জাসদের উত্থান পতন: অস্থির সময়ের রাজনীতি PDF/পিডিএফ লেখকঃ মহিউদ্দিন আহমেদ এর বইটি আমরা আমাদের boipaw.com সাইটে আপলােড করেছি। জাসদের উত্থান পতন : অস্থির সময়ের রাজনীতি বইটি মহিউদ্দিন আহমেদ এর একটি অসাধারন রাজনীতি বই। আপনি বইটি পড়তে চাইলে অনলাইনে পড়তে পারেন। অথবা চাইলে জাসদের উত্থান পতন : অস্থির সময়ের রাজনীতি বইটির PDF কপি ডাউনলােড করে অফলাইনে পড়তে পারেন। জাসদের উত্থান পতন : অস্থির সময়ের রাজনীতি বইটির বিস্তারিত তথ্য এবং PDF লিংক নিচে দেওয়া আছে।
বইয়ের বিবরণ
- বইয়ের নামঃ জাসদের উত্থান পতন: অস্থির সময়ের রাজনীতি PDF/পিডিএফ
- লেখকঃ মহিউদ্দিন আহমেদ
- বইয়ের ধরণঃ ইতিহাস, রাজনীতি, মুক্তিযুদ্ধের বই
- প্রকাশকঃ প্রথমা প্রকাশন
- প্রকাশিতঃ ২০১৪
- পাতা সংখ্যাঃ ২৮৫ টি
- সাইজঃ ২৪ এমবি
মহিউদ্দিন আহমদ। জন্ম ২০ জানুয়ারি ১৯৫২, ঢাকায়। পড়াশােনা গভর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি হাইস্কুল, ঢাকা কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগে। ১৯৭০
সালের ডাকসু নির্বাচনে মুহসীন হল ছাত্র। সংসদের সহসাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। বিএলএফের সদস্য হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। দৈনিক গণকণ্ঠ এ কাজ করেছেন প্রতিবেদক ও সহকারী সম্পাদক হিসেবে। তথ্য, প্রকাশনা ও গণযােগাযােগ-সম্পর্কিত এ দেশের প্রথম বিশেষায়িত এনজিও গণ উন্নয়ন।
গ্রন্থাগারের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য; পরে। চেয়ারপারসনের দায়িত্ব পালন করেন। দক্ষিণ কোরিয়ার সুংকোংহে বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্স ইন এনজিও স্টাডিজ' কোর্সের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ও অধ্যাপক (২০০৭-০৮)। তাঁর লেখা ও সম্পাদনায় দেশ ও বিদেশ থেকে বেরিয়েছে ৩৮টি বই। এর মধ্যে আছে কার্ল মার্কসের
কবিতা, পিতা হি পরমন্তপ, গভীর পবিত্র অন্ধকার, এই দেশে একদিন যুদ্ধ হয়েছিল, ড্রিম মার্চেন্ট, সিউল ডায়েরি, ফ্লাড ইন বাংলাদেশ, জুম পাহাড়ের জীবন ইত্যাদি। প্রথম আলেয়
কলাম লেখেন।
ষাট ও সত্তরের দশকে বাংলাদেশ ছিল রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহে টালমাটাল। আমরা অনেকেই এই অস্থির সময়কে দেখেছি, এর নানান কর্মকাণ্ডে অংশ নিয়েছি। আমাদের আছে অনেক অর্জন, অনেক ব্যর্থতা; অনেক আনন্দ, অনেক বেদনার স্মৃতি। আমরা এই সময়টাকে ধরে রাখতে চাই, দেখতে চাই নির্মোহ দৃষ্টিতে । আমরা চাই এই সময়ের বস্তুনিষ্ঠ পর্যালােচনা। | আমার লেখার প্রধান বিষয় জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ)। ১৯৭২ সালে এই দলটির জন্ম হলেও এর একটা পূর্ব-ইতিহাস আছে। জাসদকে বুঝতে হলে এর পটভূমি জানা দরকার। প্রয়ােজন ইতিহাসের মােড়ক উন্মােচনের । ইতিহাস কোনাে ঠাকুরমার ঝুলি' নয়। বরং এটা হয়ে উঠতে পারে একটা প্যানডােরার বাক্স'। এর ডালা খুললে এমন সব সত্য বেরিয়ে আসে, যার মুখােমুখি হতে চাই না আমরা অনেকেই। কেননা, সত্যটা জানাজানি হয়ে গেলে আমাদের অনেকের বর্তমানটা নড়বড়ে হয়ে যেতে পারে। ইতিহাসচর্চার এটা একটা বড় চ্যালেঞ্জ, গুম হয়ে যাওয়া সত্যকে খুঁজে বের করে আনা। কাজটা অত্যন্ত পরিশ্রমের এবং অনেক ক্ষেত্রেই ঝুকির।
