বইঃ চিন্তা ফারাক
লেখকঃ Sayed Daud
প্রকাশকঃ পুস্তক
প্রথম প্রকাশঃ অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০২১
মুদ্রিত মূল্যঃ ২২০৳
ব্যক্তিগত রেটিংঃ ৭/১০
সাহিত্যকে বলা হয় সমাজের দর্পণ। শুধু সমাজ নয়, সাহিত্য অনেক সময় ব্যক্তিগত শুদ্ধতারও মানদণ্ড হয়ে উঠে। সাহিত্য সে গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ বা কবিতা যেকোনো কিছুই হতে পারে। তবে রচয়িতার রচনা আদৌ সাহিত্য হবে কিনা তা সাহিত্যের বোদ্ধা মহলই বিচার করবেন।
'চিন্তা ফারাক' ফটিকছড়ির উদীয়মান তরুণ লেখক সৈয়দ আবু দাউদের রচনা। অভিজ্ঞ লেখকের ২য় বই হলেও এটি মূলত মুসলিমদের জন্য লেখা। একজন বিশুদ্ধ তাওহীদবাদী মুসলিম মাত্রই একজন ভালো মানুষ। কিন্তু মানুষের চির শত্রু শয়তান সৃষ্টির সূচনালগ্ন হতেই তাকে ইসলামের পথ থেকে বিচ্যুত করতে আটার ন্যায়ই পেছনে লেগেই আছে। শয়তান অগণিত ছল চাতুরী, লোভ, মতবাদ ইত্যাদির মাধ্যমে সর্বদা মুমিনদের ঈমানহারা করার চেষ্টায় রত থাকে। তাই অনেক সময় আমরা পাপকে পাপ বলে থোড়াই কেয়ার করি। এ ছাড়াও আছে জ্ঞানের অভাব, জানতে অনাগ্রহ বললেও খুব একটা ভুল হয় না! ফলে সমাজে বিস্তার লাভ করে কুসংস্কার, অপসংস্কৃতি, ধর্মহীনতা থেকে শুরু করে ধর্মবিদ্বেষ...
এই বইয়ে লেখক একজন মুসলিম হিশেবে তাঁর যাপিত জীবনের মুখ ফুটে বলতে না পারা কিছু হতাশার কথা এবং স্বয়ংসম্পূর্ণ ইসলামের সৌন্দর্যের কথা গল্পের মাধ্যমে তুলে ধরেছেন। টপিকগুলো পরিচিত হলেও বইটিতে আমি অনেক বিষয় নতুন করে জেনে কৃতজ্ঞতা বোধ করছি। আমি মনে করি একজন মুসলিম হিশেবে নিজেকে চিনতে, নিজের অজ্ঞাত অসঙ্গতিসমূহ জানতে... (এমন অসঙ্গতি যা হয়তো আমাকে ইসলাম থেকে বেরই করে দিয়েছে!) বইটি সকল বিবেকবান মুসলিমদের বইটি পড়া উচিত।
সমালোচনাঃ
১.এটা যেহেতু লেখকের ২য় বই সেহেতু বানান, বিরামচিহ্ন, লাইন বিন্যাস এসবের নির্ভুলতাই কাম্য ছিল।
২.বইতে প্রকাশকের কোনো বক্তব্য নেই। এটা ছাড়া বইকে অভিভাবকহীন মনে হয়।
৩.প্রচ্ছদের ক্ষেত্রে আরও বৈচিত্র্য আনা যেতো।
বর্তমান বিশ্বের অবস্থা সকরুণ । ফিতনার ছড়াছড়ি বিশ্বব্যাপী । ক্ষনিকের এই দুনিয়া যতই ডিজিটালাইজ হচ্ছে নতুন নতুন ফিতনা আমাদের জীবনের সাথে জুড়ে যাচ্ছে । অমাবস্যা রাতের মতো চারদিক থেকে ফিতনা আমাদেরকে গ্রাস করে নিচ্ছে । ফিতনাময় দুনিয়ায় গা ভাসানো থেকে নিজেকে দূরে রাখা বেশ কঠিন । প্রিয় রাসূল মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসালাম চৌদ্দশত বছর পূর্বেই ফিতনা সম্পর্কে সতর্ক করে বলেছেন , “ আধাঁর রাতের মতো ফিতনাহ আসার পূর্বেই তোমরা সৎ আমলের দিকে ধাবিত হও । সেসময় সকালে একজন মুমিন হলে বিকালে কাফির হয়ে যাবে । বিকেলে মুমিন হলে সকালে কাফির হয়ে যাবে । দুনিয়ার সামগ্রীর বিনিময়ে সে তার দ্বীনকে বিক্রি করে দিবে । ” বর্তমান দুনিয়ায় হালাল ভাবে বেঁচে থাকা অনেক কঠিন । ঠিক যেন হাতে জ্বলন্ত অঙ্গার ধারণ করার ন্যায় । অধিকাংশ মানুষ দুনিয়ার লোভ , দুনিয়ার যশ , দুনিয়ার খ্যাতি , দুনিয়ার ক্ষমতাকে বাদ দিতে পারে না । কিন্তু আলাহর পথে আসতে হলে তো দুনিয়ার কিছু জৌলুস , যশ অথবা খ্যাতি অবশ্যই পায়ে ঠেলতে হবে এবং তারাই তা পারে যাদের আল্লাহ সুবাহানু ওয়া তা'আলা মজবুত অন্তর দিয়েছেন , যাদের তিনি রহমতের চাদরে ঘিরে নিয়েছেন । দুনিয়া জীবনের পাওয়া না পাওয়া নিয়ে সুগভীর একটি উপলব্ধি আছে ইবনু আতা'আল্লাহ আল ইসকান্দারি রাহিমাহুল্লাহর । তিনি বলেছেন , A M “ সে কী পেলো যে আল্লাহকে হারালো ? সে কী হারালোঁ যে আল্লাহকে পেলো ? ” আমরা এই দুনিয়ায় ক্ষণিকের অতিথি । আমাদের একদিন এই দুনিয়া থেকে বিদায় নিতে হবে । এটা চিরন্তন সত্য । কিন্তু আমাদের বিদায়টা যেন এমন না হয় , আমরা দুনিয়ায় এমন কোনো জিনিস গ্রহণ করছি যেটা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতা'আলার অসন্তুষ্টির কারণ । উপরন্তু আমরা এমন কিছু ত্যাগ করছি যা আমাদের কাছে সহজে ধরা দিচ্ছে কিন্তু আমরা কেবল আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতা'আলার • সন্তুষ্টির জন্য সেটা ছুঁড়ে ফেলেছি প্রচ্ছদ : সাহাদাত হোসেন
0 মন্তব্যসমূহ
ℹ️ Your Opinion is very important to us, Please Writer your comment below about this Post.....