেতে গিয়েই ঘটলো আর এক ঘটনা । বাচ্চাটা ছিল দেখতে খুবই সুন্দর । সুন্দর তো হবেই । আসলেই যে সে একটা রাজকন্যা । টানা টানা চোখ , বাঁশীর মতো নাক , ছবির মতো ঠোঁট আর মুখ । আর গায়ের রং ঠিক যেন গনগনে আগুন । বাচ্চাটাকে ভাল করে দেখেই গলে গেল চুন্নীটার মন । চোরাকে সে সংগে সংগে বললো – না গো না , এ বাচ্চাকে আমরা খাবো না । এটাকে আমরা পালবো । শুনে চোরা তো অবাক । বললো – পালবে মানে ?

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