একাত্তরে বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের একটা গৌরবােজ্জ্বল উত্থানপর্ব আছে। তার অনিবার্য ধারাবাহিকতায় আমরা একটা সশস্ত্র প্রতিরােধপর্বের সূচনা দেখতে পাই একাত্তরের ২৫ মার্চ রাতে। এই পর্বের সমাপ্তি ঘটে ১৬ ডিসেম্বর দখলদার পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে। কিন্তু যখন আমরা মুক্তিযুদ্ধের কথা বলি, সে যুদ্ধ তাে ১৬ ডিসেম্বরে শেষ হয়ে যায়নি? দেশের মুক্তি হয়েছে, মানুষের মুক্তি হয়নি।
মানুষের মুক্তি, বিশেষ করে তার ইহজাগতিক সুখ, স্বাচ্ছন্দ্য, উন্নতি, প্রবৃদ্ধি ও কল্যাণের জন্য নানাজনের নানা মত, নানা পথ । মত ও পথ অনুযায়ী
মানুষ জোটবদ্ধ হয়। তারা সংগঠন গড়ে তােলে। মানুষের এই যুথবদ্ধ প্রয়াসের এক আধুনিক রূপ হলাে রাজনৈতিক দল।
রাজনৈতিক দলগুলাে আবর্তিত হয় কোনাে-না-কোনাে মতাদর্শকে ঘিরে। আমাদের দেশে দলগুলাে নানা কারণে ব্যক্তিকে মতাদর্শের ওপরে জায়গা দিয়ে একধরনের পীরবাদের জন্ম দিয়েছে। এখানে দলের নেতা ঈশ্বরের সমতুল্য, কিংবা তার চেয়েও বেশি। কেননা, তিনি দৃশ্যমান। এই মনস্তত্ত্ব থেকেই তৈরি হয় ব্যক্তিকেন্দ্রিক রাজনীতি, রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠা পায় ব্যক্তির কাল্ট, তিনি যেন হয়ে ওঠেন সব ক্ষমতার উৎস । রাজনীতির এরকম পরিণতি থেকে ইতিহাসকে আলাদা করা কঠিন। এখানে ইতিহাস সময় কিংবা ঘটনাকেন্দ্রিক না হয়ে ব্যক্তিকেন্দ্রিক হয়। যেমন আমরা বলি মুজিব আমল, জিয়ার আমল, এরশাদের আমল ইত্যাদি।
আমাদের দেশের ইতিহাসচর্চার একটা বড় সমস্যা হলাে নির্মোহ হয়ে উঠতে না-পারা। যে ঘটনাগুলাে আমাদের জীবনকালে ঘটেছে এবং আমরা অনেকেই যেসব ঘটনার সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরােক্ষভাবে জড়িয়ে গেছি বা আছি, সে ঘটনাগুলােকে ঘিরে আমরা একধরনের আবেগ অনুভব করি। এই আবেগের সঙ্গে জড়ানাে আছে ভালােবাসা অথবা ঘৃণা । ফলে আমরা যখন কিছু বলি বা লিখি, তখন অনেক সময় ভালােবাসা বা ঘৃণা দ্বারা। তাড়িত হই।
আমাদের দেশে ইতিহাস লেখার আরেকটা বড় সমস্যা হলাে পর্যাপ্ত সূত্রের অভাব । আমাদের মনে রাখতে হবে, দেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের একটা মােড় পরিবর্তন হয়েছিল ষাটের শকে। ওই সময় এবং তার পরের অনেক প্রক্রিয়া ও ঘটনার কোনাে দালিলিক প্রমাণ নেই। কেননা, সে আন্দোলন সব সময় প্রকাশ্য ছিল না। গােপন প্রক্রিয়ার দালিলিক প্রমাণ সব সময় থাকে না। নিরাপত্তার কারণেই তা রাখা ফব হয় না। এ ক্ষেত্রে ইতিহাসচর্চার অন্যতম প্রধান সূত্র হচ্ছে ওই সময়ের কুশীলবদের মুখ থেকে শােনা কথা, 'ওরাল হিস্ট্রি' বা কথ্য ইতিহাস। সেখানেও সমস্যা আছে। অনেকেই নিজেকে মনে করেন অপরিহার্য ও অভ্রান্ত। অন্যদের মনে করেন ভ্রান্ত, বিভ্রান্ত অথবা ষড়যন্ত্রকারী। ফলে তাঁদের কথা শুনে যারা লেখেন, তাদের লেখা একপেশে হয়ে যায়, যদি না তারা ওই সময়টা বােঝার জন্য। সময়ের অন্য চরিত্রগুলাের সঙ্গেও কথাবার্তা বলেন।
আমাদের দেশে অনেকে ইতিহাসের চর্চা করেন গবেষণার জন্য। গবেষকদের মধ্যে একটা সাধারণ ফর্মুলা গ্রহণের ঝোক থাকে। প্রথমে একটা প্রস্তাবনা বা হাইপােথিসিস ঠিক করে সেটা প্রমাণের জন্য তারা তাদের তথ্যউপাত্ত সাজান। যদিও হয়তাে ওই প্রস্তাবনাটাই সঠিক নয়।
‘ওরাল হিস্ট্রির জন্য মূল সূত্র খুঁজে পাওয়া কষ্টকর। সবাই সবটা জানেন না। যারা জানেন, তাঁরা বলতে চান না। যারা বলেন, তারাও অনেক সময়। নির্মোহভাবে বলেন না। আবার অনেকের যুক্তি, এ কথা বলার সময় এখনাে হয়নি।'
আমার একটা সুবিধা ছিল, বাঙালি জাতীয়তাবাদী ধারার রাজনীতিকদের মধ্যে অনেককেই আমি ব্যক্তিগতভাবে চিনতাম। সত্তরের দশকের গােড়ায় আমি এই প্রক্রিয়ায় যুক্ত হয়ে পড়ি। ওই সময় দলের বেশির ভাগ প্রচারপত্র ও পুস্তিকার খসড়া তৈরি করার দায়িত্ব পালন করতেন রায়হান ফেরদৌস মধু। বাহাত্তমের মাঝামাঝি তরুণ সাংবাদিকদের জন্য আয়ােজিত একটা প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে অংশ নিতে তিনি বুদাপেস্ট চলে যান। তখন লেখালেখির দায়িত্ব। পড়ে মূলত আমার ওপর। ছাত্রলীগ ও বিএলএফের (মুজিব বাহিনী) সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা থাকার কারণে আমি অনেক কিছু ভেতর থেকে দেখেছি, যা বাইরে থেকে একজন গবেষকের পক্ষে জানা অতটা সহজ নয়। সে সময় আমি জাসদ পরিচালিত দৈনিক গণকণ্ঠ পত্রিকার সঙ্গেও সংযুক্ত ছিলাম এবং ওই সময়ের রাজনীতির দৈনন্দিন ঘটনাপ্রবাহ পর্যবেক্ষণের একটা সুযোেগ আমার হয়েছিল। আমি তখন দলের ভেতরে বুলবুল' নামে পরিচিত ছিলাম। এই লেখা তৈরি করার সময় আমি অনেক সূত্র ব্যবহার করলেও এটা বললে অত্যুক্তি হবে না। যে, আমি নিজেও অনেক ঘটনা ও প্রক্রিয়ার সাক্ষী।
স্বল্প পরিসরে ওই সময়ের পূর্ণাঙ্গ ইতিহাস তুলে ধরা সম্ভব নয়। অনেক ঘটনাই আমার জানার কথা নয় এবং আমি সোৰ বিষয়ে মন্তব্য করা থেকে সচেতনভাবে বিরত থাকতে চেষ্টা করেছি। আমার মূল লক্ষ্য হচ্ছে, আমি যেটুকু জানি বা অনুসন্ধান করে জানতে পেবেছি, তা অন্যদের জানানাে। সবাই তাে সবটা জানেন না। এই বিষয়টা নিয়ে হয়তাে আরও অনেকেই লিখবেন। আর এভাবেই ইতিহাস রচনার উপাদান সংগৃহীত হতে থাকবে ভবিষ্যতের গবেষকদের জন্য।
আগেই বলেছি, ইতিহাস লেখা ও পড়ার একটা বড় চ্যালেঞ্জ হলাে নির্মোহ হওয়া। লেখক ও পাঠক উভয়কেই নির্মোহ হতে হবে। বদ্ধমূল ধারণা কিংবা রাজনৈতিক মতলব থেকে কেউ যদি লেখেন, সেটা ইতিহাস হবে না। আবার পাঠকেরও তাঁর পূর্বধারণাকে এক পাশে সরিয়ে অজানা তথ্য গ্রহণ করার মানসিকতা থাকতে হবে।
ষাটের দশকে স্বাধীনতার দুটো উদ্যোগ লক্ষ করা যায়। এগুলাে ছিল মূলধারার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের বাইরে, অথচ গুরুত্বপূর্ণ। একটি হচ্ছে ‘স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী পরিষদ', অন্যটি ‘আগরতলা ষড়যন্ত্র'। বাহাত্তর সালে দৃশ্যপটে আসে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ)। ১৯৮২-৮৩ সালের দিকে আমি এ বিষয়ে কিছু লেখালেখির উদ্যোগ নিই। এ নিয়ে বিস্তারিত জানার জন্য ১৯৮৩ সালের অক্টোবরে আমি ছাত্রলীগের একসময়ের দপ্তর সম্পাদক রেজাউল হক মুশতাককে নিয়ে আওয়ামী লীগের নেতা আবদুর রাজ্জাকের ধানমন্ডির বাসায় যাই। কথাবার্তা বলার সুবিধে হবে, এই ভেবে আমরা তাঁকে নিয়ে মুশতাকের ভূতের গলির বাসায় যাই। আমি আবদুর রাজ্জাকের সঙ্গে চার-পাঁচ ঘণ্টা আলাপ করি । ষাটের দশকের ইতিহাসের একটা অনুদ্ঘাটিত পর্ব আমার সামনে উন্মােচিত হয়। আমি ওই তথ্যগুলাে সিরাজুল আলম খান, আ স ম আবদুর রব, মনিরুল ইসলাম ও কাজী আরেফ আহমেদের সঙ্গে যাচাই করে নিই। | পরে আমি আনফার্লিং দ্য রেড ফ্ল্যাগ' নামে বড় একটা লেখা তৈরি করি। তখন সেনাপতি এরশাদের জমানা। দেশে নাগরিক অধিকারের ছিটেফোটাও নেই। ইউরােপের উন্নয়ন ও মানবাধিকার সংগঠনগুলাের একটা নেটওয়ার্ক ‘বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল অ্যাকশন গ্রুপ' তখন বেশ সক্রিয়। এই গ্রুপের মধ্যে ছিলেন বার্নার্ড কারভিন (ফরাসি সংস্থা ব্রাদার্স টু অল মেন—বাম। ইন্টারন্যাশনাল-এর বাংলাদেশ প্রতিনিধি), ড্যানিয়েল অ্যাসপ্লান্ড (ঢাকায় সুইডিশ উন্নয়ন সহযােগিতা সংস্থার প্রধান কর্মকর্তা), পিটার মারেস (নেদারল্যান্ডস দূতাবাসের প্রথম সচিব), ড্যান জোনস (ব্রিটিশ ট্রেড ইউনিয়ন সংগঠক), এ জেনকিনস (উন্নয়ন পরামর্শক ও একসময় ব্র্যাকের স্বেচ্ছাসেবক), ইয়ান ভ্যানডারল্যান (পানিসম্পদ বিশেষজ্ঞ ও পরবর্তী সময়ে নেদারল্যান্ডস দূতাবাসের প্রথম সচিব) ও তার স্ত্রী ইয়ােকা ভ্যানডারল্যান প্রমুখ। ১৯৮৩ সালের দিকে তারা যােগাযােগের কেন্দ্র হিসেবে ঢাকার ধানমন্ডিতে নিজেরা করি'র অফিস ব্যবহার করতেন। এ ব্যাপারে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা “নিজেরা করি'র সমন্বয়কারী খুশী কবিরের ভূমিকা ছিল। উল্লেখযােগ্য। ওই সময় আমি এদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হই। পরবর্তী সময়ে ধানমন্ডিতে ‘গণ উন্নয়ন গ্রন্থাগার অফিসে এই যােগাযােগ অব্যাহত থাকে। এবং এর ফলে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের ঢাকা-১ চ্যাপ্টারের সূচনা হয়। আমি ১৯৮৪ সালের আগস্টে আমস্টার্ডামভিত্তিক সংগঠন এভার্ট ভারমিয়ার স্টিখটিংয়ের কাছে আনফার্লিং দ্য রেড ফ্ল্যাগ'-এর পাণ্ডুলিপি পাঠাই। Read More after Download pdf ebook
0 মন্তব্যসমূহ
ℹ️ Your Opinion is very important to us, Please Writer your comment below about this Post.....